গত সোমবার থেকে জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলো মুক্তামনি। তার অস্ত্রোপচার হওয়া হাতটি ফুলে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিলো। কথা বলতেও পারছিলো না সে।
জন্মের দেড় বছর পর শিশু মুক্তামনির দেহে একটি ছোট মার্বেলের মতো গোটা দেখা দেয়। এরপর থেকে সেটি বাড়তে থাকে। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়েও তার কোনো চিকিৎসা হয়নি।
মুক্তামনির আক্রান্ত ডানহাত ছোট আকারের গাছের গুড়ির রূপ নিয়ে প্রচণ্ড ভারী হয়ে ওঠে। এতে পচন ধরে পোকাও জন্মে। দিন-রাত চুলকানি ও যন্ত্রণায় অস্থির হয়ে থাকতো শিশুটি। আক্রান্ত স্থান থেকে বিকট গন্ধ বের হতো। এ রোগ তার দেহের সর্বত্র ছড়িয়ে গিয়েছিলো।
গত বছর জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিরল রোগে আক্রান্ত মুক্তামনির সংবাদ প্রকাশের পর তাকে ঢাকায় পাঠিয়ে সরকারি ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসার উদ্যোগ নেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। পরে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তামনির চিকিৎসার দায়িত্ব নেন।
এরপর ১১ জুলাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয় মুক্তামনিকে। সেখানে মুক্তামনির চিকিৎসায় গঠিত হয় বোর্ড। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ধরা পড়ে মুক্তামনির হাত রক্তনালীর টিউমারে আক্রান্ত। তারপর মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অস্ত্রোপচার করে অপসারণ করা হয় তার হাতের অতিরিক্ত মাংসপিণ্ড।
কয়েক দফা অস্ত্রোপচার শেষে গত বছরের ২২ ডিসেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এক মাসের ছুটিতে বাড়ি নেওয়া হয় মুক্তামনিকে। এরপর আর ঢামেকে যেতে রাজি হয়নি মুক্তামনি। বাড়িতেই কোনোমতে চলছিলো তার চিকিৎসা।
আমরা মুক্তামনির বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। আল্লাহ তাকে বেহেস্ত নসীব করুন।