কোনো একটি কাজ করলে তার যে অবশ্যম্ভাবী ফল দাঁড়াবে তার উভয়টিকে আশ্চর্য্যজনকভাবে সমান সংখ্যায় বর্ণনা করা হয়েছে। 'গাছের চারা উত্পাদন' করলে 'গাছ' হয়। তাই এ দুটো শব্দ এসেছে ২৬ বার করে। কোনো মানুষ 'হেদায়াত' পেলে তার প্রতি 'রহমত' বর্ষিত হয়, তাই এ দুটো শব্দ কোরআনে এসেছে ৭৯ বার করে। 'হায়াতের' অপরিহার্য পরিনাম হচ্ছে 'মওত' এ শব্দ দুটোও এসেছে ১৬ বার করে। 'যাকাত' দিলে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন 'বরকত' আসে, তাই কোরআনে করীমে 'যাকাত' শব্দ এসেছে ৩২ বার 'বরকত' শব্দও ৩২ বার এসেছে। 'আবদ' মানে গোলামী, আর 'আবীদ' মানে গোলাম। গোলামের কাজ গোলামী করা, তাই কোরআনে এই উভয় শব্দই এসেছে ১৫২ বার করে। 'মানুষ সৃষ্টি' কথাটা এসেছে ১৬ বার, আর মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য হচ্ছে 'এবাদাত' সুতরাং তাও এসেছে ১৬ বার। 'নেশা' করলে 'মাতাল' হয়, তাই এ দুটো শব্দও এসেছে ৬ বার করে।
আর মাত্র দুটো মোজেযা বলে এ আলোচনা শেষ করবো।
কোরআনে 'ইনসান' শব্দটি এসেছে ৬৫ বার। এবার ইনসান বানাবার উপকরণগুলোকে কোরআনের বিভিন্ন জায়গা থেকে যোগ করে মিলিয়ে দেখা যাক। প্রথম উপাদান 'তোরার' বা 'মাটি', এটি এসেছে ১৭ বার, দ্বিতীয় উপাদান 'নুতফুল' বা 'জীবন কণা', এটি এসেছে ১২ বার, তৃতীয় উপাদান 'আলাক' বা 'রক্ত পিন্ড', এটি এসেছে ৬ বার, চতুর্থ উপাদান 'মেদা' বা 'মাংসপিন্ড', এটি এসেছে ৩ বার। পঞ্চম উপাদান হচ্ছে 'এযাম' বা 'হাড়' এটি এসেছে ১৫ বার। সর্বশেষ উপাদান হচ্ছে 'লেহাম' বা 'গোস্ত', এ শব্দটি এসেছে ১২ বার। কোরআনে উল্লেখিত (সূরা হাজ্জঃ আয়াত ৫) এ উপাদানগুলোকে যোগ করলে যোগফল হবে ঠিক ৬৫। আর এসব উপাদান দিয়ে যে 'ইনসান' বানানো হয়েছে তাও ঠিক ৬৫ বারই উল্লেখ করা হয়েছে।
আল্লাহ তায়ালা কোরআনের সূরা 'আল কামার' এর প্রথম যে আয়াতটিতে চাঁদ বিদীর্ণ হওয়ার সাথে কেয়ামতের আগমন অত্যাশন্ন কথাটি বলেছেন আরবী বর্ণমালার আক্ষরিক মান হিসাব করলে তার যোগ ফল হয় ১৩৯০, আর এই ১৩৯০ হিজরী (১৯৬৯ খৃষ্টাব্দ) সালেই মানুষ সর্বপ্রথম চাঁদে অবতরণ করে, জানিনা এটা কোরআনের কোনো মোজেযা, না তা এমনিই এক ঘটনাচক্র ! কিন্তু আল্লাহ তায়ালার এই মহান সৃষ্টিতে তো ঘটনাচক্র বলতে কিছুই নাই। এ কারণেই হয়তো মানুষের চাঁদে অবতরণের সালের সাথে কোরআনের আলোচ্য আয়াতটির সংখ্যামানের এই বিস্ময়কর মিল আমরা দেখতে পাচ্ছি।
~~~সমাপ্ত~~~
উৎসঃ আল কোরআন একাডেমী লন্ডন
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুলাই, ২০০৭ বিকাল ৫:৪১