দৃশ্য: প্রথম
রাস্তায় দেয়াল ঘেঁষে শুয়ে থাকা পাগলটার সকালের ঘুম ভাঙ্গে ঠিক পাশের রঙ্গিন বাড়ি থেকে ভেসে আসা দ্বিপক্ষীয় চিৎকারের আওয়াজে । তার নাকের ডগায় বসে থাকা মাছিটাও ঠিক তখনি উড়ে যায়। পাগলটা চোখের সাটার উঠালেই দেখে রাস্তার অন্য পাশে উদ্বাস্ত্ত বসতিগুলো । একটা শিশু রঙ্গিন বাড়িটার দিকে তাকিয়ে অন্যমনস্কভাবে প্রাকৃতিক কর্মে ব্যস্ত । শিশুটির মা পাশে বসে মুখে শিশ শিশ.. আওয়াজ করছে তার বাচ্চার কর্ম ক্লিয়ারের সুবিধার্থে । পাগলটাও মহিলার আওয়াজের সাথে সুর মিলাচ্ছে । মহিলা মুখ কালো করে তাকায় পাগলটার দিকে । এর একটু দূরে তৈল রঙ্গে মানচিত্র আঁকা রাস্তাটায় ধপাস করে আছাড় খায় এক স্কুলগামী বাচ্চা । তার পিঠে ঝুলানো জ্ঞানের বস্তাটাও আধেক ডুব খায় রাস্তার পুকুরে ! পাগলটা হাসছে !
দৃশ্য: দ্বিতীয়
সূর্যদয়কালীন ঝগড়া পর্ব শেষে রঙ্গিন বাড়িটা থেকে অত্যন্ত প্রাণবন্ত মুখশ্রী নিয়ে বের হচ্ছেন মিঃ এবং মিসেস হাসান। তাদের দেখে মনেই হচ্ছেনা যে তারা ঝগড়া করতে পারেন। মিঃ হাসান চারপাশের নোংরা অবস্থা দেখে অভ্যাসবসতই নাক সিটকিয়ে প্রাইভেটকারের পেটে ঢুকে পড়েন। মিসেস হাসান পাগলটাকে দেখছেন। পাগলটাও উনাকে দেখছে। মিসেস হাসানের ডানগালের জখমটা মেকাপের ভাঁজেও ফুটে আছে। এমন টসটসে গালে জখমটা দেখে হয়তো পাগলটারও মন খারাপ হচ্ছে । মিসেস হাসানের কাছে পাগলটাকে পাগল মনে হয় না ।তবে তার শারীরিক সাজ এবং চলাফেরায় মিসেস হাসানের চিন্তাকে সম্পূর্ন অস্বীকার করছে। কিন্তু পাগলটা মিসেস হাসানের দিকে এমনভাবে তাকিয়ে থাকে যেন সে সবকিছু বোঝে। লোকটার জন্য মিসেস হাসানের অনেক মায়া হয়। মিসেস হাসান গাড়িতে উঠে বসেন। গাড়িটা চলে যাচ্ছে । পাগলটাও গাড়ির দিকে তাকিয়ে আছে।
মিঃ হাসান একজন চালু ব্যবসায়ী । তবে তিনি নির্দিষ্ট কোন কিছুর ব্যবসায় করেন না । যখন যেখানে লাভ সেখানেই ঝাঁপ টাইপের ব্যবসায়ী ।আর মিসেস হাসান নারী অধিকার সংস্থায় চাকরি করেন । সকালে কাজের উদ্দেশ্যে দুজন একসাথে বের হলেও ফেরার সময় একসাথে ফেরা হয় না । কারন মিঃ হাসান প্রায়সময়ই রাত করে ফিরেন । উনারা প্রতিদিনই রুটিন করে দু'বেলা ঝগড়া করেন, রাতে ঘুমানোর সময় আর সকালে ঘুম থেকে উঠে । মিসেস হাসান মৌখিক ঝগড়ায় জিতলেও শারীরিক ঝগড়ায় নিয়মিতভাবেই পরাজিত সৈনিক । প্রতিদিন সকালের চেহারায় পাগলটা এই ব্যপারে নিশ্চিত হয় ।
রঙ্গিন বাড়িটা মিঃ হাসানের । বাড়িটার কারুকার্যময় সৌন্দর্য্য পরতে পরতে আভিজাত্যের স্বাক্ষর বহন করে । কিন্তু বাড়ির আশপাশের অবস্থা তেমন ভালো নয় । বলা যায় বাড়িটা গোবরে পদ্মফুল । হাসান সাহেবের কাছে সবচেয়ে বিরক্তিকর সমস্যা হচ্ছে তার বাড়ির সামনের রাস্তার বিপরীতের উদ্বাস্ত্ত বসতিগুলো । এখানে সব মিলে পাশাপাশি পাঁচটা তাবু । চারটা তাবুতে স্বয়ংসম্পূর্ন চার পরিবার থাকে । আর সবচেয়ে দক্ষিণের তাবুটাতে শুধু একটা মেয়ে একা থাকে । তার উপর পাগলটা তো আছেই । সে তো হাসান সাহেবের বাড়ির সাইড ওয়াল ঘেঁষে থাকে । এরা যে এখানে কখন এসেছে তার সঠিক কোন হিসেব নেই । হঠাৎ করে এসেছে আর থাকা শুরু করে দিয়েছে । উদ্বাস্ত্ত আর পাগলরা মনে হয় পুরো বাংলাদেশেরই মালিক । তারা যখন যেখানে গেড়ে বসে সেটা তাদের মালিকানায় চলে যায় ।
দৃশ্য: তৃতীয়
বিকালে অফিস থেকে মিসেস হাসান ফিরছেন । রৌদটা এখনো পুরোপুরি পড়েনি । মিসেস হাসান মাথায় গোলাপী রঙ্গের ছাতা ফুটিয়ে হেঁটে হেঁটে আসছেন । ছাতার রৌদ্রমাখা গোলাপী রংটা মিসেস হাসানের উপরও রিফ্লেক্ট করছে । দেখে মনে হচ্ছে কোন রঙ্গিলা পরী রাস্তায় নেমেছে । গেইট দিয়ে ঢুকতেই মিসেস হাসান পাগলটার দিকে তাকিয়ে দেখছেন । পাগলটার চিতি পড়া গায়ে এখনো আঘাতের কালো রক্ত জমে আছে । গত রাতে দেয়াল টপকে উঠার অপরাধে মিঃ হাসান পাগলটাকে বেদম পিটিয়েছে । সে যদিও ভালো করে জানে পাগলটা কোন চোর নয় । মিঃ হাসান আসলে সুযোগের হালকা ফায়দা উঠালেন আরকি । মিসেস হাসান মেডিসিন কর্ণার থেকে হেক্সাজল আর তুলো এনে ক্ষতগুলো পরিষ্কার করে দিচ্ছেন আর বিড়বিড় করে পাগলটাকে বলছেন, ‘জানোয়ারটার মাথায় একটা বাড়ি দিতে পারিসনাই ! তুই জানিস না পাগলের কোন বিচার হয় না ! তোর মত এমন পাগল আমি আর দেখি নাই যে কিনা নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে মার খায়’ । মিসেস হাসানের এসব কথা শুনে পাগলটা হয়তো ভাবছে, আপনিতো নিয়মিত খান কই কোনদিনতো একটা বাড়ি দেন নাই ! মিসেস হাসান ক্ষতগুলোয় ওয়ানটাইম ব্যন্ডেজ লাগিয়ে দেন । আর দোকান থেকে একটা আমদুধ এনে পাগলটাকে খেতে দেন । উদ্বাস্ত্ত তাবুর সামনে বসে বসে কয়েকজন মহিলা এইসবের তামাশা দেখছে ।
দৃশ্য : চতুর্থ
গভীর রাতে কার্গো ট্রাকের আওয়াজে পাগলটার ঘুম ভেঙ্গে যায় ।পাগলটা মাথা উল্টো করে কার্গোর আলোর দিকে তাকিয়ে দেখছে । মিঃ হাসান সাহেবের দুইটা কার্গো ট্রাক আছে । এগুলো তিনি বিভিন্ন কোম্পানিকে মালামাল আনয়নের জন্য ভাড়া দেন । তাই প্রায় রাতে এগুলো হাসান সাহেবের বাড়ির গেরেজে ঢোকে । আর সেই আওয়াজে পাগল আর বসতিগুলোর কিঞ্চিৎ ঘুমের ব্যাগাত ঘটে । পাগলটার আশেপাশে কিছু কুকুরও বসে আছে । কুকুরগুলো পাগলটার সাথে থাকতে বেশ আরামবোধ করে । অবশ্য পাগল আর কুকুরের ভেতর একটা আত্মিক সম্পর্কও আছে । যেমন কুকুর ময়লায় ঘুমায়, পাগলও ময়লায় ঘুমায়; কুকুর বোবা, পাগলও প্রায় বোবার মতই; কুকুর জামাকাপড় পরে না, পাগলও প্রায় না পরার মতই পরে । হাসান সাহেবের পালক কুকুরটাও প্রায় সময় পাগলটার আশেপাশে ঘুরঘুর করে । এই মনুষ্যরুপী কুকুরটাকে নিয়ে হয়তো কুকুর সমাজ গর্ববোধও করে !
পাগলটা কার্গোর দিক থেকে মাথা সোজা করে সামনে তাকায় । একদম দক্ষিণের তাবুটার পাশ থেকে গায়ে পানি ঢালার আওয়াজ আসছে । সেই তাবুর মেয়েটা আজও পরিষ্কার হচ্ছে । মেয়েটার কালোরঙ্গা তাবুতে প্রায় প্রতিরাতই বিভিন্ন লেবাসে আবৃত লোক এসে ঢোকে । কেউ লুঙ্গি গামচা বাঁধা তো কেউ স্যুট টাই পড়া । তবে টিমটিম করে জ্বলা মোমবাতির আলোয় বাহির থেকে কালো ছায়াগুলো সব একইরকম দেখায় ।আর ওই ছায়াগুলো থেকে মিহি কিছু গোঙ্গানোর আওয়াজ ভেসে আসে । মধুর তবে অত্যন্ত বিষাক্ত । পাগলটাও মেয়েটার তাবুতে একদিন ঢুকে পড়ে । মেয়েটাও পাগলটার মতই স্বল্প কাপড়ে অগোচালো মাংসপিন্ড হয়ে শুয়ে আছে । পার্থক্য শুধু মেয়েটা তাবুতে থাকে পাগলটা রাস্তায় থাকে । ‘কিরে পাগলা তোরও কি কাম জাগছে ! আয় তোর টেকা লাগবো না ! সকলধরণের লোকইতো আমাকে ভোগ করে আর তুই পাগল শ্রেণী বাদ থাকবি ক্যান’! রাতের লোকগুলোর মধ্যে আবার কেউ কেউ পাশের তাবুর জীর্ণশীর্ণ লোকটা থেকে ছোট ছোট কাগজে আবৃত পোটলা নিয়ে যায় ।
দৃশ্য : পঞ্চম
দুপুরের সূর্যটা কেবল পশ্চিমে কাত হওয়া শুরু করেছে । এই সময়টায় সাধারণত মানুষজনের চলাফেরা রাস্তায় একটু কম থাকে । পাগলটাও উদাস মনে পা ছড়িয়ে দেয়ালে পিঠ ঠেকে বসে আছে । আশেপাশেই কুকুরগুলো ঘুমাচ্ছে । পাগলটা মাঝে মাঝে কুকুরগুলোর কান ধরে টানাটানি করছে । কুকুরও হালকা মাথা ঝাঁকিয়ে আবার ঘুম দেয় । সামনে লাগেজ হাতের এক ভদ্রলোককে তিনজন লোক ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে । তাদের মধ্যে একজন ছুরি তাক করে আছে ভদ্রলোকের দিকে । লোকটার সাথে তাদের উচ্চ বাৎচিত চলছে । চিৎকারের শব্দে কুকুরগুলো ঘুম ভেঙ্গে যায় । তারা ঘেউ ঘেউ শুরু করে । পাগলটাও কুকুরের সাথে ঘেউ ঘেউ করে । কিছুক্ষণ পর ভদ্রলোকটার পেটে চুরি গুঁজে লাগেজটা কেড়ে নিয়ে লোক তিনটা দৌড় দেয় । পাগলটা এই দৃশ্য দেখে ঘেউ ঘেউ বন্ধ করে শেওলা পড়া দন্ত বের করে হাসছে । দৃশ্য শেষে লোকটার আশেপাশে জনতার বিড় জমে যায় । লোকটার ছটফট করা সবাই মিলে দাঁড়িয়ে দেখছে । কেউ কেউ হাতে কি একটা যন্ত্র লোকটার দিকে তাক করে কি কি যেন করছে । ঠিক তখন… ঠিক তখনই লাললাইট আর মিউজিকওয়ালা গাড়ি এসে অচেতন লোকটাকে নিয়ে যায় । এখানে এই রিহার্সেলটা প্রায়সময়ই ঘটে । পাগলটা এখনো হাসছে ।
দৃশ্য: ষষ্ঠ
আজও বাড়িতে ঢোকার সময় পাগলটাকে একটা কেকের প্যাকেট ধরিয়ে দেন মিসেস হাসান । মিসেস হাসান পাগলটার দিকে তাকিয়ে ভাবে এমন জামাই থাকার চেয়ে এই পাগলটাকে জামাই হিসেবে পেলেও ভালো হত । মিসেস হাসান বাসায় ঢুকে যান । তিনি বারান্দায় এসে পাগলটাকে দেখার চেষ্টা করছেন । কিন্তু পাগলটার সর্বোচ্চ মেলে থাকা পা দুটো দেখা যায় । তিনি আসলে দেখতে চাচ্ছেন পাগলটা কেকটা খাচ্ছে কিনা । কারন প্রতিবারই সে কেকটাকে ছিড়ে ছিড়ে কুকুরগুলোকে দেয় । তবে আজকে পাগলটা কেকটা ছিড়ছেনা ।
মধ্যরাতে হঠাৎ কুকুরগুলো ডেকে উঠে । চারদিকে চলছে বিরামহীন কালোর জলসা । পাগলটা গুটিশুটি শোয়া থেকে তাকায় । স্ট্রিট লাইটের হলুদ আলোয় লোকগুলোর ছায়া পাগলটার গায়ে পড়েছে । ওই তিনটা লোক আজও একজনকে ঘিরে ধরেছে । কিন্তু হঠাৎ আশপাশ থেকে কালো পোশাকধারী আরও কিছু ছায়া ঘিরে থাকা লোক তিনটার বুক বরাবর পিঠে গুলি ছুড়ে । তারা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে । পাগলটা তালি দিচ্ছে আর হাসছে ।
হঠাৎ কোথা থেকে লাল লাইটওয়ালা একটা গাড়ি এসে পঞ্চম তাবু থেকে কিছু অর্ধনগ্ন লোক আর মেয়েটাকে ধস্তাধস্তি করে গাড়িতে উঠানো শুরু করে । এর পাশের তাবু থেকে জীর্ণশীর্ণ লোকটাকেও টেনে হিঁচড়ে বের করছে । আরেকটা লাল লাইটওয়ালা গাড়ি এসে দাঁড়ায় মিঃ হাসান সাহেবের বাড়ির গেইটে । কিছু সবুজ রঙ্গা পোষাকের ছায়া ভেতরে ঢুকে মিঃ হাসানকে কলার ধরে বের করে আনছে তার পেছনে একটা কার্গো গাড়িও বের করে আনা হচ্ছে । কার্গোর দরজা খোলা । টর্চলাইটের আলোয় ভেতরে কিছু কিশোর কিশোরী মুখে গিয়ে পড়েছে । হাতবাঁধা, মুখে কষ্টেপ লাগানো । তারা ভয়ে কাঁপছে । মিসেস হাসান কান্নাকাটি করছে চারটা তারা কাঁধে ঝুলে থাকা লোকটার সাথে । কিন্তু লোকটা তার কোন তোয়াক্কা করছে না । নারীর মন বুঝা বেশ জটিল । মিসেস হাসানও ব্যতিক্রম নয় । যে স্বামী তাকে দিনে দু’বেলা রুটিন করে মারতো অথচ তিনি তার জন্য কেমন আহাজারি করে কাঁদছেন ! মনে হচ্ছে কলিজাটা এখনই বের হয়ে যাবে ।
পরিপাটি জামা পড়া এক ভদ্রলোক বন্দুক হাতে পাগলটার সামনে এসে দাঁড়ায় । কুকুরগুলো ঘেউ ঘেউ করছে । পাগলটা বন্দুকধারীর দিকে তাকিয়ে অর্ধেক জিহ্বা বের করে গরগর করে ভেংচি কাঁটছে । বন্দুকধারীরতো চান্দি গরম হয়ে গেছে । বন্দুকটা দিয়ে মাথায় একটা বাড়ি দিতে যাচ্ছে…
- স্যার, হেতে পাগল । এইহানে কুত্তাগো লগে হেতার পিরিত । হেরে মাইরা কোন ফায়দা নাই । হের তুন কোন তথ্য পাওয়া যাইবো না ।চলেন স্যার আমরা যাই । আমাদের অপারেশন সাকসেসফুল !
দৃশ্য: সপ্তম
আধাঘন্টার একটা ঝড় এইখানের অনেক কিছুই তচনচ করে দিয়েছে । লাল লাইটওয়ালা গাড়িগুলো চলে গেল । এলাকাটা নিরব থেকেও নিরব হয়ে গেল । মিসেস হাসান ম্যাক্সি গায়ে গেইটে এখনো দাঁড়িয়ে আছেন । আর কিছুক্ষণ পরপর হাত দিয়ে নাক চোখ মুচছেন । পাগলটাও মিসেস হাসানের দিকে তাকিয়ে তার মত করে নাক চোখ মুচছে ! মিসেস হাসান বাড়িতে ঢুকে যান । পাগলটা কেকটা খুলে কামড় দিয়ে খাচ্ছে ।
মিসেস হাসান পাগলটাকে আর কোনদিন দেখেননি…..
[ 'পাগল' এই গল্পের থিমটা আমার খুব পছন্দের কারন এই গল্পে বহুমুখী ম্যাসেজ দিয়ে সাজাতে চেষ্টা করেছি । কিন্তু প্রথমে লেখা গল্পটা একটু এলোমেলো সেজে গিয়েছিল । তাই আমি আবার গল্পটাকে নতুনভাবে সাজাতে চেষ্টা করেছি । জানি না এইবারেরটা কেমন হলো ! ]
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৮