পুলিশের জঙ্গিবিরোধী বিশেষ অভিযানে ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৩ হাজার ১৫৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৩৭ জন সন্দেহভাজন জঙ্গি। শুক্রবার সকাল থেকে গতকাল শনিবার সকাল পর্যন্ত অভিযানে এরা গ্রেপ্তার হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। এই হলো বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রত্রিকার শনিবারের শিরোনাম । তার প্রতিক্রিয়া স্বরূপ আমাদের দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের হরেক রকম মন্তব্য। আর গুণি জনের নানান কথা। আমি অতন্ত দেশের বাহিরে থাকি-যতদুর পত্রিকা ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারি যে,
তবে এটা জঙ্গিবিরোধী বিশেষ অভিযান হলেও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মী ও বিভিন্ন মামলার আসামিদের। ফলে এ অভিযান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক দলের মাঝে- অতএব,
পুলিশ সদর দপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ২৭ জন নিষিদ্ধ জেএমবির সদস্য, ৭ জন জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশের (জেএমজেবি) সদস্য এবং বাকি তিনজন অন্যান্য জঙ্গি সংগঠনের সদস্য। সন্দেহভাজন জঙ্গিদের কাছ থেকে একটি শুটারগান, গুলি, ৫০০ গ্রাম গানপাউডার, ১৫টি ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে।
চলমান অভিযানে মূলত বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মী, মাদক ব্যবসায়ী ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামিসহ নাশকতার মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রথম আলোর, মানবজমিন,আমারদেশ,কালেরকন্ঠ ইত্যাদি দৈনিক ও অনলাইন পত্রিকার তথ্যে মাধ্যমে জানা যায়, ২৪ জেলায় কমপক্ষে ২৫০ জন বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ও হয়রানির ভয়ে বিভিন্ন জেলায় বিএনপি-জামায়াতের কর্মীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। কয়েকটি জেলায় বিরোধী নেতা-কর্মীদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে টাকা না দিলে গ্রেপ্তারের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।এই পুলিশি সাঁড়াশি অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে পরোয়ানাভুক্ত আসামি ১ হাজার ৮৬১ জন। এ ছাড়া নিয়মিত মামলায় ৯১৭ জন, মাদক মামলায় ৩৫৮ জন, অস্ত্র উদ্ধার মামলায় ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মূলত জঙ্গিদের বিরুদ্ধে এই বিশেষ অভিযান চললেও গ্রেপ্তার হচ্ছেন অন্য মামলার আসামিরা আর সাথে গ্রেফতার হচ্ছে অনেক সাধারণ জনতা যারা কোন প্রকার মামলার আসামি নয়।
ব্যাপক ধরপাকড় সম্পর্কে জানতে চাইলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, ‘দেশে অব্যাহত হত্যাকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সরকারকে সর্বশক্তি নিয়োগ করতে হবে। কিন্তু ৪১ জন জঙ্গিকে গ্রেপ্তারের নামে ৩ হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করার মাধ্যমে আমরা আসলে ক্ষমতার অপব্যবহারই করছি।’
চট্রগ্রামে ধরপাকড় সম্পর্কে জানতে চাইলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন- পুলিশ সুপারের স্ত্রী খুন হওয়ার পরে পুলিশ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের একটা সহানুভূতি সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ পুলিশের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল। এই গ্রেপ্তার সাধারণ মানুষের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছে, মানবাধিকার লঙ্ঘনেরও ঘটনা ঘটছে। এভাবে গণগ্রেপ্তার হওয়ার ফলে গ্রেপ্তার-বাণিজ্যেরও আশঙ্কা রয়েছে। এটা হলে জনগণের সঙ্গে সরকারের দূরত্ব সৃষ্টি হবে।
অধ্যাপক মিজানুর রহমানের বক্তব্যের সাথে আমি একমত হয়তো আমার সাথে আরো অনেকেই একমত হবেন,তাই আজ আমরা এর প্রতিকার স্বরূপ-সরকারে দৃষ্টি আকর্ষন করছি যে,জঙ্গি নিধনের নামে এভাবে জনগন কে হয়রানি করে ক্ষমতায় ঠিকে থাকতে চাইলেও তা একসময় ঠিকে থাকবে না-কেননা গনতান্ত্রিক দেশে ক্ষমতার প্রধান উৎস হলো জনগন।
অতএব-পরিশেষে আমি এই গন-গ্রেফতারের নিন্দা জানাচ্ছি।