বিখ্যাত

অনন্ত ভালবাসে বর্ষাকে। কিন্তু বলতে পারছে না। বর্ষাকে দেখলেই তার হাটুদয়ে কিঞ্চিত কম্পনের সৃষ্টি হয়। যেন খুলে পড়ে যাবে, কিংবা দুটো দুই দিকে চলে যাবে। জিহ্বাও জড়িয়ে যায়। পানি পিপাসা লাগে। কিন্তু এবার আর কোন ছাড়াছাড়ি নাই। বলতেই হবে। একে একে কতগুলো বসন্ত পেরিয়ে গেল। কিন্তু অনন্তর জীবনে শুধু রিক্ত পথিক শীতের আনাগোনা। নাহ, কিছু একটা করতেই হবে। ডেল কার্নেগীর কথা মনে পড়ল তার ‘যা করার এখনিই কর’। হুম, এখনই ফোন দিতে হবে।
কিন্তু ফোন হাতে নেয়ার সাথে সাথে কী চাপার সময়ও হাত কাঁপছে তার, এমন তো কখনই হয় নি।
হ্যালো (এই কন্ঠ শুনলেই কি যেন একটা হয় অনন্তর)
বর্ষা
হুম, বল
(যা বলবে ভেবেছিল, তা আর কিছুতেই মনে আসছে না) ঈদের দিন আমাদের বাসায় তোমার দাওয়াত
(বর্ষা হেসে)এটা বলার জন্য এত রাতে ফোন করেছ
সন্ধ্যার পর পরই চলে এস, এসময় বাসায় থাকব।
আর কিছু না
নাহ
ঠিক আছে
ঈদের দিন বন্ধুদের সাথে ঘুরে সন্ধ্যার পর ফিরল অনন্ত। অতিরিক্ত টেনশনে ভুলেই গেছিল বর্ষার কথা। তার তো এতক্ষণ চলে আসার কথা। কি হল? ভুলে গেছে নাকি? ফোন দেয়া দরকার। ফোন বের করে দেখে চার্জ নেই। ফোনে না পেয়ে বর্ষা চলে গেল নাকি? কত কিছু বলার ছিল আজ। ইচ্ছে ছিল হৃদয় উজাড় (হার্ট খুলে হাতে নিয়ে) করে ভালবাসা জানাবে । নাহ, কিছুই হল না। অনন্ত মোবাইলে ঝাকি দিয়ে চার্জ ফিরিয়ে আনে।
[ ব্যাকগ্রাউন্ড র্যাপঃ অসম্ভবকে সম্ভব করাই অনন্তর কাজ ]
এসময় বাথরুমের দরজা খুলে বর্ষা বেড়িয়ে এল।
তুমি এখানেই ছিলে?
একঘণ্টা হল এসেছি, তোমার কোন খোঁজ নেই। বাথরুমে গিয়েছিলাম
তোমাকে বেশ ফ্রেশ লাগছে
বেশ অবাক হল, কি বলে এসব? তাও নিজেকে সামলে মুচকি হাসল।
কি সৌভাগ্য আমার
কি বলতে চাও?
বোঝ না?
বুঝি। যাও, তুমি না এত্তগুলা দুষ্টু
আশকারা পেয়ে এবং উত্তেজনায় এগিয়ে আসছে অনন্ত। ল্যান্ডিং করতে আসা কোন জেট বিমানের ন্যায় অনন্তর ঠোঁট দুটি এগিয়ে আসতে থাকে বর্ষার দিকে। কিন্তু বর্ষা ম্যাট্রিক্স স্টাইলে নিজেকে মুক্ত করে নেয়।
এখন না ডার্লিং, আমি আরেকবার বাথরুম থেকে ঘুরে আসি।
বাথরুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিল বর্ষা। মুগ্ধ নয়নে বন্ধ দরজার দিকে তাকিয়ে রইল অনন্ত।
সমাপ্ত।