শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দরের তরুন শিডিউল ম্যানেজার ঈশান, হবু পাইলট ঈশিতাকে প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়ে যায়। একটা সময় প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বসে!! ঈশিতা অনেক দিন সময় নিয়ে একদিন দুষ্ট চাহনির মিষ্টি হাসি দিয়ে সম্মতি দেয়।
তারপর থেকেই সারাদিনের ব্যাস্ততার পর ঈশান বাসায় ফিরে আশাভরা নয়নে দুজনের সুখময় ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখে।
যেদিন সকালের ফ্লাইটে ঈশিতা প্রথম পাইলট হিসেবে দুবাইয়ে উড়াল দিযেছিলো, ঈশান ভয়ার্ত নয়নে সেই দুষ্ট ভালবাসা মাখা হাসিটার অপেক্ষায় আকাশের পানে চাতকের মত তাকিয়ে ছিল।
যখন সিনিয়র পাইলট আদিব সাহেবের সুর্দশন পাইলট ছেলে দ্বীপ ঈশিতাকে ডেকে বলেছিল বাবা তোমাকে আমার সাথে বাবার অফিসে যেতে বলেছে!! তখন ঈশান অশ্রুজ্জল নয়নে আল্লাহকে জীবনে সবচেযে বেশি ডেকেছিলো।
এই তো কিছুদিন আগে ঈশিতাকে উত্তক্ত করা উত্তরার সেই বখাটে ছেলেটা সন্ধ্যারপর বাসায় ফেরার পথে ঈশিতাকে যখন বিরক্ত করছিলো,ঈশিতার অগোচরে তাকে এগিয়ে দিতে আসা ঈশান কি মারটাই দিয়েছিলো বখাটেটাকে!!!
ঈশিতা আপ্লুত হয়ে ঈশানের বুকে ঝাপটে পড়েছিলো।
সময়ের আর্বতনে ঈশান যখন ঈশিতাকে বিয়ের ভাবনায় প্রস্তুতি নিচ্ছে......... তখনই একদিন সকালে জানতে পারে ঈশিতা জ্যামাইকা দুইদিন পরে আসার কথা থাকলেও আজকেও ফিরেনি!!!
মোবাইলের ডিসপ্লেতে তদেখতে পায় এসএমএস ভাসছে...... আমি কখনোই তোমার যোগ্য ছিলাম না,তুমি আমার চেয়ে অনেক ভালো মেয়ে পাবে-ঈশিতা.....
স্তম্ভিত ঈশানের কানে বাজে হঠাৎ আসা দ্বীপের ফোন...... ঈশান! কাল নাকি জ্যামাইকায় ঈশিতার বিয়ে ওর কাজিন নিরবের সাথে,অফিসের সবাইকে দাওয়াত দিচ্ছে!.... তুমি কোথায় এখন......
ঈশানের জ্ঞান ফেরে রাত নয়টায়,সকালের সেই অফিসে যাবার পোষাকেই আনমনে হাটতে থাকে জীবনে সবচেয়ে বেশি এড়িয়ে চলা পাপনের দোকানের দিকে............. জীবনের প্রথমবার করা অতিরিক্ত নেশার ঘোরে অস্পষ্ট ভাষায় বলতে লাগলো "তুমি তোমার ওই মিষ্টি হাসিটা কাউকে দেখিয়ো না প্লীজ!!! ওটা শুধু আমার জন্য"...... ঢুলতে ঢুলতে হাটতে লাগলো পলাশী মোড়ের মূল রাস্তার দিকে...... ঈশিতা তুমি সুখে থেকো..... শুধু ওই দুষ্ট হাসিটা.... ঈশিতা তোমাকে..........
তিন মাস পর ..... আজ কেন যেন আজিমপুর কবরস্থানে ঈশানের কবরটায় সকালের আলোটা বেশি ঝলকানি দিচ্ছে......... দিবেই তো...
ঈশিতা ঝর্ণার নিচে দাড়িয়ে সেই দুষ্ট মিষ্টি হাসিটা আজ অনেক বেশি হাসছে..........নিরব-ঈশিতার অনাগত ভবিষ্যতের খবরটা ওরা আজই পেয়েছে....
ঈশিতার খুশিতেই তো ঈশানের খুশি!!!!!!!!!!
প্রতিদিনই ডুবন্ত সূর্য লাল আভা ছড়িয়ে ঈশানকে স্মরন করে আজিমপুরে...........
.......................................................................................................................................................................
ক্লান্ত শয়নে দৃপ্ত নয়নে দেখেছি তোমায় নিয়ে স্বপন
মেঘহীন তারা ভরা আকাশের মত হয় যেন মোদের আগামীর ভূবন।
অরুনের লগে নীড় ছেড়ে পাখি পাড়ি দেয় অজানায়
ভীত চাতক চেয়ে থাকে শুধু অস্পরীর ভালবাসার আশায়।
তপ্তময় আকাশে হরিনীর টানে বাজের আনাগোনা
ত্রস্ত বল্গা হাপুস নয়নে করে সৃজকের পানে অর্চনার প্রার্থনা।
ডুবন্ত আধারে হায়েনার দৌড় রক্তিমতার খোজে
লাজুক তিড়িং ঝাপটে বাচে চাতকের মাঝে।
তৃপ্ত ময়ুর ক্ষণ গোনে রূপ সুধার আশায়
দীপ্ত শ্যামা উড়ে চলে দড়িয়ার পানে সুখের নেশায়।
শোকের বদনে মাদকের ঘোরে পরাভূত অশান্ত বেদনায়
অস্ফুট স্বরে প্রেমের মায়ায় প্রেয়সীর আজন্ম সুখ কামনায়।
প্রভাতের আলো ঝলকানি দেয় চাতকের গোরে
নিঠুর শ্যামা খোশে মাতে অনাগতের রবে ঝর্নার বাহুডোরে।
আজও সাঝ রাঙ্গা আভা দেয় চাতকের স্মরে।।।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১০:২৪