somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাবার (ইয়াবা) আগ্রাসন X((

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


একটি ট্যুরইজম অফিসের অফিস সহকারী হিসেবে কাজ করত রাজা। বেশ কিছুদিন যাবত সে অসুস্থ অফিসে আসে না। অনেক দিন অসুস্থ থাকার পর সে মারা গেল। খুবই নম্র, ভদ্র আর মিশুক স্বভাবের ছেলে ছিল সে। কয়েক বছর আগে থেকেই সে কক্সবাজারে চাকরি করে আসছিল। সে সুবাদে পর্যটন জগতের অন্ধকার জগতের দিকে সে পা বাড়ায়। যার কারণে বেশ কিছু দিন আগে থেকেই ইয়াবায় আসক্ত হয়ে পড়েছিল। অনেক চেষ্ঠা করেও এ ভয়ংকর মাদক থেকে তাকে কেউ ফেরাতে পারিনি। পিতাহারা বাড়ির বড় ছেলে হিসাবে সংসারের সকল দায়ভার থাকে বহন করতে হতো। কিন্তু ইয়াবার কবলে পড়ে অকালে ঝরে গেল একটি সম্ভবনাময়ী জীবনের। সংসারের প্রধান অবলম্বন স্বামীহারা একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ মা। তার মায়ের বুকফাটাঁ কান্নার কোন জবাব আমাদের কাছে নেই। তার মায়ের একটাই দাবী এভাবে ভয়ংকর মাদকের কবলে পড়ে আর কোন মায়ের বুক যেন খালী না হয়। এভাবেই ইয়াবা নামক এ ভয়ংকর মাদকের কবলে পড়ে ধ্বংসের সাগরে অকালে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের সম্ভবনাময়ী যুব সমাজ। ইয়াবা শব্দটি আমাদের সকলের কাছে অতি পরিচিত। শারিরীক মানসিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত এবং আইনগত নিষিদ্ধ হলেও রাজনৈতিক পৃষ্টপোষকতার কারণে ইয়াবার আগ্রাসনরোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই এ বিষয়ে যুব সমাজের জেগে উঠার কোন বিকল্প নেই। আসুন জেনে নিই দেশে ইয়াবার ভয়ংকর আগ্রাসন সম্পর্কে।

ইয়াবা কি?

ইয়াবা একটি মেথামফেটামাইন মিশ্রিত ড্রাগ । ইয়াবা শব্দটি এসেছে থাইল্যান্ড থেকে। ইয়াবাকে বাংলা অর্থ উত্তেজক ওষুধ বা পাগলা ওষুধ, যা সেবন করলে মানুষের অতি মাত্রায় উত্তেজক করে তুলে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ইয়াবাকে ভিন্ন ভিন্ন নামে ডাকা হয়, যেমন: ইন্ডিয়াতে বলে ভুলভুলাইয়া, ফিলিপাইনে ও ইন্দোনেশিয়ায় বলে শাবু, উওর থাইল্যান্ডে এর নাম চাকোস, সাউথ আফ্রিকায় বলে টিংকু, ব্রাজিলে বলে বালা ইত্যাদি। বাংলাদেশে কোন কোন এলাকায় ইয়াবাকে ”বাবা” ও বলে। ইয়াবা তৈরী করা হয় ২৫-৩৫ মি: গ্রা: মেথামফেটামাইন ও ৪৫-৬৫ মি: গ্রা: ক্যাফেইন এর সংমিশ্রণে। কোনো কোনো সময় ১০-১৫% হেরোইন ও মিশিয়ে থাকে। ইয়াবা ট্যাবলেট আকারে ৬ মি:মি: ব্যাস একদিকে গোলাকার অপর দিকে চ্যাপটা আকর্ষনীয় রঙে তৈরী করা হয়। ইয়াবা সাধারনত উজ্জল লাল, গোলাপী, কমলা ও সবুজ ইত্যাদি রঙের হয়ে তাকে। এটি স্বাদে হালকা মিষ্টি এবং বিভিন্ন ফ্লেভারে তৈরী করা হয়। যেমন: আংগুর, কমলা, ভেনিলা ইত্যাদি। ট্যাবলেট এর গায়ে সাধারনত খোদাই করে জ অথবা ডণ লেখা থাকে। এই ট্যাবলেট আকারে ছোট হওয়ায় একই সাথে অনেক গুলো ট্যাবলেট সহজেই বহন করা যায়।

প্রকারভেদঃ

ঢাকায় তিন ধরনের ইয়াবা পাওয়া যায়। প্রথম ধরনের ইয়াবা ট্যাবলেটের বেশির ভাগ সবুজ বা গোলাপি রঙের হয়। এর ঘ্রাণ অনেকটা বিস্কুটের মত হয়ে থাকে। দ্বিতীয় ধরনের ইয়াবা ট্যাবলেট এর দাম তুলনামূলকভাবে কম। কিন্তু এটিও নেশাসৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে। তৃতীয়ধরনের ট্যাবলেটি আরও সস্তা এবং নেশায় আষক্তদের নিকট এটি ভেজাল বলে পরিচিত। ইয়াবা সেবনকারীদের মধ্যে প্রচলিত ধারণা অনুসারে, চিতা নামের পিলটি সবচেয়ে নিম্নমানের ইয়াবা পিল হিসেবে গণ্য হয়। এর গায়ে ক্ষুদ্র চিহ্ন থাকে। অন্যদিকে গোলাপ জল নামের ইয়াবা পিলকে উচ্চ মান পিল হিসেবে গণ্য করা হয়। ইয়াবা পিলের গায়ে ইংরেজি ডাব্লিউ ওয়াই (WY) লেখা থাকে। ওয়াই (Y) লেখার ধরণ দীর্ঘ হলে এবং ইয়াবার রঙ পুরোপুরি গোলাপি হলে ধারণা করা হয় সেটি ইয়াবা হিসেবে ভাল মানের।



বাংলাদেশে ইয়াবার ইতিহাসঃ

দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় হিটলারের সৈন্যদের বেশী সময় সচল রাখা বা উত্তেজিত কর্মক্ষম রাখার জন্য মেথামফেটামাইন বা নাজীস্পীড সেবন করানো হত। তখন এটি পারভিটিন নামে পরিচিত ছিল। সত্তরের দশকে থাইল্যান্ডে প্রচুর পরিমানে এর তৈরী ও ব্যবহার হয় এবং সেখান থেকে সারা এশিয়াতে ছড়িয়ে পড়লেও বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ইয়াবা তৈরী হয় মায়ানমারে। বর্তমানে মায়ানমার থেকেই ইয়াবার সবচেয়ে বড় বড় চালান সীমান্ত পথে অবৈধ ভাবে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে সঙ্ঘবদ্ধ চোরা কারবারীরা পাচার করছে। ইয়াবার প্রস্তুত প্রনালী অত্যন্ত সহজ হওয়ায় পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই কাঁচামাল সংগ্রহ করে তৈরী করা সম্ভব হচ্ছে এবং সেই সাথে অতি দ্রূত ব্যবহারকারীদের মধ্যে পৌছে দেয়া সম্ভব হচ্ছে।
বাংলাদেশে প্রথম ইয়াবা আমদানি হয় সাবেক একজন সংসদ সদস্য (বর্তমানে বিদেশ) এর মাধ্যমে আনা হয়েছিল বিদেশ ভ্রমন কালে। তখন বন্ধু-বান্ধবদের দিয়ে সেবন করানো হতো বলে এর প্রসার ছিল সীমিত আকারে। সে সময় একটি ট্যাবলেটের দাম ছিল আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা। ফলে হাতে গোনা কয়েকজন উচ্চবিত্তশালী এটি ব্যবহার করতেন। প্রথম বাণিজ্যিকভাবে ইয়াবা আমাদানী করে গুলশান নিকেতের জুয়েল। সে ধরা পড়েছিল ২০০২ সালে। সে ইয়াবা এনেছিল বিমান পথে থাইল্যান্ড থেকে । তখন বাজার মূল্য ছিল দুই হাজার টাকা। ইয়াবা সম্রাট আমিন হুদাও প্রথম থাইল্যান্ড থেকে বিমানপথে, পরে নিজেই রাসায়নিক উপাদান এনে গুনশানে রীতিমত ইয়াবার কারখানা খুলে বসেছিল।
বর্তমানে বাংলাদেশে ইয়াবা একটি মারাত্বক সমস্যা ও ব্যাধি হয়ে দাড়িয়েছে। ভৈগোলিক কারনে মায়ানমার বাংলাদেশের পাশা পাশি(২০৮ কি:মি: স্থল, ৬৩কি:মি: জল বর্ডার এলাকা) হওয়ায় জল ও স্থল পথে সহজেই ইয়াবা পাচার হয়ে আসছে, এমনকি আকাশ পথেও ইয়াবা আসছে বলে জানা যায়।
বিগত ৪০/৪৫ বছর ধরে থাইল্যান্ডে ইয়াবার উৎপাদন ও ব্যবহার হলেও পরবর্তীতে এটি বর্ডার হয়ে মায়ানমারে পাচার হতে থাকে। একটি সময় থাইল্যান্ডের বিভিন্ন তেল ষ্টেশনে এই ইয়াবা বিক্রি হত। তখন মুলত ট্রাক ড্রাইভাররা ইয়াবা সেবন করে দীর্ঘ পথ না ঘুমিয়ে গাড়ী চালাত কিন্তু দেখা গেছে সে সময় রাস্তায় প্রচুর দুর্ঘটনা সংঘটিত হত। ফলে ১৯৭০ সালে থাইল্যান্ডে সরকারী ভাবে ইয়াবা ব্যান্ড করা হয়। ১৯৯৯/২০০০ সালের দিকে এটি বাংলাদেশে প্রবেশ করে। বিগত বছর গুলোতে দেখা যায় মায়ানমারের রোহিঙ্গাদের সাথে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকার লোকজন মিলে ইয়াবা বাংলাদেশে পাচার করে আসছে। বিভিন্ন গনমাধ্যমের সহায়তায় জানা যায়, মায়ানমারের সেনাবাহিনীর কিছু লোক ইয়াবা উৎপাদন করে দালালদের মাধ্যমে সীমান্ত পার করে বাংলাদেশে পাচার করে থাকে। বর্তমানে একটি ইয়াবা বড়ির দাম সাড়ে তিনশ থেকে চারশ টাকার মধ্যে। সময়ের সঙ্গে অন্য সব কিছুর দাম বাড়লেও ইয়াবা এ হিসাবে ব্যতিক্রম। প্রতিনিয়তই এর দাম কমছে।
২০০২ সালে সীমিত আকারে টেকনাফ এলাকার নাফ নদের সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ইয়াবা আনা শুরু হয়েছিল। ২০০৩ সাল থেকে ইয়াবা ডিলারদের জন্য ওই রুটটি হয়ে যায় সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য জায়গা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জানান, অতিসম্প্রতি টেকনাফ এলাকায় নজর দেওয়ায় ডিলাররা ব্যবহার করছেন অন্য আরো নতুন দুটি রুট। তা হলো বান্দরবানের গহিন অরণ্যের চাকঢালা সীমান্ত এবং সেন্টমার্টিন দ্বীপ। টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্টমার্টিনের মধ্যে দূরত্ব মাত্র ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার। ওই দুটি রুট দিয়ে কিছু ইয়াবা মিয়ানমার থেকে সেন্টমার্টিন আসার পর তা কক্সবাজার হয়ে ঢাকায় আসছে। তবে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় স্পট বা রুট টেকনাফের নাফ নদ। এ ছাড়াও সীমিত আকারে টেকনাফ নদে চলাচলকারী ট্রানজিট নৌকার মাধ্যমে এবং স্থলবন্দর দিয়ে কিছু ইয়াবার আমদানি চলে। আবার ক্ষমতার পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গে ইয়াবার ডিলারও পরিবর্তন হয়েছে। গত বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে ইয়াবা ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করত যুবদল ও ছাত্রদল নেতারা আর বর্তমানে এর নিয়ন্ত্রণ ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাদের দখলে। মূলত তাদের মাধ্যমেই দেশের শিক্ষাঙ্গন গুলোতে ইয়াবা ব্যবসা ও ইয়াবা সেবনের প্রসার ঘটে । বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই ইয়াবার প্রতি ঝুকেঁ পড়ছে বেশি। এছাড়া গুলশানসহ ঢাকার বিভিন্ন অভিজাত এলাকার অনেক ফ্ল্যাটে রাতে ইয়াবার আসর বসে বলে বিভিন্ন সময় গণ মাধ্যমগুলো খবর প্রকাশ করেছে।

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াঃ

প্রথমদিকে ইয়াবা যৌনউত্তেজক বড়ি হিসাবে বাজারে পরিচিত ছিলো। কিন্তু দীর্ঘদিন সেবনের ফলে যৌন ক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে। যুক্তরাজ্যের ড্রাগ ইনফরমেশন এর ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী ইয়াবা ট্যাবলেটটি খেলে সাময়িক ভাবে উদ্দীপনা বেড়ে যায়। কিন্তু এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হেরোইনের চেয়েও ভয়াবহ। নিয়মিত ইয়াবা সেবন করলে মস্তিস্কে রক্ত ক্ষরন, নিদ্রাহীনতা, খিঁচুনি, ক্ষুধামন্দা এবং মস্তিস্ক বিকৃতি দেখা যেতে পারে। ইয়াবা গ্রহণের ফলে ফুসফুস, বৃক্ক সমস্যা ছাড়াও অনিয়মিত এবং দ্রুতগতির হৃদস্পন্দনের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত হারে ইয়াবা গ্রহণ হাইপারথার্মিয়া বা উচ্চ শারীরিক তাপমাত্রার কারণ হতে পারে। অভ্যস্ততার পর হঠাৎ ইয়াবার অভাবে সৃষ্টি হয় আত্মহত্যা, প্রবণতা এবং হতাশা। দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা খেলে স্মরণশক্তি কমে যায়, সিদ্ধান্তহীনতা শুরু হয় এবং কারও কারও ক্ষেত্রে সিজোফ্রেনিয়ার লক্ষণ দেখা দেয়। অনেকে পাগল হয়ে যায়। ডিপ্রেশন বা হতাশাজনিত নানা রকম অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পায়, এমনকি অনেকে আত্মহত্যাও করে থাকে। এছাড়া হার্টের ভেতরে ইনফেকশন হয়ে বা মস্তিষ্কের রক্তনালী ছিঁড়েও অনেকে মারা যান। অনেকে রাস্তায় দুর্ঘটনায় পতিত হন। কেউ কেউ টানা সাত থেকে ১০ দিন জেগে থাকেন। ইয়াবার পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিশিষ্ট মনোচিকিৎসক ডা. মোহিত কামাল বলেন, নিয়মিত ইয়াবা সেবনে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, নিদ্রাহীনতা, খিঁচুনি, মস্তিষ্ক বিকৃতি, রক্তচাপ বৃদ্ধি, অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন, হার্ট অ্যাটাক, ঘুমের ব্যাঘাত, শরীরে কিছু চলাফেরার অস্তিত্ব টের পাওয়া, অস্বস্তিকর মানসিক অবস্থা, কিডনি বিকল, চিরস্থায়ী যৌন-অক্ষমতা, ফুসফুসের প্রদাহসহ ফুসফুসে টিউমার ও ক্যান্সার হতে পারে। এ ছাড়া ইয়াবায় অভ্যস্ততার পর হঠাৎ এর অভাবে সৃষ্টি হয় হতাশা ও আত্মহত্যার প্রবণতা। তিনি বলেন, এ মাদক সাধারণ শান্ত ব্যক্তিটিকেও হিংস্র ও আক্রমণাত্মক করে তুলতে পারে। ইয়াবা গ্রহণে হ্যালুসিনেশন ও সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হওয়াটা খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। হ্যালুসিনেশন হলে রোগী উল্টোপাল্টা দেখে, গায়েবি আওয়াজ শোনে। আর প্যারানয়াতে ভুগলে রোগী ভাবে অনেকেই তার সঙ্গে শত্রুতা করছে। তারা মারামারি ও সন্ত্রাস করতেও পছন্দ করে।

ইয়াবার অপকারিতাঃ

ইয়াবা একটি অত্যন্ত ঊত্তেজক এবং স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি মারাত্বক ক্ষতিকারক ড্রাগস। ইয়াবা বিভিন্ন ভাবে ব্যবহার করে থাকে; সরাসরি পানির সাহায্যে খেয়ে থাকে, সিগারেটের সাথে মিশিয়ে, ফয়েলের সাহায্যে ধোয়া নি:শ্বাসে গ্রহন করে, ইনজেকশনের সাহায্যে পুশ করে, কাঁচের তৈরী বিশেষ ধরনের পাইপ ব্যাবহার করে ইত্যাদি ভাবে ব্যবহার করে থাকে বলে জানা যায়। ইয়াবা একটি অত্যন্ত আসক্তিকর মাদক যা হেরোইনের চেয়েও বেশী। ইয়াবা সেবনের সঙ্গে সঙ্গে মানব দেহের অতি মাত্রায় উত্তেজিত হওয়ার কারনে শারীরিক শক্তি বর্ধিত হয়েছে বলে অনুভুত হয় এবং দীর্ঘ সময় ঘুম হয়না। ইয়াবা ব্যবহারে প্রচন্ড খুধামন্দা দেখা দেয় এবং মানষিক ভারসাম্য লোপ পেতে থাকে। এ ভাবে কয়েক ঘন্টা নেশাগ্রস্থ থাকার পর ধীরে ধীরে নেশা কেটে যেতে থাকে এবং শরীর মন ভেঙ্গে যায়, দুর্বলতা অনুভুত হয় এবং দীর্ঘ সময় ঘুমাতে ইচ্ছা করে, তবে দ্রূত পুনরায় ইয়াবা ডোজ নিতে ইচ্ছা জাগে এমন কি আসক্ত ব্যক্তি আগের চেয়ে বেশী ডোজ নিতে চায়। এ ভাবেই ধীরে ধীরে ব্যবহারকারী ইয়াবার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। ইয়াবা ব্যবহারকারী ধীরে ধীরে মানবতা ও ধৈয্যশীলতা হারিয়ে ফেলে। ইয়াবা সেবনে প্রচন্ড ভাবে দীর্ঘ মেয়াদী শারিরীক ও মানষিক ক্ষতি সাধিত হয়। অতিরিক্ত ইয়াবা ব্যবহারে শরিরের মাংশপেশী প্রবল ভাবে কামড়াতে থাকে। চিকিৎসকদের মতে ইয়াবা ব্যবহারে স্মৃতিশক্তি লোপ পায়, ক্রোধ, অনিদ্রা, হতবুদ্ব্ধিসঢ়; শরীর কাঁপা, দৈহিক আক্ষেপ, উদ্বেগতা বৃদ্বি, আক্রমনাত্বক স্বভাব, চুল ওঠা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়, এবং ইনজেকশনের সাহায্যে একাধিক ব্যাক্তি ব্যবহারে এইচ আই ভি এইডসহ হ্যাপাটাইটিস বি ও সি ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হয়। দীর্ঘ সময় ইয়াবা সেবনের ফলে শ্বসনতন্ত্র ও হ্রৃদযন্ত্র বন্ধ হতে পারে, এমনকি কিডনী ফেইলর সহ অনেক জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু নিশ্চিত হতে পারে। আসক্ত ব্যক্তিরা বেচে থাকলেও শারিরীক ও মানষিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে মানষিক রোগে ভুগতে থাকে। আসক্ত হওয়ার পর যেহেতু শরিরের চাহিদা মেটাতে নিয়মিত ইয়াবার ডোজ নেয়া অবধারিত হয়ে পরে সেহেতু ইয়াবা ক্রয় করতে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন সত্তেও একটি সময় সেবনকারী কে অর্থসংকটে পরতে হয়, ফলে সেই অর্থ যোগাড় করতে ছিনতাই, চোরী, ডাকাতি, অপহরন, ও খুনের মত অপরাধমুলক অসামাজিক কর্মকান্ডে জরিয়ে পরে। এমনি ভাবে একটা সময় দেখা যায় যে ইয়াবা সেবনকারিরা বড় কোন অপরাধ চক্রের সাথে জরিত হয়ে নিজেই মাদক পাচার ও বিক্রয়ের সাথে যুক্ত হয়ে পরে। এ ভাবে এমন এক পর্যায়ে চলে যায় যেখান থেকে সাধারন জীবনে ফিরে আসা আর সম্ভব হয় না। এই সব আসক্ত ব্যক্তি ইয়াবার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারনে খিট খিটে মেজাজের ঝগড়াটে হয়ে যায় এবং হিতাহিত জ্ঞান লোপ পায়। তাই বেশির ভাগ সময় পরিবারের সদস্যের সাথে রঢ় আচরন করে থাকে ফলে পারিবারিক সম্পর্কেও অবনতি ঘটে। পরিবারের সাথে সাথে আত্বীয়-স্বজন, প্রতিবেশীরাও মাদকাশক্ত ব্যক্তিদের ভাল চোখে দেখে না, ফলে আপনজনদের থেকে দুরত্ব র্সৃষ্টি হতে থাকে এবং আরো দ্রুত মাদকাশক্ত দিকে ধাবিত হয়। মাদকাশক্ত ব্যক্তির মানষিক ও শারিরীক অবনতি ঘটে, এ ভাবে একটি সময় সামাজিক ভাবে ঘৃণ্য এবং অবহেলিত অবস্থানে চলে যায়। এমতাবস্থায় ঐ ব্যক্তির একদিকে যেমন ইয়াবার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তাকে দিন দিন খুড়ে খুড়ে খেয়ে নি:শেষ করে দেয় অপর দিকে পরিবার আত্বীয়-স্বজন ও সামাজিক বন্ধন থেকে নিজের দুরত্ব সৃষ্টি হওয়ার কারনে বেচে থাকার কোন ভরসাই খুজে পায় না, ফলে অনেকে আত্মহত্যাকে মুক্তির পথ হিসেবে বেছে নেয়।

ইয়াবা দিয়ে যারা নেশা করে তাদের চেনার লক্ষণগুলি কি কি (শারীরিক ও আচরণগত পার্থক্য)??

- মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ফলে মনোসংযোগ বিচ্ছিন্ন মনে হয়।
- নিদ্রাহীনতা। একজন ইয়াবা সেবনকারীর ঘুম অস্বাভাবিক ধরনের হয়ে থাকে। এরা বেশ কয়েক রাত পর্যন্ত একেবারে না ঘুমিয়ে থাকতে পারে।
- শারীরিকভাবে খিঁচুনি দেখা দিয়ে থাকে।
- খাওয়ার রুচি একেবারেই থাকে না। আবার অনেক ক্ষেত্রে মিষ্টির প্রতি এক ধরনের আসক্তি তৈরি হয়ে থাকে।
- মস্তিষ্ক বিকৃতি দেখা দেয়। অর্থাৎ এরা কখন কী কাজ করছেন তার কোনো ধারণা থাকে। স্বাভাবিক স্মৃতিশক্তি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। এমনকি এরা মানসিক ভারসাম্যও হারিয়ে ফেলেন।
- অতিরিক্ত ইয়াবা গ্রহণ হাইপারথার্মিয়া বা উচ্চ শারীরিক তাপমাত্রার কারণ হতে পারে।
- ইয়াবা সেবনকারীরা প্রায় সময়ই হতাশায় ভুগে থাকেন।
- দীর্ঘদিন ইয়াবা সেবনকারী একজনের স্মরণশক্তি কমে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেয়।
- এরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগে থাকেন।
- ইয়াবা শান্ত স্বভাবের কোনো ব্যক্তিকে হিংস্র ও আক্রমণাত্মক করে তুলতে পারে।
- ইয়াবা গ্রহণে হ্যালুসিনেশন ও সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

বিভিন্ন দেশে ইয়াবার ব্যবহারঃ

বাংলাদেশ
বাংলাদেশে ইয়াবার আবির্ভাব ঘটে ১৯৯৭ সালে। পরবর্তীতে ২০০০ সাল থেকে বাংলাদেশের কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে মায়ানমার থেকে ইয়াবা আসতে শুরু করে। এই ট্যাবলেটের দাম তুলনামূলকভাবে বেশি হবার কারণে উচ্চবিত্তদের মাঝেই এটি মূলত: বিস্তার লাভ করে।
মিয়ানমার
মিয়ানমারে ওয়া এবং কোকাং নামের আদিবাসী সম্প্রদায় মেথাম্ফেটামিন পিল বা ইয়াবা এর সবচেয়ে বড় উৎপাদনকারী। এই দুই গোষ্ঠীর লোকজন পূর্বে আফিম এবং হেরোইন উৎপাদন এর সাথে জড়িত ছিল। উল্লেখ্য যে মিয়ানমারে খুব সাধারণ ল্যাবরেটরিতেও মাত্র ২০ হংকং সেন্টের বিনিময়ে প্রতিটি ইয়াবা পিল তৈরি করা হতো। ২০০০ সালে থাইল্যান্ডের সরকার মিয়ানমার সরকারকে সীমান্তে যৌথ টহলের জন্য ব্যাপক চাপ দেয়। মূলত থাইল্যান্ড এবং মিয়ানমারের মধ্যে বিদ্যমান ২৪০০ কিলোমিটার সীমান্ত দিয়ে ইয়াবার চোরাচালান ব্যাপক চোরাচালান রোধের জন্য এই চাপ প্রয়োগ করা হয়।
থাইল্যান্ড
থাইসরকার ১৯৭০ সালে ইয়াবা ট্যাবলেটকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। সেসময় এটি সেদেশে পেট্রল পাম্পে বিক্রি হতো, এবং থাই ট্রাক চালকেরা জেগে থাকার জন্য এটা ব্যবহার করতো। ইয়াবাসেবী ট্রাক ও বাস চালকদের হাতে অনেক গুলো ভয়াবহ বাস দূর্ঘটনা ঘটেছে। থাই প্রধানমন্ত্রী থাকসিন শিনাওয়াত্রা ২০০৩ সালের নির্বাচনী প্রচারণায় মাদক চোরাচালানের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেন। এর পর থেকে থাইল্যান্ডে এই মাদকের প্রকোপ কমে এসেছে।

বাংলাদেশে ইয়াবার ভয়াবহতাঃ

মাদকাশক্তদের মতে অন্যান্য মাদকের তুলনায় ইয়াবা অধিকতর বেশী কার্যকর এবং উত্তেজক হওয়ায় এর ব্যবহার এবং চাহিদা বেশী। এমনকি হেরোইনের চেয়েও বেশী। সবচেয়ে বেশী উদ্বেগের বিষয় হল ইয়াবা ব্যবহার বাংলাদেশের শিক্ষিত অভিজাত শ্রেণীর থেকেই শুরু হয়েছে এবং এখনো চলছে। স্বাভাবিক ভাবেই নিন্মঢাকা নগরীতেই প্রতিদিন ১৪ লাখ ইয়াবার চাহিদা।
চট্টগ্রামে মহানগরীতে এর চাহিদা ৮ লাখ আর কক্সবাজারে ৪ লাখ | চার গ্রেডের মিলে ব্যবসায়ী সংখ্যা ১৫ হাজার। উঠতি টিনএজ ছেলেমেয়ে এখন ইয়াবা আগ্রাসনের শিকার। গুলশান, বনানী, ধানমন্ডি ও উত্তরার অভিভাবকদের জন্য দুঃসংবাদ। আপনাদের ছেলেমেয়ের হাতের নাগালেই এখন ইয়াবা। ইয়াবা ভাসছে অলিতে-গলিতে। বেশ কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যানুযায়ী প্রতি ওয়ার্ডে ২০০’র বেশি ইয়াবা ব্যবসায়ী রয়েছে। জানা যায়, হাতে খরচের টাকা বেশি পাওয়া ছেলেমেয়েরাই এখন ইয়াবার নেশায় আসক্ত। এমনকি ডাক্তার, প্রকৌশলী ও তরুণ ব্যাংকার ব্যবসায়ীদের কাছেও ইয়াবা ভীষণ প্রিয়। এ ভয়াবহ মাদক ‘ইয়াবা’ নিয়ে সরকারসহ দেশবাসী উদ্বিগ্ন হলেইবা কি আসে যায়। আইনশৃক্সখলা বাহিনীর চোখের সামনে চলছে অলিগলিতে বেচাকেনা। এমন লাভজনক ব্যবসায় দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম শেষ হলেইবা কি! এর বিরুদ্ধে কোথাও সাঁড়াশি অভিযান নেই। কারণ এটা বন্ধ হলেই যে বখরা বা চাঁদার মোটা অংক আদায় হবে না।
সন্ধ্যা নামলেই গুলশান, ধানমন্ডি, বনানী ও উত্তরার বিস্তীর্ণ এলাকার অলিগলিতে উঠতি ছেলেমেয়েরা যেখানেই জড়ো হচ্ছে সেখানেই চলছে ইয়াবা সরবরাহ। মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে এক সময় হেরোইনসেবীদের সংখ্যা বাড়ত। এখন ইয়াবা আসক্তদের নিয়ে আসছেন অভিভাবকরা। শাড়ির আঁচলে অসহায় মায়েরা অশ্রুতে চোখ মোছেন নীরবে। বাবার বুকে গভীর বেদনা- দীর্ঘশ্বাস। সন্তানকে নিয়ে দেখা বড় বড় স্বপ্ন এখন ইয়াবার কারণে দুঃস্বপ্ন হয়ে যাচ্ছে।
রাজধানীতে এমএলএম (মাল্টিলেভেল মার্কেটিং) পদ্ধতিতেই চলছে ইয়াবার রমরমা ব্যবসা। চারটি গ্রেডে বিভক্ত হয়ে ইয়াবা ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে গডফাদাররা। সবচেয়ে নিচের গ্রেডের ইয়াবা ব্যবসায়ীর বিক্রির টার্গেট থাকে প্রতিদিন ৪০-৫০টি। ওই গ্রেডের একেক ব্যবসায়ীর নিয়ন্ত্রণে ১০-১২ জনের সেবক গ্রুপ থাকে।
তবে প্রতিদিন লাখ পিসের অধিক ব্যবসা করে এমন মাদক ব্যবসায়ীর (প্রথম গ্রেড) সংখ্যাও বর্তমানে ১০০ ছাড়িয়ে গেছে। তাদের অর্ধেকের বেশি সারা দেশে ইয়াবা সরবরাহ করে। এদের অনেকেই অন্য ব্যবসার আড়ালে দেদারসে ইয়াবার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। রাজধানীর এমন কোনো গলি বাদ নেই যেখানে ইয়াবা ব্যবসায়ী নেই। র‌্যাবের ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার পাশা জানান, অবিশ্বাস্য রকমভাবে ইয়াবার বিস্তার ঘটছে সারা দেশে। প্রতি গলিতেই রয়েছে ইয়াবা ব্যবসায়ী। আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি, ইয়াবা সেবক ও ব্যবসায়ীর তালিকায় ডাক্তার-প্রকৌশলী থেকে শুরু করে দিনমজুর পর্যন্ত প্রায় সব পেশার মানুষই রয়েছেন। তবে এর নিয়ন্ত্রণে র‌্যাব সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে খোদ রাজধানীতেই তৈরি হচ্ছে নকল ইয়াবা। কত সালে জানি (মনে নাই) ১৭ এপ্রিল মীরহাজিরবাগের ৪২৮/১ নম্বর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ এমনই নকল ইয়াবা কারখানার সন্ধান পায়। এ সময় কারখানা থেকে দুই রাউন্ড গুলি, একটি বিদেশি পিস্তল ও নকল ইয়াবা তৈরির বিভিন্ন উপকরণসহ জাকির হাসান ওরফে জুয়েল (৩০) ও নাসির উদ্দিন (৩৭) নামের দুজনকে গ্রেফতার করে। গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের ধারণা রাজধানীতে আরও নকল কারখানা থাকতে পারে। ব্যবসা বাড়ানোর কৌশল হিসেবে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা প্রথমে তার পরিচিতজনদের কাছে একটি ইয়াবা বড়ি ফ্রি দিচ্ছে। প্রথমবার খাওয়ার পরই ওই ব্যক্তি অন্য রকম সতেজতা, একই সঙ্গে যৌন উত্তেজনা অনুভব করে। দুই-একদিন এর থেকে বিরত থাকলেও ওই অনুভূতি ভুলতে পারে না। ওই সময় ইয়াবা ব্যবসায়ীর কাছে গেলে সে কম মূল্যে তাকে আবার আরেকটি ইয়াবা পিল দেয়। এক পর্যায়ে সে আসক্ত হয়ে পড়ে ইয়াবাতে। প্রথমদিকে একটিতে অভ্যস্ত থাকলেও ক্রমান্বয়ে কারও কারও সেবনের মাত্রা সর্বোচ্চ ৬-৮টিতে গিয়ে ঠেকে। ওই সময় ইয়াবা ব্যবসায়ী সেবনকারীকে বিক্রেতা হিসেবে বেছে নেয়। টার্গেট দেয় দৈনিক ৪০-৫০টি। ওই ইয়াবা বিক্রির ফলে তার সেবনের খরচ অনেকটাই উঠে যাচ্ছে। একটি ইয়াবার দাম ৩০০-৪০০ টাকা। তাই সেবনকারীরা ২৫০ টাকায় এনে বিক্রি করতে উৎসাহবোধ করে। এতে তার সেবন বাবদ খরচের টাকা উঠে যায়। তবে পরিচিতজনদের বাইরে ইয়াবা বিক্রি করে না ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। তারা স্কুল-কলেজ বিশেষ করে ইংরেজি মিডিয়ামের ছাত্রছাত্রীদের এখন টার্গেট করে অগ্রসর হচ্ছে।
নিষিদ্ধ এ মাদককে অভিযান চালিয়েও দমানো যাচ্ছে না। কারণ রাজনৈতিক পৃষ্টপোষকতা। থাইল্যান্ডের মতো দেশে ইয়াবা আগ্রাসনকে দমন করার জন্য ৩০০০ ব্যবসায়ীকে ক্রসফায়ার দিতে বাধ্য হয়েছিল তৎকালিন সরকার। বর্তমানে ইয়াবাসহ সকল প্রকার মাদক দ্রব্যের নিরাপদ ট্রানজিট হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে বাংলাদেশ। এক রির্পোটে জানা যায়, মিয়ানমার সীমান্তে দুই শতাধিক প্রভাবশালী ইয়াবা ব্যবসায়ী জড়িত রয়েছে। যে সরকার ক্ষমতায় থাকুন না কেন তাদের রয়েছে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। অন্য এক রির্পোটে জানা যায়, টেকনাফে চিহিৃত ২০ টি প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের ৩ শতাধিক সদস্য দেশের সর্বত্র পৌঁছে দিচ্ছে ইয়াবা। তালিকাভূক্ত ৯৭ জন গদফাদার নিয়ন্ত্রন করছে এই সিন্টিকেট। তারাই সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে অথবা ম্যানেজ করে নিয়ে আসছে ইয়াবার চালান।
এ পর্যন্ত অসংখ্য ইয়াবার চালান মায়ানমার থেকে বাংলাদেশে পাচার করার সময় বিজিবি ও র্যাব সহ বিভিন্ন আইন সৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়েছে। বিগত দিনের রেকর্ড হিসেবে এটাই বলা যায় যে, ইয়াবা পাচার বাংলাদেশে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। র্যাব-১ ও র্যাব ৭ এর প্রতিবেদন অনুযায়ী গত ১৮ মে ২০১২ তারিখে বাংলাদেশে পাচার হওয়া এ যাবৎ কালের সবচেয়ে বড় ইয়াবার চালান চট্রগ্রামের আসাদগঞ্জ খেকে আটক করেছে যেখানে ২,৭০,০০০ ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়া গেছে যার আনুমানিক বাজার মুল্য ৯০ খেকে ১০০ মিলিয়ন টাকা। এর আগে ২০০৬ সালে ঢাকার গুলশান এলাকা থেকে র্যাব ১,১৫,০০০ ইয়াবা ট্যাবলেট আটক করেছিল। এ ছাড়াও অসংখ্যবার ছোট মাঝারী ইয়াবার চালান বাংলাদেশে বিভিন্ন এলাকা থেকে আইন সৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়েছে। ২০০০ সাল থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে ইয়াবা পাচারের রেকর্ড পর্যবেক্ষন করলে দেখা যায় যে, বাংলাদেশে ইয়াবার বিরাট মার্কেট তৈরী হয়েছে, অর্থাৎ যুব সমজের বিরাট একটি অংশ ইয়াবায় আসক্ত হয়ে পড়েছে যা একটি দেশের জন্য অশনি সংকেত।
বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ একটি অতি সম্ভাবনার দেশ। বর্তমানে প্রায় ১৫ কোটি জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশী ই যুবক এবং কর্মক্ষম, যেখানে অনেক উন্নত দেশেই বয়স্ক লোকের সংখ্যা বেশী এবং কর্মক্ষম লোকের অভাব। আমাদের যুবসমাজের একটি বড় অংশ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কাজ করে হাজার হাজার কোটি টাকা দেশে পাঠিয়েছেন যা দিয়ে বিশ্ব মন্দাকে দুরে ঠেলে রাখা সম্ভব হয়েছে। এবং আরেকটি যুব সমাজ দেশে পরিশ্রম করে উৎপাদিত পন্য বিদেশে রপ্তানি করে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখছে। এই যুব সমাজ যদি ইয়াবা বা মাদকের কারনে ধ্বংশের দিকে ধাবিত হয় তবে দেশের অতিত্ব টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবেনা। আজকের যুব সমাজ তথা বাংলাদেশ কে একটি উন্নত দেশে পরিনত করে বিশ্বায়নের স্বাদ নিয়ে পরবর্তী প্রজন্মকে এগিয়ে নিতে ইয়াবা(মাদক) পাচার ও ব্যাবহার বন্ধের কোন বিকল্প নেই। পৃথিবীর ইতিহাসে বাংলাদেশ তথা ভারত বর্ষের সভ্যতা অতি প্রাচীন। বিভিন্ন সময়ে নানাবিধ কারনে আলাদা আলাদা গোষ্ঠি এই এলাকাকে শাসন ও শোষন করলেও বর্তমানে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট যা অনেক রক্ত, জীবন ও ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে। একই সাথে স্বাধীনতার চল্লিশ বছরে অনেক ব্যার্থতা ও অনেক অর্জন থাকলেও এ জাতির ভবিষ্যৎ অত্যন্ত সু-প্রসন্ন বলা যায়। এমতাবস্থায়; মাদক দ্রব্য বা ইয়াবার ছোবলে এদেশের যুব সমাজ ধ্বংশ হলে বাঙালির হাজার বছরের অর্জন ধুলায় মিশে যাবে। কাজেই ইয়াবার মত অভিশাপ কে চিরতরে দুর করতে সরকারী, বেসরকারী ও সামাজিক ভাবে ইয়াবার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করতে হবে।

ইয়াবা আগ্রাসন প্রতিরোধে করনীয়ঃ

ইয়াবার বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে চিরতরে বন্ধ করতে হলে দেশের সর্বস্তরের মানুষের সর্বাত্বক অংশগ্রহনে যে কাজগুলো করতে হবে তা এ ভাবে বলা যেতে পারে যেমন:
# সব প্রথম মাদক ব্যবসার রাজনৈতিক পৃষ্টপোষকতা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। কারণ প্রতি সরকারের আমলে যুবলীগ-যুবদল, ছাত্রলীগ-ছাত্রদল, আওয়ামীলীগ-বিএনপি এদের পৃষ্টপোষকতায় দেশে অপরাধের ডাল-পালা বিস্তার লাভ করতে হবে।
# যেহেতু ইয়াবা সেবনে মানুষের মৃত্যু হয় এবং শুধুই মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায় তাই ইয়াবা উৎপাদন, পাচার, বিক্রয়, ও ব্যবহার সহ সংশ্লিষ্টতার কারনে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড হওয়া উচিত।
# বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকা ১০০% সুরক্ষিত রাখতে হবে।
# দেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে আইন প্রয়োগের ব্যাপারে ১০০% নিশ্চিত হতে হবে।
# ইয়াবা বা মাদক উৎপাদন, পাচার, বিক্রয়, ও ব্যবহারের অপরাধের শাস্তির মাত্রা অত্যন্ত কঠিন ও ভয়াবহ রেখে বিশেষ আইন প্রণয়ন করতে হবে।
# বাংলাদেশে আইন প্রয়োগের খে¦ত্রে দুনীতি একটি বড় বাধা, তাই দুনীতি রোধে বিশেষ আইন প্রণয়ন সহ সরকার কে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
# ইয়াবা বা যে কোন মাদক দ্রব্য ব্যবহারের কুফল সমন্ধে পরিষ্কার ধারনা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ্য বই হইতে উচ্চতর শিক্ষার বইয়ে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে যাতে দেশের প্রতিটি নাগরিক মাদক ব্যাবহারের ভয়াবহতা সম্বন্ধে অবগত হয়ে সতর্ক হতে পারে।
# সরকারী ও বেসরকারী ভাবে সভা-সমাবেশ, সেমিনার, আলোচনা ইত্যাদির মাধ্যমে দেশের সর্বস্তরের মানুষকে ইয়াবার ভয়াবহতা ও এর প্রতিকারের ব্যাপারে অবগত করতে হবে। এ ব্যাপারে ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়া এবং এনজিও বিশেষ ভুমিকা রাখতে পারে।
# স্থানীয় সরকার যেমন: বিভাগ, জেলা, থানা থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ড পর্যন্ত সমস্ত প্রশাসন ও জন প্রতিনিধি কে স্ব-স্ব এলাকায় মাদক দ্রব্য উৎপাদন, বিক্রি ও ব্যবহারের ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখার জন্য দায়িত্ব দিতে হবে। সেই সাথে দায়িত্ব পালনে ব্যার্থতার জন্য প্রত্যেক এলাকার প্রতিনিধিকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। এটা এই জন্য যে, তৃণমূল পর্যায়ের প্রতিনিধিরা স্ব-স্ব এলাকার ব্যাপারে বেশী অবগত থাকেন।
# দেশের শহর এলাকায়, বিশেষ করে বড় শহরগুলোতে সমস্ত নাইট ক্লাব, ইয়ুথ ক্লাব, আবাসিক হোটেল, ষ্টেশন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পার্ক ইত্যাদি সহ যে সব এলাকায় যুবকদের বিচরন বেশী সেই সব এলাকা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ নজরে রাখতে হবে।
# পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন মানুষের সুস্থ ভাবে বেচে থাকার জন্য খুবই গুরুত্বপুর্ন, তাই এ ব্যাপারে তৃণমুল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে উচ্চতর শিক্ষালয় পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদেরকে শিক্ষার মাধ্যমে পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন সুদৃঢ় করতে উৎসাহিত করার ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
# পরিবারের ছেলে-মেয়েদেরকে শিশু থেকে প্রাপ্ত বয়স পর্যন্ত রক্ষনাবেক্ষন, দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের মধ্যে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন বিষয়ে পিতা-মাতা ও অভিভাবকদের কে সরাসরি অথবা বই পুস্তকের মাধ্যমে ধারনা দেয়া যেতে পারে। কারন বেশীর ভাগ যুবক-যুবতী ভুল পথে যাওয়ার ও মাদকাশক্ত হওয়ার পেছনে পিতা-মাতা ও অভিভাবকের অসতর্কতাই দায়ী।
# লেখাপড়ার পাশা পাশি প্রতিটি শিশু কে খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক চর্চার দিকে উৎসাহিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সমাজ ও সরকারকে বিশেষ ভুমিকা রাখতে হবে।
# ৩য় বা ৪র্থ শ্রেনী থেকেই শরীরচর্চা বা সূস্বাস্থ গঠনে করনীয় বিষয়ে বিশেষ পুস্তক পাঠ্য বইয়ের সাথে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, তা হলে প্রতিটি শিশু সু-স্বাস্থ্য গঠনের পরিপন্থী কোন কাজ বা প্রক্রিয়ায় অংশ গ্রহনে উৎসাহিত হবেনা। তবে এই ব্যাপারে দেশের প্রতিটি শিশুকে শিক্ষার আওতায় আনতে হবে।
# প্রতিটি শিশু ও যুবক-যুবতীকে পারিবারিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে তাদের মনের ইচ্ছাকে স্বাধীন ভাবে ব্যাক্ত করার সুযোগ দিতে হবে এবং তাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ন আচরণ করতে হবে।
# ইয়াবায় আসক্তদের দ্রুত চিকিৎসার ব্যাবস্থা করতে হবে। সরকারী, বেসরকারী উদ্দোগে আসক্ত ব্যাক্তিদের সুস্থ করে তাদের পুনর্বাসন করতে হবে। তাদের কে বুঝাতে হবে যে তারাও পরিবার ও সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ
# দক্ষিন ও দক্ষিন পুর্ব এশিয়ার দেশগুলো সহযোগিতা চুক্তির মাধ্যমে ইয়াবা বা মাদক পাচার বন্ধে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই সব অপরাধমুলক কর্মকান্ড প্রতিরোধ করা অনেকাংশেই সম্ভব।
# জাতিসংঘের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ইয়াবার ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতনতায় প্রচারাভিযান চালানো উচিত।

সবশেষে এতটুকু বলতে চাই, যুগ যুগ ধরে পৃথিবীতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রকার সমস্যা এসেছে, আর মানুষ সম্মিলিত ভাবে সেই সব সমস্যা সমাধান করে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনে দেশ ও জাতি গোষ্ঠির স্বাভাবিক জীবন যাপন নিশ্চিত করেছে। বর্তমানে আমাদের দেশে ইয়াবা ও তেমনি একটি মারাত্বক সমস্যা বা ব্যাধি, তবে আমি বিশ্বাস করি অচিরেই আমাদের সবার সচেতনতা ও স্ব স্ব দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে ইয়াবা পাচার ও বিক্রয়কারীদেরকে নিধনের মাধ্যমে যুব সমাজ কে এর হাত থেকে বাচাতে পারবো এবং সুস্থ সমাজ ও সমৃদ্ধশালী দেশ গড়ে ভবিষ্যত প্রজন্মের স্বাভাবিক জীবন যাপন নিশ্চিত করতে পারব।

কৃতজ্ঞতা: উইকিপিডিয়া, গুগল সহ অন্যান্য সাইট যেখান থেকে ছবি ও তথ্য নিয়েছি। বিভিন্ন মাদকাসক্ত নিরাময়কেন্দ্র ও ডাক্তারদের কাছ থেকে নেওয়া তথ্যে। বিভিন্ন থানার কর্মরত লোকদের কাছ থেকে নেওয়া তথ্য ও ইন্টারনেটের বিভিন্ন সাইট থেকে নেওয়া।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৯
৭টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মত প্রকাশ মানে সহমত।

লিখেছেন অনুপম বলছি, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৭

আওয়ামী লীগ আমলে সমাজের একটা অংশের অভিযোগ ছিলো, তাদের নাকি মত প্রকাশের স্বাধীনতা নাই। যদিও, এই কথাটাও তারা প্রকাশ্যে বলতে পারতেন, লিখে অথবা টকশো তে।

এখন রা জা কারের আমলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্নমর্যাদা!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৩

রেহমান সোবহান একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার। রেহমান সাহেব এমন একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন যা খুব নির্জন এলাকায় অবস্থিত এবং সেখানে যাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁঠালের আমসত্ত্ব

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

কাঁঠালের কি আমসত্ত্ব হয় ? হয় ভাই এ দেশে সবই হয়। কুটিল বুদ্ধি , বাগ্মিতা আর কিছু জারি জুরি জানলে আপনি সহজেই কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানাতে পারবেন।
কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানানের জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। অ্যাকসিডেন্ট আরও বাড়বে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



এরকম সুন্দরী বালিকাকে ট্র্যাফিক দায়িত্বে দিলে চালকদের মাথা ঘুরে আরেক গাড়ির সাথে লাগিয়ে দিয়ে পুরো রাস্তাই বন্দ হয়ে যাবে ।
...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×