বুক অব জেনেসিসের বর্ণনা অনুযায়ী নমরুদ ছিল সিনারের রাজা। বুক অব কর্নিকেলস অনুযায়ী নূহ নবীর প্রপৌত্র কুশের পুত্র। পবিত্র বাইবেল অনুসারে নমরুদ ছিল এক মহাশক্তিধর ব্যাক্তি যে ঈশ্বরকে শিকার করতে চেয়েছিল। টাওয়ার অব বাবেলের বর্ণনা অনুসারে নমরুদ ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষনা করেছিল।নমরুদ শব্দের অর্থ খোদদ্রোহী। এর আর একটি অর্থ হলো বাঘিনী। আরব কিংবদন্তী অনুযায়ী নমরুদকে ছোটবেলায় এক বাঘিনী স্তন্য পান করিয়েছিল। ইডিপাসের মতো নমরুদ তার পিতাকে হত্যা করে নিজ মাতাকে বিয়ে করে। একটি মশা তার মস্তিষ্কে প্রবেশ করলে তার মৃত্যু হয়। হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর জীবনীতে নমরুদ বাদশাহর উল্লেখ পাওয়া যায়। নমরুদ ষরযন্ত্র করে নবীকে হত্যার উদ্দেশ্যে আগুনে নিক্ষেপ করেছিল। পবিত্র কোরানে নমরুদের নাম উল্লেখ নেই। তবে সুরা বাকারার ২৫৮ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে “তুমি কি সেই ব্যাক্তির কথা ভেবে দেখোনি যে ইব্রাহীমের সঙ্গে তর্ক করেছিল, যেহেতু আল্লাহ তাকে রাজ্য দিয়েছিলেন ? ‘তখন সে বলল, আমার প্রতিপালক তিনি যিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান’, সে বলল, ‘আমিও তো জীবন দান করি এবং ও মৃত্যু ঘটাই।’
পবিত্র বাইবেলে আব্রাহাম নবী ইব্রাহীম এবং নমরুদের সাথে সাক্ষাতের ঘটনার বর্ণনা নেই। যদিও কিছু ইহুদী এবং মুসলিম ঐতিহ্য অনুসারে তাদের মধ্যে বিরোধ সংগঠিত হয়েছিল বলে বলা হয়েছে। কিছু গল্পে দুইজন চড়ম সংঘাতে রত হয়েছিল বলে বর্ণনা করা হয়েছে। সেসকল কাহিনিতে হযরত ইব্রাহীম একাত্মবাদের মহিমা বর্ননাকারী এবং নমরুদ তার বিরোধীতাকারী এবং নিজেকে স্বয়ং ঈশ্বর বলে বর্ণনাকারী।একই রকম বর্ণনা মধ্যযুগের ইহুদী ধর্মগুরুদের লেখা কাহিনিতেও পাওয়া যায়।
খোদাদ্রোহী, অত্যাচারী নমরুদ খোদাদ্রোহিতার কাহিনীগুলোর মধ্যে হযরত ইবরাহিম (আঃ) এর সাথে নমরুদের নকল খোদা সাজার কথা খুবই প্রচলিত। হযরত ইবরাহিম (আঃ) কে অগ্নিকুপে নিক্ষেপ করে তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে আল্লাহ অগ্নিকুকে শান্তির বাগানে পরিণত করেন। নমরুদ ছিল সে যুগে মহাপ্রতাপশালী জালেম অত্যাচারী বাদশাহ। তার মিথ্যা খোদায়িত্ব প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে আসল খোদার সাথে আকাশে ওঠার চেষ্টা করে পাগলামি উন্মাদনার এক অভিনব রেকর্ড সৃষ্টি করেছিল। ইবলিশ শয়তানের প্ররোচনা এবং কুমন্ত্রণায় নমরুদ আকাশকে রণক্ষেত্র করার আহাম্মকী করেছিল এবং তাবুত নামক যে আকাশযান শয়তানের পরামর্শে তৈরি করেছিল তা অবশ্যই এক অভিনব শয়তানি উদ্যোগ ছিল। বলা যেতে পারে নমরুদের সেই তাবুত আধুনিক যুগের রকেট ছিল। নমরুদ কৃত্রিম নকল খোদা হতে চেয়েছিল। তার তথাকথিত শক্তিমত্তার অহংকার ঔদ্ধত্য একটি অতি ক্ষুদ্র প্রাণী ল্যাংড়া মশা ভেঙে চূরমার করে দিয়েছিল।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৪