ফাহাদ এবার S.S.C. পরীক্ষার্থী । "ছাত্র হিসেবে সে কেমন ?" এই প্রশ্নের জবাবে বলতে হয় - সে বিগত ৫ বছর ধরে বিশেষ বিবেচনায় উত্তীর্ণ হয়ে এ পর্যন্ত এসেছে ।।বাংলায় সে দুর্দান্ত হলেও অন্য সব বিষয়ে দুর্বল আর অংকে সেতো একেবারেই কাঁচাকলা । টেস্ট পরীক্ষায় অংকে ১৫ পেয়ে এস এস সি পরীক্ষার প্রথমে জন্যে অনুমতি না পাওয়ায় তার বাবা স্কুলের বারান্দায় জুতার তলা ক্ষয় করে করে, হেড স্যারের অপমান সহ্য করে, মুচলেকা দিয়ে কোন মতে পারমিশন পাইয়ে দিয়েছে। আর ফাহাদকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে যদি সে ফেল করে তাহলে সে তার বাবার মরা মুখ দেখবে ।
বাবা হিসেবে তার বাবাকে পৃথিবীর সবচে সেরা বাবা বলে মনে করে ফাহাদ ।সেই ছোট বেলা থেকে কখনোই বকুনিও দেয়নি তাকে , আজকে বাবার অপমানের কষ্টেভেজা ,অভিমান মাখা আল্টিমেটাম তার মনে খুব দাগ কাটে। চাপে ভেঙ্গে পড়তে পড়তেও যেন সে ভাঙ্গে না। এক সময় পরীক্ষা এসে যায় সব পরীক্ষা ভালোই যায়।আজ তার শেষ পরীক্ষা অংক ,খুব ভোরে উঠেই ফজরের সালাত আদায় করেই সে প্রতিদিনের মতো কুরান পাঠ করে,মায়ের হাতের খিছুড়ি সকাল সকাল খেতে খুব পছন্দ করে সে তাই মা তাকে খিছুড়ি রেঁধে দেয় এবং পেঠ ভরে খেয়ে সম্পাদ্যে চোখ বুলিয়ে মাকে সালাম করে রওনা হয় সে। পথে ভাবতে থাকে কোন মতে এ পরীক্ষায় ৩৩ পেলেই সে ম্যাট্রিক পাস টাইটেল পাবে ,বাবাই সবচে বেশী খুশি হবে, বাবার সাথে ঘুরতে যাবে কক্স-বাজার ,সে কখনই সে যায়নি সমুদ্রচরে, সমুদ্রের বিশালতা দেখেনি নিজ চোখে নিজের বাবার মনই তার কাছে সমুদ্র মনে হয় । এসব ভাবতে ভাবতে সে পরীক্ষার সেন্টারের কাছে আসতে না আসতেই কোন এক দলের প্রতিবাদ(?) মিছিল থেকে একটি কক্টেল এসে পড়ে তার মাথায়। মৃত্যু দূতের সাথের লড়াই করে পরদিনি সে পরাজিত হয় মৃত্যুদূতের কাছে ।
ছোট বেলায় একটা কবিতা লিখেছিল সে-"স্বপ্ন কেন দেখি তবু,ভেঙ্গে যাবে জানি " কবিতার এই লাইনের মতনই তার জীবনে স্বপ্ন ভেঙ্গে যায়।
(ইচ্ছা হলে ফেবুতে এড করতে পারেন)