সম্প্রতি মাইক্রোসাইটিক অ্যানেমিয়া শব্দটি ভাগ্নের রোগ মারফত আমার সামনে আসে। মাইক্রোসাইটিক অ্যানেমিয়া হলো শরীরে রক্তস্বল্পতা। সাধারণত শরীরে আয়রন বা লৌহের ঘাটতি হলে এই সমস্যাটির উদ্ভব হয়। শরীরে যখন আয়রনের ঘাটতি থাকে তখন রক্তে হিমোগ্লোবিন উৎপাদনও কমে যায়। হিমোগ্লোবিন হলো রক্তের এমন একটি উপাদান যা রক্তে অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করে। আর এই প্রয়োজনীয় উপাদানটির উৎপাদন কমে গেলে শরীর তার প্রাপ্য অক্সিজেনের জন্য চটপট করে। ফলে মানুষের শরীর ঠিকমতো কাজ করে না। অল্প পরিশ্রমেই হাপিয়ে ওঠে, বুক ধড়ফড় করে, শরীর দুর্বল দুর্বল লাগে এবং একটু হাঁটাচলা করলেই শ্বাসকষ্ট অনুভূত হয়। সবচেয়ে বেশি যে সমস্যাটি হয় সেটি হলো ক্ষুধামন্দা। আর যখন একজন মানুষ ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া না করে, তবে অনুমিত ভাবেই শরীর-চেহারা ফ্যাকাসে হবে - কাজকর্ম, পড়ালেখায় অমনোযোগী হবে। তাই এই ব্যপারটি কোনভাবেই অবহেলার যোগ্য নয়।
শিশু ও মহিলাগণ এই রোগে বেশি ভোগেন। মহিলাগণ সাধারণত গর্ভধারণ কালে এই সমস্যায় প্রকট ভাবে পড়েন। পুষ্টিজনিত সমস্যার কারণে শিশুর শরীরে আয়রনের ঘাটতি হয়। মূলত, শিশু অপরিপক্বভাবে জন্মালে বা মাতৃদুগ্ধ কম পান করলে এই সমস্যায় ভোগতে পারে।
আপনার সন্তান- আপনজনের সন্তান বা পাড়া/প্রতিবেশীর সন্তান যদি এই দুর্বলতায় ভোগে, তাহলে একটু সতর্ক হোন অথবা সতর্ক করে দিন। এটি নিরাময় যোগ্য রোগ। কিন্তু অবহেলা করলে বা এড়িয়ে গেলে এর ফল শিশুদের ক্ষেত্রে মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। দেখা যাবে এর উপর সওয়ার হয়ে আপনার আদরের সন্তানকে থ্যালাসেমিয়া আক্রমণ করছে।
আয়রন সমৃদ্ধ খাবার (কাঁচকলা, কচুশাক, কলিজা ইত্যাদি) খেলে এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। তবে রক্তস্বল্পতা যদি প্রকট আকারে হয়- অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
ভাল থাকুন- সতর্ক থাকুন।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:৫৩