অনেকদিন পরে ব্লগে আসলাম..দেখলাম, শেরজা তপন ভাই আমাকে স্মরণ করেছেন ওনার একটা লেখায়!..আসলে ভাইয়া জানেও যে, আমি কেমন ফাঁকিবাজ ব্লগার! তবুও আমাকে মনে করার জন্য অনেক ধন্যবাদ! আর সময়ও পাইনা একেবারে,.. আজকে কাজের চাপ একটু কম, তাই কিছু একটা লিখতে বসে গেলাম..
আমার এবছরের ব্যস্ততা আগের বছরের চেয়ে কম নয়, বরং বেশীই..কোভিড পরবর্তী সব কিছু খুলে গেছে, আমাদের অফিসের কাজের চাপও বেড়ে গেছে! দুই ছেলেমেয়ে আমার এখন দুই দিকে..ছেলে ২২০ মাইল উত্তরে (বোস্টন), মেয়ে ২২০ মাইল দক্ষিনে (বাল্টিমোর), আর আমি একেবারে ঠিক মাঝখানে (নিউ ইয়র্কে)..খুব মজার, না? ওদের জন্য কেমন যে লাগে!..প্রান ছুটে যায়, যেন এক্ষুনি চলে যাই ওদের দেখতে!..কিন্তু সেটা কি সম্ভব! তাই পালা করে করে যাই দুদিকে সময় পেলে, ছেলের কাছেই বেশী যাওয়া হয়, ছোট বলে..
মাঝখানে শীতের ছুটিতে গেলাম আমরা সবাই রৌদ্রজ্বল ফ্লোরিডা তে, এই বছর জানুয়ারীর প্রথম দিকে,..নিউ ইয়র্কে তখন হাড় কাঁপানো শীত, স্যাতসেতে আবহাওয়া, বিশ্রী একেবারে!..চীর সবুজ, ঝলমলে রোদের ফ্লোরিডার ওরলান্ডো, মায়ামী শহর, আর অপূর্ব, মায়াময় কী ওয়েস্ট (Key West) বীচে দারুন সময় কাটালাম ৫ দিনের!..আজকে সকালে ছেলেকে ফোন করলাম, মেজাজ খারাপ ওর..ভয়াবহ শৈত্যপ্রবাহ চলছে এখন বোস্টনে! আর মেয়েও আছে অনেক পড়াশোনার প্রেশারে ( ও এখন জনস হপকীনসে MPH করছে Epidemiology and Infectious Disease এর উপরে)।
শুন্য বাসা আমার..দুজন আমরা কাজ থেকে রাতে বাসায় ফিরলে হাহাকার লাগে..ভোর বেলায় বাসার সামনে সেই অতি পরিচিত হলুদ স্কুল বাসটা দেখলে বুক চিনচিন করে ওঠে..ছবির মতো ভেসে ওঠে মানস পটে- দু ভাইবোন কাঁধে ভারী ব্যাকপাক নিয়ে শেষ মুহূর্তের স্কুল বাসটা ধরার জন্য পড়িমড়ি করে দৌড়াচ্ছে! ছেলেমেয়ে বড় হয়ে গেলে বাসা ছেড়ে দিলে অনেক মা-বাবার শুনেছি একগাদা ডিপ্রেশন এসে ভর করে..আমারও হয়েছে তাই! ভাল লাগেনা কিছু..কান্না পায় মাঝেমাঝে, কেন বাচ্চারা এত তাড়াতাড়ি বড় হয়ে যায়?!
কিছু ছবি শেয়ার করলাম, সবই আমার আইফোনে তোলা..আমার যাওয়া আসা বাচ্চাদের কাছে, ওদের শহর, রৌদ্রজ্বল ফ্লোরিডা ...এসব কিছু নিয়ে!
এই ছবিগুলে গত বছরের নভেম্বরে তোলা মেরিল্যান্ডের একটা স্টেট পার্কে (Patapsco Valley State Park), যখন মেয়েকে দেখতে গিয়েছিলাম।
এ ছবিটার একটা গল্প আছে,.. আসলে আমি আমার মেয়ের আ্যপার্টমেন্টে বসে ওকে কিছু স্কেচ করে দিয়েছিলাম, ..আর ও ফ্রেমে বন্দী করে রেখে দিল মায়ের হাতের কিছু কাজ!
এ ছবিটা আমার মেয়ের হাতে তোলা, ও আমাকে পাঠিয়েছিলো..ছবিটা তুলেছিলো বাল্টিমোরের একটা পার্কে বসে, পড়ার ফাঁকে।
মেয়ের স্টুডিও আ্যপার্টমেন্টের ডেকোরেশন টা আমরা মা-মেয়ে দুজনেই করেছিলাম..কেমন হয়েছে?
এটা আমার ছেলের ডিপার্টমেন্ট- CDS (Computing and Data Science) in Boston University। অদ্ভুত সুন্দর ডিজাইন এটি! এটা আমার তোলা গত সপ্তাহে।
ছেলে আমার একটা ক্লীফ এ দাড়িয়ে আছে, পেছনে ঊত্তাল সমুদ্র,..গত বছর সামারে, স্থান: সালেম, ম্যাসাচুসেটস
খুব মজার ছবি এটা..আমার ভাগ্নে আর ওর বৌ এসেছিলো আমার বাসায় বেড়াতে গত সামারে..দুজন বাস্কেটবল খেলছিলো ব্যাকইয়ার্ডে, আমিও টুক করে তুলে রাখলাম আমার ফোনে এই নিশ্পাপ মুহূর্তটাকে! (ছবিটা স্লাইডিং দরজার নেটের পেছন থেকে তোলা, তাই একটু ঝাপসা এসেছে!)
যখন সন্ধ্যা নামে..স্থান: ভাগ্নের বাসা, বারলিংটন, ম্যাসাচুসেটস
ভাইবোন রোদ পোহাচ্ছে..স্থান: ওরলান্ডো, ফ্লোরিডা
গন্তব্যের দিকে ফেরা! স্থান: ডেটোনা বীচ, ফ্লোরিডা
আমার আছে জল..স্থান: কেলি পার্ক/রক স্প্রীং, ফ্লোরিডা
অনেক লিখে আর ছবি দিয়ে হিজিবিজি এই পোস্ট টা ভরে ফেললাম, আবার কবে ফেরৎ আসি কে জানে!..সবাই অনেক ভালো থাকবেন, নতুন বছরের শুভেচ্ছা রইল!!!!
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:৩২