بسم الله الرحمن الرحيم
সকল প্রশংসা আল্লাহর। অসংখ্য দরূদ নাযিল হোক নবীর উপর বারবার।
কোরআনের মধ্যে আল্লাহ পাক অনেক রকম মোজেজা বা অলৌকিক বিষয় রেখে দিয়েছেন, যেগুলোর অনুরূপ জিনিষ বলা বা করা কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হলো কোরআনের গাণিতিক মিরাকেল বা সংখ্যাতাত্ত্বিক অলৌকিকতা। কোরআনের মধ্যে উনিশ এর গাণিতিক মিরাকেল নিয়ে কথা বলে প্রথম যিনি বেশী আলোচিত-সমালোচিত হন তিনি হলেন মিশরের ডাঃ রাশেদ খালিফা।কিন্তু তিনি বেশ কিছু ভুল করেছেন,তার উপর গোঁজামিল দিয়েছেন, শেষমেশ নবী দাবী করার কারণে তার আবিষ্কৃত উনিশের মিরাকেল নিয়ে নাস্তিকদের বিরুদ্ধে খুব বেশী দূর আগানো যায়নি। কিন্তু তার পরে অন্য অনেকেই কোরআনের গাণিতিক মিরাকেল আবিষ্কারের জন্য গবেষণায় লেগে যায়। ফলে দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিচ্ছিন্নভাবে অনেক গবেষকই কোরআনের অসংখ্য গাণিতিক সৌন্দর্য ও মিরাকেল আবিষ্কার করতে থাকে। সেগুলো দেখলে মনে হয়,যেন এক অন্তহীন গাণিতিক মিরাকেলের মহাসমুদ্রের কিনারের মণিমুক্তা কুঁড়াতেই আমাদের ১০০ বছর পেরিয়ে যাবে। যাইহোক সেইসব মণিমুক্তা থেকে আমি আপনাদেরকে নীচে একটি অতি উজ্জ্বল গোলাপী মুক্তা প্রদর্শন করার চেষ্টা করব ইনশা-আল্লহ।এই উজ্জ্বল মুক্তা দেখে চোখ ঝলসে যাবে না তবে মহান আল্লাহর অসীম জ্ঞানের নিদর্শন দেখে চোখ থেকে ঝরতে পারে অশ্রুর মুক্তা,যার থেকে ছড়িয়ে পড়বে ঈমানী রোশনী ।
আমরা সবাই জানি কোরানে মোট ১১৪ টি সূরা আছে। আর কোরানে মোট আয়াত আছে ৬২৩৬ টি। নীচের ১নং চার্টটি খেয়াল করুন।
১নং চার্টের
*প্রথম কলামে দেয়া হয়েছে ধারাবাহিকভাবে সূরাগুলোর সিরিয়াল নাম্বার ১১৪ পর্যন্ত। *২য় কলামে আছে সূরাগুলোর আয়াত নাম্বার।
*৩য় কলামে আছে আগের দুই কলামের যোগফল অর্থাৎ ধারাবাহিকভাবে প্রত্যেক সূরার সিরিয়াল নাম্বার এবং ঐ সূরার আয়াত নাম্বারের যোগফল।
*৪নং কলামে আছে এই যোগফলগুলোর মধ্যে যেগুলো শুধু জোড় সেগুলো।
*আর ৫নং কলামে আছে এই যোগফলগুলোর মধ্যে যেগুলো শুধু বেজোড় সেগুলো ।
১নং চার্টঃ
(ছবি কিছুটা ছোট দেখালে কি বোর্ডের ctrl বাটন চেপে ধরে উপরের ডান দিকে যেই বাটনে যোগ চিহ্ন আছে সেটা দু'তিনবার চাপুন তাহলে ওয়েব পেজটি আকারে বড় হয়ে যাবে। তাতেও কাজ না হলে এই লিংকে গিয়ে পোষ্টটি পড়ুন। )
উপরে ১নং চার্টের শেষে আপনি যে ফলাফল দেখতে পেলেন সেটাকে যদিও গাণিতিক সৌন্দর্য বলা যায়, কিন্তু শুধু এতটুকুর জন্য এটাকে কোন মিরাকেল বলা যায়না নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে। তবে মিরাকেল শুরু হচ্ছে সামনের ২নং চার্ট থেকে। সামনের চার্টগুলো দেখলে বুঝা যাবে যে, ১নং চার্টের গাণিতিক সৌন্দর্যটিও আসলে শুধু ঘটনাচক্র নয় বরং সেটাও ১৯ এর অসম্ভব জটিল মিরাকেলের সাথে যুক্ত।
নীচের ২নং চার্টে দেখুন দু'টি ভাগ আছে। প্রতি ভাগে পাঁচটি করে কলাম আছে। বামদিকের প্রথম ভাগে আনা হয়েছে কোরানের বেজোড় সিরিয়াল নাম্বারের ৫৭টি সূরা, আর ডান দিকের ভাগে আনা হয়েছে জোড় সিরিয়াল নাম্বারের ৫৭টি সূরা।
উভয় ভাগেরই
*১ম কলামে বসানো হয়েছে সূরার সিরিয়াল নাম্বার।
*২য় কলামে বসানো হয়েছে সূরার আয়াত নাম্বার।
*৩য় কলামে সূরার সিরিয়াল নাম্বার আর আয়াত নাম্বারকে পাশাপাশি বসানো হয়েছে ।
*৪র্থ কলামে সিরিয়াল নাম্বার ও আয়াত নাম্বারের গুণফল বসানো হয়েছে।
*৫ম কলামে সিরিয়াল নাম্বার ও আয়াত নাম্বারের যোগফল বসানো হয়েছে।
এরপর প্রতিটি কলামের প্রতিটি সংখ্যার মোট যোগফল, প্রতি কলামের নীচে বসানো হয়েছে। এরপর কি আশ্চর্য ঘটনা ঘটেছে তা চার্টের নীচে গিয়েই দেখুন।
২নং চার্টঃ
এ কি দেখলাম !!! প্রতিটি কলামের যোগফল পাশাপাশি লেখে যে বিরাট সংখ্যা পাচ্ছি সেটা ১৯ দিয়ে নিঃশেষে ভাগ যায়। অতিরিক্ত ফায়দা হিসাবে পেলাম যে, প্রতিটি কলামের যোগফলকে আবার পরষ্পর যোগ করলে সেই যোগফলও ১৯ দিয়ে ভাগ যায়।কি বিস্ময়কর!!! বিস্ময় আর আশ্চর্য এখানেই শেষ নয় । মাত্র শুরু প্রিয় পাঠক! এবার চলুন ৩য় চার্টে।
৩য় চার্টে আগের চার্টটিই আছে। তবে এবার হিসাব করা হয়েছে অন্যভাবে।দেখুন, প্রথম কলামে সংখ্যা আছে ৫৭টি। এই সংখ্যাগুলো লেখতে যতগুলো ডিজিট বা অংক ব্যবহৃত হয়েছে তার পরিমাণ লেখা হয়েছে কলামের শেষে। যেমনঃ ৫৭এর মধ্যে ডিজিট আছে দু'টি, ১২৩ এর মধ্যে ডিজিট বা অংক আছে তিনটি। এরকম প্রত্যেক কলামের মোট ডিজিটের সংখ্যা সেই কলামের নীচে লেখা হয়েছে। এরপর কি হয়েছে? চলুন চার্টের নীচে গিয়ে দেখি।
৩নং চার্টঃ
হায় আল্লাহ! এ কি আশ্চর্য ব্যাপার !!! তাই না? ১০টি কলামের নীচের দশটি সংখ্যাকে পাশাপাশি লেখলে যে বিরাট সংখ্যা হয় সেটা ১৯ দিয়ে বিভাজ্য, আবার এই ১০ টি সংখ্যাকে উল্টো দিক থেকে লেখলেও তা ১৯ দিয়ে বিভাজ্য। এখানেই শেষ নয়। এর চেয়েও বেশী চোখ জুড়ানো মিরাকেল আছে সামনের চার্টে । যদিও আমার দৃষ্টিতে এই তিন নং চার্টটি মিলানোই তুলনামূলক অনেক অনেক বেশী কঠিন ।
৪নং চার্টে আগের চার্টটিই আছে, তবে এবার হিসাব করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন আরেকভাবে। চার্টটি বানানো হয়েছিলো ১১৪ টি সূরাকে জোড় ও বেজোড় দু'ভাগে ভাগ করে। এরপর দু'ভাগকে পাশাপাশি রাখা হয়েছে। ফলে চার্টটিতে আড়াআড়ি সারি হয়েছে ৫৭টি। এবার আমরা এই ৫৭টি সারিকে তিন ভাগ করবো, তাহলে প্রতি ভাগে সারি পরবে ১৯টি করে। এরপর যেই দৃষ্টিনন্দন কাজটি আমরা করবো, সেটা আর আমাকে লেখে বুঝাতে হবেনা। আপনি এখন নীচের চার্টগুলোতে চোখ বুলিয়ে যেতে থাকুন আর কোরানের অলৌকিক, অপূর্ব গাণিতিক সৌন্দর্যে চমৎকৃত, বিমোহিত, শিহরিত আর রোমাঞ্চিত হতে থাকুন।
৪নং চার্টঃ
প্রথম ১৯ সারির অলৌকিক ১৯টি সিঁড়ির ধাপের যোগফল ৩৪২৭০, ২য় ১৯ সারির অলৌকিক ১৯টি সিঁড়ির ধাপের যোগফল ৩৫২২৫, ৩য় ১৯ সারির অলৌকিক ১৯টি সিঁড়ির ধাপের যোগফল ৩৪৫২৩ । এবার ঠিক সিরিয়াল মত ১ম, ২য়, ৩য় যোগফলটি পাশাপাশি বসিয়ে ১৫ ডিজিটের বিরাট সংখ্যাটিকে ১৯ দিয়ে ভাগ করা হয়েছে । এবং বিস্ময়করভাবে দেখা গেলো যে তা ১৯ দিয়ে নিঃশেষে বিভাজ্য।
34270 35225 34523 ভাগ 19= 18037027501817
ঠিক একই কাজ আমরা নীচের চার্টেও করবো, তবে এবার উল্টো দিক থেকে। আগের চার্টে যেই সিস্টেমে এগিয়েছি এই চার্টেও ঠিক সেই সিস্টেমেই আগাবো, এমন না যে, আমাদের হিসাব মিলানোর জন্য কোথাও আমরা আগের সিস্টেমের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করবো।
৫নং চার্টঃ
প্রিয় পাঠক! আশা করি এবার আর বুঝাতে হবেনা। আপনি নিজেই বুঝে গেছেন আর কোরানের অলৌকিক গাণিতিক সৌন্দর্যে বিমোহিত হচ্ছেন।আগের মতই ১ম, ২য়, ৩য় সিঁড়ির যোগফলকে পরপর বসানো হয়েছে, এরপর ১৯ দিয়ে ভাগ করা হয়েছে।
41567 34016 27805 ভাগ 19= 21877547454095
প্রিয় পাঠক! সামনের কথাটা খেয়াল করুন, আমরা কিন্তু একই চার্টে হুবাহুব একই সিস্টেমে অগ্রসর হচ্ছি, এবং একই ঘটনা রিপিট হচ্ছে। এমন না যে, আমরা আমাদের শৃঙ্খলাকে ভঙ্গ করছি, আর না, এদিক সেদিকের কিছু বিচ্ছিন্ন চার্ট বা জিনিষের মধ্যে কোন গাণিতিক ঝড়েবক মিল দেখিয়ে দিচ্ছি। এরকম বিচ্ছিন্ন কিছু জিনিষের মাঝে ঝড়েবক গাণিতিক মিল অন্য বই বা ধর্মগ্রন্থেও পাওয়া যায়। সেগুলোর সাথে কোরানের গাণিতিক মিরাকেলের কোন তুলনাই চলেনা। একথাটা এজন্যই বললাম যে, নাস্তিকরা কোরানের গাণিতিক মিরাকেলের মোকাবেলায় ঐরকম কিছু ঝড়েবক গাণিতিক মিলের উদাহরণ টেনে এনে বলে যে, এমন মিরাকেল সব বইয়েই পাওয়া যায়।
যাইহোক প্রিয় পাঠক! এবার আপনার জন্য অপেক্ষা করছে চূড়ান্ত আশ্চর্য। এবার নীচের চার্টে আমরা দুই দিক থেকে নেমে আসবো। তারপর দেখি কি হয়।
৬নং চার্টঃ
হায়! হায়! এই অত্যাশ্চর্য, অভূতপূর্ব , মনমাতানো, চোখজুড়ানো, চোখভিজানো অলৌকিক গাণিতিক সৌন্দর্যের প্রশংসা করার ভাষা আমার জানা নেই।কোন ব্যতিক্রম না করে ,কোন গোঁজামিল না দিয়ে, ঠিক আগের সিস্টেমেই আমরা এবার উভয় দিক থেকে অলৌকিক সিঁড়ি বেয়ে নেমে আসলাম গাণিতিক মিরাকেলের এক মনোরম ফুলবাগানে।
75837 69241 62328 ভাগ 19= 39914574955912
এবার উপরের সংখ্যা তিনটিকে উল্টো দিক থেকে বসান।
62328 69241 75837 ভাগ 19= 32804574956623
আল্লাহর দেয়া সুস্থ বিবেক বুদ্ধিকে নষ্ট করে ফেলেনি এমন সবাই এখন খুব সহজেই বুঝে নিবে যে, এই কোরআন কোন মানুষের রচনা হতে পারেনা, এবং এই কোরানের কোন একটা লাইনও ছুটে যায়নি। এমনকি কোথাও কোন একটি সূরার সিরিয়ালেও কোন বেশকম হয়নি। ঠিক যেভাবে নাযিল হয়েছে কোরআন ঠিক সেরকমই আছে। কোথাও চুল পরিমাণ বেশকম হলেই ভেঙ্গে যেত বা অঙ্গহানি হতো এই অভূতপূর্ব জটিল ১৯ ধাপের স্বর্গীয় সিঁড়ি। তখন আর এই চোখ জুড়ানো স্বর্গীয় সিঁড়ি দেখার কপাল আপনার আর আমার হতোনা। আল্লাহ আমাদের সবাইকে খাঁটি ঈমান নিয়ে আল্লাহ পাকের সামনে দাঁড়ানোর তৌফিক দান করুন। আমিন। সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
এখান থেকে নেয়া হয়েছে।
কিছু অতীব জরুরী পোষ্টঃ মাথা খুব ঠান্ডা রেখে পড়তে হবে
ইসলামের নবী (সল্লাল্লহু আলাইহিওয়আ সাল্লাম) এর বিরুদ্ধে নাস্তিকদের উত্থাপিত প্রায় সকল প্রশ্নের দাঁতভাঙ্গা জবাব । হুমায়ূন আহমেদের ২য় বিবাহ - পর্ব ৩
আর বিজ্ঞান দিয়ে যারা ইসলামকে মোকাবেলা করতে চায় তাদের জবাব দিতে নীচের পোষ্টগুলো পড়ুন।
যারা বিজ্ঞান দিয়ে কোরআনের ভুল ধরেন তারা সবাই একটু দেখুন। সাইন্টিফিক মেথড সম্পর্কে আগে জানুন।
দু'টি চুরির মামলা এবং সেই আলোকে বিবর্তনবাদ, পৃথিবীর স্থিরতা, আস্তিকতা- নাস্তিকতা এবং নাসার চাঁদে যাওয়ার প্রমাণ।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪১