কেস স্টাডি: মুক্তার বিয়ে হয়েছিল এই বছর দু'য়েক আগে। ভালবেসেই বিয়ে করেছিল সে। বর্তমানে একা থাকে মুক্তা। কারণ বিয়ের পর সে জানতে ও বুঝতে পারে তার স্বামীর আসল চরিত্র। বনিবনার চেয়ে প্রকট হয়ে ওঠে তার স্বামীর লাম্পট্য। সে কোনভাবেই মেনে নিতে পারছিল না। তাই নিজেই ডিভোর্সের সিদ্বান্ত নেয় এবং বর্তমানে একা থাকে।
সকল অতীত, ভুল এবং যন্ত্রনা এক পাশে রেখে যখনই একা একা নিজের জীবন কাটাবে বলে মন:স্থির করে মুক্তা তখনই তার সাবেক স্বামী আবারো হানা দেয় তার জীবনে। তাকে বিভিন্ন ভাবে জ্বালাতন করে। তার কাছে জীবনটা অভিশাপ মনে হয়। তার আর বাঁচতে ইচ্ছে করে না। নতুন করে শুরু করার মনোবল হারিয়ে ফেলে মুক্তা।
উপরের বর্ণনাটি কোন কাল্পনিক ঘটনা নয়। মেয়েটির নাম শুধু কাল্পনিক। আপনাদের কাছে এ রকম ঘটনা হয়তো সাদামাঠাই মনে হয়েছে। কোন ত্রিল পাচ্ছেন না।
হ্যাঁ, এইরকম ঘটনা অহরহ ঘটছে এই বঙ্গদেশে। এটা আমাদের কাছে খুবই সাধারণ প্রব্লেম। তাই আমরা এইসবে মাথা ঘামাই না। "কোথাকার কোন মেয়ে মারা খাচ্ছে- মরে যাচ্ছে এতে আমাদের কী!"
কিন্তু আপনি যদি আপনার মনে মানুষের মানবিক গুনাবলি লালন করেন ; তখন অবশ্যই আপনার খারাপ লাগবে। আমিও আমার এই খারাপ লাগার জায়গা থেকেই লিখছি।
আমাদের সমাজ হচ্ছে পুরুষশাসিত সমাজ। এখানে মেয়ে তুমি খারাপ। সব দোষ তোমার মেয়ে! অনেক বিজ্ঞজনও বলে তুমি একটু মানিয়ে নেও। তুমি একটু রয়েসয়ে চলো। তুমি মেয়ে। তোমাকে নিজের সিদ্বান্ত নিজে নেওয়ার অধিকার দেওয়া হয়নি এখানে। প্রয়োজনে তুমি ঘরের বেড়ায় ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগাও। তুবুও চুপ করে বসে থাকো।
এই ধারণা ভেঙ্গে যাচ্ছে মনারা! ভেঙ্গে যাচ্ছে! উপরে বর্ণিত কেসের মেয়েটি মরেনি। সে লম্পটদের থাবার আড়ালেই পথ খুঁজে নিচ্ছে। সে এগিয়ে যাচ্ছে তার বিশ্বাসের ওপর ভর করে। সে জানে তাকে বাঁচতে হবে। সে জানে এ জীবন অনেক সুন্দর। সে জানে জীবনে ভুল হবে- ঝড় আসবে। এসব ঝড়-থাবা নিজের বিশ্বাসের শক্তিতে মোকাবেলা করতে হবে।
আপনাকে নিজে নিজেই পথ পাড়ি দিতে হবে।
আপনি যদি সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসী হোন; তাঁকে বিশ্বাস করেই এগিয়ে যান।
আপনার যদি শুধু নিজের প্রতি বিশ্বাস থাকে তবুও এগিয়ে যান।
হ্যাঁ, আপনি যদি বিশ্বাসী হোন- আপনি এগিয়ে যান নারী!
আপনার বিবেক কী বলে ; আপনার প্যাশন কী- আপনার মনের একান্ত অভিলাষ কী --এটা নির্ধারণ করেই আপনি সামনে এগিয়ে যান।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ২:৫৬