অনেক সুশীল ইনিয়ে বিনিয়ে গণভবনের জিনিসপত্রের জন্য মায়াকান্না শুরু করে রীতিমতো কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিচ্ছেন জনতার বিজয়কে। গণভবনে যখন জনতার ঢল নামে তখন আমিও ওখানে ছিলাম কিন্তু গণভবনে প্রবেশ করি নি। মূলত মুক্তিকামী মানুষের ঢল এতোটাই প্রবল ছিলো যে,আমি প্রবেশ না করাটাই শ্রেয় মনে করেছি। গণভবনে প্রবেশ করে মানুষজন যে জিনিসপত্র যার যায় মতো করে নিয়ে নিয়েছেন তা কোন চুরি নয় বরং জনগণের অধিকার হরণ করে লুটরাজত্ব কায়েম হয়েছিল সে অধিকার বুঝে নেওয়ার তাগিদেই মানুষ উৎসবমুখর হয়ে এমনটা করেছে।
সহজ করে বললে, চোর পালিয়ে যাওয়ার পর গৃহস্থ স্বাভাবিকভাবেই তার জিনিসপত্র বুঝে নিবেই! তারপরও দেখেছি সচেতন ছাত্র-সমাজ অনেককে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করছে। ওখানে বেশীক্ষণ না থেকে আমি সংসদ ভবনের দিকে গিয়ে দেখি সেখানেও একই চিত্র। এম.পি হোস্টেলে অনেক মূল্যবান জিনিসপত্র গনিমতের মাল মনে করে অনেকটা নিয়ে যাচ্ছেন।নিজে অনেককে বারণ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছিলাম। আমার মতো অনেকেই চেষ্টা করছেন। পরে কাজ না হওয়ায় উপস্থিত বুকে আইডি কার্ড থাকা ছাত্রদের ডেকে বলি তা রক্ষা করতে। যার প্রেক্ষিতে কার্যত ওখান থেকে তেমন জিনিসপত্র কেউ নিতে পারেন নি। গেইটে রেখে দিয়েছে সচেতন ছাত্র-সমাজ।
জিনিসপত্র হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্য থেকে নয় বরং ক্ষোভ থেকেই এমনটি করেছে বলে আমার মনে হয়। বিজয়ের মাত্র বিশ মিনিট আগেও রাষ্ট্রযন্ত্র কর্তৃক সহযোদ্ধাকে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারাতে দেখা বিপ্লবীকে ব্যাকরণ মেনে চলার আবদারটা একটু বেশীই হয়ে যায় না? কই, বিগত সাড়ে পনের বছরে লুটতরাজ শ্রেণী যে জনগণের ১২ লক্ষ কোটি টাকা পাচার করেছে তখন তো আপনারা কোন ছবক দিতে দেখলাম না। অবৈধ ক্ষমতা হারানোর বেদনা থেকে সমালোচনা নয় বরং অনুশোচনাটা জরুরি নয় কি! তারপরও বলি, কোন যুক্তিতেই রাষ্ট্রের সম্পদ কেউ নিজ আয়ত্তে নেওয়ার অধিকারী নন। আশাকরি পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলে সরকার অনুরোধ করলে দেশপ্রেমী জনতা মূল্যবান জিনিসপত্র ফেরত দিবেন। সবচেয়ে বড় কথা, স্বৈরাচারের চিহ্ন নিজের কাছে রেখে ঘরকে অপবিত্র করারই মানে হয় না!
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ২:২৫