কথা আমরা সবাই বলি। কিন্তু কিছু কিছু কথা আছে যা ব্যক্তির উপর নির্দিষ্ট নয়, পদের উপর নির্ভরশীল। অর্থাৎ, ওই স্থানে থাকলে যে কেউ একই কথা বলবে। আপনি থাকলে আপনি কিংবা আমি থাকলে আমিও একই কথা বলতাম!! এমন কিছু কথামালা নিয়ে আমার আজকের পুষ্ট। ফাউ প্যাচাল না পাইরা কথামালায় চইলা যাই।
প্রধানমন্ত্রীঃ দেশ উন্নতির জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে। অথচ একটি মহল দেশের এই উন্নতি সহ্য করতে পারছে না। তারা দেশকে বারবার পিছিয়ে দিতে চাছে। তাদের সকল চক্রান্ত নস্যাত করে দেওয়া হবে।
বিরোধদলীয় নেত্রীঃ সরকার সব ক্ষেত্রেই ব্যর্থ। দেশের জনগণ আর এই সরকারকে চায় না। আইন-শৃঙ্খলা, অর্থনীতি সব জায়গায় ব্যর্থ এই সরকারকে এমনি পদত্যাগ করা উচিত।
অর্থমন্ত্রীঃ দেশের অর্থনীতির অবস্থা আগের যে কোন সময়ের অনেক ভাল আছে। আগের সরকারগুলোর সীমাহীন দুর্নীতির পর যে দেশের অর্থনীতি এখনও টিকে আছে এইটাই অনেক!
বিদ্যুতমন্ত্রীঃ দেশের যেটুকু চাহিদা সে অনুসারে বিদ্যুত উতপাদন করা যাচ্ছে না। তবে আগামী বছর থেকে ইনশাল্লাহ চাহিদার কাছাকাছি বিদ্যুত উতপাদন করা হবে। তখন থেকে আর তেমন কোন সমস্যা হবে না। সে পর্যন্ত সবাই একটু ধৈর্য ধরেন।
সরাষ্ট্রমন্ত্রীঃ দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন আগের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি নিয়ন্ত্রণে আছে। কিছু কিছু অঘটন অবশ্য হচ্ছে তবে এগুলা সব বিচ্ছিন্ন ঘটনা।
ডিজুস প্রেমিকঃ বেবী, আমি তুমারে যেদিন দেখছিলাম সেদিন থেকেই তুমার প্রেমে দিওয়ানা।
লিউ, পিউ, মিউ,
সবটিরে বাদ দিয়া-
আই লাভ ইউ!!
বিশ্বাস কর বেবী, ওইগুলান কারও সাথে আমার কোন অ্যাফ্যায়ার ছিল না। জাস্ট টাইম পাস এই আর কি!! এখন থেকে তুমি যাই কউ তাই করমু। দরকার হইলে হাত কাইটা রক্ত দিয়া চিঠি লেখমু।
ডিজুস প্রেমিকাঃ জান, পাশের বাসার আবুলের সাথে আমার কুনু রিলেশন ছিল না। ওর লগে সপ্তায় দুই চার বার পিজা খাইতে যাইতাম এই আর কি! আর মুবাইলে মদনের লগে পড়া-শুনা ছাড়া আর কুনু কথাই কইতাম না! তুমি তো জান, রাইত ছাড়া আমি পড়বার পারি না, এইজন্য আর কি রাতে টুকটাক কথা… যা হোক, ওইগুলান সব বাদ। এখন শুধু তুমি আর আমি!
সাধারণ প্রেমিকঃ আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি। হয়ত তোমাকে টাকা-পয়সা দিয়ে অনেক সুখ দিতে পারব না তবে এটা নিশ্চিত আমার মত আর কেউ তোমাকে পৃথিবীতে ভালবাসতে পারবে না!
একবার বলি বারবার বলি, বলি যে লক্ষবার// তুমি আমার প্রিয়তমা তুমি যে আমার!
সাধারণ প্রেমিকাঃ তুমি আমার হাত যেমন করে ধরে রেখেছ এইভাবে সারা জীবন ধরে রাখবা। কখনই ছাড়বা না! তুমি ছাড়া আমার যে আর কেউ নাই।
তোমায় ছেড়ে বহুদূরে যাব কোথায়// এক জীবনে এত প্রেম পাব কোথায়?
ছাত্র-ছাত্রীঃ উফফ!! এই সেমিস্টারটা ফালতু হইছে। এই রেসাল্টে চাকরি তো দূরের কথা ভাল মত একটা বিয়াও করতে পারমু না! যা হোক, নেক্সট সেমিস্টার থেইকা কুপাইয়া পড়া-লেখা করমু।
উচ্চবিত্ত মানুষঃ দেশটার যে কি হবে! চারদিকে দূর্নীতিতে দেশ ভইরা গেছে। মানুষ কেমনে এই দেশে থাকে?!! যা আছে সব বিক্রি-টিক্রি কইরা বিদেশ চইলা যাইতে হইব।
সাধারণ মানুষঃ কেউ দেশটারে নিয়া ভাবল না। সবাই আছে যার যার তালে। দেশের মানুষ না খাইয়া মরতাছে কারও কোন খবর নাই।
সেলিব্রেটি লেখকঃ দেশ ভইরা গেছে সব ফালতু লেখকে। দুই লাইন লেইখাই বই-টই বাইর কইরা ফেলতাছে! বই আর কি চলব?? এইগুলান কুনু লেখা হইল। যত্তসব বস্তা-পচা লেখা।
সাধারণ লেখকঃ মানুষজন হিট লেখকের বই না পইড়াই কিনে। আফসুস! এইজন্যই তো আসল লেখকের কোন মূল্য নাই। দেশ ভইরা গেছে সব সস্তা জন-প্রিয় লেখকে।
ক্ল্যাসিকেল শিল্পীঃ আইজকালকার পোলাপান কুনুরকমে গিটারটা শিখাই ব্যান্ড বানাইয়া অ্যালবাম বাইর করে। ঘোড়ার ডিম কন্ঠ এগুলার। বিটের তালে গলা শুনা যায় না, নাইলে এগুলারে গলা ছাগলের ভ্যা ভ্যা ডাকের মত মনে হইত।
ব্যান্ডশিল্পীঃ আমরা সাধারণত রক ধাচের গানগুলা বেশি করি। ইংলিশ গান বেশি করি। সফট গান আমাদের ভাল লাগে না। হাই বিটের সাথে ধুম-ধারাক্কা গান এই তো… আর কনসার্টে এইগুলাই পাবলিক বেশি খায়।
ডিজুস পোলাপানঃ মানুষজন ইশটাইলই বুঝে না। আধুনিক ইশটাইল হইল শার্টের উপরে গেঞ্জি পড়া! আর চুল শজারুর মত খাড়া কইরা লেটেস্ট ডিজাইন! সাধারণ মানুষ এইগুলান বুঝবই না। সব ক্ষেতের দল!!
সমাজ সচেতন নাগরিকঃ উফফ! আইজকালকার যুগের পোলামাইয়াগো দেখলে মনে হয় ওইগুলান ফকির। বাসায় কাপড় কিনার টেকা-পয়সাও মনে হয় নাই। বাপ-মা এইগুলানের কুনু খবর নেয় না দেইখাই ওইগুলার এই অবস্থা।
উপরের কথাগুলো কাল্পনিক হতে পারে। তবে বাস্তবে কেউ শুনলে যিনি শুনবেন শুনার জন্য তিনিই দায়ী থাকবেন।