একটা টেবিল ল্যাম্প জ্বলছে, রাত ১টা কি ২টা হবে, চারিদিক নীরব নিস্তব্ধ, শুধু আছে ঝিঝি পোকার ডাকের অসম্ভব তীব্র মাদকতা। আশিকের কপাল টা ঘামে ভেজা, চোখ দুটো লাল টকটকে।
ঘটনাটার শুরু ২ বছর আগে, হঠাত করেই একটা ফোন আসে আশিকের কাছে। হ্যালো বলেই অবাক হয়ে বুঝতে পারে ফোনটা করেছে তার ব্যাচম্যাট ভেলেন্তিনা। তারপর প্রচলিত প্রেম কাহিনী।
কাঁপা কাঁপা হাতে টেবিলের উপর থেকে সিগারেট টা নিল আশিক। লাইটার দিয়ে সিগারেট জ্বালিয়ে চোখ বন্ধ করে লম্বা একটা টান দিয়ে মনে র সব ঘৃনা মিশিয়ে ধোয়া গুলো ছেড়ে দিলো। অন্ধকার ঘরে টেবিল ল্যাম্পের মৃদু আলোয় সাপের মতো একেঁবেকে উড়তে লাগলো ধোঁয়াগুলো।
প্রচলিত প্রেম কাহিনীর মতো খুব স্বাভাবিক ভাবেই বেশ কিছু সমস্যা এসে হাজির হয় একটা সময়। আশিক চেষ্টা করে এবং চেষ্টা করে। খুব অস্পষ্ট সুখের আশায় বার বার ভেলেন্তিনাকে বুঝাতে চায়, এইতো দুজন আছে বেশ ভালোই আছে! কিন্তু তাই বলে ভেলেন্তিনা তা বুঝবে কেন! তার একটা ভবিষ্যৎ আছে না? আর তা ছাড়া তার সুযোগ আছে বেটার অপশনের্, কত ব্যাংক ব্যালেন্স হোল্ডার হাংক ছেলে এক পায়ে চোখ বন্ধ করে রাজি তার হাত ধরতে হুহ্! জীবন তো একটাই, কি দরকার ঠুনকো ভালোবাসার জন্য এত কষ্ট করার!
আশিকের চারপাশ টা ধোঁয়ায় ভরে গেছে। মাঝখানটাতে মূর্তির মতো বসে অবাক বিষ্ময়ে ভাবছে সেই দিনের কথা যেদিন আশিক তার সমস্ত রাগ –দুঃখ- চিন্তা -চেতনা মাটিতে মিশিয়ে তার চেয়েও নীচে নিজেকে নামিয়ে কাঁদতে কাঁদতে ভেলেন্তিনাকে বলেছিলো ‘প্লিজ ছেড়ে যেও না!’ হয়তো কিছুক্ষণের জন্য বাস্তবতাকে ভুলে গিয়েছিলো ভেলেন্তিনা, তাই আশিকের হাত দুটো ধরে বলেছিলো ‘এই বোকা! এই যে আমার দুটো হাত তোমার দু হাতে রেখে চোখ বন্ধ করলাম্, তুমি এখন যেখানে নিয়ে যাবে আমি সেখানেই যাবো!’ কিন্তু তাই বলে কি কথা রাখতেই হবে? হুম হয়তো ফোনটা সে ই প্রথম দিয়েছিলো, কথা সে ই শুরু করেছিলো, ভালো লাগাটা তার ই প্রথম তাই বলে তো নিজেকে বিক্রি করে দেয়নি!হুম হয়তো আবেগের ঘোরে মায়া মাখানো কিছু কথা বলেছেই কিন্তু তা দিয়ে তো আর জীবন চলবে না।এখন সময়টা হল সারভাইবাল ফর দ্যা ফিটেস্ট! তাই এই তত্ত্ব মেনে ঠিক তার পরদিন সকালে খুব লক্ষ্মী মেয়ের মতো আশিক কে বলে দিলো ‘ আশিক! I AM SORRY!’
একেবারে আবেগ শূন্য হয়ে গিয়েছিলো আশিক। ধীরে ধীরে বুঝতে পারে কত টা একা হয়ে গেল হঠাত করে। নিজেকে খুব ছোট লাগে নিজের ই কাছে। ঘৃণায় মনটা ভরে যায়্। তার সামনে দিয়েই ভেলেন্তিনা তার নূতন জীবন যুদ্ধে জয়ী কোন এক ছেলের সাথে ঘুরে বেড়ায়্, হাসি এবং খুশি। আশিকের কাছে ভেলেন্তিনাকে এখন মনে হয় জীবন ও জীবিকার তাগিদে ছুটৈ বেড়ানো খেটে খাওয়া মানুষ্!
তাহলে থাক সে আবেগ চাপা পড়ে! সবাই তো সুখেই আছে, ভাল আছে সে কেনো একা কষ্ট পাবে? নাহ মানে হয় না এর কোনো।
আশিক খেয়াল করলো ধোঁয়াগুলোকে সুন্দর লাগছে! জানালা দিয়ে কি ঠান্ডা বাতাস আসছে! হঠাত করেই খুব হালকা লাগছে নিজেকে আর সিগারেটের সাদা শুভ্র ধোঁয়ায় অদ্ভুত আলোকিত হয়ে উঠেছে পুরো রুমটা!
(বাস্তব জীবনে আশিকরা এত সহজে সার্ভাইবাল ফর দ্যা ফিটেস্ট তত্ব গ্রহন করতে পারে না। আশিক রা রাতের পর রাত জেগে থাকে অসম্ভব না মেলানো কোন হিসেব মেলাতে, যা তারা নিজেরাও জানে মিলবেনা কোন দিন ও। তারপরেও ক্লান্ত যোদ্ধার মতো গভীরে খুব গভীরে একটা ক্ষত বয়ে নিযে বেড়ায় সবার অলক্ষে)

আলোচিত ব্লগ
"মিস্টার মাওলা"
বিটিভিতে খুব সম্ভবত আগে একটি বাংলা ছবি প্রচার করা হতো , নাম 'মিস্টার মাওলা'। নায়ক রাজ রাজ্জাক, অভিনিত ছবির সার-সংক্ষেপ কিছুটা এমন: গ্রামের বোকাসোকা, নির্বোধ ছেলে মাওলা। মাকে হারিয়ে শহরে... ...বাকিটুকু পড়ুন
এখন বোঝা যাচ্ছে বাংলাদেশ কেন উন্নত দেশ হতে পারেনি এবং ভবিষ্যতেও (সম্ভবত) হতে পারবে না…
১. সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে গুটিকয়েক যে কয়েকটি দেশ বিশ্বে স্বাধীনতা লাভ করেছে তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। ১৯৭১ সালে এত রক্তের বিনিময়ে যে দেশ তৈরি হয়েছিল, তার সরকারে যারা ছিল... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সুনিতা উইলিয়ামস: মহাকাশ অনুসন্ধানে অনুপ্রেরণার যাত্রা
সুনিতা উইলিয়ামস কে? যদিও তুমি তোমার পাঠ্যপুস্তকে সুনিতা উইলিয়ামসের কথা শুনেছো, তবুও তুমি হয়তো ভাবছো যে সে কে ?
বিখ্যাত নভোচারী সুনিতা উইলিয়ামসের ক্যারিয়ার ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সেরা, এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ইলন মাস্ক , এসময়ের নায়ক
সুনিতা উইলিয়ামদের ফিরিয়ে আনার আসল নায়ক!
৯ মাস! হ্যাঁ, পুরো ৯ মাস ধরে মহাকাশে আটকে ছিলেন নাসার মহাকাশচারী সুনিতা উইলিয়াম। একটি কারিগরি ত্রুটির কারণে তিনি পৃথিবীতে ফিরে আসতে... ...বাকিটুকু পড়ুন
রাজনীতির পরিপক্কতা বনাম আবেগ: হাসনাত ও সারজিস বিতর্কের বিশ্লেষণ
প্রতিকী ছবি
বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমের সাম্প্রতিক ফেসবুক পোস্ট আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে। এই দুই নেতার প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ করলে স্পষ্ট হয়, তারা একই ঘটনার... ...বাকিটুকু পড়ুন