এ বিশ্বজগতের একজন স্রষ্টা আছে-এ মতবাদে যারা বিশ্বাস করেন তারা আস্তিক বলে পরিচিত আর যারা এর বিপরীত মতে বিশ্বাসী তারা নাস্তিক বলে পরিচিত।প্রত্যেকের পক্ষেই যুক্তি আছে। কারা সঠিক? যারা যে পক্ষে তারা তাদের নিজেদের সঠিক বলবেন এটাই স্বাভাবিক।প্রমান বলতে উভয় পক্ষের কাছে যুক্তি ছাড়া কোন প্রমাণ নেই।
আস্তিকদের যুক্তি: এত সুন্দর,সু-শৃঙ্খল মহাবিশ্ব স্রষ্টা ছাড়া এমনিতেই সৃষ্টি হয়ে গেছে তা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বরং এ ধরনের বিশ্বাস চরম হাস্যকর।সুতরাং নাস্তিকেরা চরম বোকা।
নাস্তিকদের যু্ক্তি: এ মহাবিশ্ব স্রষ্টা ছাড়া সৃষ্টি হওয়া যদি গ্রহণযোগ্য নয় তাহলে স্রষ্টাও কারো দ্বারা সৃষ্টি হননি তা কিভাবে গ্রহণযোগ্য হয়?
এর জবাবে প্রথম পক্ষ বলে থাকে যিনি সবকিছুর স্রষ্টা হবেন তিনি অসীম ক্ষমতার অধিকারী হবে, তার কোন শুরু ও শেষ থাকবে না। তার কোন সৃষ্টিকর্তা থাকবে না।
যেহেতু কারো পক্ষে কোন প্রমাণ নেই, সুতরাং কোন পক্ষেরই বাড়াবাড়ি করা অনুচিত। যে যেটা বোঝে তাকে সেটা নিয়েই থাকতে দেয়া উচিত, তবে কা্উকে কটাক্ষ না করে বন্ধত্বপূর্ণ পরিবেশে যারা পরস্পর পরস্পরের চিন্তার শেয়ার করে তারাই শ্রেষ্ঠ মানুষ।
মনে করুন কেউ বলল মেঘ (যে যুগে মেঘ কেমন তা প্রমাণিত ছিল না)মুলত বরফের খন্ড, আর অপর দল বলল যে না মেঘ স্রষ্টা প্রদত্ত তুলাসদৃশ বস্তু যার থেকে স্রষ্টার কুদরতে পানি ঝরে। উভয় পক্ষের কারো পক্ষে কোন প্রমাণ নেই অথচ পরস্পর পরস্পরের প্রতি কাদা ছুড়াছুড়ি সহ হেন কাজ নেই যে তারা করে না। এ উভয় দলকে আপনি বোকা/পাগলের দল ছাড়া কি বলবেন?
যেহেতু নিজের যু্ক্তি শ্রেষ্ঠ মনে হয় তাই নিজ যুক্তির বিরুদ্ধবাদীদের হেনস্তা করে নিজ যুক্তি জোর পূর্বক প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা অত্যান্ত হীন কাজ।
নাস্তিকতার উৎপত্তি:
যুক্তির দিক থেকে আমার কাছে প্রথম পক্ষের যু্ক্তি একটু অধিকতর গ্রহণযোগ্য বলে মনে হয়। তবে দ্বিতীয় পক্ষ স্রষ্টা নেই যুক্তি দেয়ার মুল কারন অন্য জায়গায়।সেটি হল যারা স্রষ্টায় বিশ্বাস করে তারা কোন না কোন ধর্মে বিশ্বাস করে থাকে।আর ধর্মোগুলো মানুষকে অনেক সদুপোদেশ দেয় ঠিক আছে, তার পাশাপাশি এমন অনেক কিছু বলে যা মানবতার জন্য কল্যাণকর নয়, অনেক কুসংস্কারের জন্ম দেয়, মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে, অনেক হাস্যকার বিষয়ে মানুষকে বিশ্বাস করতে আহবান করে আরো অনেক কিছু। আর পৃথিবীতে বর্তোমান কোন ধর্মোই এমন কোন প্রমান বহন করে না যে স্রষ্টা কোন ধর্ম দিয়েছেন।
এবার কিছু প্রশ্ন জাগে, আমরা কেনই বা অস্তিত্বে আসলাম? এ মহাবিশ্ব কি এমনিতেই সৃষ্টি হয়েছে আর এমনিতেই শেষ হবে? এসব প্রশ্নের উত্তর দেয়ার দাবি থেকেই ধর্মের সৃষ্টি। আর যারা নাস্তিক হয় তারা ধর্মের অসারতা দেখেই নাস্তিক হয়।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মে, ২০১৬ দুপুর ২:০৫