অনেক দিন পর বাড়ি গিয়েছিলাম। বাড়ির পাশেই বিশাল ফসলের মাঠ। বাবা বললেন নিজেদের ফসলের জমিগুলো দেখতে যেতে, আমার নিজেরও ইচ্ছা ছিল ফসলের মাঠে ঘুরে আসতে। বিশাল মাঠ,ধান, পাট,সবজী সবই চাষ হয় এই মাঠে। শুরুতেই চোখে পড়লো সবজী ক্ষেত। এখনো কিছু কিছু জমিতে শীতের সবজী পাতাকফি টমেটো রয়ে গেছে। এছাড়া, করলা,বেগুন, পটল, পুইশাকের আবাদ চোখে পড়লো। একজন পরিচিত কৃষকে দেখলাম বেগুন গাছে কীটনাশক প্রয়োগ করতে। কিছুদূর যেতেই দেখা মিললো শত শত বিঘা জমিতে পাটের আবাদ। আমাদের এলাকায় খুব ভাল মানের পাটের আবাদ হয়। নিজেদের ক্ষেতের পাট গাছগুলো এখনো শাক খাওয়ার উপযুক্ত হয়নি তাই পাটশাক তোলা হল না। অন্য আর একটা বিলে গিয়ে দেখলাম দিগন্তজোড়া ধানক্ষেত। যতদুর তাকানো যায় শুধু ধান আর ধান। সোনালী ধানের সৌন্দর্য বর্ণনাতীত। আশাকরা যায় প্রাকৃতিক দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত না হলে এ বছর ধানের বাম্পার ফলন হবে। আর আমরা যারা শহুরে মানুষেরা কম দামে চাল খেতে চাই তাদেরও আশা পূরণ হবে। তবে ধানের চৌদ্দআনি ফলন মানেই কৃষকের ষোল আনি মরন। আশাকরি এ বছর এমনটি হবে না। কৃষক তার ফসলের ন্যায্য দাম পাবে। কৃষক বাচলেইতো আমরা বাঁচবো। ধানক্ষেতের সেচের নালায় শাপলাফুলের সৌন্দর্যও অসাধারণ। কতগুলো ছাগল ছানাকে দেখলাম ধানক্ষেতের পাশ দিয়ে হেটে যেতে একটি ছাগল ছানা সাদাকালো অদ্ভুত সুন্দর রঙ মুগ্ধ করলো আমাকে।
কিছুদুরেই দেখতে পেলাম একটি পানি সেচের যন্ত্র। একটি কলার বাগান চোখে পড়লো। পথের পাশেই বুনো বেগুন গাছ,কিছুদূরে রাস্তার উপর পড়ে আছে গরুর গবর। মাঠে ঘুরতে ঘুরতে পানির পিপাসা পেয়ে বসলো আমাদের। মাঠের ভিতরে গ্রামের এক চাচার বাড়িতে গেলাম পানি খাওয়ার জন্য। উনার বাড়িতে দেখলাম পেয়ারা গাছে সুন্দর ফুল ফুটেছে। আরো দেখলাম একটি খাচায় দুটো বুনো ঘু ঘু পুষছেন । পানি খেয়ে বিদায় নিয়ে আরো কিছু জমি দেখার জন্য পা বাড়ালাম। কিছুদুর যেতেই দেখলাম একটি জমির মাঝখানে পড়ে আছে ৩টি কচ্ছপের ডিম।
অতঃপর খালের পাড় ধরে বাড়ি ফেরার পালা। ফিরতে ফিরতে খালপাড়ে কিছু বুনোফুলের দেখাও মিললো।
উৎসর্গ : যারা নিজেদের কৃষক পরিচয় দিতে ভালবাসেন, কৃষকের জন্য যাদের মন কাদে তাদেরকে।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:৩০