somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিভৃত পর্যবেক্ষক

১২ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কেডস পড়েছে: ৫৭ জন
স্নিকারস পড়েছে: ৪৮ জন
কনভাস পড়েছে: ৩৩ জন
নরমাল স্যান্ডেল পড়েছে: ২৯ জন

এখন পর্যন্ত হিসেব করে এই ফলাফল পাওয়া গেছে। ফিরোজের পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা ঈর্ষনীয় পর্যায়ের, হিসেবে গড়মিল হওয়ার কোন সুযোগ নেই।

ইদানীং ঢাকা শহরের মানুষের মাঝে শারীরিক ব্যায়াম সম্পর্কিত সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সকাল- বিকাল দুবেলাই মানুষজন দলে দলে জিয়া উদ্যান, সংসদ ভবনের আশ পাশ, রমনা, সোহরাওয়ার্দি উদ্যান সহ অন্যান্য ছোটখাটো পার্ক আর খোলামেলা যায়গা গুলোতে এসে ভিড় করে। কারো উদ্দেশ্য হাঁটাহাঁটি করা, কেউ করে জগিং, কেউ বা আবার বিভিন্ন শারীরিক কসরতের মহড়া দেখায়। নারী পুরুষের অনুপাত মোটামুটি ৪:১। অবশ্য দিনে দিনে এই অনুপাতের ব্যবধান কমে আসছে।

সকাল বেলা হাঁটতে আসা এই সব নারী পুরুষরা সাধারণত তিন ক্যাটাগরির হয়। প্রথম ক্যাটাগরিতে ফেলতে হবে ডায়াবেটিকস ও অন্যান্য শারীরিক সমস্যা-জনিত রোগীদের। সারা জীবন শুয়ে বসে আরাম আয়েশে কাটিয়ে দিয়েছে, এখন রোগ ধরা পড়ার পর বাঁচার তাগিদে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সকাল বিকাল হাঁটাহাঁটি করতে বের হয়! এই ক্যাটাগরিতে সাধারণত মধ্যবয়স্ক ও একটু বেশি বয়সী মানুষদের ফেলা যায়। দ্বিতীয় ক্যাটাগরিতে আছে ইয়াং ছেলে মেয়ের দল। এদের বেশিরভাগকেই দেখা যায় কানে ইয়ার-ফোন গুঁজে দিয়ে জগিং করছে। ছেলেদের উদ্দেশ্য বডি ফিট রাখা আর মেয়েদের উদ্দেশ্য বলিউডের নায়িকাদের মত স্লিম হওয়া। থার্ড ক্যাটাগরির লোকেরা জগিং এর পাশাপাশি নানা ধরনের শারীরিক ব্যায়াম করে। বডি বিল্ডার গোছের লোকজন এই ক্যাটাগরিতে পড়ে। সামান্য একটু নড়াচড়াতেই কিলবিল করে লাফিয়ে উঠে সমস্ত শরীরের শক্ত মাংসপেশিগুলো নিজেদের অস্তিত্বের জানান দেয়।

ফিরোজের আসার উদ্দেশ্য অবশ্য জগিং করা না। সে এক ঠোঙা বাদাম কিনে একটা খোলা মেলা যায়গা দেখে বসে যায়। পুরোটা সময় ধরে যারা জগিং করতে আসে তাদেরকে লক্ষ করে ফিরোজ। তাই বলে কেউ ভেবে বসবেন না যে জগিংয়ে আসা টাইট ফিট টি-শার্ট পড়া তরুণীদের বক্ষসৌন্দর্য অবলোকন করা তার উদ্দেশ্য। মনোযোগটা পুরোপুরি থাকে জগিংকারিদের পায়ের দিকে। কে কেমন ধরনের জুতো পড়ে আসে সেটা দেখাই তার উদ্দেশ্য। অবসর সময়গুলোতে পাবলিক প্লেসে বসে মানুষের পায়ের জুতো অবলোকন করা তার প্রতিদিনকার রুটিনে পরিণত হয়েছে।
“কে কেমন জুতো পড়ে সেটা দেখে তোমার কি লাভ?” এমন প্রশ্ন করলে ফিরোজের কাছ থেকে কোন সদুত্তর পাওয়া যায়না। কখনও সে বলে, “এটা আমার সখ”, কখনও বলে, “পায়ের জুতো দেখে মানুষ বিচার করার চেষ্টা করি”, কখনও কখনও বা মুচকি হাসি দিয়ে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।

অবশ্য সবসময় মানুষের পায়ের জুতোর দিকে লক্ষ করেনা ফিরোজ। এই যেমন- ভার্সিটি গিয়ে কখনোই ক্লাসমেটদের পায়ের জুতোর দিকে তাকিয়ে থাকেনা সে কিন্তু শিক্ষকদের পায়ের দিকে ঠিকই লক্ষ করে! মুল ব্যাপারটা হচ্ছে ফিরোজের সমস্ত আগ্রহ শুধুমাত্র মধ্যবয়সী পুরুষদের জুতোর দিকে। অদ্ভুত এই আগ্রহের পিছনে সঠিক কারণটা সে নিজে ছাড়া কেউ জানেনা। তাই অনেকে ব্যাপারটাকে ফিরোজের একটা সাইকোলজিক্যাল সমস্যা বলে মনে করে।

***

মনোয়ারা বেগমের সাথে শপিংয়ে যাওয়ার কথা কেউ ভুলেও চিন্তা করতে পারেনা। হাঁটতে হাঁটতে পদযুগলের অস্থি সমূহের নড়বড়ে দশা হয়! ভদ্রমহিলা যেকোনো সামগ্রীই অল্প সময়ের মধ্যে কিনতে নারাজ। দশটা- পাঁচটা দোকান দেখে অনেক যাচাই বাছাই করে অবশেষে কেনার সিদ্ধান্ত নেবেন। বেশিভাগ সময়ই দেখা যায় যে শেষ পর্যন্ত প্রথম দোকানে ফিরে গিয়ে প্রথম দেখা জিনিষটি তিনি কিনবেন! সকাল বেলা শপিংয়ে বের হলে প্রায়শই সন্ধ্যা হয়ে যায় বাড়ি ফিরতে। সারাদিন ঘুরে ঘুরে শপিং করার এতো এনার্জি এই বয়সে কোত্থেকে পান কে জানে!

কিন্তু ফিরোজ প্রায়ই বাধ্য সন্তানের মত মায়ের পিছু পিছু শপিং করতে চলে আসে। এর পিছনে আসল কারণ হল জুতোর দোকান গুলোতে অনেকক্ষণ ধরে ঘুরে ঘুরে দেখার সুযোগ পাওয়া যায়। দোকানে সাজিয়ে রাখা জুতো দেখার প্রতি তার আগ্রহ নেই। ফিরোজ শুধু লক্ষ করে ক্রেতারা কে কেমন জুতো কিনছে, কে কেমন জুতো পছন্দ করছে।

আজ মনোয়ারা বেগম একটা নামকরা বিদেশী কোম্পানির প্রমাণ সাইজের জুতোর দোকানে ঢুকতেই, ফিরোজ এক ফাঁকে সরে এলো। কাউন্টারের কাছে গিয়ে বলল, “ভাইজান, একটু সাহায্য করবেন কি?”
কাউন্টারে বসা লোকটি অতি উৎসাহিত না হলেও আগ্রহ ধরে রাখার ভান করে জিজ্ঞেস করল, “জী বলুন কি সাহায্য করতে পারি?”
“আমাকে ভার্সিটি থেকে একটা বিশেষ এসাইনমেন্ট দেওয়া হয়েছে। কোন বয়সী লোকেরা কোন ধরনের জুতো বেশি কেনে তার উপরে ছোট খাট একটা জরিপ করতে হচ্ছে। আমি কি আপনাদের ক্যাশমেমোর বইটা একটু পেতে পারি?”
“জী, আমরা আসলে ব্যবসায়িক কারণে সেলস ডাটাগুলো কারো সাথে শেয়ার করিনা”।
“কিন্তু আমি তো আপনাদের ব্যবসায়ীক প্রতিদ্বন্দ্বী না। জাস্ট স্টাডির পারপাসে ডাটাগুলো ব্যবহার করব”।
“কিন্তু ব্যাপারটা আমাদের কোম্পানির পলিসির বাইরে”।
এক মুহূর্ত চিন্তা করল ফিরোজ। মনে হচ্ছে এই ভাবে হবেনা, অন্য পদ্ধতি অনুসরন করতে হবে। বলল, “দেখুন, আমার আম্মা ঘুরে ঘুরে জুতো পছন্দ করছেন। পরিবারের সবার জন্য বেশ কয়েক জোড়া জুতো কিনবেন। ভাল সময় লাগবে, এর মাঝে আমি আপনাদের ক্যাশমেমোর বইটা দেখে একটু সময় কাটিয়ে নিতে পারতাম, স্টাডির জন্য উপকারও হত”!
আসল যায়গায় টোকা দেওয়া গেছে। অনেক জুতো যখন বিক্রি হচ্ছে সেখানে সামান্য একটু নিয়মের হেরফের হলে কি এমন আসে যায়? লোকটি ক্যাশমেমোর বই এগিয়ে দিল। বলল, “এইখানে গত এক সপ্তাহের সেলস ডাটা আছে”।

ফিরোজ খুব আগ্রহের সাথে হাতে নিল। পাতার পর পাতা উল্টে কি ধরনের জুতো, কাস্টমারের নাম কি, বয়স কত ইত্যাদি দেখতে লাগল সে।

মনোয়ারা বেগমের চারজোড়া জুতো কিনতে সময় লাগল প্রায় আধাঘণ্টা। এর মধ্যে বইটা দেখে শেষ করে ফেলেছে ফিরোজ। খুঁজে পায়নি তার কাঙ্ক্ষিত তথ্যটি।

***

“গতকাল বসুন্ধরায় রিডিক মুভিটা দেখে কেমন লেগেছিল তোমার?”
“ভালই”।
“শুধু ভাল? জান আমি ভিন ডাইজেলের কত্ত বড় ফ্যান? ওর প্রায় সব মুভিই আমি ৫-৭ বার করে দেখি”!

কেয়ার কথার দিকে মনোযোগ নেই ফিরোজের। সে দূরে বসে থাকা এক মধ্যবয়স্ক ব্যক্তির পায়ের দিকে তাকিয়ে আছে। লোকটা কি ধরনের জুতো পড়েছে এখান থেকে ঠিক বুঝা যাচ্ছেনা, কিন্তু জুতোর আকৃতিটা খুব পরিচিত ঠেকছে।
“কি হল? কি ভাবছ?”
“কই না তো!” কেয়ার দিকে ফিরে হাসল ফিরোজ।
“অন্যমনস্ক দেখাচ্ছে তোমাকে”।
“না না। শুনছি তো তোমার কথা”!
“আচ্ছা শোননা, আমাকে ভাসানি নভোথিয়েটারে বেড়াতে নিয়ে যাবে?” আদুরে কণ্ঠে বলল কেয়া। “আমি না একবারও ওখানে যাইনি...”

ফিরোজের সমস্ত মনোযোগ এখন লোকটার দিকে। লোকটা উঠে দাঁড়িয়েছে। এদিকে ঘুরলেই তার জুতো জোড়া স্পষ্ট দেখা যাবে। এখন পর্যন্ত খুব চেনা মনে হচ্ছে।
“... কি হল? নিয়ে যাবে? শুনেছি ওখানে নাকি একটা দারুণ শো হয়। মহাকাশের কোথায় কি আছে দেখায়...”!
লোকটা ঘুরতেই একরাশ হতাশা নেমে এলো ফিরোজের চোখে মুখে। নাহ! সে যা ভেবেছিল তা নয়। জুতো জোড়ার রং বাদামী।

“...কি হল? নিয়ে যাবে কিনা বলনা”!
কেয়ার দিকে ফিরল ফিরোজ, “কোথায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলছ যেন?”
কেয়া কপট রাগে ভ্রু কোঁচকাল। “তারমানে এতক্ষণ তুমি আমার কথা শোননি?”
“আসলে একটু... একটা জিনিষ...” আমরা আমতা করছে ফিরোজ।
“তুমি নিশ্চয়ই আবার মানুষের পায়ের জুতো দেখছিলে তাইনা?”
“আরে নাহ”!
“না বললে তো হবেনা! আমি বুঝতে পেরেছি! এই জন্যই আমি টিএসসিতে বসতে বলার পরও তুমি আমাকে নিয়ে এখানে এসেছ”!
“না না কেয়া”।
“মিথ্যা বলোনা ফিরোজ”। দু সেকেন্ড থেমে থাকল কেয়া। আবার বলল, “আমি তোমাকে একদিন বলেছি আমার সাথে আর যাই কর, কখনও মিথ্যা বলবে না”।
ফিরোজ মাথা নিচু করে থাকল।
“একটা কথা সত্যি করে বল তো ফিরোজ! কেন তুমি সারাক্ষণ মানুষের পায়ের জুতোর দিকে তাকিয়ে থাক?” কেয়ার কণ্ঠে স্পষ্ট বিরক্তি।
“খুঁজি”। ফিরোজের সংক্ষিপ্ত উত্তর।
“কি খুঁজ?”
“বিশেষ একজোড়া জুতো খুঁজি”।
“তোমার কথার মাথামুন্ডু কিছুই বুঝিনা আমি। জুতো খোঁজ বলে মানুষের পায়ের দিকে অমন হাভাতের মত তাকিয়ে থাকতে হবে?”
“ঐ জুতো আমি একবারই দেখেছি, আর কারো পায়ে দেখিনি কখনও”।
কথাটা শুনে দুই সেকেন্ড অবাক চোখে চেয়ে থাকল কেয়া। তারপর হঠাৎ খিলখিল করে হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ল।
“হাসছ কেন?”
হাসির কারণে কেয়া কথা বলতে পারছে না, মিনিট খানেক হেসে বেশ কষ্ট করে একটু শান্ত হল সে। তারপর বলল, “হাস্যকর কান্ড দেখে হাসব না?”
ফিরোজ হাসছে না। বিষণ্ণ গলায় বলল, “ধর একজোড়া জুতো তোমার খুবই প্রয়োজন। কিন্তু তুমি জাননা সেই জুতো কোথায় পাওয়া যাবে। এমন অবস্থায় কি করবে তুমি? চলতে ফিরতে মানুষের পায়ের জুতো দেখে বেড়াবে না?”
কেয়ার হাসি হাসি মুখটা হঠাৎ চুপসে গেল। আস্তে করে বলল, “মনে হচ্ছে এর পিছনে কোন ইতিহাস আছে! আমাকে খুলে বলবে ফিরোজ?”
“বলব। তবে আজ নয়, অন্যদিন”।

খানিকক্ষণ নিশ্চুপ নীরবতা। কেয়া মাথা নিচু করে বসে থাকল। ফিরোজ আবার একজন বয়স্ক লোকের জুতোর দিকে নজর মনোযোগ দিয়েছে। জুতোর রংটা অমন অদ্ভুত কেন?
“তোমার মনটা খারাপ করে দিলাম তাইনা?” কেয়ার কণ্ঠে অপরাধবোধ।
“না না, ঠিক আছি আমি”। কেয়ার দিকে না তাকিয়েই বলল ফিরোজ।
“আমার সাথে এক যায়গায় চল, তোমার মনটা ভাল করে দিচ্ছি”।
“কোথায়?”
কেয়া মুচকি হাসল, “আমার বাবার অফিসে। তোমার সাথে বাবার পরিচয় করিয়ে দিব”।

কেয়ার কথা শুনছে না ফিরোজ। একজন ভদ্রলোকের পায়ে একজোড়া চমৎকার ডিজাইনের জুতো দেখতে পেয়েছে সে।

***

কেয়ার বাবা মকবুল আহসান একটা বেসরকারি ব্যাংকের গুলশান ব্রাঞ্চের ম্যানেজার। আলিসান অফিসে ঢুকে নার্ভাস বোধ করছে ফিরোজ। কেয়া কি হিসেবে তাকে বাবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেবে কে জানে! ফ্রেন্ড হিসেবে পরিচয় করালে ঠিক আছে, কিন্তু বয়ফ্রেন্ড বললে লজ্জায় পড়ে যাবে সে।

কাঁচ দিয়ে ঘেরা একটা কামড়ায় বসেন মকবুল আহসান। বাইরে ফিরোজকে বসিয়ে রেখে ভেতরে ঢুকল কেয়া। খানিকবাদে দরজা খুললে উঁকি দিল আবার। বলল, “বাবা তোমাকে ভেতরে ডাকছেন”।

ভয়ে ভয়ে ভেতরে ঢুকল ফিরোজ। মকবুল আহসান অমায়িক ভঙ্গিতে হাসলেন তাকে দেখে, “বস ইয়াং ম্যান”।
বসল ফিরোজ। স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করছে কিন্তু নার্ভাসনেস কাটছে না। কি বলেছে কেয়া? ফিরোজের সাথে তার সম্পর্ক কি? ফ্রেন্ড নাকি অন্য কিছু?

মকবুল আহসান মেয়ের দিকে ফিরে বললেন, “তুই অফিস ঘুরে দেখ যাহ, আমি ফিরোজের সাথে কথা বলছি”।
“আচ্ছা” বলে ফিরোজের দিকে ফিরে একটা মুচকি হাসি দিয়ে বেরিয়ে গেল কেয়া। ফিরোজ আবিষ্কার করল এসি রুমের মধ্যে বসে থেকেও দরদর করে ঘামছে সে।
মকবুল আহসান তার মুখের অমায়িক হাসিটুকু ধরে রাখলেন। “তারপর বল ফিরোজ, কেমন আছ?”
“জী ভাল”। খুব আস্তে করে উত্তর দিল ফিরোজ।
“কেয়া আর তুমি কি ক্লাসমেট?”
“জী না। আমি দুই ব্যাচ সিনিয়র”।
“আচ্ছা! তা লেখাপড়া তো বেশি বাকি নেই। সামনে কি করবে কোন প্ল্যান করেছ?”
“জী না। এখন ওসব নিয়ে ভাবিনি”।
“ভাবতে হবে তো! ভবিষ্যতের ভাবনা এখন থেকে না করলে বিপদে পড়বে শেষে”!
কি উত্তর দিবে বুঝতে পারছেনা ফিরোজ। তবে মনে হচ্ছে কেয়া তাকে বয়ফ্রেন্ড হিসেবেই পরিচয় করিয়েছে অথবা ফ্রেন্ড বললেও তার বাবা আসল ব্যাপারটা ধরে ফেলেছেন। কোনমতে উত্তর দিল, “জী... এখন থেকে ভাবব”।

চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন মকবুল আহসান। “আমি যখন ঢাকা শহরে এসেছিলাম, তখন আমার কাছে কত টাকা ছিল শুনবে?”
“জী শুনব”। যদিও শোনার ইচ্ছে ফিরোজের নাই।
“মাত্র ২০ টাকা। আমি লাইফে অনেক স্ট্রাগল করেছি ফিরোজ! কত্ত বেলা যে না খেয়ে থেকেছি...”

অতীত স্মৃতি রোমন্থন করতে করতে আহসান সাহেব মনে হচ্ছে যেন সেই অতীতেই ফিরে গেছেন! সারা অফিস রুমে পায়চারী করছেন আর কথা বলছেন। কিছুক্ষণ শোনার পরই বিরক্ত হয়ে গেল ফিরোজ। তবু একজন মনযোগী স্রোতার ভূমিকায় অভিনয় করতে হচ্ছে তাকে!
“আমি চাকরীর জন্য হন্যে হয়ে এই অফিস থেকে ঐ অফিস ঘুরেছি। মামা চাচার জোর ছিলনা, ঘুষ দেয়ার ক্ষমতা ছিলনা...”

রুমের এই কোনা থেকে ঐ কোনায় হাঁটছেন মকবুল আহসান। হঠাৎ তার পায়ের দিকে নজর গেল ফিরোজের। মারাত্মক বৈদ্যুতিক শক খেলে যেমন হয় তেমন একটা অনুভূতি ছড়িয়ে গেল ফিরোজের সমস্ত শরীরে। মাথাটা ঝিম ঝিম করে উঠল!
এই সেই জুতো!

নিজের চোখকে বিশ্বাস হচ্ছেনা ফিরোজের!

এই সেই জুতো!

এত্তদিন যে জুতো খুঁজে বেড়াচ্ছে ফিরোজ!

এই সেই জুতো!

***

১২ বছর আগে...

বাবা- মা জরুরী কারণে দুদিনের জন্য গ্রামের বাড়িতে গেছেন। বাসায় ফিরোজ আর তার বড়বোন শেফালী থাকে। ফিরোজ পড়ে ক্লাস সিক্সে আর শেফালি ইন্টারের ছাত্রী। দু ভাইবোনের মধ্যে সখ্যতা ঈর্ষনীয় পর্যায়ের। ফিরোজ তো শেফালিবু বলতেই অজ্ঞান। মা খুব ভাল করে বলে গেছেন এই দুই দিন একান্ত প্রয়োজন না হলে যেন বাইরে বের হয় তারা কেউ। ফ্রিজে রান্না করা খাবার রেখে গেছেন। সময় হলে একটু গরম করে নিয়ে দুই ভাইবোন খেয়ে ওঠে।

এক রাতের কথা। ফিরোজের খুব পানির তেষ্টা পেল। রুম থেকে বেরিয়ে কিচেনের দিকে আসতেই শেফালীবুর রুম থেকে কেমন যেন একটা শব্দ শুনতে পেল। প্রথমে আমলে নিলনা ফিরোজ কিন্তু শব্দটা দ্বিতীয়বার শোনার পর আগ্রহী হয়ে উঠল। এগিয়ে গেল রুমের দিকে, দরজার কাছে আসতেই টের পেল শব্দটা এখন আরও বেশি স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে। একবার ভাবল দরজায় টোকা দেবে, কিন্তু কিছু একটা ভেবে নিজেকে বিরত করল ফিরোজ। দরজার কি-হোলে চোখ রাখল ভেতরে কি হচ্ছে দেখার উদ্দেশ্যে।

ভেতরে অল্প পাওয়ারের একটা ডিম লাইট জ্বলছে। সেই আলোতে ফিরোজ দেখল একজন পুরুষ মানুষ তার বুবুর ওপর শুয়ে আছে। অল্প আলোতে ঠিক মত বোঝা যাচ্ছেনা। কিন্তু মনে হচ্ছে দুজনের কারো শরীরে কাপড়-চোপড় নেই। সে বয়সে ফিরোজের নারী পুরুষের দৈহিক মিলন সম্পর্কে কোন স্পষ্ট ধারনা ছিলনা। কিন্তু বুঝতে অসুবিধা হয়নি যে তার বুবু অচেনা একটা লোকের সাথে এমন কোন কাজ করছে যা অনৈতিক।
লোকটাকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল না। শুধু মেঝেতে লোকটার একজোড়া জুতো পড়ে ছিল। এমন চমৎকার ডিজাইনের জুতো সচরাচর চোখে পড়েনা। কালো আর লাল রঙে মেশানো চামড়ার জুতো। জুতোর সোলের চারিদিকে সাদা রঙের বর্ডার করা।
এই ঘটনার ৭-৮ মাস পরে একদিন ছাঁদ থেকে লাফিয়ে পরে শেফালী আত্মহত্যা করে। সেই বয়সে ফিরোজ বুঝতে পারেনি তার বুবুর আত্মহত্যার কারণ।

অবশ্য একটা সময় পুরো ঘটনাটা বুঝে নিতে আর কোন সমস্যা হয়নি ফিরোজের। তার বোন শেফালী মৃত্যুর সময় প্রেগন্যান্ট ছিল। এই জন্য দায়ী সেই লোকটার আর কোন খোঁজ খবর পাওয়া যায়নি। নরপশুটা শেফালীকে ধোঁকা দিয়ে পালিয়েছে। তাই লোকলজ্জার ভয়ে শেফালী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিল।
সেদিন লোকটাকে অন্ধকারে চিনতে পারেনি ফিরোজ। কিন্তু তার জুতোজোড়া স্পষ্ট দেখতে পেয়েছিল। সেই থেকে ফিরোজ এই শহরের অলি গলি ঘুরে মানুষের পায়ে পায়ে খুঁজে বেরায় ঐ জুতো! হতে পারে লোকটি আর সেই জুতো পড়েনা, হতে পারে ঐ একই জুতো অন্য অনেকেই পড়ে, কিন্তু ফিরোজের কি করার আছে? লোকটাকে খুঁজে পেতে হলে জুতো খোঁজা ছাড়া আর কোন পথ খোলা নেই তার সামনে!

এতদিনে সেই জুতোর সন্ধান মিলেছে!

এই সেই জুতো!

***

“কেয়া, বলতো আমি এখন কোথায়?”
“তোমার রুমে”।
“জী না”।
“তাহলে কোথায়?”
“তোমার বাসার নিচে দাঁড়িয়ে আছি”।
“বল কি?” অবাক হল কেয়া। “এত রাতে এখানে কি কর?”
“তোমাকে একবার দেখতে খুব ইচ্ছে করছিল”। আদুরে কণ্ঠে বলল ফিরোজ।
“কিন্তু এতো রাতে আমাকে দেখবে কি করে?”
“একটু নিচে নেমে গেট খুলে দাওনা। দারোয়ান তো ঘুমিয়েছে, কেউ টের পাবেনা”।
“আব্বা জানতে পারলে আমাকে মেরে ফেলবেন”। যদিও রাগ করার ভান করছে কেয়া কিন্তু গভীর রাতে মিষ্টি মধুর অভিসারের কথা চিন্তা করে তার সমস্ত শরীরে কেমন যেন একটা ভাল লাগার অনুভূতি খেলে যাচ্ছে!
“আরেহ না! কিচ্ছু হবেনা। কেউ টের পাবেনা, আর পেলেই বা সমস্যা কি? আঙ্কলের সাথে সেদিন আমার পরিচয় করিয়ে দিয়েছ না? উনি তো আমাকে খুব পছন্দ করেছেন”। অভয় দেওয়ার ভঙ্গিতে শব্দ করে হাসল ফিরোজ।

খানিকবাদে কেয়া এসে গেট খুলে দিতেই ফিরোজ ভেতরে ঢুকে তাকে দুহাতে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল।
“আরেহ কি করছ”! কেয়ার কণ্ঠে রাগ নয়, ভাললাগার প্রকাশ।
“তোমাকে এই মুহূর্তে একনজর দেখতে খুব ইচ্ছে করছিল! তাই না এসে আর পারলাম না।“
“ইস! এমন পাগল আর দেখিনি! এখানে না, আমার রুমে চল”। কথাটা বলেই লজ্জা পেয়ে গেল কেয়া।

চারতলা বাড়িটিতে কেয়ারা একাই থাকে। উপরের তালা দুটি সম্পূর্ণ খালি পড়ে আছে। নীচ তলায় গেস্টদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেয়ার মা নেই, মারা গেছেন বছর তিনেক আগে। বাবা আর সে থাকে দোতালায়।

কেয়ার পিছু পিছু দোতালায় উঠে এলো ফিরোজ। তার হাতে একটা ব্রিফকেস। কেয়ার রুমে ঢোকার পর ব্রিফকেসটা বিছানায় ছুড়ে ফেলে আবার জড়িয়ে ধরল তাকে। কেয়া বাঁধা দিচ্ছেনা। কয়েক মুহূর্ত আর মুখে কোন কথা হলনা দুজনের।
এক ফাঁকে কেয়া প্রশ্ন করল, “ঐ ব্রিফকেসে আছে কি”?
“তোমার...” ফিরোজের কণ্ঠে শুনে মনে হচ্ছে মাদকের নেশায় বিভোর। “তোমার জন্য একটা গিফট এনেছি”।
“দেখাও না”। আহ্লাদী কণ্ঠে বলল কেয়া।
“এখন দেখাব না। একটু পরে...”

কেয়ার শ্বাস প্রশ্বাস ঘন হয়ে আসছে। সে আবেশে দুচোখ বন্ধ করে ফেলেছে। সুযোগটা চিনতে ভুল হলনা ফিরোজের। পকেট থেকে ক্লোরোফোম মিশ্রিত রুমাল বের করল। চেপে ধরল কেয়ার নাকে মুখে।

১০ সেকেন্ডের মধ্যে জ্ঞান হারিয়ে ঢলে পড়ল কেয়া। তাকে আস্তে করে ধরে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিল ফিরোজ। অর্ধেক কাজ শেষ হয়েছে।

বিছানায় শুয়ে নাক ডেকে ঘুমচ্ছিলেন মকবুল আহসান। প্রত্যেকবার প্রশ্বাস নেওয়ার সাথে সাথে ভুঁড়িটা যেন এক হাত উঁচু হয়ে যাচ্ছে। ক্লোরোফোম মিশ্রিত রুমাল টা নাকে চেপে ধরার ১০ সেকেন্ডের মধ্যে তার শ্বাস- প্রশ্বাস ভারী হয়ে আসল। অর্থাৎ জ্ঞান হারিয়েছে।

এবার রুমাল ফেলে ব্রিফকেসটা খুলল ফিরোজ। ভেতর থেকে ছোট আকৃতির একটা ইলেকট্রিক করাত বের হল। করাতের সকেটটা হাতে নিয়ে রুমের ভেতর প্লাগের খোঁজে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে সে। দু ঠোঁটের ফাঁক গলে বেরিয়ে এসেছে কয়েকটা জান্তব দাঁত। দুচোখে জ্বলছে একশো পৃথিবী পুড়িয়ে দেওয়ার আগুন!

এবার প্রতিশোধ নেবার পালা! নিভৃত পর্যবেক্ষকের একটি মহান দায়িত্বের এখানেই সমাপ্তি।

***

সাধারণত আজাদ স্যার কখনও ক্লাসে আসতে দেরি করেন না। ফিরোজ ভেবেছিল আজ আর ক্লাস পাবেনা। কিন্তু কপাল ভাল আজার স্যার কোন কাজের ঝামেলায় পরে হয়ত একটু দেরি করছেন আজ! ফিরোজ ক্লাসে ঢুকতেই তাকে দেখে এগিয়ে এলো সবচেয়ে কাছের বন্ধু জাহিদ। “কি রে? আজকে তোকে খুশি খুশি লাগছে যে খুব”।
ফিরোজ হাসল, “একটা দায়িত্ব কাঁধ থেকে নেমে গেছে দোস্ত”!
“কি দায়িত্ব?”
“তোর শুনতে হবেনা”।
“আচ্ছা না বলতে চাইলে বলিস না!” ফিরোজের কাঁধে হাত রেখে বলল জাহিদ। “অন্তত এটাতো বল যে আজ সকালে রমনায় গিয়ে মানুষের পায়ে কোন ধরনের জুতো বেশি দেখলি?”
ফিরোজ নিঃশব্দে হাসল।
“হাসছিস কেন?”
“আজ রমনায় গিয়েছিলাম ঠিকই, অনেক দিনের অভ্যাস সহজে যাবে না! তবে মানুষের পায়ের জুতো দেখিনি আজ, নিজেই ব্যায়াম করেছি”!

জাহিদ আরও কিছু বলতে যাচ্ছিল কিন্তু ক্লাসে স্যার চলে এলেন দেখে আর কথা হলনা।

আজাদ স্যার প্রজেক্টরে পাওয়ার পয়েন্ট স্লাইড ওপেন করে এক্সপোর্ট ইম্পোর্ট ব্যারিয়ার সম্পর্কে আলোচনা শুরু করলেন। বেশ ইন্টারেস্টিং একটা টপিক, ফিরোজ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি খাতায় টুকে নিচ্ছিল। হাত ফসকে কলমটা পরে গেল। নিচু হয়ে কলমটা তুলতে গিয়ে পাশের চেয়ারে বসে থাকা বন্ধু জাহিদের পায়ের দিকে নজর গেল তার। এবং প্রায় সাথে সাথেই জমে গেল ফিরোজ, কলম তুলতে ভুলে গেছে যেন!

জাহিদের পায়ে কালো আর লাল রঙের ডিজাইন করা চামড়ার জুতো। সোলের চারিদিকে সাদা রঙের বর্ডার। খুবই চমৎকার আর আনকমন টাইপের জুতো। বাকিটা ক্লাসে আজাদ স্যার কি বললেন তার এক বর্ণও কানে ঢুকল না ফিরোজের। তার সমস্ত মনোযোগ একীভূত হয়ে আছে পাশে বসা বন্ধু জাহিদের জুতোর দিকে।

ক্লাস শেষ হতেই জাহিদকে পাকড়াও করল ফিরোজ, “এই জুতো তুই কোথায় পেয়েছিস জাহিদ?”
“নতুন কিনলাম। সুন্দর না?”
“হ্যা, কিন্তু এই ডিজাইনটা তোর পছন্দ হওয়ার কি কোন কারন আছে?”
“আমি যখন ছোট ছিলাম তখন আমার আব্বুর এই ডিজাইনের একজোড়া জুতো ছিল। পরে বাটা কোম্পানি এই মডেলের জুতো উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছিল। অনেক বছর পর আবার বাজারে এনেছে”।

ফিরোজ যেন অন্য কোন জগতে চলে গেছে। গতকাল আহসান সাহেবকে তার প্রাপ্য শাস্তি দিয়ে এসে নিজেকে খুব হালকা লাগছিল, কিন্তু আজ আবার তার ভেতরের পৃথিবীটা নড়ে গেছে!
“কিরে ঝিম মেরে গেলি কেন?”
“কিছুনা! কাল তো ভার্সিটি বন্ধ তাইনা?” প্রশ্ন করল ফিরোজ।
“হ্যা”।
“ তুই তো অনেকদিন ধরে বলছিলি এক রাত তোর বাসায় থাকা জন্য, সারারাত কার্ড খেলে কাটায় দিবি”।
“হ্যা। আসবি আজকে?”
“হুম। আসা যায়, কিন্তু আঙ্কেল কি বাসায় থাকবেন?”।
“থাকবে, কিন্তু সমস্যা নাই, আব্বু কিচ্ছু টের পাবেনা”।

ফিরোজের ঠোঁটের কোনে হালকা হাসির আভাস! “ঠিক বলেছিস, কিচ্ছু টের পাবেন না উনি”!
ফিরোজের হাসির মর্ম বোঝেনি জাহিদ। রাতটা দারুণ কাটবে ভেবে উত্তেজিত হয়ে পড়েছে সে। “মহসিন আর আফজালকেও ডাকব নাকি? বেশি মানুষ হলে জমবে ভাল”।
“ডাকিস...”

***

মায়ের কাছে “রাতে বাসায় ফিরব না” বলে বের হল ফিরোজ। জাহিদের বাসায় থাকার প্ল্যান হয়েছে। সারারাত ম্যারাথন “টুইনটি নাইন” চলবে। আফজাল আবার লালপানির ব্যবস্থা করেছে! কেরু কোম্পানির ভদকা। খুব কড়া স্বাদ, গিলতে বেশ বেগ পেতে হয়। কিন্তু দু ঢোঁক পেটে নামতেই অল ক্লিয়ার!

প্যান্টের বা পকেটে বড় সাইজের রুমাল আর ডান পকেটে ছোট্ট একটা ক্লোরোফোমের শিশি। আর হাতে যথারীতি ব্রিফকেসটা আছেই।

বিশুদ্ধ চিন্তা ভাবনার গায়ে আচর কেটেছে প্রতিশোধ স্পৃহার দূষণ। ফিরোজ যাচ্ছে প্রতিশোধ নিতে। একজন নিভৃত পর্যবেক্ষক তার পর্যবেক্ষণ থেকে প্রাপ্ত ইতিবাচক তথ্যের সদ্ব্যবহার করতে যায়। তা নাহলে নিজের পর্যবেক্ষণ ক্ষমতার অপমান হবে যে!

শেফালী বুবুর মৃত্যুর জন্য দায়ী লোকটাকে চেনে না ফিরোজ। শুধু জানে সেই নরপশু একটা নির্দিষ্ট ডিজাইনের জুতো পড়ত। সুতরাং ঐ ডিজাইনের জুতো পড়া সবাইকে ঘৃণ্য শাস্তি দেওয়ার পণ করেছে সে। এভাবেই হয়ত একসময় আসল লোকটি তার প্রাপ্য শাস্তি পেয়ে যাবে। আর সেই সাথে বোনের মৃত্যুর প্রতিশোধ নেয়ার কাজটি সম্পন্ন হবে।

একজন দোষীর শাস্তি নিশ্চিত করতে গিয়ে কিছু নির্দোষকে বলি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফিরোজ। স্বাভাবিক চিন্তা ক্ষমতা লোপ পেয়েছে তার। শুধু মাথায় একটা চিন্তাই ঘুরপাক খাচ্ছে-

এই সেই জুতো!

লাল আর কালো রঙের ডিজাইনের চারিদিকে সাদা বর্ডার!

এই সেই জুতো!

(সমাপ্ত)

***

উৎসর্গঃ প্রিয় ব্লগার মাহমুদ ০০৭
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১২:২৮
২৫টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×