
বাংলা ভাষার সবচেয়ে রোমান্টিক লাইন নাকি কালজয়ী সাহিত্যিক বঙ্কিমচন্দ্রের “পথিক, তুমি পথ হারাইয়াছো”। বঙ্কিম মহাশয় আমার অত্যন্ত প্রিয় লেখক। যদিও নারী স্বাধীনতা নিয়ে তিনি যে কিছু প্রবন্ধ রচনা করেছেন এবং উপন্যাসের ফাঁকে ফোকরে “আজিকার নারী সমাজ” বলে যে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন তাতে আমার কিছু কথা আছে। তা যাক, উনার মত মহান লেখককে নিয়ে কিছু বলার সাহস আমার নাই। পাঠক হিসেবেও আমি যে খুব উঁচুমানের, তা না। আমার কাছে ব্রাক্ষন শূদ্র নাই। শরৎচন্দ্র থেকে শুরু করে ভাস্কর চৌধুরী; এ্যডগার আলান পো থেকে স্টিফানি মেয়ার্স সবাই লেখাই আমি গোগ্রাসে পড়ি। কবিতা নিয়ে মাঝে মাঝে সমস্যায় পড়ি; এক লাইন বুঝলে আরেক লাইন বুঝতে লাগে ২ দিন। একারণে কবিতার জ্ঞান কম। জীবনানন্দ থেকে জসীমউদ্দীন পড়তে ভালো লাগে বেশী। তবে হেলাল হাফিজের উপরে কথা নাই। তার দুইটা লাইন আমি খানিক পরিবর্তন করে মুখস্ত করে রেখে দিয়েছি –
এক জীবনে কতটা আর নষ্ট হবে
এক মানব কতটা আর কষ্ট দেবে।


মনে আশা উপযুক্ত সময়ে ব্যবহার করবো; এখনো সে সময় আল্লাহর রহমতে আসে নাই।

“প্রহর শেষের আলোয় রাঙা সেদিন চৈত্র মাস
তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ”।
তা সর্বনাশের শুরু হলো ৪ কি সাড়ে ৪ বছর বয়সে। আমার স্কুল জীবন শুরু হয় দিনাজপুরের সেন্ট জোসেফ স্কুলে। ছোট বেলায় অন্যসবার মতই ছিলাম অতিরিক্ত আঁতেল।








এর পরে দীর্ঘদিন আমি গিক সোসাইটির গর্বিত সদস্য রইলাম। প্রেম করার জন্য “ছোটদের বুক অব নলেজ” বইটি ছাড়া আর কিছু পেলাম না। সারাদিন শুধু আমি গল্প বইই পড়তাম; বিকেল বাদে। কারণ ওই সময় আবার নীচে দৌড়াদৌড়ি করার সুযোগ মিস করা যাবে না। অতিরিক্ত বই প্রীতির কারণে সবাই আমাকে ভালো মানুষ হিসেবে জানতো।




বাসায় রাত দিন গল্প বই, ভিডিও গেমস আর কম্পিউটার নিয়ে বসে থাকার কারনে আম্মু আব্বু একদিন বিরক্ত হয়ে আমাকে বাসার পাশের কোচিং সেন্টারে ভর্তি করে দিলো। আমার ক্লাসে আমি একাই মেয়ে ছিলাম, আর ছিলো তিনটা ছেলে। তাদের নাম আমি দিয়েছিলাম কালা, ধলা আর শ্যামলা। এর কারন একজন কুচকুচে কালো, একজন ধবধবে ফর্সা আর একজন শ্যামলা। কালাকে আমি দুই চোখে দেখতে পারতাম না, প্রধান কারণ পড়াশোনা জনিত ঈর্ষা।











ক্লাস সেভেনে আবার শহর চেঞ্জ, এবার স্থায়ী হলাম সিলেটে। প্রথম প্রেমে পড়লাম ক্লাস এইটে। আহা, কি প্রেম!

এর পরে কথা নাই বার্তা নাই প্রেমে পড়লাম স্পাইডারম্যানের। হা করে স্পাইডির কার্টুন দেখতাম, আর মেরি জেনকে দেখলেই আমার চান্দি হট হইতো। বেশী মাত্রায় ইলুশনে থাকার কারনে আমার আশে পাশে যে সবাই বড় হয়ে যাচ্ছে এটা ধরতে আমার অনেক সময় লেগেছে। দায়ী অবশ্য আমার বান্ধবীরাও। ওরা আমাকে খুবই আদরে রাখতো, মানে ওরা যে বড় হয়ে গেছে সেটা আমাকে বুঝতে দিতো না। আমি আজীবন কৃতজ্ঞ তাদের প্রতি।
ক্লাস টেনে কিছুতেই আর লুকিয়ে রাখতে পারলো না, কারন আমার বেস্ট ফ্রেন্ড প্রেমে পড়ে গেলো এক ছেলের। চিঠি, গান আর গোলাপের স্রোতে ভেসে গেলো। তবে আমি একটা চিঠিও পড়তে পারলাম না। আমাকে বলা হলো, “তোকে আরো কিছুদিন পর দেয়া হবে”। এহেন অপমানে আমি রাগ করে আমার আরেক ফ্রেন্ডের কাছে গেলাম।












এমন কেউ অ্যাপ্রোচ করলো না স্কুল লাইফে যাকে দেখে আমারো কুছ কুছ হোতা হ্যায়। এই দুঃখ সোয়ার উপর সাড়ে সের হলো, যখন স্কুল লাইফের এক ছেলে ক্লাসমেট ৫/৬ বছর পরে জানালো যে তারা কখনো ভয়েই আমার সাথে কথা বলতে পারে নাই। কারন আমি সবসময় প্রথম সারির স্টুডেন্ট ছিলাম। আমি যদি তাদের ফিজিক্সের সূত্র ধরে বসি- এই ছিলো তার ভয়। আমার সম্পর্কে তাদের এহেন বিচার দেখে দুঃখে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলাম, “হৃদয় ভেঙে আট টুকরা”।






*************************************
৪ মাস ধরে সামুর পোস্ট পড়ছি। দেখছি যে পোলাপাইন তাদের দিলের করুন কাহিনী লিখে সামুর প্রথম পৃষ্ঠায় বিনা মেঘেই বৃষ্টি নামাচ্ছে, অথচ কোন আপু ছোট বেলার এজাতীয় কাহিনী লেখেন না। জেরী আপু সেই যে বালক কাহিনী লিখেছিলেন, এর পরে আর কেউ নাই। তবে কি আপুরা কখনো কাউকে পছন্দ করেন নাই?? বিশ্বাস করি না! আপুদের পোস্ট পড়িতে চাই! একদম নির্ভেজাল হৃদয়ের কথা জানিতে ব্যাপক আগ্রহী! হাহাহাহা।
*************************************
*************************************
কখনো পোস্টের নিচে এটা লিখতে হবে ভাবিনাই, কিন্তু রিসেন্টলি পোস্টে অনাকাঙ্খিত মন্তব্য পাওয়ায় লিখতে বাধ্য হচ্ছি। দয়া করে “অফটপিক মন্তব্যের জন্য দুঃখিত” শিরোনাম দিয়ে আপত্তিজনক কোন মন্তব্য করবেন না। আমার কাছে আপত্তিকর মনে হওয়া মাত্র স্ক্রিন শট রেখে আমি সেই মন্তব্য মুছে দেব। ধন্যবাদ।
*************************************