{"filesize_ok":true,"image_id":146128,"success":true}
এই গাড়ির গল্পটি আমার নিজের। যেটি আজ অব্দি কেনা হয়নি।আদৌ কোনদিন কেনা হবে কিনা জানি না।
তবে কি শুধু গাড়ির স্বপ্ন নিয়েই এই গল্প? না, তা নয়,যেহেতু গল্পটি গাড়ির এবং আমার নিজের।
নিজস্ব গাড়ি না থাকলেও গল্পটি আমার নিজস্ব।
শহরের রাস্তায় যখন হাঁটি হুশ করে পাশ কেটে গাড়ি চলে যায়। ড্রাইভারকে মনে-মনে বিরক্তি প্রকাশ করি। আর একটু কাছ-ঘেঁষলেই চাপা পড়তাম বাবা,ব্লগজগৎ হারাত এক অখ্যাত গল্পকারকে। বউ হারাত তার ছা-পোষা স্বামীকে। মেয়েরা হারাত তাদের খামখেয়ালী বাবাকে,যাদের জন্যে তাদের বাবার এক পৃথিবী ভালবাসা।
ড্রাইভাররা হুশহাস চলে যায়। আমি পথ হাঁটি স্বপ্ন-জগতে।
ছোটবেলায় একটা গাড়ির স্বপ্ন দেখতাম। তিন চাকার অটো রিকশো।
একবার মামাবাড়ি গেছিলাম অটোতে চড়ে। ড্রাইভারের পাশে বসে চালানোর কৌশল লক্ষ্য করেছিলাম। তখনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। গাড়ি যদি কোনদিন কিনি,অটো-রিকশোই কিনব।
চালানো সোজা। চাকা গুলোই ছোট-ছোট,কেউ চাপা পড়বে না। বিশ্ব ভ্রমণকারী একজন কোন একজনকে চাপা দিলে চলবে কি করে?
হ্যাঁ, তখন থেকেই স্বপ্ন দেখতাম,একা-একা সারা পৃথিবী ঘুরবো এবং তা নিজস্ব অটো-রিকশোয়।
পৃথিবীটা বদলে গেছে,স্বপ্নগুলোও। স্বপ্নের অটোটা এখন একাকী হাসির বিষয়। তবে বিশ্ব-ভ্রমনের স্বপ্নটা এখনও মরেনি। অবসর পেলেই ছুটে যাই,দেশের এ-প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত। সামর্থ যদি হয় পৃথিবীর যতটা পারি দেখব।
একদিন একটা গাড়ি এসে থামল আমার পাশে। এক সুবেশ তরুণী ডাকল আমাকে, এই উঠে এসো আমার গাড়িতে।
কবিতা লেখার স্বপ্নে বিভোর ছিলাম পথচলতি আমি। তাই ঘোর কাটতে দেরী হল।
অবশেষে চিনলাম। বললাম,আরে তুমি?
--আমার বর ট্রান্সফার নিয়ে এখানে এসেছে।
---বাহ ভাল,ভাল,আচ্ছা এসো তাহলে।
---সে-কি গাড়িতে যাবে না।
---না,আমার হাঁটতেই বেশী ভাল লাগে,সুগার,প্রেশার ঠিক থাকে।
---ঠিক আছে আসতে হবে না,তুমি দেখছি সেই খামখেয়ালী রাজাই থেকে গেলে।
আমি মৃদু হাসলাম। গাড়ি চলে গেল। গাড়ির মালকিন গোলাপের মত মিষ্টি হাসি আর সুবাস ছড়িয়ে চলে গেল। সেই হাসিটি সেই ভার্সিটি জীবনের।যখন সে আমাকে ‘খামখেয়ালী রাজা’ খেতাব দিয়েছিল।
আমি তাকে কখনোই কিছু দিতে পারিনি,এখনকার মত তখনও আমি কবিতার স্বপ্নে বিভোর থাকতাম। রক্ত-মাংসের কবিতার চেয়ে উপলব্ধির কবিতা আকাংখিত ছিল আমার।
আজ ওই হাসি দেখে মনে হল,কে বলল আমি তাকে কিছু দিইনি,বেশ বুঝছি,আমি তাকে আগেও দিয়েছি এখনও দিলাম,
উপেক্ষার আঘাত।