কোন বিশ্বাস মানুষ ও সভ্যতাকে বাঁচানোর মাধ্যম হতেই পারেনা সেটা আরেকবার দেখা গেল।
করোনা শুধু খারাপই করেনি, ভালও করেছে! মানুষকে সাহসী করছে, যৌক্তিক করছে, মানবিক করছে। অহেতুক বিশ্বাস নির্ভরতা কমাচ্ছে মানুষের। অনেককে ফিরিয়েছে অনেক কিছু থেকে। আমাকেও!
মানুষকে বাঁচাতে বিকল্পহীনভাবে বিজ্ঞান, বিশেষত চিকিৎসা বিজ্ঞানের আরো প্রভুত উন্নতি ব্যতীত আগামীতে এ জাতীয় বা আরো ধ্বংসাত্বক দূর্যোগ মোকাবেলার আর কোন উপায় নেই এবং সেটা প্রকৃতিকে ঠিক রেখেই করতে হবে। করোনা সেটা আবার বুঝিয়েছে।
যাই হোক, করোনায় যদি বেঁচেই যাই, বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি যদিও। সময় পেলে ও স্বাভাবিক মৃত্যুর সুযোগ হলে নিজের যেসব অঙ্গ প্রত্যঙ্গ মৃত্যুর পরে অন্যের কাজে লাগানো সম্ভব সেসব এবং চিকিৎসাবিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের জন্য নিজের এই নশ্বর মরদেহটি দেবার অঙ্গীকার করবো।
করোনায় মোট আক্রান্ত পনের লাখ ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছে এক লাখের বেশি৷ সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে সাড়ে তিন লাখ। চিকিৎসা নিচ্ছেন বাকিরা।
পৃথিবীর জনসংখ্যা ৭৭৮ কোটি প্রায়। আর আক্রান্ত মাত্র পনের লাখ! কাজেই করোনা থেকে বাঁচার সহজ উপায় কিন্তু আপনার হাতেই আছে৷ বিশেষ কিছুই করতে হবে না আপনাকে এজন্য। ৭৭৮ কোটি থেকে পনের লাখ বাদ দিলে বাকি থাকে ৭৭৭.৮৫ কোটি। আপনি আক্রান্ত না হয়ে থাকলে, আপনার নাম যেন ৭৭৭.৮৫ কোটির তালিকাতেই থেকে যায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে শুধু! এই মুহুর্তে বেসিক কিছু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেই আপনি নিরাপদে ৭৭৭.৮৫ কোটির একজন হয়ে থাকতে পারবেন। সেটাও খুব বেশি কঠিন কিছু না। আপনাকে শুধু ঘরে থাকতে হবে আগামী ক দিন বা বড় জোর ক মাস মাত্র! একান্ত বাধ্য না হলে ঘরের বাইরে না গেলেই হয় কিন্তু।
নিশ্চিত থাকুন এই করোনা ভাইরাস পৃথিবী ধ্বংস করতে পারবে না। ধ্বংস হলেও যদিওবা কিছু যায় আসেনা। পৃথিবীতে এর আগেও বেশ কয়েকটি বরফযুগ এসছিলো৷ প্রকৃতি তার প্রয়োজনে মাঝে মাঝে নিজেকে formate করে৷ যেমন আপনি আপনার স্মার্ট ফোনসেটটি বা কম্পিউটারটিকে করেন! ধীরে ধীরে আবার প্রাণের উন্মেষ ঘটে। সভ্যতা গড়ে উঠে৷ মানুষ প্রকৃতির উপর দখল দারিত্ব নিতে চায় আবারো । আবারো formate প্রয়োজন হয়ে পড়ে। পালাক্রমে চলতেই থাকে এমনটা। প্রকৃতির খেয়াল বেখায়াল বলে কথা! করোনায় সভ্যতা ধ্বংস বা মানুষ নিশ্চিহ্ন হবে না নিশ্চিতভাবেই। কিন্তু আপনাকে তো বেঁচে থাকতে হবে। কাজেই সামান্য কিছু স্বাস্থ্যবিধি মানতেই হচ্ছে এ দফায়।
ধরে নেয়া যাক সেসব মানতে না পারার কারনে বা মানার প্রশ্নে আপোষহীন থাকা সত্বেও আপনি করোনাক্রান্ত হলেনই। তাতেও মন খারাপের কিছু নেই, আতংকিত হওয়ার কিছু নেই। সাহস রাখুন। সাড়ে তিন লাখের উপরে মানুষ সম্পূর্ণ সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আপনাকে ওই সাড়ে তিন লাখের একজন হয়ে উঠতে হবে সেক্ষেত্রে৷ বাংলাদেশে বেসিক চিকিৎসাটাও পাবেন না নিশ্চিত। কিন্তু তাতেও আতংকিত হবার কিছু নাই। করোনার টিকা বা ওষুধ তো আবিস্কারই হয়নি এখনো। না হলেও কিন্তু সারা বিশ্বে সাড়ে তিন লাখের উপরে আর এদেশে তেত্রিশজনের উপরে মানুষ সুস্থ্য হয়ে উঠেছেন বেসিক চিকিৎসাতেই। আক্রান্ত হলে আপনাকে তাদের একজন হয়ে উঠতে হবে। বৃটেন যুক্তরাষ্ট্রের মত উন্নত দেশে বেশি বেশি মানুষ মরছে এটা নিয়েও আতংকিত হবার কিছু নেই। বৃটেন যুক্তরাষ্ট্রের মত উন্নত দেশগুলোতে কেন এতো বেশি সংখ্যায় মানুষ মরছে সেটার প্রকৃত কারন জানতে আমাদের আরো অপেক্ষা করতে হবে।
আপনার সামর্থ্য মত ব্যবস্থা গ্রহণের পরেও আপনি মরতে পারেন কোভিড-১৯ এ। মরতে তো আপনি পারেন ভিন্ন যে কোন কারনেই। কাজেই কেবলমাত্র কোভিড-১৯ নিয়ে আপনার আতংক কেন্দ্রিভুত না করে সব ইস্যুতেই সতর্ক সচেতন থাকাটাই উচিত হবে। আপনি যেন আরেকজনের আক্রান্ত হবার কারন না হন, আরেক পরিবারের দূর্যোগের কারন না হন সেটা নিশ্চিত করতে হবে আপনাকেই। আপনার দায়িত্ব সেটাই হওয়া উচিত।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:৫৪