سم الله الرحمن الرحيم
সকল প্রশংসা আল্লাহর। অসংখ্য দরুদ নাযিল হোক তাঁর নবীর উপর বারবার।
নাস্তিকদের একটি হাস্যকর ও ধৃষ্টতাপূর্ণ প্রশ্ন হলো, আল্লাহ্ কি এমন একটি পাথর বানাতে পারবেন, যেটা তিনি নিজেও উঠাতে পারবেন না?
এক জায়গায় এই প্রশ্নের খুব সুন্দর জবাব দেয়া হয়েছে। সেখান থেকে এই ব্লগের পাঠকদের জন্য তুলে ধরলাম। আমার অনুরোধ যে, যদি উত্তরগুলো বিশেষ করে শেষের দুটি যদি বুঝতে কঠিন মনে হয়, তাহলে আমাকে একটু কমেন্টে জানান।
নাস্তিকদের এই প্রশ্নের জবাব কয়েকভাবে দেয়া যায়।
(১ম জবাব)প্রথমতঃ কথা হলো, ধরেন কেউ এই প্রশ্নের জবাবে এই উত্তর দিলো যে,যে পাথর আল্লাহ্ উঠাতে পারবেন না, তেমন পাথর আল্লাহ বানাতে পারবেন না। তো এতে কি সমস্যা? এর দ্বারাতো আর আল্লাহ্ নাই প্রমাণ হয়না। বরং আল্লাহ্ আছেন এবং তিনি বিরাট শক্তিমান এই বিশ্বাস করার পরই তো এই প্রশ্ন করা যায়।
তখন নাস্তিক বলবে যে, সমস্যা একটা আছে। আল্লাহ্ নাই এটা প্রমাণ হয়না বুঝলাম,কিন্তু কোরআনের আয়াত ভুল প্রমাণ হয়;কেননা,কোরানে আছে যে, আল্লাহ্ সব করতে পারেন। নাস্তিকের এই কথার জবাব হলো,কোরানেই আবার অন্য আয়াতে এটাকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে, আল্লাহ্ যেটা চান, সেটাই করতে পারেন। তাই বলা যায় , আল্লাহ্ এমন পাথর বানাতে চাবেন না, যেটা তিনি নিজেই উঠাতে পারবেন না। এটা হলো সবচেয়ে সহজ সরল জবাব।
(২য় জবাব) আবার দেখুন,"আল্লাহ্ এমন একটি ভারী পাথর বানাতে পারবেন না যেটা তিনি নিজেই উঠাতে পারবেন না।" এই কথাটি আসলে শুধুমাত্র বাহ্যিকভাবে বা শুধুমাত্র শব্দের হিসাবে আল্লাহ্র অক্ষমতা বুঝাচ্ছে। কিন্তু ভালোভাবে চিন্তা করলে দেখা যাবে,এই কথাটি আসলে আল্লাহ্র চূড়ান্ত সক্ষমতা ও শক্তিকেই প্রকাশ করছে। কেননা এই কথাটির অর্থ হলো এই যে,পাথর যত ভারীই হোকনা কেন,আল্লাহ্ সেটা বানাতেও পারবেন এবং উঠাতেও পারবেন।যেমন ধরেন কেউ বললো যে, আমি এমন কোন পরীক্ষা দেয়নি, যাতে আমি আমি পাস করিনি। এখানে মাইনাসে মাইনাসে প্লাস হয়ে অর্থ দাঁড়াবে যে, আমি যত পরীক্ষাই দিয়েছি, সেগুলোতে আমি পাস করেছি। উদাহরণটা পুরো না মিলেলেও অনেকখানি মিলেছে মনে হয়। কি বলেন? আবারো বলছি যে, ''আল্লাহ এমন পাথর বানাতে পারবেন না , যা তিনি উঠাতে পারবেন না" এই কথার মানেই হলো, যত বড় পাথরই হোক আল্লাহ সেটা বানাতেও পারবেন এরপর সেটা উঠাতেও পারবেন। একই কথাকে একটু প্যাঁচ দিয়ে বলে খারাপ দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সে গল্পের কথা খেয়াল করুন যেখানে কোন এক রাজার এক স্বপ্নের ব্যাখ্যা একজন করেছেন এভাবে যে, রাজা আপনার সামনে আপনার সব আত্মীয় পরিজন ইন্তেকাল করবে। তখন রাজা সেই গণককে ফাঁসি দিয়েছে। পক্ষান্তরে আরেকজন গণক সেই একই স্বপ্নের ব্যাখ্যা এভাবে করেছে যে, রাজা আপনি আপনার পরিবার পরিজনদের মাঝে সবচেয়ে বেশিদিন বাঁচবেন। তখন এই গণককে রাজা পুরস্কৃত করেছে। দেখুন একই ব্যাখ্যা একভাবে প্রকাশ করেছে তো খারাপ মনে হয়েছে; আবার সেই একই ব্যাখ্যাকে অন্যভাবে প্রকাশ করা হয়েছে ভালো মনে হয়েছে। এখানেও ঠিক তাই হয়েছে। আল্লাহ যেকোন সাইজের পাথর বানাতে পারেন, এরপর সেটা উঠাতেও পারেন; আল্লাহ পাকের এই ভালো গুণটাকে শয়তান চালাকি করে কথার মারপ্যাচ দিয়ে এমনভাবে উপস্থাপন করেছে যে, ভালো গুণটাই এখন উলটে গেছে।
এক বুজুর্গ দোয়া করেছিলেন যে, আয় আল্লাহ্! আপনি নবীর উপর রহমত বর্ষণ করতে থাকুন যতক্ষণ না আপনার রহমত শেষ হয়। এখন চিন্তা করুন একথার মানে কি?এ কথার মানে কি এই যে,সে বুজুর্গ মনে করেন যে, আল্লাহ্র রহমত একসময় শেষ হয়ে যাবে? না, এটা তার উদ্দেশ্য নয়; তার উদ্দেশ্য এটাই যে,আয় আল্লাহ্ আপনি নবীর উপর সর্বদা রহমত বর্ষণ করতে থাকুন।যেহেতু আল্লাহ্র রহমতের কোন শেষ নেই,তাই নবীর উপর রহমত বর্ষণও কখনো শেষ হবেনা ।
কেউ যদি বলে যে, আমার কাছে শুন্য টাকা আছে । এর মানে কিন্তু এই নয় যে, তাঁর পকেটে কোন টাকা আছে; এর মানে হলো আসলে তাঁর পকেটে কোন টাকা নেই। "নাই" কথাটাকেই সে ঘুরিয়ে ''আছে'' বানিয়ে দিয়েছে। তার পকেটে টাকা আছে শুধু তার মুখের শব্দে, বাস্তবে কিন্তু তার পকেটে কোন টাকা নাই। মোটামুটি এমনই নাস্তিকদের এই কথাটা (((আল্লাহ এমন পাথর বানাতে পারবেন না যা তিনি নিজেও ভাঙ্গতে পারবেন না))) এখানে আল্লাহর না পারাটা শুধু শব্দের মধ্যে, বাস্তবে কিন্তু আল্লাহ সব পারেন। বাস্তবে আল্লাহ যতবড় ইচ্ছা পাথর বানাতে পারেন এবং এরপর সেটা ভাঙ্গতেও পারেন। "বাস্তবে" আল্লাহর এই সব করতে পারাকে "কথার" মধ্যে মারপ্যাঁচ দিয়ে "না পারা" বানানো হয়েছে।
(৩য় জবাব)এবার আসেন আমরা প্রশ্নটা একটু উল্টাভাবে করি। (ক)আল্লাহ্ কি এমন একটি পাথর উঠাতে পারবেন, যেটা তিনি বানাতে পারবেন না? এটার জবাব কি হবে? হা! হা! আপনার যদি সুস্থ চিন্তা শক্তি থাকে তাহলে আপনি এসব প্রশ্ন সহ্য করতে পারবেন না। কেননা উঠাতে হলে আগে বানাতে হবে, বানাতেই যদি না পারে তাহলে আর উঠানোর প্রশ্ন আসছে কেন? আপনি বিরক্ত হয়ে আমাকে বলে ফেলতে পারেন যে, কইত্যে আইছে এক পাগল ছাগল, খাইয়্যা কাম নাই, আজাইরা প্যাচাল পারতে? তবুও একটু প্যাচাল পারতে হয়, যাতে কোন সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত না হয়। যাইহোক এবার বলেন দেখি, এই উল্টোভাবে করা প্রশ্নটার জবাব কি হবে? ...........................চিন্তা করুন........................................................ কি ? বুঝতে পারছেন না? একটু সহজ করি। বলেন তো, (খ)আল্লাহ্ কি এমন একটি পাথর উঠাতে পারবেন, যেটা তিনি বানাবেন না? এবার নিশ্চয়ই আপনি উত্তর দিতে পারবেন। আপনি বলবেন যে, এই প্রশ্নটাই কিচ্ছু হয় নাই। কারণ উঠানোর বা না উঠানোর প্রশ্ন তখনই আসে যখন পাথরটাকে আগে বানানো হবে, অস্তিত্বে আনা হবে। তো এই "খ"প্রশ্নটি যেমন কিচ্ছু হয়নি, তেমনি প্রশ্ন "ক" এটাও কোন প্রশ্নই হয়নি। কেননা "ক" ও "খ" এই দুই প্রশ্নের মধ্যে পার্থক্যটা তেমন ধর্তব্য না। একটাতে আছে বানাতে পারবেন না, আরেকটাতে আছে বানাবেন না। তো যিনি বানাতে পারবেন না তিনিই তো বানাবেন না। নাকি? বানাতে পারবেন না, এ কথার অনিবার্য রেজাল্ট হলো বানাবেন না। সুতরাং নাস্তিক যেহেতু কোন জায়গায় কি প্রশ্ন করতে হয় সেটাই শিখেনি; তাই তাকে বলুন আগে প্রশ্নটি ঠিকভাবে করো, তারপর আমরা উত্তর দিচ্ছি। ((((প্রশ্নঃক আর প্রশ্নঃখ কে একটু অতীতবাচক করে দেখেন তাহলে আরো ভালো করে বুঝবেন কেমন উদ্ভট প্রশ্ন। যেমন দেখুনঃ (ক) আল্লাহ্ কি এমন কোন পাথর উঠাতে পেরেছেন, যেটা তিনি বানাতে পারেননি? হা হা হা (খ) আল্লাহ্ কি এমন একটি পাথর উঠিয়েছেন, যেটা তিনি বানাননি । দেখলেন তো কেমন বোকার মত প্রশ্ন। বানালে পর না আসে উঠানোর প্রশ্ন।যেটা বানানোই হয়নি সেটা উঠানো হয়েছে কিনা এই প্রশ্ন শুধু বোকাই করতে পারে))))
এবার আসেন আমাদের মূল প্রশ্নে। (১)আল্লাহ্ কি বানাতে পারবেন এমন পাথর যা তিনি উঠাতে পারবেন না?
...........................চিন্তা করুন........................................................
এবার এটাকে একটু সহজ করুন। এভাবে বলুন, (২)আল্লাহ্ কি এমন পাথর বানাতে পারবেন যা তিনি উঠাবেন না?
...........................চিন্তা করুন........................................................ কি? তাও পারছেন না জবাব দিতে, নাকি? আরেকটু সহজ করুন। এভাবে বলুন, আল্লাহ্ কি এমন পাথর বানাতে পারবেন যা তিনি বানানোর পরে উঠাবেন না?এবার আপনি জবাব দিবেন যে, এই প্রশ্নটিও কিছু হয়নি। কেননা যেটা বানিয়ে ফেলেছেন সেটার ক্ষেত্রেই আবার প্রশ্ন করা হচ্ছে যে, সেটা তিনি বানাতে পারবেন কিনা। দেখুন আগে বানাতে হয় এরপর উঠাতে হয়। উঠাবেন কি উঠাবেন না এই প্রশ্ন আসবেই বানানোর পরে। যখন নাকি উঠানো বা না উঠানোর কথা আসলো, তখন এটাই বুঝা গেলো যে, আপনি ধরে নিয়েছেন যে, এটাকে আগে বানানো হয়েছে। তাই যেটাকে আগেই বানানো হয়েছে বলে আমি ধরে নিচ্ছি, সেটার ক্ষেত্রে কিভাবে আবার প্রশ্ন করি যে, সেটাকে কি আল্লাহ্ বানাতে পারবেন কিনা? বানিয়েতো তিনি ফেলেছেন, সেইজন্যইতো উঠানো বা না উঠানোর কথা আসছে। দেখুন যেই পাথরের বৈশিষ্ট্য এই যে, সেটাকে আল্লাহ্ উঠাবেন না বা উঠাতে পারবেন না, সেটার কিন্তু অনিবার্য বৈশিষ্ট্য এটাও যে, সেই পাথরটিকে আল্লাহ্ আগে বানিয়েছেন। তাহলে এই অনিবার্য বৈশিষ্ট্যকে প্রশ্নঃ১ এর সাথে যুক্ত করে দেখুন অবস্থা কেমন উদ্ভট দাঁড়ায়। (১) আল্লাহ্ কি বানাতে পারবেন এমন পাথর, যা তিনি উঠাতে পারবেন না এবং যেটা তিনি আগে বানিয়েছেন? কিন্তু নাস্তিক এই অনিবার্য অংশকে খুব চালাকির সাথে উহ্য রেখেছে,আপনাকে ধোঁকা দেয়ার জন্য; সে নিজে জাহান্নামী, আপনাকেও জাহান্নামে নেয়ার জন্য। ((এখন সারাংশ বলছি, প্রশ্নঃক ছিলো এই যে, আল্লাহ কি উঠাতে পারবেন এমন পাথর যেটা তিনি বানাতে পারবেন না। এটা কোন প্রশ্নই হয়নি। কেননা উঠাতে হলে আগে বানাতে হবে। বানাতেই না পারলে উঠানর প্রশ্ন আসছে কেন? যে বানাতেই পারলোনা সে উঠাবে কিভাবে? এরপর মূল প্রশ্ন ছিলো এই ক নং প্রশ্নের উল্টো। অর্থাৎ আল্লাহ কি বানাতে পারবেন এমন পাথর যেটা তিনি উঠাতে পারবেন না? এখানকার ভুলটা উপরে স্পষ্ট করা হয়েছে । অথবা নীচের ৫ ও ৬ নং জবাবের মত বলা যায় যে.... .... )))
আশা করি সবাই বুঝে গেছেন। যদি কেউ বাইচান্স না বুঝে থাকেন, তাহলে ২/৩ বার পড়ুন এবং নিজের মাথাটা একটু খাটান এবং আল্লাহ্র কাছে বুঝ চান এই বিশ্বাস রেখে যে, আমি আমার জ্ঞান বুদ্ধি দিয়ে বুঝতে পারবোনা, যদি আল্লাহ্ আমাকে দয়া না করেন। আর কোন পাঠক যদি ব্যাপারটিকে আরো সহজ করে বুঝাতে পারেন, তাহলে তার কাছে আমার একান্ত অনুরোধ যে, আপনি সেটা কমেন্টে আমাদেরকে জানান। তো এতক্ষণ ধরে আমরা এটাই দেখলাম যে, নাস্তিকদের এই প্রশ্নটা কোন প্রশ্নই হয়নি। তাই এটা উত্তর দেয়ারই যোগ্য না। এখন আসুন আমরা দেখি এই উদ্ভট প্রশ্নের উত্তর দিলে কেমন উদ্ভট অবস্থার সৃষ্টি হয়।
(৪র্থ জবাব)-নাস্তিক প্রশ্ন করেছিলো যে, আল্লাহ্ কি বানাতে পারবেন এমন পাথর যা তিনি তুলতে পারবেন না?
ধরেন, রাশেদ জবাব দিলো যে, না, আল্লাহ্ বানাতে পারবেন না এমন পাথর যা তিনি তুলতে পারবেন না। এখন কথা হলো এই কথাটির অর্থাৎ রাশেদের এই জবাবের প্রমাণ কি? সে কেন বা কিসের ভিত্তিতে এই জবাব দিলো? তখন নিশ্চয়ই বলা হবে যে, কেননা আল্লাহ্ যেকোন পাথরই তুলতে পারবেন। যেহেতু তিনি সর্ব শক্তিমান। তাহলে কি দাঁড়াচ্ছে কথা? আল্লাহ্ সর্ব শক্তিমান এই ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে রাশেদ জবাব দিচ্ছে যে, আল্লাহ্ বানাতে পারবেন না এমন পাথর যা তিনি তুলতে পারবেন না। আর রাশেদের এই জবাবের উপর ভিত্তি করে নাস্তিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে যে, আল্লাহ্ সর্ব শক্তিমান নন। আসেন এবার আমরা পুরা যুক্তি বাক্যগুলো সাজাই । আর এটা নিশ্চয়ই সবাই জানেন যে, যে যুক্তির ভিত্তি ভুল হয় সেই যুক্তির সিদ্ধান্তও অবশ্যই ভুল হয়।
যেহেতু ১-আল্লাহ্ সর্ব শক্তিমান ।
তাই ২- আল্লাহ্ এমন পাথর বানাতে পারবেন না যেটা তিনি উঠাতে পারবেন না।
সুতরাং ৩- তিনি সর্ব শক্তিমান নন।
তাহলে দেখলেন তো কেমন হাস্যকর কথা, কেমন উদ্ভট যুক্তি! সে প্রমাণ করতে চাচ্ছে আল্লাহ্ সর্ব শক্তিমান নয়। আর এটা করছে সে কোন ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে? এই ভিত্তির উপর যে, আল্লাহ্ সর্বশক্তিমান। হা হা হা। যদি তার ৩নং স্টেপে নেয়া সিদ্ধান্ত সঠিক হয়ে থাকে, তাহলেতো তার যুক্তির ১নং ভিত্তি যেটা সেটা ভুল। আর যদি ১নং ভিত্তি ভুল হয়ে থাকে তাহলে তো তার সিদ্ধান্ত যেটা অর্থাৎ আল্লাহ্ সর্ব শক্তিমান নন এটা ভুল।তার মানে আল্লাহ্ সর্ব শক্তিমান।
দেখলেন তো, আমরা আগেই বলেছিলাম এই পোষ্টে যে, নাস্তিকদের যুক্তির কোন ভিত্তি থাকেনা। আর ভিত্তি না থাকাকে সে বাকচাতুর্য দ্বারা আড়াল করে। দেখেন সে উপরের ৩টি যুক্তিবাক্যের ১মটি ও শেষেরটি বাদ দিয়ে, মাঝখানেরটি নিয়েছে। এরপর এটাকে আবার প্রশ্নের আকারে পেশ করেছে। যাতে করে আস্তিক তার যুক্তির ভিত্তিহীনতা বুঝতে না পারে। কোনটা দাবী আর কোনটা সেই দাবীর প্রমাণ যেন আস্তিক বুঝতে না পারে। তাই আপনি প্রথমেই তাঁর এই প্রশ্নের জবাব দিবেন না, বরং তাকে বলুন, তোমার দাবী কি আর সেটার প্রমাণ কি সেটা বলো, কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবোনা।
আসেন একটু দেখি এই উদ্ভট যুক্তিটা এমন উদ্ভট কি করে হলো। খেয়াল করুন, যুক্তিটির ১ম ভিত্তি হচ্ছে, আল্লাহ্ সর্ব শক্তিমান। তিনি সবই করতে পারেন। এই কথাটা স্বীকার করার পর তিনি অমুকটা পারেন না এটা তো বলার আর কোন স্কোপ থাকে না। অথচ যুক্তির ২য় লাইনেই দুই দুইটা পারেনা (অর্থাৎ বানাতে পারেনা, উঠাতে পারেনা)আল্লাহ্র সাথে যুক্ত করা হয়েছে চরম অযৌক্তিকভাবে। যদি আমরা এই যুক্তির ১ম ধাপ অর্থাৎ আল্লাহ্ সর্ব শক্তিমান এটা আমরা মেনে নেই, তাহলে যুক্তিটির ২য় ধাপ অনিবার্যভাবে এটাই হয় যে, আল্লাহ্ যেকোন পাথর বানাতেও পারেন এবং সেটা উঠাতেও পারেন। অথচ এটা না করে তার উল্টোটা করা হয়েছে; যার ফলে সিধান্তও ভুল হয়েছে এবং যুক্তিটাও একটা অদ্ভুত ও উদ্ভট আকৃতি ধারণ করেছে। একেই বলে অদ্ভুটুদ্ভট যুক্তি।
আজকে এই পর্যন্তই শেষ করছি। আপনারা আরো চিন্তা করলে আরো জবাব পাবেন। আল্লাহ্ আমাদের সবাইকে খঁটি ঈমানের সাথে মরার তৌফীক দান করুন। আমীন। ওয়া সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। এই পোষ্টটি পড়ে যদি কারো ভালো লাগে, তাহলে তিনি যেন শুধু ঐ আল্লাহ্ পাকেরই প্রশংসা করেন, যিনি তার বান্দাদের মাথায় এগুলো ঢেলেছেন। সকল প্রশংসা শুধু তাঁর ।
আজ ২৪-২-২০১৭ তারিখে ফেসবুকে একজনের একটা পোষ্ট থেকে আরো ২টি জবাব কপিপেষ্ট করছি কিছুটা পরিবর্তন করে।
৫-নাস্তিকেরা প্রশ্ন করে যে, আল্লাহ কি এমন পাথর বানাতে পারবেন যেটা তিনি নিজেই ভাঙ্গতে পারবেন না? এই প্রশ্ন করে তারা প্রমাণ করতে চায় যে, আল্লাহ সব কিছু করিতে পারেন না।কিন্তু তাদের এই প্রশ্নের দ্বারা মোটেই তা প্রমাণিত হয়না বরং তাদের এই প্রশ্নটা আসলে কোন প্রশ্নই হয়নি।তাদের এই প্রশ্নটা আসলে যে কোন প্রশ্নই হয়নি এবং এই প্রশ্ন দ্বারা যে আল্লাহর অক্ষমতা প্রমাণিত হয়না বরং উল্টো আল্লাহর চরম সক্ষমতা প্রমাণিত হয়, সেটা বুঝার জন্য আমরা এখন কিছু মেসাল তথা উপমা দিব। খেয়াল করুন, এখানে তিনটি বিষয়
১- আল্লাহ সব পারেন। তাই
২- তিনি যেকোন পাথর বানাতে পারেন
৩- যিনি যেকোন পাথর ভাঙ্গতে পারেন।
এমন অবস্থায় নাস্তিক এসে দাবী করছে যে, না , আল্লাহ সব পারেন না। আর এই দাবীর পক্ষে সে প্রমাণ হিসাবে বলছে যে, আল্লাহতো তো এমন পাথর বানাতে পারেন না যেটা তিনি ভাঙ্গতে পারেন না।তাহলে তিনি যেকোন পাথর বানাতে পারলেন কোথায়?
এখন নাস্তিকের এই দাবী ও প্রমাণ যে অসামঞ্জস্যপূর্ণ সেটা বুঝার সুবিধার জন্য আমরা কয়েকটা উপমা দিচ্ছি।এই উপমাগুলো ভালো করে পড়লে
১- আপনি বুঝতে পারবেন যে, এক্ষেত্রে “পারা” বা “না পারা” শব্দ প্রয়োগ করাটাই ভুল।
২-আপনি বুঝতে পারবেন যে, আল্লাহ পাকের এই “না পারাটা” শুধু মুখের কথায় আছে বাস্তবে নাই। বাস্তবে তিনি যত বড় ইচ্ছা পাথর বানাতেও পারবেন এবং বানানোর পর সেটা ভাঙতে বা তুলতেও পারবেন।
৩-আপনি আরো বুঝতে পারবেন যে, সব “পারাই” যেমন “পারা” নয়, তেমনি সব “না পারাই” কিন্তু “না পারা” বা অক্ষমতা নয়। আমাদের আলোচ্য বিষয়ের ক্ষেত্রে আল্লাহর না পারাটাই আসলে তাঁর চরম “পারা” ও পরম ক্ষমতা প্রকাশ করছে।
১ম উদাহরনঃ
ধরুন আপনি খুব মেধাবী ও ভালো ছাত্র।তাই আপনি
১- যেকোন বই পড়তে পারেন
২- যেকোন বই পড়ে বুঝতেও পারেন।
এখন কেউ বললো যে, না , তুমি সব বই পরতে পারোনা। কেননা, তুমি কি এমন একটা বই পড়তে পারবে যেটা তুমি বুঝতে পারবেনা? এখন
যদি আপনার উত্তর হয় “না‘ তাহলে কি এই কথা প্রমাণ হবে যে, আপনি সব বই পড়তে পারেননা?
আর যদি আপনার উত্তর হয় “হ্যাঁ” তাহলে কি এই কথা প্রমাণ হবে যে, আপনি সব বই বুঝেননা?
না , মোটেই প্রমাণিত হবেনা। কেননা, এই যে “না পারাটা” এটা কিন্তু শুধু কথার মারপ্যাঁচের মধ্যে আছে বাস্তবে নাই। কেননা বাস্তবে কিন্তু আপনি সব বই পড়তে পারেন এবং সব বই বুঝতেও পারেন। যেই বইটা আপনি পড়তে বা বুঝতে পারেননা সেটা শুধু কথার প্যাঁচের মধ্যে আছে, বাস্তবে সেই বই নাই।
এবার আসেন ২য় উদাহরণেঃ ধরুন আপনি
১-যেকোন পাহাড়ে উঠতে পারেন এবং
২-সেখান থেকে নামতেও পারেন।
এখন যদি কেউ বলে যে, না, তুমি যেকোন পাহাড়ে উঠতে পারোনা। কেননা, তুমি কি এমন একটা পাহাড়ে উঠতে পারবে যেটা থেকে আর নামতে পারবেনা? এখন
যদি আপনার উত্তর হয় “না‘ তাহলে কি এই কথা প্রমাণ হবে যে, আপনি সব পাহাড়ে উঠতে পারেননা?
আর যদি আপনার উত্তর হয় “হ্যাঁ” তাহলে কি এই কথা প্রমাণ হবে যে, আপনি সব পাহাড় থেকে নামতে পারেননা।
না , মোটেই প্রমাণিত হবেনা। কেননা, এই যে “না পারাটা” এটা কিন্তু শুধু কথার মারপ্যাঁচের মধ্যে আছে বাস্তবে নাই। কেননা বাস্তবে কিন্তু আপনি সব পাহাড়ে উঠতে পারেন এবং সেখান থেকে নামতেও পারেন। যেই পাহাড়টাতে আপনি উঠতে বা নামতে পারেননা সেটা শুধু কথার প্যাঁচের মধ্যে আছে, বাস্তবে সেই পাহাড় নাই। এমন “না পারাটা” আসলে কোন না পারা বা অক্ষমতা নয় বরং এই “না পারাটাই “ আসলে পারা; এই শুধু মুখের কথার অক্ষমতাটাই আসলে বাস্তবের সক্ষমতা। ((যেমন নাকি আমরা উপরে বলেছিলাম যে, কেউ যদি বলে আমার পকেটে শূন্য টাকা আছে। তাহলে এই "আছে" কিন্তু শুধু কথার আছে বাস্তবে কিন্তু নাই।))
৩য় উদাহরণঃ ধরুন আপনি
১- সব রকম কবিতা বা গজল লিখতে পারেন এবং
২- এরপর সেই গজল গাইতেও পারেন।
এখন যদি কেউ বলে যে, না, তুমি সব রকম গজল লিখতে পারোনা। কেননা তুমি কি এমন একটি গজল লিখতে পারো যেটা তুমি গাইতে পারোনা?
যদি বলো “হ্যাঁ” , তাহলেতো তুমি সব গজল গাইতে পারোনা।
আর যদি বলো “না” , তাহলেতো তুমি সব গজল লিখতে পারোনা।
এখন বলেন এই যে “না পারা” এটা কি আসলে কোন “না পারা” নাকি এটাই পারা ? এই যে “অক্ষমতা ” এটা বাস্তবে কি কোন “অক্ষমতা” নাকি এটাই সক্ষমতা ? বাস্তবে কিন্তু আপনি সব রকম গজল লিখতে পারেন এবং এরপর সেটা গাইতেও পারেন। যেই গজলটা আপনি লিখতে পারেননা সেটা শুধু তর্কবাজের মুখের মধ্যে আছে বাস্তবে নাই।
সব “পারা” কিন্তু “পারা” নয়।তেমনি সব “না পারা” কিন্তু “না পারা” নয়। কিছু “পারা” আছে যেগুলো আসলে বাস্তবে “না পারা” , সেগুলো আসলে অক্ষমতা।
তেমনি কিছু “না পারা” আছে যেগুলো আসলে বাস্তবে “পারা” , সেই “না পারটাই” আসলে সক্ষমতা।
তুমি কি পরীক্ষায় ফেল করতে পারো ? তুমি কি হোচট খেতে পার? তুমি কি খেলায় হারতে পারো? এইসব পারা কোন পারা নয় আসলে। এইসব “পারা” আসলে অক্ষমতা, দুর্বলতা।এসব ক্ষেত্রে “না পারাটাই” সক্ষমতা। বরং এসব ক্ষেত্রে “পারা” শব্দটা যুক্ত করাটাই ভুল।আবারো বলছি এসব ক্ষেত্রে পারা বা না পারা শব্দ দিয়ে প্রশ্ন করাই খাটেনা। দৈনন্দিন জীবনে কেউ, এমনকি কোন বাচ্চাও এমন ভুল করেনা; তবে কিছু তর্কবাজ নাস্তিক আল্লাহর ক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃত এই ভুল করে।
যদি আপনি উপরের উদাহরণগুলো বুঝে থাকেন তাহলে এতক্ষণে আপনি আমাদের মূল আলোচ্য প্রশ্নের জবাব পেয়ে গেছেন নিশ্চয়ই।
৬-আল্লাহ পাক যেকোন পাথরই উঠাতে বা ভাঙ্গতে পারবেন । এখন আল্লাহকে যদি কোন পাথর ভাঙ্গতে অক্ষম করতে হয়, তাহলে হয়তো অন্য কেউ আল্লাহকে অক্ষম করবে অথবা তিনি নিজেই নিজেকে অক্ষম করবেন। এখন যেহেতু অন্য কারো পক্ষে আল্লাহকে অক্ষম করা সম্ভব নয় তাই বাকী থাকে শুধু একটা অপশন।আর তা হলো আল্লাহ নিজেই নিজেকে কোন পাথর ভাঙ্গতে অক্ষম করবেন। সুতরাং আসলে যারা এই প্রশ্ন করে প্রকারান্তরে বা অন্য ভাষায় তারা আসলে এটাই বলতে চায় যে, আল্লাহ যে সব পারেন, এই গুণটাকে আল্লাহ নিজেই নিজের থেকে দূর করতে পারবেন কিনা?তো এরকমতো অনেক প্রশ্ন করা যায়। আল্লাহ কি ঘুমাতে পারবেন কিনা? আল্লাহ কি মরতে পারবেন কিনা? ইত্যাদি ইত্যাদি হাজারো প্রশ্ন করা যায়। এখানে আমরা কোন বেয়াদবের মত বলবোনা যে, আল্লাহ এসব পারেননা। বরং আমরা বলবো যে,
১ম কথা হলোএই “না পারা” আসলে কোন “না পারাই ” নয় বরং এটাই আসলে “পারা” । “মরতে না পারা” আসলে কোন “না পারা” নয় বরং এটাই আল্লাহর চরম পরম পারা ও সক্ষমতা বুঝাচ্ছে যে, আল্লাহ কোন দিন মরবেন না এবং মরার বিন্দু পরিমাণ সম্ভাবনাও নাই, কোন দিক থেকেই কোন সম্ভাবনা নেই। তিনি অতি অবশ্যই চির জীবিত থাকবেন।
২য় কথা হলো যেটা আমরা আগেও বলেছি যে, এসব ক্ষেত্রে “পারা” বা “না পারা” শব্দ যুক্ত করে প্রশ্ন করাটাই খাটেনা, এটা বোকামী,ছেলেমীপনা। কেননা আমরা আমাদের বাস্তব জীবনে সিরিয়াসলি কোনদিন এভাবে প্রশ্ন করিনা যে, তুমি কি ফেল করতে পার? তুমি কি হারতে পার? তুমি কি না পড়তে পার? (((ছেলেমিপনা করে , দুষ্টামি করে কদাচিৎ কেউ করতে পারে।))) কেননা ফেল করতে পারা আসলে কোন পারা নয় বরং পাস করাই হলো “পারা” বাস্তব জীবনে কেউ সিরিয়াসলি এভাবে কাউকে প্রশ্ন করলে বান্ধু বান্ধবরা তাকে পাগল ছাগল বলেই মন্তব্য করবে।
৩য় কথা হলো আল্লাহ যে আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন যে,তিনি সর্ব শক্তিমান; এটা উনার নিজের কোন উত্তম গুণ দূর করা বা না করা সম্পর্কে বলেননি।বরং বলেছেন মাখলুকের তথা তাঁর সৃষ্টি জগতের মধ্যে যা ইচ্ছা পরিবর্তন করার ব্যাপারে।
আরো কিছু পোষ্টঃ
হুমায়ূন আহমেদকে সবচেয়ে ভালো ডিফেন্ড করা হয়েছে যে পোষ্টে
স্রষ্টাকে কেউ সৃষ্টি করেনি, এর প্রমাণ দেখুন এই পোষ্টের ৪নং কমেন্টে।
যারা কোরানে শুধু বিজ্ঞান খোঁজেন বা যারা বিজ্ঞান দিয়ে কোরআনের ভুল ধরেন তারা সবাই একটু দেখুন। সাইন্টিফিক মেথড সম্পর্কে আগে জানুন।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:২৩