কোমলতা মানুষের গুণ-বৈশিষ্ট্যের এক অন্যতম অলংকার। দয়া এমন একটি জিনিস - যা ছাড়া সুস্থ ও শান্তির একটি পারিপার্শ্বিকতা, দাম্পত্য, পরিবার, সমাজ গড়ে উঠতে পারে না। যারা জ্ঞানের সন্ধানী তারা যদি কোমল হৃদয়ের অধিকারী না হন, তাহলে জ্ঞানের সৌন্দর্য উপভোগ করা তাদের সম্ভব হয় না।
একটি মূলনীতি রয়েছে - ‘যে অন্যকে দয়া করে না সে দয়া পায় না।’ যে পরিবারের লোকেরা পরস্পরের প্রতি দয়ালু ও ক্ষমাশীল, সে ঘর সুখ ও আনন্দে ভরা থাকে। যিনি জ্ঞান অনুসন্ধান করেন, তা তাঁর চেহারা, হাত ও কথা এবং তাঁর বিনয়ী আচরণে প্রকাশ পাবে।
এর বিপরীতে, কোনো কিছুই সুখ, আস্থা, স্বাভাবিকতা এবং স্বস্তিকে ততটা নষ্ট করে না যতটা করে হৃদয়ের কাঠিন্য। যেখানে হৃদয় কঠিন হয়ে যায়, সেখানে জ্ঞান ব্যক্তির নিজেরও কোনো কাজে লাগে না, আর তা দিয়ে অন্যেরও উপকার হয় না।
হৃদয়ের কোমলতা মানুষের মতো মানুষদের এক অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এর অনুপস্থিতিতে জীবন দুর্ভোগ ও অশান্তিতে ভরে যায়। তাঁদের কাছ থেকে মানুষ দূরে সরে যায় - কাছে আসতে দ্বিধান্বিত হয়, এমনকি শিশুরাও। যাদের হৃদয় কোমল নয় তারা এক অস্বস্তিকর জীবন লাভ করবে।
সুস্পষ্ট বিভ্রান্তিতে আছি আমরা! মেজাজ দেখানো, ভাব নেয়া, রাশভারী আচরণ, সবসময় কিছুটা ক্ষেপে থাকাকে আমরা পৌরুষ কিংবা মর্যাদাশীল ব্যক্তিত্ব, বেশ ক্যাপাবল পারসন কিংবা তথাকথিত স্মার্টনেস বলে ধরে নেই। কিন্তু আসলে কঠিন-হৃদয় একটি অভিশাপ। আর হৃদয়ের নম্রতা সৌভাগ্যের লক্ষণ। জীবনে সকল কাম্য বস্তুর অধিকারী হলেও কঠিন হৃদয়-সম্পন্ন ব্যক্তি কষ্ট ভোগ করেন। আপাত দৃষ্টিতে সুখময় মনে হলেও তা এক শূন্য জীবন - একাকীত্বে পরিপূর্ণ। তাঁরা অন্তরে শান্তি পান না।
শারীরিকভাবে সুস্থ, সহানুভূতিশীল ও পরিতৃপ্ত জীবন যাপনের এক অন্যতম উপাদান হচ্ছে একটি কোমল হৃদয়। চলুন আমরা সেই অমূল্য সম্পদটি অর্জন ও লালনে সচেষ্ট হই।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:২৪