وَلَمَّا جَاءهُمْ رَسُولٌ مِّنْ عِندِ اللّهِ مُصَدِّقٌ لِّمَا مَعَهُمْ نَبَذَ فَرِيقٌ مِّنَ الَّذِينَ أُوتُواْ الْكِتَابَ كِتَابَ اللّهِ وَرَاء ظُهُورِهِمْ كَأَنَّهُمْ لاَ يَعْلَمُون
যখন তাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন রসূল আগমন করলেন-যিনি ঐ কিতাবের সত্যায়ন করেন, যা তাদের কাছে রয়েছে, তখন আহলে কেতাবদের একদল আল্লাহর গ্রন্থকে পশ্চাতে নিক্ষেপ করল-যেন তারা জানেই না।
وَاتَّبَعُواْ مَا تَتْلُواْ الشَّيَاطِينُ عَلَى مُلْكِ سُلَيْمَانَ وَمَا كَفَرَ سُلَيْمَانُ وَلَـكِنَّ الشَّيْاطِينَ كَفَرُواْ يُعَلِّمُونَ النَّاسَ السِّحْرَ وَمَا أُنزِلَ عَلَى الْمَلَكَيْنِ بِبَابِلَ هَارُوتَ وَمَارُوتَ وَمَا يُعَلِّمَانِ مِنْ أَحَدٍ حَتَّى يَقُولاَ إِنَّمَا نَحْنُ فِتْنَةٌ فَلاَ تَكْفُرْ فَيَتَعَلَّمُونَ مِنْهُمَا مَا يُفَرِّقُونَ بِهِ بَيْنَ الْمَرْءِ وَزَوْجِهِ وَمَا هُم بِضَآرِّينَ بِهِ مِنْ أَحَدٍ إِلاَّ بِإِذْنِ اللّهِ وَيَتَعَلَّمُونَ مَا يَضُرُّهُمْ وَلاَ يَنفَعُهُمْ وَلَقَدْ عَلِمُواْ لَمَنِ اشْتَرَاهُ مَا لَهُ فِي الآخِرَةِ مِنْ خَلاَقٍ وَلَبِئْسَ مَا شَرَوْاْ بِهِ أَنفُسَهُمْ لَوْ كَانُواْ يَعْلَمُونَ
তারা ঐ শাস্ত্রের অনুসরণ করল, যা সুলায়মানের রাজত্ব কালে শয়তানরা আবৃত্তি করত। সুলায়মান কুফর করেনি; শয়তানরাই কুফর করেছিল। তারা মানুষকে জাদুবিদ্যা এবং বাবেল শহরে হারুত ও মারুত দুই ফেরেশতার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছিল, তা শিক্ষা দিত। তারা উভয়ই একথা না বলে কাউকে শিক্ষা দিত না যে, আমরা পরীক্ষার জন্য; কাজেই তুমি কাফের হয়ো না। অতঃপর তারা তাদের কাছ থেকে এমন জাদু শিখত, যদ্দ্বারা স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে। তারা আল্লাহর আদেশ ছাড়া তদ্দ্বারা কারও অনিষ্ট করতে পারত না। যা তাদের ক্ষতি করে এবং উপকার না করে, তারা তাই শিখে। তারা ভালরূপে জানে যে, যে কেউ জাদু অবলম্বন করে, তার জন্য পরকালে কোন অংশ নেই। যার বিনিময়ে তারা আত্নবিক্রয় করেছে, তা খুবই মন্দ যদি তারা জানত।
وَلَوْ أَنَّهُمْ آمَنُواْ واتَّقَوْا لَمَثُوبَةٌ مِّنْ عِندِ اللَّه خَيْرٌ لَّوْ كَانُواْ يَعْلَمُونَ
যদি তারা ঈমান আনত এবং খোদাভীরু হত, তবে আল্লাহর কাছ থেকে উত্তম প্রতিদান পেত। যদি তারা জানত।
(সূরা বাকারা ,১০১-১০৩)
হযরত সুলাইমান(আঃ) কে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা এক বিশাল সাম্রাজ্য দান করেছিলেন এবং তাকে প্রাণী জগতের ভাষা শিক্ষা দিয়েছিলেন ,যার কারনে তিনি প্রাণীদের ভাষা বুঝতে পারতেন। আল্লাহর এক বিশেষ সৃষ্টি জ্বীনকে তার অনুগত করে দেওয়া হয়েছিলো।
আলকুরআনে জ্বীনের নামে একটি সূরা(সূরা জ্বীন) রয়েছে,এছাড়া আরো অনেক স্থানে জ্বীনদের বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। বহু সংখ্যক হাদীস রয়েছে জ্বীনদের সম্পর্কে। আমার আজকের সংক্ষীপ্ত আলোচনার বিষয়বস্তু জ্বীনদের সকল বিষয়ে নয়, বরং ব্লাক ম্যাজিক বা কালো যাদু সম্পর্কিত।
মহান আল্লাহ জ্বীন এবং মানুষকে সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদতের উদ্দেশ্যেই। জ্বীনকে মানুষের পূর্বেই সৃষ্টি করা হয়েছে। মানুষের মধ্যে যেমন ভালো ও মন্দ শ্রেণী রয়েছে,ঠিক তেমনিভাবে জ্বীনদের ভেতরও তেমনই রয়েছে। জ্বীনদের মন্দ অংশকেই শয়তান বলা হয়। জ্বীনেরা নানান রকমের ও বৈশিষ্ট্যের। তাদের কেউ ছোট,কেউ বড়,কেউ অনেক শক্তিশালী,কেউ অপেক্ষাকৃত দূর্বল,কেউ দ্রতগামী,কেউ ধীর গতির,তারা নানান রকমের। তারা ভিন্ন ধরনের শরীরের অধিকারী যারা অদৃশ্য হয়ে যেতে সক্ষম আবার কখনও দৃশ্যমান হতেও সক্ষম। আমরা তাদেরকে দেখীনা কিন্তু তারা আমাদেরকে দেখতে পায়। তারা অনুকরন করতে পারে,তারা কুমন্ত্রনা দিতে পারে,তারা নিজেদের ইচ্ছামত ভিন্ন দেহের অনুরূপ হয়ে যেতে পারে।
আলকুরআনে হযরত আদম(আঃ) সম্পর্কিত বর্ণনা এসেছে-আল্লাহ তার ইবাদতের উদ্দেশ্যে সৃষ্ট এক বিশেষ সৃষ্টি ফেরেশতাদেরকে ডাকলেন এবং জানালেন যে তিনি মানুষ নামক একটি নতুন প্রাণী সৃষ্টি করতে চান। ফেরেশতারা নতুন বিপর্যয়ের আশঙ্কা ব্যক্ত করাতে আল্লাহ বললেন-আমি যা জানি,তোমরা তা জানো না। আদমকে সৃষ্টি করা হল এবং তাকে সকল কিছুর জ্ঞান শিক্ষা দেওয়া হল,এরপর ফেরেশতাদেরকে সম্মানসূচক সেজদা করতে বলা হল,তারা তা করল। কিন্তু আযাযিল নামক একজন শ্রেষ্ঠ ইবাদতকারী জ্বীন অহংকার প্রকাশ করে সেজদায় অস্বীকৃতি জানালো। আল্লাহ তাকে অভিশপ্ত ইবলিশ হিসেবে ঘোষনা করলেন কিন্তু সে তারপরও অনুতপ্ত হলনা,বরং দম্ভোক্তী করল যে -আমি আপনার সৃষ্ট মানুষকে আমার পথে নিয়ে আসব প্রতারনার মাধ্যমে। আল্লাহ তাকে বললেন-যারা আমার পথে থাকবে তাদেরকে ধোকা দিতে পারবে না।.....এরপর সে আল্লাহর থেকে ক্ষমতা চেয়ে নেয়,আল্লাহ তার প্রার্থনা মঞ্জুর করে তাকে নানান ক্ষমতা প্রদান করেন।
আমরা আল কুরআন এবং সহী হাদীস থেকে যে সত্য জ্ঞান পাই তা হল-আল্লাহ মানুষকে নানানভাবে পরিক্ষা করবেন পৃথিবীতে। এক আয়াতে তিনি বলেন-ঈমান এনছি একথা বললেই কি তোমাদের ছেড়ে দেওয়া হবে ? পরিক্ষা করা হবে না ?.....
যাইহোক আল্লাহ ইবলিশের বংশধরদের উপর রহম করেছেন। তার বংশধরদেরকেও মানুষের মত সুযোগ দেওয়া হয়েছে যাতে তারা আল্লাহ প্রদর্শিত ভালো পথ ও মন্দ পথ উভয়টিই গ্রহন করে জান্নাত ও জাহান্নাম ক্রয় করতে পারে। আমাদের কাছে জ্বীন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নেই,অবশ্য তার প্রয়োজনও নেই।
জ্বীনদের খারাপ অংশটি বা শয়তান মানুষকে আল্লাহ বিমূখ করার জন্যে নানানভাবে ধোকা দেয়। ধোকা দেওয়ার বহু সুক্ষ্ণ উপকরন তার কাছে রয়েছে। এবার আমরা প্রসঙ্গে প্রবেশ করব।
====================
=============================
====================================
সূরা বাকারার ১০২ নং আয়াতটি লক্ষ্য করুন। হযরত সুলাইমান(আঃ)এর সময়ে বাবেল বা ব্যাবিলন শহরে আল্লাহ তায়ালা হারুত ও মারুত নামক দুজন ফেরেশতাকে পাঠালেন মানুষকে পরিক্ষা করার জন্যে। সে ফেরেশতাদ্বয় আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ যাদু বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত হন। তারা হাটে বাজারে মানুষের আকৃতিতে ঘোরাঘুরি করেন এবং লোকদেরকে বলতে থাকেন-আমরা আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা ফেরেশতা,আমরা যাদু জানি। আমরা আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি সুস্পষ্ট পরিক্ষা স্বরূপ। এটা শিক্ষা করলে তোমাদের ঈমান থাকবে না এবং আখিরাতে তোমাদের কোনো অংশ নেই। এটা শোনার পর যারা সেটা শিক্ষা করত না,তারাই ঈমানদার ,আর যারা শিক্ষা করত তারা কাফির। আর এ যাদু শিক্ষা করে তারা স্বামী-স্ত্রীর পবিত্র বন্ধন ছিন্ন করত। আল্লাহ তায়ালা এটাও বলেছেন যে এর ভেতর উপকার নেই ক্ষতি ছাড়া।
নিষিদ্ধ এই যাদু বিদ্যায় অন্য কোনো ক্ষেত্রে মানুষের ক্ষতি করা যায় কিনা সে ব্যাপারে বিস্তারিতভাবে সঠিক তথ্য আমাদের হাতে নেই,বরং কিছু সত্য কিছু মিথ্যা কল্প কাহিনী জড়িয়ে রয়েছে। স্বয়ং রসুল(সাঃ)কে যাদু করা হয়েছিলো এবং তার প্রভাবে তিনি ৩ দিন অসুস্থ্য ছিলেন। পরে আল্লাহ তাকে অবহিত করেন যাদু সম্পর্কে এবং সূরা ফালাক ও নাস অবতীর্ণ হয়। হযরত মূসা(আঃ) এর মুযিযা ছিলো লাঠি মাটিতে ছেড়ে দিলে তা বিশাল সাপে পরিনত হত। এটাকে চ্যালেঞ্জ করতে ফিরাউন প্রখ্যাত যাদুকরদেরকে ডাকে,যারা জনগনের চোখে ধাধা দিয়ে সাপ প্রদর্শন করে কিন্তু তারা মূসার(সাঃ)সত্য মুযিযা দেখে সত্য অনুধাবন করতে পারে এবং ঈমান আনে। এখান থেকে অনেক আলেম বলেছেন যাদু বলে মানুষের চোখে ধাধা লাগতে পারে কিন্তু কোনো বস্তুর আকার আকৃতি পরিবর্তিত হয়না। মুলত: কিছু যাদু হল ধোকা বা তৈরী হওয়া ইলুশন। এর অনেক রকম আছে। আর কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী প্রমানিত যে এর খারাপ প্রভাব মানুষের উপর পড়ে। তবে আল্লাহ যার কল্যান চান যাদু তার উপর প্রভাব বিস্তার করেনা। এটি সকল সময়েই সুনিশ্চিতভাবে কার্যকরী নয়। আর রসূল(সাঃ)এর মাধ্যমে আমাদেরকে শিক্ষা দেওয়ার জন্যে আল্লাহ তায়ালা তার রসূলের(সাঃ)উপরও এর প্রভাব দেখান। একইসাথে সূরা ফালাক ও নাস অবতীর্ণ হয়,যার ভেতর যাদুর প্রভাব নিরাময়েরও গুন রয়েছে।
যাইহোক হারুত,মারুত কর্তৃক শিক্ষা দেওয়া সেই যাদু পরবর্তীতে বংশ পরম্পরায় চর্চিত হতে থাকে। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এর বিভিন্ন রকমের নামও আছে। এছাড়া শয়তানও এরকম যাদু প্রাপ্ত হয়েছে এবং মানুষের ভেতর দ্বন্দ সংঘাত,অশান্তি সৃষ্টির জন্যে তা মানুষকে শিক্ষাও দিয়েছে। ইহুদীদের একটি অংশ বিশ্বাস করত যে সুলাইমান(আঃ) যাদু জানত। সূরা বাকারার ১০২ নং আয়াতে আল্লাহ তাদের সে দাবী প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং মূল বিষয় উপস্থাপন করেছেন। যাদু এবং মুযিযা এক জিনিস নয়। ইহুদীদের একটি অংশ নিষিদ্ধ এই যাদু বিদ্যা শিক্ষা করত।
বুখারী শরীফে একটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে এরকম- জ্বীনরা আকাশের একটি বিশেষ স্থানে পৌছে কিছু গোপন তথ্য চুরী করে,তখন ফেরশতারা তাদের উপর অগ্নী গোলক নিক্ষেপ করে, এরপর তারা অসম্পুর্ণ শোনা সে বিষয়টি পৃথিবীতে তাদের উপাসনাকারী ব্যক্তিদের নিকট মিথ্যার সংমিশ্রনে বর্ননা করে। একটি সত্যের সাথে ৯৯টি মিথ্যা যুক্ত করে রঙ চড়িয়ে বর্ণনা করে।
অনেক আলেম বিষয়টি অনেকগুলো হাদীসের সমন্বয়ে ব্যাখ্যা করেছেন এভাবে যে ফেরেশতারা মহাকাশের যেখানে আল্লাহর আদেশপ্রাপ্ত হয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলত,সে কথা জ্বীনরা গোপনে শুনত। সহী হাদীসে এরকম কিছু বর্ণনা এসেছে যে রসূল(সাঃ)এর সময়ে জ্বীনরা অগ্নীগোলক কর্তৃক আক্রান্ত হয়ে অনভব করতে পারে যে পৃথিবীতে শেষ নবীর আগমন ঘটেছে। তারা তখন দলে দলে বের হয়ে পড়ে সেটা খোজার জন্যে। সে সময়ে রসূল(সাঃ) একটি সফর শেষে নাখলা নামক স্থানে ফজরের নামাজ আদায় করছিলেন। জ্বীনদের একটি দল সে স্থান অতিক্রমকালে আলকুরআনের কিছু আয়াত শ্রবন করে এবং নীচে নেমে আসে। তারা রসূল(সাঃ)এর সাথে সাক্ষাৎ করে এবং ইসলাম গ্রহন করে। এ ঘটনাটি সূরা জ্বীনে এসেছে। সহী বুখারীতে বর্ণিত আরো কিছু হাদীসে এসেছে যে রসূল(সাঃ) জ্বীনদের ইসলামের দাহয়াহ করেছেন।
যাইহোক ব্লাক ম্যাজিকের প্রসঙ্গে আসি। গ্রহ,তারকা দেখে ভাগ্য গননা করা,জ্বীনদের থেকে মিথ্যা মিশ্রিত তথ্য নিয়ে নানান কথা,ভবিষ্যদ্বানী করা,যাদু টোনা করা এগুলো অনেক প্রাচীন বিষয়। তবে এটি সলিড কোনো বিদ্যা নয় বরং কিছু সত্য আর বেশীরভাগই অনুমান বা মিথ্যার এক বিশাল সমন্বয়। কখনও জীন সাধক মিথ্যা বলে আর কখনও তার মালিক জ্বীন তাকে বিভ্রান্ত করে, এ দুয়ে মিলে সাধারন মানুষ জ্যোতিষ,বা গনক,বা যাদুকর দ্বারা বিভ্রান্ত। কখনও তাদের কথা সত্য হয়ে যায়,তবে বেশীরভাগ সময়ই মিথ্যা হয়। আবার এটার উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা আরো কিছু বিধ্যা রয়েছে যেখানে বহু পূর্ব থেকে বিভিন্ন ধরনের মানুষের উপর নানান গবেষণা চালিয়ে মানুষকে বিভিন্ন শ্রেণীতে বা রাশিতে বিভক্ত করা হয়েছে। এরপর কিছু কিছু সহজাত বৈশিষ্ট্যকে চতুরতার সাথে নানানভাবে ব্যাখ্যা করে ভাগ্যের সাথে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। মানবিক বৈশিষ্ট্য এবং জ্বীনদের থেকে কিছু মিথ্যা মিশ্রিত তথ্য একত্রিত করে এসব তৈরী হয়েছে। বর্তমান সময়েও এরকম অনুমান নির্ভর রাশিফল বা ভাগ্য গণনা করতে দেখা যায়।
"এ বিষয়ে ওদের কোন জ্ঞান নেই । ওরা কেবল অনুমানের অনুসরণ করে । অথচ সত্যের বিরুদ্ধে অনুমানের কোনই মূল্য নেই ।" (সূরাহ নাজম ২৮ আয়াত)
“যে ব্যক্তি জ্যোতিষশাস্ত্রের কোনো জ্ঞান চয়ন করল, সে জাদু-টোনার একটি শাখা চয়ন করল”। (আবু দাউদ, ৩৯০৫; ইবনে মাজাহ, ৩৭২৬)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যে ব্যক্তি গণক কিংবা ভবিষ্যদ্বক্তার নিকটে যায় এবং সে যা বলে তা বিশ্বাস করে, সে নিশ্চিন্তভাবেই মুহাম্মাদের ওপর যা নাযিল হয়েছে তা অস্বীকার করে।” (আবু দাউদ, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবন মাজাহ, মুসনাদে আহমদ)
অন্য বর্ণনায় এসেছে সে ইসলাম থেকে বেরিয়ে গেল। আর আল্লাহ সূরা বাকারার ১০২ নং আয়াতে সেটাই বলছেন যে তার আধিরাতে কোনো অংশ নেই। রসূল(সাঃ)আরও বলেন যে, গনকের বা জ্যোতিষীর কথা বিশ্বাস না করেও কেবলমাত্র যদি তার ভাগ্য সম্পর্কিত কথা আগ্রহ নিয়ে শ্রবন করে, তাহলে তার ৪০ দিনের ইবাদত আল্লাহর কাছে কবুল হবেনা।
“যে ব্যক্তি কোন ভবিষ্যদ্বক্তার নিকটে যায় এবং তাকে কিছু জিজ্ঞেস করে, তার চল্লিশ দিনের সালাত কবুল হবেনা।” (সহীহ মুসলিম, ২২৩০; মিশকাত, ৪৫৯৫)
উল্লেখ্য: আমাদের দেশের একটা বিশাল সংখ্যক মানুষ গনক,ফকির,জীন সাধক হুজুর,সাধক ওঝা,সাধক কবিরাজ,জ্যোতিষী ইতাদীর কাছে নানান কারনে গমন করে। কারো কিছু হারিয়ে গেলে,শত্রুর শত্রুতা খতম করতে,স্বামী স্ত্রীর মধ্যে মিল হওয়ার জন্যে,প্রেমে ব্যর্থ হয়ে,যাদু টোনা করতে ও তা দূর করতে এবং নিজের ভাগ্য জানতে গমন করে। এরা প্রত্যেকেই মারাত্মক ক্ষতির মধ্যে রয়েছে। না করলে আল্লাহ ক্ষমা করুক,আর জেনে তাদের কাছে গমন করলে সে কাফির হয়ে যাবে এবং তার আখিরাতে কোনো অংশ নেই।
জ্যোতিষশাস্ত্রের ধারণানুযায়ী গ্রহ-নক্ষত্রের গতি, স্থিতি ও সঞ্চারের প্রভাবে ভবিষ্যৎ শুভ-অশুভ নির্ণয় করা যায়। এ নির্ণয়কে ভাগ্য বিচারও বলা হয়। ইসলামের সাথে এই ব্যাপারগুলো বিভিন্ন কারনে সাঙ্ঘর্ষিক। প্রথমত, ইসলামী আকিদা ও বিশ্বাসমতে, গ্রহ-নক্ষত্রের নিজস্ব কোনো প্রভাব নেই। আল্লাহ সুবহান ওয়া তাআলা বলেন, “নিশ্চয়ই সব ক্ষমতার মালিক একমাত্র আল্লাহ”(সুরা আনআম: ৫৭)। দ্বিতীয়ত, এ ভাগ্যবিচারের মাধ্যমে ইসলামের অন্যতম মৌলিক আকিদা 'তাকদিরে বিশ্বাস'কে চ্যালেঞ্জ করা হয়। জ্যোতির্বিদদের খবরের অন্ধ বিশ্বাস কোনো কোনো ধর্মে থাকলেও ইসলামে তা শক্তভাবে পরিত্যাজ্য।
===============
=======================
================================
এবার আসি কিভাবে মানুষ জ্বীনদের সাহায্যে যাদু শিক্ষা করে সে বিষয়ে:
সরাসরি জ্বীনদের থেকে শেখা যাদু হোক আর বংশ পরম্পরায় শেখা যাতু হোক উভয় প্রকার যাদুতেই সর্বশক্তিমান আল্লাহকে অস্বীকার করা হয় এবং জ্বীন অথবা সেই ফেরশতাকে স্রষ্টা মেনে নেওয়া হয়। অথবা অন্য কোনো কিছুকে স্রষ্টা হিসেবে অন্তর থেকে স্বীকার করে দীক্ষার প্রথম পর্ব সম্পন্ন করতে হয়।
এ সম্পর্কে সারা বিশ্বে হাজার হাজার পদ্ধতি রয়েছে। তবে এদের মূল এক। কখনও শয়তাদের বান্দা হওয়ার জন্যে নির্জন গুহা,শ্মশান,জঙ্গল,পরিত্যক্ত বাড়ি বা স্থাপনা,পাহাড় ইত্যাদী স্থানে দিনের পর দিন নিজের বিশ্বাস পরিবর্তনের মহড়া দিতে হয়। এরপর তার অবস্থায় সন্তুষ্ট হয়ে জ্বীন কথা বলে অথবা প্রকাশিত হয়। এগুলি স্বউদ্যোগে তৈরী নয় বরং পূর্ববর্তীদের অনুসৃত পদ্ধতি।
আবার কখনও কখনও জ্বীন কারো কাছে হাজির হয়ে স্বেচ্ছায় কিছু গুপ্ত বিদ্যা শিখিয়ে দেয়। মহান আল্লাহ এ সম্পর্কে জানিয়েছেন যে এটার মধ্যে কোনো রকম কল্যান নেই। বরং ধ্বংস রয়েছে। এটা জেনে ও মেনে নিয়ে তারা যাদু চর্চা করে।
যাদু হল একটি চুক্তি যা মানুষ ও শয়তানের ভেতর সম্পাদীত হয়। এ চুক্তি ছাড়া কখনই কোনো মানুষ কালো যাদু বা ব্লাক ম্যাজিক শিখতে পারেনা।(উল্লেখ্য: সমাজে প্রচলিত হাতের কারসাজী করে বিনোদন সৃষ্টি করাটাকে আমি এই ম্যাজির অন্তর্ভক্ত করছি না। ওই ব্যাপারে কোনো আলিম বলেছেন এটা প্রতারনা তাই করা যাবেনা। কেউ বলেছেন- সেটা নিছক মজার ছলে করা হয় এবং ম্যাজিশিয়ান বলেই দেয় যে এটা হাতের কারসাজি। আমি যেটা বলছি সেটা ভিন্ন বিষয়)
ঘটনার শুরুতে জ্বীন কারো সাথে কথা বলে তাকে দিক নির্দেশনা দিতে পারে আবার কিছু কাজ পূর্বেই সম্পাদন করে জ্বীনের সাক্ষাৎ লাভ করা যায়। জ্বীন যখন সাক্ষাত করে তখন সে নানান শর্ত দেয়। যেমন বলে,
১. লাল/হলুদ কাপুড় পরিধান করো । এই ২ রঙের কাপুড় রসূল(সাঃ) অপছন্দ করতেন।
২. আলকুরআনকে পদদলিত করতে হবে,অবমূল্যায়ন করতে হবে। সেটাকে মলমূত্র নিক্ষেপের স্থানে ডুবিয়ে রাখতে হবে। নারীরা নির্দিষ্ট সময়ে যে অপবিত্র জিনিস নি:সরন করে সম্ভব হলে সেটা সগ্রহ করে তা দিয়ে আলকুরআনের কিছু অংশ লিখতে হবে। সেটা পদদলিত করতে হবে,পুড়াতে হবে। থুথু দিতে হবে। মোট কথা আল্লাহর বানীকে যতটা জঘন্নভাবে সম্ভব অপদস্ত করে আল্লাহকে রাগান্বিত করার প্রচেষ্টা চালাতে হবে।(নাউযুবিল্লাহ, আস্তাগফিরুল্লাহ)
৩. কোনো প্রানীকে আল্লাহর পরিবর্তে শয়তানের নামে জবাই করতে হবে এবং তার মাথা,অবমূল্যায়ন করা আলকুরআনের কপি,রক্তসহ আরও অনেক আবর্জনা একসাথে করে সেটা কোনো কবরে বা শ্মশানে পুতে রাখতে হবে।
এরপর এই লোকটি নানানভাবে আল্লাহকে গালিগালাজ করে,তার রসূলকে গালিগালাজ করে,নিজের ঈমানকে ভয়ঙ্করভাবে বিসর্জন দেয় এবং এর উপর সন্তুষ্ট হয়। তখন জ্বীনের মনে দয়া হলে সে কিছু শেখায়,তবে শুরু থেকেই সে প্রতারক। তাই এই মূর্খ লোকটিকে নিয়ে সে খেলাও করে। কখনও বলে তুমি প্রথম স্তর পার হয়েছো। এবার অন্য আরেকজনকে জোগাড় করো,যে তোমার মত এরূপ কাজ করবে। এরপর তোমাকে শেখাবো। এবার এই লোকটি সাগরেদ জোগাড় করতে উঠে পড়ে লাগে। শয়তান তাকে লোভ দেখায় যে তুমি এক বিশাল ক্ষমতাশালী লোক হয়ে উঠবে। মানুষের উপর তোমার কতৃত্ব তৈরী হবে। পথভ্রষ্ট লোকটির ভেতর লোভ জাগ্রত হয়,আর কখনও সে সাগরেদ না পেয়ে বালকদেরকে অপহরন করে তার দাস বানায়। কখনও শয়তানকে বেশী সন্তুষ্ট করতে পশু পাখীর বদলে মানুষ জবাই করে শয়তানের নামে। বিষয়টি কুৎসিত করতে সে রক্ত পানও করে।
৪. শয়তানের নির্দেশ মত সে আল্লাহ যেসব কাজ হারাম করেছেন সেসব করতে থাকে। অত্যন্ত জঘন্ন এবং বর্ণনার অযোগ্য পাপ তারা করতে থাকে। এরা হয়ে ওঠে মানুষের দেহে পুরো শয়তানের আত্মা। ভারতে এটার রূপ আরও জঘন্ন। সেখানে নাগা সন্যাসীদের একটা বড় অংশই শয়তানের পূজারী,যদিও হিন্দুরা মনে করে তারা তাদের ধর্মের লোক। আঘোরী নামক একটি সন্যাসী চক্র আছে,যারা শয়তানকে খুশী করতে মানুষের গোস্ত ভক্ষন করে। শ্মশানঘাট থেকে মরা লাশ সংগ্রহ করে খায়,নদীতে বা অন্য কোথাও মরা লাশ পেলে খায়,আবার মানুষ অপহরন করেও হত্যা করে গোস্ত ,রক্ত খায়। নিজেদের প্রস্রাবও তারা পান করে আরও জঘন্ন সব কাজ করে। আঘোরীদের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ইউটিউবে ভিডিও দেখতে পারেন।
এরা মানুষকে ৪টি শ্রেণীতে বিভক্ত করে থাকে যথা ১. আগুন, ২. পানি, ৩. মাটি, ৪. বাতাশ। যাকে যাদু করা হবে তার শরীরের কোনো অংশ যেমন নখ,চুল অথবা ববহৃত পোষাক ইত্যাদীতে যাদুমন্ত্র পাঠ করা হয় এবং উক্ত ব্যক্তির ক্যাটাগরি আগুন হলে সেটা আগুনে পুড়ানো হয়,এভাবে ক্যাটাগরি অনুযায়ী পানিতে নিক্ষেপ করা,কোনো গাছের ডালে বেধে রাখা যাতে বাতাশ প্রবাহিত হয় সেটার উপর অথবা মাটিতে পুতে রাখা হয়।
শয়তান আল্লাহর সাথে ওয়াদা করেছিলো সে মানুষকে পথভ্রষ্ট করবে,তাই সে একাজে নিত্য নতুন ফাদ পাতে। এই অনগত লোকটিকে শয়তান কিছু বিদ্যা শিক্ষা দেয় এবং আরও পাপ করাতে থাকে তাকে দিয়ে। ভবিষ্যতে আরও কিছু শেখাবে এরকম আশ্বাসও দেয়।
কিন্তু প্রশ্ন হল তার এরকম যোগ্যতা আসলেই আছে কিনা। মূলত: শয়তান এক প্রকাশ্য ধোকাবাজ। তাকে সাময়িক অবকাশ দেওয়া হয়েছে এবং কিছু ক্ষমতাও প্রদান করা হয়েছে। আর সকল শয়তান সকল ক্ষেত্রে সমান পারদর্শী নয়। ব্লাক ম্যাজিকও সকল শয়তান জানেনা। আর ব্লাক ম্যাজিক এমন কোনো সুপার ন্যাচারাল বিষয়ও নয় যে কেউ তা শিখে ক্ষমতাশালী কিছু হয়ে যাবে। বরং এর মাধ্যকে কিছু ক্ষতিকর কাজ হয়। তবে সেটাও সব সময় হবে এমন গ্যারান্টি আল্লাহ প্রদান করেননি। কেউ অবাধ্যতায় ধ্বংস হতে চাইলে আল্লাহ তাকে অবকাশ দেন। আর তখন এটার কার্যকারীতা ঘটতে পারে। শয়তান অত্যন্ত সঠিকভাবে অবগত যে তার আসলেই ক্ষমতা নেই,বরং সে কিছু সময়ের জন্যে অনুমতি প্রাপ্ত আর সে যা না পারে সেটাই প্রদর্শন করে মানুষকে ধোকা দেয়। তার অনুগত লোকটি বা লোকেরা তার সম্পর্কে অতিরিক্ত ধারনা করে থাকে। অনেক সময় মানুষের ঈমান নষ্ট করে শয়তান হাসতে হাসতে চলে যায়,আর বলে আসলে আমার কালো যাদু জানা নেই,একটু তামাশা করলাম আর কি। এরকম অনেক প্রতারিত হওয়া সাধক পরে তওবা করে ইসলামে ফিরে এসেছে।
রসূল(সাঃ)বলেন-
কোনও লোক বিজন মরু প্রান্তরে উট হারিয়ে যাবার পর পুনরায় তা ফেরত পেলে যে পরিমাণ আনন্দে উদ্বেলিত হয় মহান আল্লাহ বান্দার তওবাতে তার চেয়েও বেশি আনন্দিত হন।”
(বুখারী হরীফ, তাওবা হাদীস ৫৮৩৪)
মূলত: আল্লাহ এক অতি ক্ষমাশীল মালিক। বান্দা তার ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চাইলে তিনি ক্ষমা করে দেন। তবে সাধক বেকে বসতে পারে এরকম সম্ভানা দেখলে শয়তান তাকে নানাভাবে প্রতারিত করে মুরিদ হিসেবে ধরে রাখার চেষ্টা করে আজিবন। আবার অনেকের মনে হতাশার সৃষ্টি করে,যাতে তারা নিজেদের কাজের কারনে অনুতপ্ত না হয়ে বরং হতাশায় জীবন পার করে। এবং এভাবেই বেঈমান হয়ে মারা যায়। বেশীরভাগ শয়তানের সাধকরা পৃথিবী ও আখিরাত উভয়টাই হারায়।
রসূল(সাঃ)বলেন শয়তান মানুষকে ২ বার প্রতারিত করবে। পৃথিবীতে তো করবে আবার হাশরের দিনে মানুষ যখন শয়তানকে দেখবে,তারা বলবে,এই সেই শয়তান যার অনুসরন করেছি। শয়তান তখন অস্বীকার করে বলবে, আমি কি তোমাদেরকে বলেছি যে-আমাকে অনুসরণ করো ? আমি আল্লাহকে ভয় পাই।
আমি একটি মাত্র উদ্দেশ্যেই এ বিষয়ে লিখেছি,তা হল মানুষকে সচেতন করা। মানুষের যদি ঈমানই না থাকে তাহলে তার ইবাদত আল্লাহর কাছে গ্রহনীয় নয়। বহু কষ্টে পালন করা ইবাদত সমূহ শিরকের মাধ্যমে মুহুর্তেই শেষ হয়ে যায়। তাই সচেতন করতে এ বিষয়ে লিখেছি। সামনে আরও বিস্তারিতভাবে লিখব আরও সূত্র উল্লেখ করে। ভাগ্য জানতে কোনো মানুষের কাছে গমন করবেন না। এ বিষয়ে মানুষকে তথ্য দেওয়া হয়নি,তারা কেবল অনুমান করে। গনক,ফকির,জ্যোতিষী,শয়তানের সাধকদের কাছে গমন করবেন না। তাদের সাহায্য গ্রহন করবেন না। যে কোনো শারিরীক সমস্যায় ডাক্তাতের কাছে গমন করুন অথবা যেসব গ্রাম্য কবিরাজ ভেষজের জ্ঞান রাখে বলে আপনি জানেন তাদের কাছে যান। পত্রিকা,ম্যাগাজিনে থাকা রাশিফলের পাতাটি ছিড়ে ফেলুন। ওটা পড়লে আপনার খানিকটা হলেও বিশ্বাস করতে ইচ্ছা হবে অথবা আপনি মনে মনে সেটা মেলানোর চেষ্টা করবেন।
আল কুরআনে আল্লাহ আমাদেরকে পুরোপুরি ইসলামে প্রবেশ করতে বলেছেন। আর বলেছেন,যারা আল্লাহর পথে থাকবে,তাদের কোনো ভয় নেই। তারা চিন্তিতও হবেনা। আর তিনি বলেছেন, আল্লাহই সাহায্যকারী হিসেবে যথেষ্ঠ। আল্লাহ সকল বিষয়ে একচ্ছত্র অধিপতি। শয়তানকে ও মানুষকে তিনি মাত্র কিছু সময়ের অবকাশ দিয়েছেন পরিক্ষা করার জন্যে। এটা দেখে বিচলিত হওয়ার কারন নেই। শয়তানকে ভয় পাওয়া যাবেনা। বরং যারা আল্লাহর পথে থাকে তাদেরকে শয়তান চরম ভয় করে। একটি নির্দিষ্ট পর্যায় পর্যন্ত শয়তান শয়তানী করতে পারে। এরপর দৃঢ়চিত্ত উক্ত বান্দাকে আল্লাহ সাহায্য করেন । আল্লাহ এ ব্যাপারে ওয়াদাবদ্ধ। একমাত্র আল্লাহর ওয়াদাই সত্য। তিনিই যথেষ্ঠ। সুমহান, ক্ষমাশীল আল্লাহ আমাদেরকে ক্ষমা করুন ! শয়তানের মুকাবেলায় আমাদেরকে শক্তিশালী করুন !
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:৫১