somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফেলানীর জন্য শোকগাথা

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৫:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফেলানী, বাবার বড় আদরের নাম;
কতটুকু! তা নিশ্চয়ই কেউ জানে না?
যার চোখে মুখে ছিল
একটি পাখির বাসার মতন ঘর,

আলতা রাঙা বরণে কোমরে বিছা পেঁচিয়ে
ঘরকুঠো থেকে রান্না পর্যন্ত খেলার মতো করে সাজানো;
সকালে মোরগ ডাকে তার ঘুম ভাঙবে,
হিজলের ছায়ায় ঢেকে রাখবে সারাদিনের সকল ক্লান্তি গুলো
ছোট ছোট অভিমানগুলো থাকবে পুকুরের জলের মতো শান্ত ।
বাবা বলে ছিল, বুড়ি তোর বিয়ে দেব,
এ ভিনদেশী শহর থেকে
তার আগে আমরা বাড়ি যাব,
দিল্লীর ইটখোলার মাঝে স্বপ্নের জাল বুনা শুরু সেদিনই;
সামান্য ভাতে উদর ভরুক আর না ভরুক
মেয়েটা তো নিজের ঘরকন্না করবে।
তার এমন খুশির দিনে
পাড়ার সইরা দুষ্টমি করে তাকে কি বলেছিল আমাদের তা জানা হল না;
বিয়ের আগে দেশটায় একবার যেতে হবে,
কি আর করার, রক্তে মাংসে কামাই করা টাকা না হয় একটু বেশি নিক দালালগুলো,
তবুও তো এই ‘দিল্লীর কেতা দুরস্ত’ থেকে মুক্তি মিলবে।
ওহ হে! লজ্জা কাতর স্বরে ফেলানী ভাবছিল বাবাকে জানাতে,
তোমার জামাইর কুটম্বদের একবেলা দানাপানি খাওয়াতে হবে,
আমার সঙ্গে ভরা শীতের তোষক, দুই চারটা হাঁড়ি-বাটি আর সাথে জামাইয়ের হাতঘড়ি দিতে হবে।
সেটা বলা আর সম্ভব হলো না।

কুয়াশার ফাঁকে সে নিজের দেশে ফিরতে চেয়েছিল
কিন্তু অগত্যা কাটাতারের বেড়া কাল হয়ে দাড়ালো, এই যা,
বাবা অনায়াসে পার হয়ে ওপারে
কিন্তু ফেলানী?
ও বাবা! একটু দাঁড়াও,
দালালের মই বেয়ে সে দ্রুত নামতে চায়,
তাড়াতাড়ি করো ফেলানী তাড়াতাড়ি!
তাড়া দিচ্ছিল দালালরা।
ওড়নাটা জড়িয়ে ছিল তারের বেড়ায়,
একটু পরে আলো ফুটবে।
বাবা আমাকে নিয়ে যাও।
মা রে দেকি? গণ্ডগোল, দালাল নেই, নির্বাক বাবা।
হঠাৎ একটা বুলেট তেড়ে আসলো,
ফেলানী তখন অবোধ এক কিশোরী
রক্তে রঙ্গিন দেহ,
ঝুলন্ত তার লাশ।
দেশের মাটি তো দূরের কথা কোনো রাষ্ট্র তোমাকে বরণ করেনি।
পৌষের কুয়াশা ভেজা বিনা তোষকে মেয়েটা
বড় নিথরভাবে ঝুলে আছে কয়েকটা বাশের মাঝখানে,
আর আমরা কতেক অতিথি পরায়ণ ও বন্দু প্রতিম পরে আছি
ভারতীয় জামদানী আর তাদের দেয়া ভদ্রতার মুখোশ।
আমাদের ফেলানী,
কারো বোন কিংবা মেয়ে
আমাদের দূর্বলতার চির সাক্ষী হয়ে
পড়ে আছে একাকী,বড় অবহেলায় অযত্নে।


লেখক------------
সমাজকর্ম বিভাগ
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়.সিলেট।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১০:৪৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম বিহীন বিশ্ব গড়ার চেষ্টা বিশ্ব জনসংখ্যা অনেক কমিয়ে দিবে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:৫০



নেতানিয়াহু বলেছে তাদের সাথে অনেক শক্তিশালী রাষ্ট্র আছে। সে মুসলিম বিশ্বকে বড় রকমের হুমকি দিয়েছে। সে গণহত্যা চালাচ্ছে। আত্মরক্ষায় মরিয়া মুসলিমরাও গণহত্যা চালাবে। তখন আর সভ্যতার বাণীতে কাজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার মিরর ডোল, নিজের মনের অশান্তি অন্যের উপর চাপিয়ে দিয়ে ফ্যাসিস্টের মতো আচরণ করবেন না

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ২:৩৫

ব্লগার মিরর দৌলাকে বলছি।
আপনাকে কিছু কড়া কথা আজ বলবো। ব্লগে বর্তমানে আপনার কোন অবদান নেই। সামুর যে ব্লগপেইজটা আপনি চালান, সেখান থেকে সব পোষ্ট আপনি ড্রাফটে নিয়েছেন। সেটা আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এত হট্টগোল এত সুরাসুর এখানে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৫:২৬



নিত্যতই লেগে থাকে হট্টগোল, রাজপথে জায়গা নেই,
হাঁটতে গেলেই মানুষের ধাক্কায় হারাই খেই,
বিশৃঙ্খল নগরীর বুকে স্বার্থপরতার বসবাস;
এখানে মাটিতে পা ফেললেই বুকে মুহুর্মূহু দীর্ঘশ্বাস।

বাস, কার, রিক্সা, ভ্যা ন, ম্যা ক্সি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এনসিপিনামা - যে যায় লংকায় সেই হয় রাবণ ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৩১


জুলাই অভ্যুত্থানের পর দেশে অসংখ্য রাজনৈতিক দল আত্নপ্রকাশ করেছে। সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টি(এনসিপি) কে নিয়ে। জুলাই অভ্যুত্থানের সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের নিয়ে এই দল গঠিত হয়েছে। প্রচলিত রাজনৈতিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

হারিয়েছি অনেক কিছু....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:৫৪

হারিয়েছি অনেক কিছু....

আমি প্রতিদিন নিয়ম করে বেশ কয়েক কিলোমিটার হাটি। তবে ইদানিং হাটাহাটিতে অপ্রত্যাশিত ছন্দপতন হচ্ছে! এই যেমন, হাটাহাটির টার্গেট মিসিং! যে পথে হাটার কথা, সে পথে না গিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×