"নারী দিবস আমরাও পালন করবো, তবে তা অবশ্যই আন্তর্জাতিক মানের হতে হবে।"
-বেগম গোলাপী, ভাড়প্রাপ্ত হেড আমীর, জামায়াতে পিছলামী
নারীর অবদান স্বীকার করতে আমরা পুরুষেরা ভয় পাই কি? সৃষ্টির শুরু থেকেই নারীর প্রতি অবমাননা চলে আসছে। এডামের গুণধর পুত্ররা যখন লাঠি হাতে শিঙ্গা লা লা বু বু বলে ম্যামথ এবং মুরগীর পেছন দৌড়াচ্ছিলো তখন ইভের গুণধর কন্যারা গুহার ভিতরে বসে হেয়ার কালার করছিলো আর জি বাংলায় পরকিয়া প্রেমের নাটক দেখছিল- এই রকম ধারণা অনেকেই বোধহয় রাখে। আমরা ভুলে যাই যে কৃষিকাজের জনক নারী। গুহার উঠানে ফলের বিজ পুতে দিলে যে গাছ জন্মায় সেটা নারীরা আবিষ্কার না করলে আমরা হয়ত এখনও মুরগীর পেছন দৌড়ানো নিয়েই বিজি থাকতাম। কৃষক বললে আমাদের কুল জেনারেশন বুঝে, "ওহ বয়!! আ গাই উইথ সিক্স প্যাক এবস।" ভুলে যাই নারীর অবদান।
সিতাকে চিনি। কিভাবে চিনি? রামের সুন্দরী বউ হিসেবে। একজন স্বতন্ত্র নারী হিসেবে কিন্তু কখনই দেখিনি তাকে। সিতা বললেই চোখের সামনে ভেসে উঠে এক নিরীহ নারীর প্রতিচ্ছবি যাকে নিয়ে রাম আর রাবণ টানাটানি লাগিয়ে দিয়েছিলো। রাবণ তাকে কিডন্যাপ করার পর রাম সুন্দরী বউকে বাঁচাতে লঙ্কায় গিয়ে লঙ্কাকান্ড ঘটিয়ে ফেলেছিলো। রামের বউপ্রেম আর সাহসিকতার জন্য রামনাম জপি, কিন্তু লঙ্কায় সিতা যে সাহসিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করিছিলো তা কিন্তু মনে রাখি না।
দুর্যোধন এই জীবনে কি করেছে? তার বাপের নাম কি? তার কয় ভাই বোন? তারে কই পাওয়া যায়? তার ফোন নাম্বার কি? নিজেকে জিজ্ঞেস করেন, উত্তর দিতে পারবেন বলে মনে হয় না। দুর্যোধন তার লাইফে কি করেছে জিজ্ঞেস করলে একটা উত্তর পাবেন, দ্রুপদীর শাড়ি ধরে টানাটানি করেছে। পান্ডাভার পরিবারের সকল নারীকে সে নগ্ন করে অপমান করেছে। সবাই মনে রাখলো দুর্যোধনকে, দ্রুপদীর কথা কেউ ভেবেও দেখলো না।
ফ্লোরেন্স নাইটেঙ্গেলের নাম জানি, মাদার তেরেসার নাম জানি। হার্টের ডাক্তার, নিউরোসার্জেন, নোবেল উইনার মেয়েদেরকে চিনি, কিন্তু তারপরেও কোন মেয়ে দেখলেই মনে করি বাচ্চা পয়দার মেশিন।
রাস্তার এপারে গার্লফ্রেন্ডের সাথে দাঁড়িয়ে খুব নারীবাদী হই আমরা। ওপারে দাঁড়িয়ে কিন্তু পাশে হেঁটে চলা মেয়েটিকে ডেকে "মাল" বলে সম্বোধন করতে বিন্দুমাত্র কার্পন্যবোধ করিনা।
নারীর সমান অধিকার বলে ফাল দেই। মিছিল করি। হাতে হাত ধরে মানববন্ধন করি। কিন্তু নারীর কর্মক্ষেত্র বললে বুঝি খালি টিভি মিডিয়া। শাড়ি, কামিজ, গহনা, সেনেটারি ন্যাপকিনের এডে নারী। সাথে সাথে বিচিত্র কারণে ছেলেদের বডি স্প্রে, লুঙ্গি, শেভিং ক্রিমের এডেও নারী।
সম অধিকার প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছি। কনডমের এডেও নারী।