মোহনা হল-এ ফিরল হাতে কয়েকটা শপিং ব্যাগ নিয়ে।
নীলা তো একেবারে অবাক, কিরে ক’দিন থেকেই না শুনছি টাকা নেই। বাড়িতে টাকার জন্য মোবাইল করলি, বাড়ি থেকে টাকা এসেছে নাকি?
না রে বাড়ি থেকে টাকা আসেনি, হৃদয়ের সঙ্গে দেখা করতে গেছিলাম না, ও একরকম জোর করে শপিং করতে নিয়ে গেল। তারপর মার্কেটে গিয়ে এটা-সেটা করে কিনতে কিনতে অনেক কেনাকাটা হয়ে গেল। আমি এত করে নিষেধ করলাম ও আমার কোন নিষেধ মানতেই নারাজ। একটা একটা করে থ্রি-পিস্ আমার গায়ে এলিয়ে ধরে বলল, এটা তোমাকে খুব সুন্দর মানাবে, সেটা তোমাকে সুন্দর মানাবে তারপর শেষে একটা জামদানি শাড়ি আরো কত কস্মেটিকস্ কিনে দিল।
টাকা দেয়নি?
হ্যাঁ টাকাও দিয়েছে। তবে কৌশলে।
কী রকম?
আমাকে বলল, বন্যা তোমার ব্যাগটা দাও তো একটু দেখি।
আমি ব্যাগটা দিলাম।
তারপর ব্যাগের মধ্যে একটা খাম ঢুকিয়ে দিয়ে বলল, তোমার মোবাইলে আমি একটা ম্যাসেজ পাঠাচ্ছি, তুমি চলে যাবার পর ম্যাসেজের ইন্সট্রাকশন অনুযায়ী কাজ করবে।
আমি বললাম, করব।
বলল না এভাবে বললে হবে না, তারপর হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল, প্রোমিজ!
আমি প্রোমিজ করলাম।
নীলা কৌতুহলী হয়ে বলল, তারপর-
তারপর আমার মোবাইলে একটা ম্যাসেজ পাঠিয়ে দিয়ে বলল, চলো তোমাকে নামিয়ে দিয়ে আসি।
আমাকে টি.এস.সি’তে নামিয়ে দিয়ে চলে গেল।
তুই ম্যাসেজটা ওপেন করিস্নি?
হ্যাঁ করেছি এবং সেভাবে কাজ করেছি।
কী করলি?
আমি হল-এর গেট-এ ঢুকলাম তারপর ম্যাসেজটা ওপেন করলাম, প্রথমে লিখা ছিল, Don’t Open It, When Any Body Follow You পড়ার পর আমি চারিদিকে একবার তাকালাম কেউ আমাকে ফলো করছে নাকি। দেখলাম কেউ নেই তারপর অনেকটা স্পেস দেয়া আছে এটা করেছে মনে হয় কৌতুহল বাড়িয়ে দেয়ার জন্য যেন পড়ার আগে একটু অন্যরকম লাগে। তারপর Don’t Open It, When Any Body Looking You আমি আবার চারিদিকে একবার তাকালাম কেউ আমার দিকে তাকাচ্ছে নাকি? দেখলাম কেউ আমার দিকে তাকাচ্ছে না আরো কিছুটা এগিয়ে পড়লাম তারপর লিখা আছে Don’t Open It, When Any Body Dout You. আমি একবার মনে মনে ভেবে নিলাম কেউ আমার গতিবিধি সন্দেহ করছে নাকি? না আমাকে কেউ সন্দেহ করেছে বলে আমার মনে হয়নি।
তারপর-
তারপর লিখেছে Don’t Open It, When You Are Doing.
আমি তখন দাঁড়িয়ে গেলাম, ভাবছিলাম ম্যাসেজটা এ পর্যন্তই শেষ হবে।
নীলা জিজ্ঞেস করল, আরোআছে নাকি?
হ্যাঁ অনেকটা স্পেস দিয়ে লিখেছে Don’t Open It, When You Are Boring.
আমি মোটেই বোর ফিল করছিলাম না। আমি আরো কিছুটা ওপেন করলাম।
তারপর লিখেছে Open It Now Or You Will Loss Something.
তারপর খুললি?
হ্যাঁ দেখলাম খামের ভিতর পাঁচ হাজার টাকা।
খুব ইন্টারেস্টিং মানুষ তো।
ইন্টারেস্টিং তো বটেই তবে-
তবে কি?
ওর বয়সটা একটু বেশি।
কত?
মনে হয় ত্রিশ এক্সিড করেছে, তবে বয়স বোঝা যায় না।
তোর পছন্দ হয়েছে?
পছন্দ-অপছন্দের কথা জিজ্ঞেস করছিস্ কেন? একদিনের দেখাতেই পছন্দ-অপছন্দের কথা বলা যায়?
বাঃ রে একজনের সঙ্গে মেলামেশা করবি, প্রেম করবি আর আমি তোকে পছন্দ-অপছন্দের কথা জিজ্ঞেস করতে পারব না?
আমি তো তোকে বলিনি আমি হৃদয়ের সঙ্গে প্রেম করছি বা আমি হৃদয়কে ভালোবাসি।
ত?
হৃদয় আমার ফ্রেন্ড। একসঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছি, আড্ডা দিচ্ছি, এনজয় করছি ব্যাস, এর বেশি কিছু না। আমি হৃদয়ের সঙ্গে প্রেমও করছি না, বিয়েও করছি না। তবে এভাবে যদি দু’জনের মধ্যে আন্ডারস্ট্যান্ডিং হয়ে যায় তবে বাকী সব পরের বিষয়। আমি আপাতত ডিপলি কিছু ভাবছি না।
নীলা একটা তিরস্কারের হাসি হেসে বলল, তাই নাকি?
চলবে..
উপন্যাসটির প্রথম থেকে পড়তে ক্লিক করুন:দুর্নীতিবাজের ডায়েরি-০১
আমার সব লেখা একসাথে পড়তে ক্লিক করুন:আমার ঠিকানা