যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আধুনিক হচ্ছে বাংলাদেশ। পুরুষদের পাশাপাশি নারীদেরও সমান পদ ও মর্যাদা দেয়া হচ্ছে। তবে জানেন কি? আদৌ গ্রাম ও মফস্বলে মেয়েদের সঠিক মর্যাদা দেয়া হচ্ছে না।এর ভুক্তভোগী নিজে আমি এবং আশেপাশের অনেক মেয়েই...
আমার এক ঘনিষ্ঠ মামাতো বোনের কথা দিয়েই শুরু করি... গ্রামে থাকে..সবেমাত্র এসএসসি শেষ করেছে আমার মতোই! এইতো ৫ তারিখে ওর বিয়ে! জোর করে দেয়া হচ্ছে বিয়েটা...বয়স মাত্র ১৭। বিয়ে দেবার কিছু কারণ ধরতে পেরেছি আমি, যেমন:
*গ্রামের মেয়ে...বেশি পড়ে কি ই বা করবে..তারচে ভালো বিয়ে দিলে শ্বশুড় বাড়িতে আরামে দিন কাটাতে পারবে (সমাজের প্রচলিত ধারণা)
*যতো কম বয়সে বিয়ে দিতে পারবে ততো ভালো জামাই পাবে ( বিয়ে হচ্ছে আমারই খালাতো ভাই এর সাথে,ওর ফুফাতো ভাই হয়)
*এখন বিয়ে না দিলে পরে অন্য ছেলের সাথে চলেও যেতে পারে!
আমরা এবং আমার খালা একটা সাভারে পাশাপাশিই থাকি..সেই খালার মেঝো ছেলের সাথে বিয়ে। গ্রাম থেকে শহরে আসবে মামাতো বোন, আরামেই থাকবে এটাই ধারণা সবার!
শুধুই কি গ্রাম?! মফস্বলেও অহরহ এটা হচ্ছে..আমার ক্লাসমেট অনেকের বিয়ে টেস্ট পরীক্ষার আগে বা পরে হয়ে গেছে..অনেকে এসএসসি দিতে পেরেছে...অনেকে সেটাও পারেনি।
আমারও রীতিমতো বিয়ের বিরুদ্ধে লড়তে হচ্ছে...
সমাজের একটা ধারণা হলো...মেয়েতো ম্যাট্রিক দিলোই..আর না পড়িয়ে ভালো পাত্র পেয়ে বিয়েটা দিয়ে দাও।
ভালো পাত্র পেলে কয়জন বাবা মা ই বা ছেড়ে দেয়?!
কেনো গ্রাম বা মফস্বলের একটি মেয়ের বিয়ে দেবার জন্য এতো লেগে থাকে সমাজ? মেয়েটির কি পড়ার অধিকার দেয়াটা তাদের উচিত না?কেনোই বা একটি পরিবার তাদের মেয়েটিকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে পারে না? মেয়েটি বড় হয়ে কিছু হলে তার কামাই শ্বশুড় বাড়ি ভোগ করবে এটা ভেবে? কেনো তারা মেয়েটিকে সম্পদ না বোঝা হিসেবে দেখে?
উত্তর পাই না...একটা কথাই মাথাতে আসে, সেটা হলো...হয়তো মেয়েদের শারীরিক দূর্বলতা,হয়তো বিয়ের পর শ্বশুড় বাড়ি যেতে হয় তাই এমনটা....এই স্বভাবগুলোকে গুণ/শক্তি হিসেবে তৈরি করার সঠিক স্থানটাই মেলে না মেয়েদের।