somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

খন্দকের যুদ্ধ এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

২৩ শে জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


খন্দকের যুদ্ধ বা আহযাবের যুদ্ধ ৫ হিজরিতে ৬২৭ সালে সংঘটিত হয়। সেসময় ২৭দিন ধরে আরব এবং ইহুদি গোত্রগুলি মদিনা অবরোধ করে রাখে। জোট বাহিনীর সেনাসংখ্যা ছিল প্রায় ১০০০০ এবং সেসাথে তাদের ৬০০ ঘোড়া ও কিছু উট ছিল। অন্যদিকে মদিনার বাহিনীতে সেনাসংখ্যা ছিল মাত্র ৩০০০।পারস্য থেকে আগত সাহাবি সালমান ফারসির পরামর্শে মুহাম্মাদ (সাঃ) মদিনার চারপাশে পরিখা খননের নির্দেশ দেন। প্রাকৃতিকভাবে মদিনাতে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তার সাথে এই ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে আক্রমণকারীদেরকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। জোটবাহিনী মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি বনু কুরাইজা গোত্রকে নিজেদের পক্ষে আনে যাতে তারা দক্ষিণ দিক থেকে শহর আক্রমণ করে। কিন্তু মুসলিমদের তৎপরতার ফলে তাদের জোট ভেঙে যায়। মুসলিমদের সুসংগঠিত অবস্থা জোটবাহিনীর আত্মবিশ্বাস হ্রাস এবং খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষপর্যন্ত আক্রমণ ব্যর্থ হয়।সে যুদ্ধে জয়ের ফলে ইসলাম পূর্বের চেয়ে আরো বেশি প্রভাবশালী হয়ে উঠে।
যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবে মদিনার বাইরে খন্দক বা পরিখা খনন করার ফলে যুদ্ধের এরূপ নাম প্রদান করা হয়। সালমান ফারসি এরূপ পরিখা খননের পরামর্শ দিয়েছিলেন। তাছাড়াও সে যুদ্ধকে আহজাবের যুদ্ধ বলা হয় যার অর্থ জোটের যুদ্ধ।

খন্দকের যুদ্ধের স্থান মদিনা
কুরাইশদের সাথে বনু নাদির ও বনু কাইনুকা জোট গঠন করে মদিনা আক্রমণ করেছিল। ইতিপূর্বে বনু নাদির এবং বনু কাইনুকা গোত্রকে বিশ্বাসঘাতকতার কারণে মদিনা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। তাই প্রতিশোধ হিসেবে তারা কুরাইশদের সাথে জোট গঠন করে।
৬২৭ সালের শুরুর দিকে বনু নাদির ও বনু ওয়াইল গোত্রের একটি সম্মিলিত প্রতিনিধিদল মক্কার কুরাইশদের সাথে সাক্ষাত করে।তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন বনু নাদিরের সালাম ইবনে আবু হুকাইক, হুয়াই ইবনে আখতাব, কিনানা ইবনে আবুল হুকাইক এবং বনু ওয়াইলের হাওজা ইবনে কায়েস ও আবু আম্মার। তারা মুসলিমদের সাথে যুদ্ধ করার জন্য কুরাইশদের উদ্বুদ্ধ করে এবং সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেয়। তারা যুক্তি দেখায় যে কুরাইশরা মুসলিমদেরকে উহুদের পর পুনরায় বদরে লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা পালন করতে না পারায় যোদ্ধা হিসেবে কুরাইশদের সম্মান নষ্ট হয়েছে। কুরাইশরা তাদের প্রস্তাব মেনে নেয়।কুরাইশদের সাথে সাক্ষাতের পর তারা নজদের বিভিন্ন গোত্রের সাথে সাক্ষাত করেন। বনু গাতাফান গোত্রের কাছে গিয়ে তাদেরকেও যুদ্ধের জন্য রাজি করায়। পাশাপাশি তারা অন্যান্য গোত্রগুলির কাছে গিয়েও যুদ্ধের জন্য উদ্বুদ্ধ করেন।আবু সুফিয়ানের সার্বিক নেতৃত্বে দক্ষিণ দিক থেকে কুরাইশ ও কিনানা এবং অন্যান্য গোত্রগুলি রওয়ানা হয়। তাদের মধ্যে ৪০০০ জন পদাতিক, ৩০০ জন অশ্বারোহী এবং ১০০০ থেকে১৫০০ জন উষ্ট্রারোহী ছিল। তারা মাররুজ জাহরানে পৌছানোর পর বনু সুলাইম গোত্র তাদের সাথে যোগ দেন।একই সময় নজদের দিক থেকে বনু গাতাফানের ফাজারা, মুররা এবং আশজা গোত্র মদিনের দিকে রওয়ানা হয়। সেই তিন গোত্রের সেনাপতি ছিলেন যথাক্রমে উয়াইনা বিন হিসন, হারিস বিন আউফ ও মিসআর বিন রুহাইলা। তাদের নেতৃত্বে বনু আসাদসহ আরো অন্যান্য গোত্রে যোদ্ধারাও অগ্রসর হয়। নজদ থেকে আগতদের সংখ্যা ছিল ছয় হাজার এবং সম্মিলিতভাবে সেনাসংখ্যা ছিল প্রায় ১০০০০। সে সংখ্যা মদিনার জনসংখ্যার চেয়েও বেশি ছিল।

সালমান ফারসি মসজিদ মদিনা
যুদ্ধযাত্রার খবর মদিনায় মুহাম্মাদ (সাঃ) এর কাছে পৌছায়। তাই গৃহিতব্য পদক্ষেপের বিষয়ে তিনি সভা আহ্বান করেন। সভায় বদরের মত খোলা ময়দানে লড়াই এবং উহুদের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শহরের ভেতর থেকে প্রতিরক্ষা উভয় প্রকার মতামত উঠে আসে। সালমান ফারসি পারস্যে থাকাকালীন অভিজ্ঞতার উল্লেখ করে পরিখা খনন করে প্রতিরক্ষামূলক অবস্থান গ্রহণের মত দেন। আলোচনায় শেষপর্যন্ত এই মত গৃহিত হয়। প্রতি দশজন ব্যক্তির উপর ৪০ হাত পরিখা খননের দায়িত্ব দেয়া হয়।পরিখা দ্রুত তৈরীর জন্য মুহাম্মাদ (সাঃ)সহ মদিনার প্রতিটি সবল পুরুষ এই খননকার্যে যোগ দিয়েছিলেন।মদিনার বাকি অংশ পাথুরে পর্বত এবং গাছপালা আবৃত হওয়ার কারণে সুরক্ষিত ছিল। তাই শুধুমাত্র শহরের উত্তর অংশে পরিখা খনন করা হয়েছিল। নারী ও শিশুদেরকে শহরের ভেতরের দিকে প্রেরণ করা হয়। যুদ্ধকালীন অবস্থায় আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুমকে মদিনার দায়িত্ব দেওয়া হয়।সালা পাহাড়কে পেছনে রেখে মুসলিমদের প্রধান কেন্দ্র স্থাপন করা হয় এবং সেনারা সেখানে জমায়েত হন।প্রতিপক্ষ পরিখা অতিক্রম করতে সফল হলে সে অবস্থান মুসলিমদেরকে সুবিধা প্রদান করত।শহর রক্ষার জন্য গঠিত বাহিনীতে সৈনিক ছিল মাত্র ৩০০০।

খন্দকের যুদ্ধের মানচিত্র
৬২৭ সালের জানুয়ারিতে মদিনা অবরোধ শুরু হয় এবং তা ২৭ দিন স্থায়ী ছিল। মক্কা থেকে আগত কুরাইশ বাহিনী মদিনার নিকটে রুমা নামক স্থানের জুরফ এবং জাগাবার মধ্যবর্তী মাজমাউল আসয়াল নামক স্থানে এবং নজদ থেকে আগত গাতাফান ও অন্যান্য বাহিনী উহুদ পর্বতের পূর্বে জানাবে নাকমায় শিবির স্থাপন করে।আরবীয় যুদ্ধকৌশলে পরিখা খনন প্রচলিত ছিল না তাই মুসলিমদের খননকৃত পরিখার কারণে জোটবাহিনী অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়ে। পরিখা পার হওয়ার কোনো ব্যবস্থা তাদের ছিল না। তারা অশ্বারোহীদের সহায়তায় বাধা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। দুই বাহিনী পরিখার দুই পাশে এসে সমবেত হয়। আক্রমণকারীরা পার হওয়ার জন্য দুর্বল স্থানের সন্ধান করছিল। দিনের পর দিন দুই বাহিনী পরস্পরকে লক্ষ্য করে তীর নিক্ষেপ করে চলছিল।সেই অচলাবস্থায় কুরাইশ সেনারা অধৈর্য হয়ে পড়ে। আমর ইবনে আবদ উদ, ইকরিমা ইবনে আবি জাহল এবং জারার বিন খাত্তাবসহ আক্রমণকারীদের একটি দল ঘোড়ায় চড়ে একটি সংকীর্ণ স্থান দিয়ে পরিখা পার হতে সক্ষম হন। তারপর আলি ও অন্য কয়েকজন সাহাবি সেখানে অবস্থান নিয়ে তাদের গতিরোধ করেন। আমর দ্বন্দ্বযুদ্ধের জন্য মুসলিমদেরকে আহ্বান জানালে আলি লড়াইয়ের জন্য এগিয়ে যান । দ্বন্দ্বযুদ্ধে আমর নিহত হওয়ার পর আতঙ্কিত হয়ে বাকিরা পিছু হটতে বাধ্য হয়।রাতের বেলায়ও আক্রমণকারী সৈনিকরা পরিখা অতিক্রমের জন্য কয়েক দফা চেষ্টা চালিয়েছিল। কিন্তু এসকল চেষ্টা ব্যর্থ হয়। মুসলিমরা পরিখার অপর পাশ থেকে তীর নিক্ষেপ করে তাদের বাধা প্রদান করে। পরিখার পুরো দৈর্ঘ্য বরাবর পদাতিকদের মোতায়েন করা সম্ভব ছিল কিন্তু সম্মুখ যুদ্ধে মুসলিমদের সুবিধাজনক অবস্থানের কারণে তারা সে পদক্ষেপ নেননি। পরিখা খননের সময় তোলা মাটি দিয়ে তৈরি বাধের পেছনের সুরক্ষিত অবস্থান থেকে মুসলিমরা তীর ও পাথর ছুড়ে আক্রমণ করার জন্য প্রস্তুত ছিল। ফলে কোনোপ্রকার আক্রমণ হলে ব্যাপক হতাহতের সম্ভাবনা ছিল। লড়াই মূলত উভয় পক্ষের তীর নিক্ষেপের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। তাতে মুসলিমদের মধ্যে ছয়জন এবং আক্রমণকারীদের মধ্যে দশজন মারা যায়। তাছাড়াও দুয়েকজন তলোয়ারের আঘাতেও মারা যান।যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতির কারণে মুহাম্মাদ (সাঃ)সহ অন্য মুসলিমদের নামাজ কয়েকদিন কাজা হয়। সূর্যাস্তের পর সেসব নামাজ আদায় করা হয়েছিল।

জোটের পক্ষ থেকে কয়েকটি সমসাময়িক আক্রমণের চেষ্টা চালানো হয়। তার মধ্যে ছিল বনু কুরাইজার ইহুদিদেরকে দক্ষিণ দিক থেকে আক্রমণের জন্য উদ্বুদ্ধ করা।জোটের পক্ষে থেকে বহিষ্কৃত বনু নাদির গোত্রের হুয়াই ইবনে আখতাব মদিনা ফিরে গিয়ে মুসলিমদের বিরুদ্ধে তাদের সহায়তা চান।হুয়াই ইবনে আখতাব বনু কুরাইজার এলাকায় যাওয়ার পর কুরাইজা নেতা কাব ইবনে আসাদ দরজা বন্ধ করে দেন। হুয়াই বলেন যে তিনি খেতে চান মনে করে কাব দরজা বন্ধ করেছেন। সেকথা শুনে কাব বিব্রত বোধ করে তাকে ভেতরে আসতে দেন। বনু কুরাইজা প্রথমে নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করেছিলেন। এবং মদিনা সনদে তারা সম্মতি দিয়েছিল বলে জোটে যোগদানের ব্যাপারে সহজে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।হুয়াই জানান যে অন্যান্য গোত্রগুলি মুসলিমরা নিশ্চিহ্ন না হওয়া পর্যন্ত ফিরে যাবে না এমন অঙ্গীকার করেছে। কাব ইবনে আসাদ প্রথমে তার প্রস্তাবে রাজি হননি এবং মুহাম্মাদ (সাঃ) তার সততা ও বিশ্বাসের প্রশংসা করেন। কিন্তু আক্রমণকারীদের সংখ্যা ও শক্তির কারণে বনু কুরাইজা নিজের মত বদলায় এবং জোটে যোগ দেয়।তার ফলে মুসলিমদের সাথে বনু কুরাইজার চুক্তি ভঙ্গ হয়ে যায়। নিশ্চয়তা হিসেবে হুয়াই অঙ্গীকার করেন যে কুরাইশ এবং গাতাফানরা যদি মুহাম্মাদ (সাঃ)কে হত্যা না করে ফিরে যায় তবে তিনি কুরাইজার দুর্গে প্রবেশ করবেন এবং কুরাইজার ভাগ্যে যাই ঘটুক না কেন তিনি নিজেও সেই পরিনতি বরণ করবেন।কুরাইজার এই চুক্তিভঙ্গের কথা মুহাম্মাদ (সাঃ) জানতে পারেন। তাদের এরূপ কর্মকাণ্ডের ফলে তিনি শঙ্কিত হন। মদিনা সনদ অনুযায়ী বনু কুরাইজার ইহুদিরা মুসলিমদের মিত্র ছিল তাই তাদের এলাকার দিকে মুসলিমরা কোনো প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নেয়নি। কুরাইজার অধিকারে থাকা অস্ত্রের মধ্যে ছিল ১৫০০ তলোয়ার, ২০০০ বর্শা, ৩০০ বর্ম এবং ৫০০ ঢাল।মুহাম্মাদ (সাঃ) প্রকৃত খবর সংগ্রহের জন্য সাহাবি সাদ বিন মুয়াজ, সাদ বিন উবাদা, আবদুল্লাহ বিন রাওয়াহা এবং খাওয়াত বিন জুবায়েরকে প্রেরণ করেন। তিনি তাদের বলেন যে বনু কুরাইজা যদি মিত্রতা বহাল রাখে তবে তা যেন প্রকাশ্যে ঘোষণা করা হয় যাতে সৈনিকদের মনোবল বজায় থাকে। কিন্তু মনোবল হ্রাসের আশঙ্কা থাকায় সম্ভাব্য চুক্তি লঙ্ঘনের সংবাদ ইঙ্গিতে তাকে জানানোর নির্দেশ দেন।প্রেরিত সাহাবিরা দেখতে পান যে বনু কুরাইজা চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। কুরাইজার লোকেরা শত্রুতা প্রদর্শন করে বলে যে মুহাম্মাদ (সাঃ) এর সাথে তাদের কোনো চুক্তি হয়নি। খন্দকের যুদ্ধের পূর্বে আজাল ও কারাহর লোকেরা বিশ্বাসঘাতকতা করে কিছু মুসলিমকে হত্যা করেছিল। চুক্তি লঙ্ঘনের খবর ইঙ্গিতে জানানোর নির্দেশ ছিল বলে প্রতিনিধিরা সেই ঘটনাকে রূপক হিসেবে ধরে নেন এবং বনু কুরাইজার বিশ্বাসঘাতকতার কথা জানানোর জন্য বলেন আজাল ও কারাহ।

মুসলিমদের যে পদক্ষেপ ছিল
মুহাম্মাদ (সাঃ) বনু কুরাইজার বিশ্বাসঘাতকতার কথা গোপন রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বনু কুরাইজার দিক থেকে মদিনার উপর আক্রমণ আসবে দ্রুত এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ে।উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য মুহাম্মাদ (সাঃ) কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেন। প্রথমে নারী ও শিশুদের রক্ষার জন্য শহরের ভেতরের দিকে ১০০জন সেনা প্রেরণ করা হয়। তারপর আরো ৩০০ অশ্বারোহী প্রেরণ করা হয়।তিনি বনু গাতাফানদের দুই নেতা উয়াইনা বিন হিসন এবং হারিস বিন আউফের কাছে বার্তা পাঠান। যে তারা পিছু হটলে মদিনায় উৎপন্ন খেজুরের এক তৃতীয়াংশ তাদের দেওয়া হবে এই শর্তে সন্ধির প্রস্তাব দেওয়া হয়। তারা এই শর্তে সন্ধিতে রাজি হন। চুক্তি স্বাক্ষরের পূর্বে তিনি সাদ ইবনে মুয়াজ ও সাদ বিন উবাদার কাছে তাদের পরামর্শ চান। তারা জানান যে যদি এটি আল্লাহর নির্দেশ হয় তবে তাদের আপত্তি নেই কিন্তু যদি মদিনাবাসীর দুরবস্থার কথা চিন্তা করে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয় তবে তার প্রয়োজন নেই। মুহাম্মাদ (সাঃ) জানান যে সমগ্র আরব অস্ত্র ধারণ করেছে বলে তিনি তাদের জন্যই এই পদক্ষেপ নিতে চেয়েছিলেন। ফলে প্রস্তাব অগ্রসর হয়নি।সে অবস্থায় মুহাম্মাদ (সাঃ) এর কাছে বনু গাতাফানের নেতা ও জোটবাহিনীর কাছে সম্মানিত নুয়াইম ইবনে মাসুদ সাক্ষাতের জন্য আসেন। ইতিপূর্বে তিনি গোপনে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। তিনি দায়িত্ব চাওয়ার পর মুহাম্মাদ (সাঃ) তাকে বলেন যাতে জোটের মধ্যে ভাঙ্গন ধরিয়ে অবরোধ সমাপ্ত করা হয়।নুয়াইম এরপর একটি কার্যকর পদক্ষেপ নেন। ইসলাম গ্রহণের পূর্ব তার সাথে বনু কুরাইজার সুসম্পর্ক ছিল। তাই তিনি প্রথমে বনু কুরাইজার কাছে যান এবং জোটের বাকিদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে তাদের সতর্ক করেন। তিনি তাদের বলেন বনু কুরাইজার সাথে কুরাইশ ও গাতাফানের পরিস্থতির কোনো মিল নেই। এখানে দুই গোত্রের ঘরবাড়ি, সহায়সম্পদ বলতে কিছু নেই। তারা তাদের স্বার্থ দেখলে গ্রহণ করবে আর না দেখলে চলে যাবে। কিন্তু এই এলাকা বনু কুরাইজার নিজস্ব যুদ্ধের ফলাফল যাই হোক না কেন তাদেরকে এখানেই থাকতে হবে এবং যদি তারা মুসলিমদের শত্রুর সাথে হাত মেলায় তবে অবশ্যই মুসলিমরা এর প্রতিশোধ নেবে। এই কথা শোনার পর বনু কুরাইজা ভীত হয়ে করণীয় সম্পর্কে জানতে চায়। নুয়াইম মত দেন যে যতক্ষণ কুরাইশদের মধ্য থেকে কিছু লোককে জামিন হিসেবে বনু কুরাইজার জিম্মায় না দেওয়া হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত যাতে তাদের সহায়তা করা না হয়।তারপর নুয়াইম কুরাইশদের শিবিরে যান। তিনি বলেন যে ইহুদিরা তাদের অঙ্গীকার ভঙ্গের কারণে লজ্জিত। তাই তারা কুরাইশদের কিছু লোককে জামিন হিসেবে গ্রহণ করে মুসলিমদের সমর্পণ করতে চায় যাতে অঙ্গীকার ভঙ্গের ক্ষতি পূরণ হয়। তাই ইহুদিরা যদি জামিন হিসেবে কিছু লোক চায় তবে তা যাতে মেনে নেওয়া না হয়। নুয়াইম একইভাবে বনু গাতাফানের কাছে গিয়ে একই বার্তা দেন।

জোট ভাঙ্গনের কারন
নুয়াইমের কৌশল কার্যকর প্রমাণিত হয়। আলোচনার পর কুরাইশ নেতারা বনু কুরাইজার নিকট বার্তা পাঠিয়ে জানায় যে তাদের নিজেদের অবস্থা প্রতিকূল। উট এবং ঘোড়াগুলিও মারা যাচ্ছে। তাই যাতে দক্ষিণ দিক থেকে বনু কুরাইজা এবং উত্তর দিক থেকে জোট বাহিনী আক্রমণ করে। কিন্তু সেসময় শনিবার ছিল বিধায় ইহুদিরা জানায় যে এই দিনে কাজ করা তাদের ধর্মবিরুদ্ধ এবং ইতিপূর্বে তাদের পূর্বপুরুষদের যারা এই নির্দেশ অমান্য করেছিল তাদের ভয়াবহ পরিণতি হয়। তাছাড়া কুরাইশ পক্ষের কিছু লোককে জামিন হিসেবে বনু কুরাইজার জিম্মায় না দেওয়া পর্যন্ত তারা যুদ্ধে অংশ নেবে না। তার ফলে কুরাইশ ও গাতাফানরা নুয়াইমের কথার সত্যতা পায় এবং জামিন হিসেবে লোক প্রেরণের প্রস্তাবে রাজি হয়নি। প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের ফলে কুরাইশ এবং গাতাফানের উদ্দেশ্যের ব্যাপারে কুরাইজাও নুয়াইমের কথার সত্যতা পেয়ে শঙ্কিত হয়। ফলে জোটে ভাঙ্গন ধরে যায়।জোট বাহিনীর রসদ ফুরিয়ে আসছিল। ক্ষুধা ও আঘাতের কারণে ঘোড়া ও উটগুলি মারা পড়ছিল। শীতও খুব তীব্র আকার ধারণ করে। প্রচন্ড বায়ুপ্রবাহের ফলে আক্রমণকারী বাহিনীর তাবু উপড়ে যায় এবং সবকিছু তছনছ হয়ে যায়। রাতের বেলা জোট বাহিনী পিছু হটে ফলে পরের দিন সকালে যুদ্ধক্ষেত্র ফাকা হয়ে যায়। পরের দিন মুহাম্মাদ (সাঃ) মদিনায় ফিরে আসেন। ফিরে আসার পর তিনি বলেছিলেন,
এখন থেকে আমরাই তাদের উপর আক্রমণ করব, তারা আমাদের উপর আক্রমণ করবে না। এখন আমাদের সৈন্যরা তাদের দিকে যাবে।" (সহীহ বুখারি)

বনু কুরাইজার অবরোধ
জোট বাহিনী পিছু হটার পর বিশ্বাসঘাতকতা করার কারণে মুসলিমরা বনু কুরাইজার মহল্লা অবরোধ করেন। অবরোধের মুখে বনু কুরাইজার নেতা কাব ইবনে আসাদ ইহুদিরদের সামনে তিনটি প্রস্তাব রাখেন। এক, ইসলাম গ্রহণ; দুই, সন্তানদের হত্যা করে নিজেরা সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করা তিন, শনিবার আক্রমণ হবে না এই বিষয়ে মুসলিমরা নিশ্চিত ছিল বলে সেদিন ধোকা দিয়ে আক্রমণ করা। কিন্তু ইহুদিরা তিনটি প্রস্তাবের কোনোটিই গ্রহণ করেনি। তার ফলে কাব ইবনে আসাদ ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, আদিকাল থেকে আজ পর্যন্ত তোমাদের মধ্যে একটি লোকও জন্মেনি, যে সারা জীবনে একটি রাতের জন্যও স্থির ও অবিচল সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছে।তার ফলে আত্মসমর্পণ ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। তারা মুহাম্মাদ (সাঃ) এর নিকট প্রস্তাব দেয় যাতে তাদের মিত্র আবু লুবাবাকে পরামর্শের জন্য পাঠানো হয়। আবু লুবাবা পৌছানোর পর তাকে জিজ্ঞাসা করা হয় যে তারা আত্মসমর্পণ করবে কিনা। আবু লুবাবা হ্যাঁসূচক জবাব দেন। তবে সেসময় বনু কুরাইজার শাস্তি নির্ধারিত না হলেও আবু লুবাবা হাত দিয়ে কন্ঠনালির দিকে ইঙ্গিত করে মৃত্যুদণ্ড হতে পারে জানান। কিন্তু মুহাম্মাদ (সাঃ) এরূপ নির্দেশ না দেওয়া সত্ত্বেও নিজ থেকে একথা জানানোর কারণে তিনি নিজেকে দোষী বিবেচনা করে মসজিদে নববীতে গিয়ে খুটির সাথে নিজেকে বেঁধে রাখেন। এই ঘটনার ছয়দিন পর আবু লুবাবা মুক্তি পান।২৫ দিন অবরোধের পর শেষপর্যন্ত বনু কুরাইজা আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নেয়। তারপর মুসলিমরা তাদের দুর্গ এবং সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে নেয়। পুরুষদের সংখ্যা ছিল ৪০০ থেকে ৯০০জন। তাদেরকে গ্রেপ্তার করে মুহাম্মদ ইবনে মাসালামার তত্ত্বাবধানে রাখা হয়। নারী এবং শিশুদেরকে পৃথকভাবে রাখা হয়।
ইসলাম গ্রহণের পূর্ব থেকে বনু আউসের সাথে বনু কুরাইজার মিত্রতা ছিল। বনু আউসের অনুরোধে মুহাম্মাদ (সাঃ) তাদের গোত্রের সাদ ইবনে মুয়াজকে বনু কুরাইজার বিচারের জন্য নিযুক্ত করেন। খন্দকের যুদ্ধের সময় সাদ আহত হয়েছিলেন। সেসময় তীরের আঘাতে তার হাতের শিরা কেটে যায়। যুদ্ধাহত অবস্থায় তাকে বিচারের জন্য নিয়ে আসা হয়। তিনি তাওরাতের আইন অনুযায়ী সমস্ত পুরুষকে হত্যা ও নারী এবং শিশুদেরকে দাস হিসেবে বন্দী এবং সমস্ত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন। ওল্ড টেস্টামেন্টের দ্বিতীয় বিবরণে বলা হয়েছে

যখন তোমরা কোনো শহর আক্রমণ করতে যাবে, তখন প্রথমে সেখানকার লোকদের শান্তির আবেদন জানাবে। যদি তারা তোমাদের প্রস্তাব স্বীকার করে এবং দরজা খুলে দেয়, তাহলে সেই শহরের সমস্ত লোকেরা তোমাদের ক্রীতদাসে পরিণত হবে এবং তোমাদের জন্য কাজ করতে বাধ্য হবে। কিন্তু যদি শহরের লোকেরা তোমাদের শান্তির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে এবং তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসে তাহলে তোমরা অবশ্যই শহরটিকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলবে। এবং যখন শহরটিকে অধিগ্রহণ করতে প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের সাহায্য করবেন, তখন তোমরা অবশ্যই সেখানকার সমস্ত পুরুষদের হত্যা করবে। কিন্তু তোমরা তোমাদের নিজেদের জন্য স্ত্রীলকদের, শিশুদের, গবাদিপশু ও শহরের যাবতীয় জিনিস নিতে পার। তোমরা এই সমস্ত জিনিসগুলি ব্যবহার করতে পার। প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের এই জিনিসগুলি দিয়েছেন।বাইবেল, ওল্ড টেস্টামেন্ট, দ্বিতীয় বিবরণ, ২০:১০-১৪

বন্দীদেরকে বনু নাজ্জার গোত্রের নারী কাইস বিনতে হারিসার বাড়িতে রাখা হয়। তারপর মদিনার বাজারে গর্ত খুড়ে ৬০০ থেকে ৭০০ বন্দীর শিরচ্ছেদ করা হয়। বনু কুরাইজাকে প্ররোচনাদানকারী হুয়াই বিন আখতাবকেও মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়। ইতিপূর্বে বনু কুরাইজাকে দেওয়া তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বনু কুরাইজার ভাগ্য বরণের জন্য হুয়াই তাদের সাথে অবস্থান করছিলেন। তার পোষাক যাতে কেউ নিতে না পারে সেজন্য তিনি তার বিভিন্ন জায়গায় ছিদ্র করে রেখেছিলেন। তাকে নিয়ে আসার পর তিনি মুহাম্মাদ (সাঃ)কে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনার সাথে শত্রুতার জন্য আমি নিজেকে নিন্দা করি না। কিন্তু যে আল্লাহর সাথে যুদ্ধ সে পরাজিত হয়। তারপর লোকেদের সম্বোধন করে বলেন, লোকেরা আল্লাহর ফয়সালায় কোনো অসুবিধা নেই। এটা ভাগ্যের লিখিত ব্যাপার। এটি এমন হত্যাকান্ড যা বনী ইসরাইলের জন্য আল্লাহ লিপিবদ্ধ করে দিয়েছেন। তারপর হুয়াই বসে পড়েন ও তার শিরচ্ছেদ করা হয়।

পুরুষদের সাথে এক নারীকেও মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়েছিল। এই নারী কাল্লাদ বিন সুয়াইদের উপর যাতা ছুড়ে মেরে তাকে হত্যা করেছিল। বন্দী নারী এবং শিশুসহ যুদ্ধলব্ধ সব সম্পদ মুসলিমদের মধ্যে বিতরণ করে দেওয়া হয়।তবে মুসলিমের অনুরোধে বেশ কয়েকজন ইহুদিকে ক্ষমা করা হয়। তাছাড়াও বনু কুরাইজার কিছু লোক পূর্বে দুর্গ ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ করেন। তাদেরকেও ক্ষমা করা হয়।মুহাম্মাদ (সাঃ) বন্দী রায়হানাকে দাসী হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। তিনি তাকে মুক্তি দিয়ে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন। কিছু সূত্র অনুযায়ী রায়হানা সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেছিলেন। অন্য কিছু সূত্র অনুযায়ী তিনি প্রস্তাব গ্রহণ করেননি এবং দাসী হিসেবে থাকার সিদ্ধান্ত নেন।রায়হানা পরবর্তীতে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। বিদায় হজের পর তার মৃত্যু হয় এবং মৃত্যুর পর তাকে জান্নাতুল বাকিতে দাফন করা হয়।


সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০০
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সংস্কারের জন্য টাকার অভাব হবে না, ড. ইউনূসকে ইইউ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউর রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার এবং সফররত এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের পরিচালক পাওলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

তোমার বিহনে কাটে না দিন

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:০৩



অবস্থানের সাথে মন আমার ব্যাস্তানুপাতিক,
বলে যাই যত দূরে ততো কাছের অপ্রতিষ্ঠিত সমীকরণ।
তোমাকে ছেড়ে থাকা এতটাই কঠিন,
যতটা সহজ তোমার প্রতিটি চুল গুনে গুনে
মোট সংখ্যা নির্ণয় করা।
তোমাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবি কখনো কখনো কিছু ইঙ্গিত দেয়!

লিখেছেন ডার্ক ম্যান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৭



গতকাল ভারতীয় সেনাপ্রধানের সাথে বাংলাদেশ সেনাপ্রধান এর ভার্চুয়ালি কথা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের অফিসায়াল এক্স পোস্টে এই ছবি পোস্ট করে জানিয়েছে।

ভারতীয় সেনাপ্রধানের পিছনে একটা ছবি ছিল ১৯৭১ সালের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রথম আলু

লিখেছেন স্নিগ্দ্ধ মুগ্দ্ধতা, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



লতিফপুরের মতি পাগল
সকালবেলা উঠে
পৌঁছে গেল বাঁশবাগানে
বদনা নিয়ে ছুটে



ঘাঁড় গুঁজে সে আড় চোখেতে
নিচ্ছিল কাজ সেরে
পাশের বাড়ির লালু বলদ
হঠাৎ এলো তেড়ে




লাল বদনা দেখে লালুর
মেজাজ গেল চড়ে।
আসলো ছুটে যেমন পুলিশ
জঙ্গী দমন করে!





মতির... ...বাকিটুকু পড়ুন

×