২৪, ২৫ বছর বয়সে ফটিক বেলার চুড়ান্ত প্রাপ্তি হয়, ঈদের নামাজ শেষে ঘুমিয়ে পড়া নিয়ম,ফরহাদও তার ব্যাতিক্রম নয়, নামাজ পড়েই একটা বিস্বাদ সিগারেট ধরিয়েছিল,প্রচন্ড গ্যাষ্ট্রিকে বমি বমি ভাবে মেসে ফিরেই ঘুম। ঈদের ছুটিতে পুরো মেস খা খা করছে। ফরহাদ যখন ঘুম থেকে উঠলো তখন বেলা পরে এসেছে। তিনকোনা রোদের দল দেওয়ালের ফাটলে হারিয়ে গেছে।
ফরহাদ হাটছে-
ছোট ছোট মেয়েরা বিশাল সাইজের ভ্যানিটি ব্যাগ নিয়ে আনন্দে ছোটাছুটি করছে,ছোট ছেলেগুলো ঝোল লাগিইয়ে ফেলা পাঞ্জাবী নিয়ে সালামীর হিসেব কষছে, ফরহাদের দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো, কতদিন সে সেলামী পায়না। ফরহাদের খুব ছোটবেলার কথা মনে পড়ে, ঈদের সকালে বাবার হাত ধরে মসজিদে যেত, নামাজ পড়ে আব্বা আম্মাকে সালাম করে,দলবেঁধে এবাড়ি বাড়ী ঘুরে সেলামী নিত।
-কিরে ফরহাদ,কৈ যাস,করিম চায়ের দোকান থেকে ডাক দিল।
-কোথাও না
-চা খাবি?
ফরহাদ বসে পড়ে।
চায়ের আড্ডা ঘন হয়ে আসে,একে একে সৌরভ,জুয়েল,মমিনেরা হাজির হয়।নিকোটিনের গাঢ় গন্ধে চারপাশ ঝাপসা হয়ে আসে।
২৪,২৫ বছর বড় নির্মম, প্রেমিকার তাড়া, প্রতিষ্ঠিত হওয়ার প্রানপন সংগ্রাম,জীবনের সকল অপ্রাপ্তি দলবেঁধে হাজির হয়, এদের কেউই বোঝে না,এরা ধীরে ধীরে ইনসোমিয়া গ্রস্থ হয়ে পড়ে।
রাত ঘন হলেই এরা বাড়ি ফেরে,কবিতার খাতায় লেখে,
“তারপরপই রাত নামে-
বিষাদ্গ্রস্থ তারায় তারায় ঈদের হাসি ঘুমিয়ে পড়ে-
নিকোটনীয় অর্কিডের মাতাল বদ্ধ রুমে ভাসে-
ইনসোমিয়ার গাঢ় ফুলের সুবাস।’’