somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ ৭ই নভেম্বর, আগ্রাসী শক্তির মুখে চপেটাঘাতের সেই ঐতিহাসিক দিন।

০৭ ই নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৩:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সিপাহি জনতার স্বতস্ফুর্ত বিপ্লবের মাধ্যমেই বাংলাদেশের রাজনৈতিক পাদপীঠে বাস্তবিক অর্থে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের আত্বপ্রকাশ। যদিও গণমানুষের চিন্তা চেতনায় বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের একটা প্রচ্ছন্ন চেতনা বরাবরই বিরাজমান ছিল অনেকের অজান্তেই। পাকিস্থান সৃষ্টির পর থেকে দুই পরাশক্তি আমেরিকা ও রাশিয়ার উচ্ছিষ্টভক্ষণে তৎকালীণ পূর্বপাকিস্থানের অনেক বুদ্ধিজীবি, রাজনৈতিক ও ছাত্র-যুব নেতা পরিপূষ্ঠ হয়ে রাজনীতিসহ সমাজ আর প্রশাসনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। পাকিস্থানী শাসকরা মুখে ইসলামের কথা বললেও তা কেবল মাত্র ছিল ক্ষমতা ও স্বার্থ আদায়ে কাজে লাগানোর এক নোংরা কৌশল! তারা ইসলামি বা জাতীয়তাবাদী বলয়কে পৃষ্ঠপোষকতা না দিয়ে তার বিকাশকে বাধাগ্রস্থ করে গেছে সর্বপ্রকারে। অনেক বাঘ বাঘা মুসলিম লীগ নেতার ঘর থেকেই বেরিয়ে এসেছে নামকরা বাম ও কমিউনিষ্ট নেতা-কর্মী!

এরকম একটা সুযোগেই বাম ও সেক্যুলার কিংবা ধর্মবিরোধিরা সমাজ ও প্রশাসনের সর্বস্তর এমনকি ইউনিভার্সিটি শিক্ষক বা ছাত্র সমাজের মধ্যেও প্রাধান্য প্রতিষ্ঠার পাশপাশি দেশের মিডিয়া এবং সাংস্কৃতিক জগতেও জেঁকে বসে। এদেরই নেতৃত্বে আর কারসাজিতে স্বাধীন বাংলাদেশের বেতার বা রেডিও থেকে দরবেশ কবি মরহুম ফররুখ আহমেদকে চাকুরিচ্যুত হতে হয়েছিল!

সমাজ বা প্রশাসনের সর্বস্তরে এদেরই দৌরাত্ব আর দাপট বজায় থাকলেও সাধারণ আপামর মুসলমান জনগোষ্ঠি, সাথে তাদের কোন ধরনের সচেতন মানসিক ও আত্বিক সংযোগ বা সম্পৃক্ততা ছিল না। ’৬৯ থেকে ’৭১ পর্যন্ত সেই ভয়াল রক্তাত্ব দিনগুলোতে মরহুম শেখ মুজিবের আশে পাশে যারা ছিলেন তাদের মধ্যে এদেরই একচেটিয়া প্রাধান্য লক্ষ্য করা যায়। আজও তাদের অনেকই কোন না কোন সেকুল্যার বা ধর্মবিরোধি কিংবা বাঙ্গালী জাতিয়তাবাদ ভিত্তিক রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত থেকে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের বিকাশকে বাধা গ্রস্থ করছেন।

এর পরে সেই ’৭১ থেকে ’৭৫ পর্যন্ত এক কালো ও লজ্জাজনক অধ্যায়।

’৭৫ এর পট পরিবর্তনের পর থেকেই দ্রুত পরিস্থিতি পাল্টে যেতে থাকে। বাঙ্গালী জাতিয়তাবাদের মুখোমুখি দাঁড়াবার মত একটি শক্তি হিসেবে বাংলাদেশী ও ইসলামি জাতীয়তাবাদের বিকাশ ঘটতে থাকে। কিন্তু সেই বিকাশটি ঘটতে থাকে অসংগঠিতভাবে তৃণমূল পর্যায়ে, মানুষের চিন্তা চেতনায়।
এমতাবস্থাতেই এলো ৭ই নভেম্বর, সিপাহি জনতার বিপ্লব। এ বিপ্লবের ধারা বেয়েই বেরিয়ে এলেন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দুরদৃষ্টিসম্পন্ন এবং প্রজ্ঞাশীল ব্যক্তিত্ব মরহুম জিয়াউর রহমান। একজন সৈনিক জিয়াউর রহমান সে মহুর্তে স্বাধীন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ধারা প্রবর্তনে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় কাজটাই করেছিলেন দ্বিধাহীন চিত্তে এবং অত্যন্ত প্রজ্ঞার সাথে। তিনি জাতীয় ঐক্য গড়তে মৌলিক, সাহসি ও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেন। ডান বাম, মধ্যপন্থী সকলকেই একটি গঠনমুলক গণতান্ত্রিক ধারার মধ্যে আনেন। এরই বাস্তব প্রতিফলন হলো আজকের বাংলাদেশী ও ইসলামি জাতীয়তাবাদ ভিত্তিক রাজনীতির বিকাশ। বাংলদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের রক্ষাকবচ, তার আলাদা স্বকীয়তা ও পরিচিতি।
কথাটা অনেকেই তাঁদের রাজনৈতিক মতদ্বৈততার কারণে স্বীকার না করলেও এটাই সত্য যে, তাঁর অনুসৃত নীতি, আদর্শ ও রাজনৈতিক কর্মপন্থা শতকরা পঁচাশিভাগ মুসলমান অধ্যুষিত বাংলাদেশের আপামর জনগণের নীতি আদর্শ ও বোধ বিশ্বাসের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হবার কারণেই মাত্র সাড়ে তিনটি বৎসর সময়কালের মধ্যে জনগণ পঙ্গপালের মত চারিদিক হতে তাঁর বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী দলের ব্যানারে আশ্রয় নিতে থাকে।

আর আজও যে বাংলাদেশ সিকিমের পরিণতি বরণ না করে একটা স্বাধীন দেশ হিসেবে টিকে আছে, তার মূলে রয়েছে সেই ঐতিহাসকি ৭ই নভেম্বরে মরহুম জিয়ার আত্বপ্রকাশ আর তার আত্বত্যাগ। এই চেতনাকে লালন ও শানীত করার মাধ্যমেই কেবল সুসংহত হতে পরে আমাদের প্রিয় মাতুভূমির স্বাধীনতা আর সার্বভৌমত্ব।
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×