Agamemnon ছিলেন Mycenae রাজ্যের রাজা। যিনি প্রাচীন
গ্রিসের প্রায় প্রতিটি রাজ্যের রাজাকে হারিয়েছিলে এবং
তাদেরকে নিজের অনুগত করে নিয়েছিলেন। তার ভাই
Menelaus ছিলেন স্পার্টার রাজা। যার স্ত্রী ছিলেন Helen।
অধিকাংশ লোকের ধারণা মতে এই হেলেনই ছিলেন ট্রয়
সভ্যতা ধ্বংস হবার প্রধান কারণ। আসলেই কি তাই?
স্পার্টা আর ট্রয় সবসময়ই বিরোধী পক্ষ ছিল। কিন্তু তৎকালীন
ট্রয়ের অধিপতি প্রিয়াম বেশ বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়ে
স্পার্টার রাজা মেনেলাসের সাথে সন্ধি করতে আগ্রহ প্রকাশ
করেন। মেনেলাসও তাতে সম্মতি দেন। তারা সন্ধি চুক্তি
সম্পন্নও করে। কিন্তু প্যারিস (প্রিয়ামের ছোট পুত্র)
হেলেনকে নিয়ে ট্রয়ে পালিয়ে এলে ঘটনার প্রেক্ষাপট দ্রুত
বদলাতে শুরু করে। মূলত হেলেন ও প্যারিস পরস্পরকে ভালবাসত।
আর রাজা মেনেলাস একরকম জোর করেই হেলেনকে অধিকার
করে রেখেছিলেন। (এটা প্রাচীন সব রাজা-বাদশাদেরই
বৈশিষ্ট্য ছিল)। তাই হেলেনও প্যারিসের সাথে পালিয়ে
আসতে উদ্বুদ্ধ হয়।
রাণীকে নিয়ে পালালো আর রাজা বসে বসে আঙুল চুষবে তাই
কি হয়? তাই রাজা মেনেলাস তার ভাই এগামেমননের সাহায্য
চায় ট্রয়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিতে। এগামেমনন আগে
থেকেই ট্রয়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়াতে আগ্রহী ছিলেন। উদ্দেশ্য
ছিল ট্রয় দখল। স্পার্টা ও ট্রয়ের সন্ধিচুক্তি হওয়ায় তা তিনি
করতে পারছিলেন না। কিন্তু যখন মেনেলাসই সাহায্য চাইতে
এল তখন তার কপাল খুলে যায় এবং তার মিত্র/অনুগত বাহিনী
নিয়ে ট্রয়ের দিকে এগিয়ে যায়। তারা প্রায় দশ বছর ট্রয়
ঘেরাও করে রাখে। এবং অবশেষে একটি ঘৃণ্য পন্থা অবলম্বন
করে ট্রয় নগরীর ভেতরে ঢুকতে সমর্থ হয়। তারা ট্রয়ের প্রতিটি
নাগরিককে জবাই করে হত্যা করে শুধুমাত্র কিছু নারী ও শিশু
বাদে। যাদেরকে পরবর্তীতে দাস হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
মূলত এভাবেই প্রায় তিন হাজার বছরের একটি সভ্যতা ধ্বংস
হয়ে যায়। এখন একটু বিশ্লেষণ করে বলুন তো, ঠিক কেন হেলেনই
দায়ী হবেন?
পুরুষতান্ত্রিক সমাজে কি নারীর ভালবাসার অধিকারটাও
অপরাধ?
মূল কারণ হল লোভ। এই লোভের কারণেই একটা সভ্যতার এমন
করুণ পরিণতি। এ লোভ হতে পারে নারীর প্রতি লোভ, কিংবা
ক্ষমতার প্রতি লোভ। আসলে এই লোভটাই মানুষের সবচেয়ে বড়
শত্রু। সেই সৃষ্টির শুরু থেকে আদম (আঃ) এর গন্ধম ফল কিংবা
বর্তমানের পরাশক্তি দেশগুলোর আগ্রাসী নীতি- সবই কিন্তু
লোভ। আর এই লোভের ফসল হল সন্ত্রাসবাদ/জঙ্গিবাদ এর
উত্থান এবং সাধারণ মানুষের চোখের জল ও রক্ত এক হয়ে
মিশে যাওয়া।
এই লোভটাকে যদি আমরা সংবরণ করতে পারি তবেই আত্মিক
শান্তি পাওয়া সম্ভব, যা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, পৃথিবীর বুকে
একটি স্বর্গ গড়ে তুলতে।