আলহাম্বরা যার পূর্ণ নাম ছিল কালাত আলহাম্বরা আরবি অনুবাদ লাল কেল্লা এটি একটি প্রাসাদ এবং যৌগিক দুর্গ যা স্পেনের আন্দালুসিয়ার গ্রানাডাতে অবস্থিত। এটি ১৩শত শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে আন্দালুসের গ্রানাডা আমিরাতের মরিশ শাসকরা নির্মাণ করেন যা গ্রানাডার শহরের দক্ষিণ পূর্ব সীমান্তের আসসাবিকা পাহাড়ের উপরে অবস্থিত। আলহাম্বরা প্রাসাদটি নাসরি রাজবংশের শাসনকালে তৈরি করা হয়েছিল যা তার বাসস্থান এবং রাজসভার হিসেবে ব্যবহার করা হতো। সে যুগের অন্যান্য মুসলমানদের কাজগুলোর এটি একটি বাস্তব আকর্ষণ ছিল যা শুধুমাত্র তার অভ্যন্তর আন্দালুসিয়ার চিত্রশিল্পের মধ্যেই খুঁজে পাওয়া যায় না স্থানীয়করণ এবং অভিযোজন মধ্যেও একটি নতুন দৃশ্য তৈরি করে যা সম্পূর্ণরূপে তার প্রকৃতিতে বিদ্যমান।
১২৩৮ সালে মুহাম্মদ ইবনে নাসর যিনি নাজার নামেও অনেকের কাছে পরিচিত তিনি গ্রানাডা দখলের জন্য এলভিয়ার দরজা দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করেন এবং তিনি এর নাম দেন আল-হামার লাল,আর এর কারণ হিসেবে জানা যায়,তার দাড়ির রং লাল ছিল। তিনিই হলেন নাসরি রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা। মুহাম্মদ ইবন নাছর বিজয়ী হয়ে গ্রানাডাতে যখন প্রবেশ করেন তখন সেখানকার লোকেরা তাকে স্বাগতম জানায় "ঈশরের করুণায় বিজয়ীকে স্বাগতম মারহাবান লি-ল-নাসির" বলে, জবাবে তিনি উত্তর দেন,অন্য কেউ বিজয়ী না, যদি না আল্লাহ চান"ওয়া লা গালিব ইল্লা আল্লাহ। এটি ছিল নাসরি রাজবংশের নীতিবাক্য এবং একে তিনি সম্পূর্ণ আলহাম্বরাতে লিখেন।
আলহাম্বরা নামের উৎপত্তি অনেক তত্ত্ব রয়েছে যেমন কিছু লেখক আছেন যারা সমর্থন করেন যে প্রথমিক অবস্থায় এটি সাদা রং ছিল। এর নাম লাল হয় কারণ যখন এটি নির্মাণ করা হচ্ছিল তখন রাতেও কাজ করা হয়েছে আর রাতে আগুনের আলোতে দূর থেকে এটিকে লাল মনে হত। আরো কিছু লেখক আছেন যারা সমর্থন করেন যে আলহাম্বরা নামটি হচ্ছে তার স্থাপতি আবু-আল-আহমার এর স্ত্রী বাচক নাম আরবি ভাষায় যার অর্থ লাল।
আলহাম্বরা নির্মাণের নকশা জন্য কোন মহাপরিকল্পনা ছিল না তাই এটির পূর্ণাঙ্গ গঠনপ্রণালী সমকোণীয় বা সুবিন্যস্ত নয়। স্থানটি বিভিন্ন পর্যায়ের নির্মাণ ৯ম শতাব্দীর প্রাথমিক থেকে ১৪শ শতাব্দীর মুসলমাদের দুর্গসমূহে ১৬শ শতাব্দীতে চার্লস V এর প্রাসাদে পরিবর্তিত হয় যার ফলে কিছু ভবনসমূহ খারাপ অবস্থাতে পরিণত হয়েছে।যে সোপান বা মালভূমিতে আলহাম্বরা অবস্থিত তার দৈর্ঘ্য ৭৪০ মিটার বা ২,৪৩০ ফুট এবং এর সর্বাধিক প্রস্থ ২০৫ মিটার বা ৬৭০ ফুট। এটি পশ্চিমে উত্তরপশ্চিম থেকে পূর্ব দক্ষিণপূর্ব প্রসারিত এবং প্রায় ১৪২.০০০ বর্গ মিটার ১,৫৩০,০০০ বর্গ ফুট এলাকা জুড়ে অবস্থিত। আলহাম্বরা পশ্চিমা বৈশিষ্ট্য সম্পূর্ণ আলকাযাবা দুর্গ যা দৃঢভাবে সুরক্ষিত অবস্থান রয়েছে। বাকি মালভূমি কিছু সংখ্যাক মরিশ প্রাসাদ এবং তেরটি মিনার যা একটি সুরক্ষিত প্রাচীর দ্বারা ঘেরা কিছু আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা এবং সেখানকার বাসিন্দাদের জন্য কিছু দৃশ্য দিয়ে গঠিত। দারো নদী উত্তরে একটি গিরিখাত অতিক্রম করে এবং গ্রানাডার আলবাইচিন জেলা থেকে মালভূমিতে বিভক্ত হয়।
১৯৮৪ সালে ২রা নভেম্বর ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান আলহাম্বরাকে এবং গ্রানাডার জেনেরালাইফকে মানবতার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করেন। ২০১১ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত ৪০ মিলিয়নেরও বেশি পর্যটক এটিকে পরিদর্শন করেছে।
তথ্যসূত্র: https://it.wikipedia.org/wiki/Alhambra
বাংলা পিডিয়া
এবং ছবি গুগল সাইট ।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৪