কয়েক দিনে কেজিতে পেঁয়াজের দাম প্রায় ৩০ টাকা বেড়েছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায় উঠেছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দিলে সে সময় দেশের বাজারে হু হু করে দাম বেড়েছিল পেঁয়াজের। রেকর্ড ৩০০ টাকা পর্যন্ত ওঠে পেঁয়াজের কেজি। এই পরিস্থিতি চলমান ছিল কয়েকমাস। সেই ভীতি থেকে এবারও ক্রেতারা বাড়তি পেঁয়াজ কিনে রাখছেন। তাই পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। এ ধরনের অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে সরকারের কি করণীয় তা অনেক দুরের বিষয়! করণীয় হচ্ছে জনগণের - কারণ জনগণ হচ্ছেন ভোক্তা! এখন ভোক্তারা যদি পেঁয়াজ ভক্ষণ বাড়িয়ে চলেন এবারও আমাদের জন্য পেঁয়াজের আগুন বাজার অপেক্ষা করছে - এখানে কোনো সন্দেহ নেই।
উল্লেখ্য, ভারত নিজেদের বাজার সামাল দিতে গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ রফতানিতে ন্যূনতম প্রতি টনের মূল্য ৮৫০ ডলার বেঁধে দেয়। ৩০ সেপ্টেম্বর রফতানিই নিষিদ্ধ করে। এরপর দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম সেঞ্চুরি ডাবল সেঞ্চুরিও অতিক্রম করে। নভেম্বরে ৩০০ টাকা ওঠে পেঁয়াজের কেজি। তখন মিয়ানমার, চীন, মিসর, তুরস্ক ও পাকিস্তান থেকে নানা রঙের পেঁয়াজ এনে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করে সরকার। বিমানেও দেশে আসে পেঁয়াজ।
মূল্যবৃদ্ধি দেখে বাংলাদেশের রেমিটেন্স ভোক্তা গৃহিণীরা পেঁয়াজ বাজারে রিতিমতো হামলা করে দিয়েছেন - এখন এ ধরনের পেঁয়াজ বাজার তা ঢাকার অস্থিতিশীল শেয়ার বাজারকেও হার মানাবে। বাংলাদেশে রেমিটেন্স ভোক্তা পরিবারগুলো দেশের বাজার অস্থিতিশীল করার পেছনে অন্যতম। তারা এক টাকার দ্রব্য দশটাকায় ক্রয় করেন। অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের সাথে জানাচ্ছি বাংলাদেশী জনগণ আজীবন হাভাতে ছিলো - হাভাতে আছে - হাভাতে থাকবে। এই ধরনের হাভাতে মানুষ আমার জীবনে আমি পৃথিবীর কোনো দেশে দেখিনি। নিজের দেশের মানুষ নিয়ে সত্যি সত্যি লজ্জা হয়। কোনো দেশের মানুষ এতো খেতে পারে ভাবতেও দুঃখ লাগে। বাংলাদেশের মানুষ কি কোনোদিন অন্তত একবারের জন্য হলেও জানতে চাইবেন এই পৃথিবীতে কতো দেশে কি পরিমাণ মানুষ অনাহারে আছেন?
লজ্জাজনক তথ্য: সরকারি হিসাব ও তথ্য মতে বাংলাদেশে প্রতিবছর ৩০ লক্ষ মেট্রিকটন পেঁয়াজ প্রয়োজন। আর বেসরকারি হিসাব ও তথ্য মতে বাংলাদেশে প্রতিবছর পেঁয়াজ প্রয়োজন ৪৫ - ৫০ লক্ষ মেট্রিকটন! এতো খায় মানুষ? এতো খাওয়া সম্ভব? বাংলাদেশের মানুষ কি মানুষ নাকি রাক্ষস! ব্লগে ভূত নিলে লেখোলেখি হয়েছে আমি পরবর্তীতে রাক্ষস নিয়ে লিখবো বলে ভাবছি!
উপসংহার: পেঁয়াজ দিয়ে অদ্ভুত অদ্ভুত রেসিপি বন্ধ হোক, বন্ধ হোক এই দেশের অদ্ভুত সব রন্ধনশালা। পেঁয়াজ এমন কোনো দ্রব্য না যা প্রতি বছর বাজারে আগুন লাগিয়ে দিতে পারে - অথচ আমাদের বাংলাদেশী জনগণ পেঁয়াজকে রিতিমেতো পেট্রোল নামে রূপান্তর করেছেন। খুবই লজ্জাজনক।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার: সামহোয়্যারইন ব্লগ।
ছবি: গুগল সার্চ ইঞ্জিন
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৪৯