-রিক্সার হাতল ভালো করে ধরে বসো,অবনী নিশাতের হাত ধরতে ধরতে বললো।
-এই যে ভাই হুডটা পড়ে যাচ্ছে,ঠিক করে দেন।
অবনী নিশাতের সামনে দিয়ে হাত দিয়ে রিক্সার হাতল ধরে রেখছে,যাতে হঠাত ব্রেকে অবনী পড়ে না যায়।অটোরিক্সাগুলো খুবই দ্রুত চলে।
-মাম্মা,দেখ,দোকানে কি সুন্দল পুতুল।
-হুম তোমার মতো,অবনী রিক্সা শক্ত করে ধরতে ধরতে বলে।
-দেখ,সামনে একটা পাগল,মাম্মা,ভয়,নিশাত অবনীকে শক্ত করে আকড়ে ধরে,
-ও আমাদের কিছু করবে না,আমরা রিক্সায় আছি।আর আমি তোমাকে দোয়া পড়ে দিচ্ছি তোমার কিছু হবে না,অবনী দোয়া পড়ে মেয়ের মাথায় ফু দেয়।
রিক্সা দ্রুত জামাল খানের দিকে যাচ্ছে,নিশাতের দাতে ব্যাথা,আজ ফেলে দেবে,ছোট বাচ্চাদের দাত ফেলা যে কি ঝামেলা,কবির কি এক কাজে আটকে গেছে,আসবে না বলেছে।
অবনীর ছোট বেলার কথা মনে পড়ছে,তার মাও এমন ছিলো,রিক্সায় উঠার আগে দোয়া পড়ে ফু দেওয়া,রিক্সার হাতল সামনে থেকে ধরে রাখা,রিক্সা বেশী স্পীডে চললে শক্ত করে ধরে রাখা।
-১৫ টাকা ফেরত দেন,অবনী কোলে করে নিশাতকে রিক্সা থেকে নামাতে নামাতে বলে।
-মাম্মা,আইস্ক্রীম,নিশাত কোনের গাড়ি দেখাতে দেখাতে বলে।
-কতো একটা?
-৪৫ টাকা
-এত দাম?
-এটা কোন,দোকানদার দাত খোচাতে খোচাতে বলে।
নিশাত আইস্ক্রীম খাচ্ছে,কোনের চকলেট নিশাতের ঠোট বেয়ে নামে,অবনীরও খেতে ইচ্ছে করছে,কিন্তু কবির টাকা গুনে দিয়েছে।
-মাম্মা এক কামড় খাবা?নিশাত ছোট ছোট হাতে কোন আইস্ক্রীমটি এগিয়ে দেয়।
-অবনী মেয়ের হাত থেকেই আইস্ক্রীমে কামড় দেয়,যেমন ভাবে অবনীর নারকেল আইস্ক্রীম থেকে কামড় দিতো অবনীর মা, প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে সন্ধ্যার আলোতে জামাল খানের ফুরফুরে বাতাস মিষ্টি হয়ে ওঠে,নিশাতের ঠোটের কোনায় বাসা বাধা কোনের মতো মিষ্টি,প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ফুলের দোকান গুলো থেকে অদ্ভুদ থেকে অদ্ভুদতর গাঢ় সৌরভ ছড়ায়,তবে সব চেয়ে শ্রেষ্ঠ ফুলটির সৌরভও প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে অবনীদের ভালোবাসার কাছে ম্লান ছিলো।