জুবায়ের,
সুস্থ আছি,ভাল আছি।জানিস তো একটা মানুষ বেঁচে থাকতে সুস্থ থাকাটা আল্লাহর বড় নেয়ামত।মানুষ যখন অসুস্থ হয়ে পড়ে তখন সে সুস্থ থাকার বিষয়টা ভাল করে অনুধাবন করতে পারে।তবে মাঝে মাঝে অসুস্থ হওয়াটাও ভাল।কারন এই অসুস্থতার জন্য আল্লাহ মানুষের পাপ কিছুটা মার্জনা করে দেন।
তবে তুই ঠিকই বলেছিস,ভাল থাকাটা বর্তমানে খুবই কষ্টকর।কোন না কোন বিষয় ঠিকই তোকে প্রতিনিয়ত কষ্ট দিয়ে যাবে।তবু এই সবের মাঝেই আমাদের ভাল থাকাটা শিখে নিতে হবে।ভাল থাকার চেষ্টা করতে হবে।
আল্লাহ যাদের আছে তাদেরকেই আরও বেশি-বেশি কেন যে দেন সেটা আমি আর কি ভাবে বলি বল।তবে এর ব্যাখা মনে হয় হাদিস কোরানেই আছে।আমার জ্ঞান সীমিত তাই তোকে এ ব্যপারে কিছুই বলতে পারছি না।পৃথিবীতে সবাই যদি সমান হত তাহলে মানুষ কেউ কাউকে তো আর দাম দিত না।সবার ক্ষমতা সমান হলে তখন একে অপরে ক্ষমতার দ্বন্দে সব সময় লড়াই করে যেত।পৃথিবীতে শান্তির জন্য উচু নিচু শ্রেনীর মানুষ থাকাটা তাই অবশ্যক।
আমাদের কিন্তু দেখ বেশি চাহিদা নেই।এই আমরা যদি সব সময় একটা নির্ভরতার হাত বা কারও সত্যিকারের ভালবাসার ছায়াতলে থাকতে পারতাম তবে কি আমাদের এত দুঃখ থাকত মনের ভেতরে?
আমরা সেই নির্ভরতার হাতটি কখনই পাইনি।কেউ সব সময় সত্যিকারে ভালবাসার ছায়া দিয়ে আমাদের মাথার উপর থাকেনি কোন সময়।তাই আমাদের দুঃখটা এখন ক্ষতের মত হয়ে গেছে।সামন্যতেও কি মনোকষ্টে ভুগতে থাকি আমরা!
যে মা-বাবার আমাদের সব থেকে কাছের মানুষ হওয়ার কথা ছিল তাদের কাছ থেকেই আমরা যোজন-যোজন দূরে সরে নয় কি?
সত্যি বলতে কি আমি আজ পর্যন্ত কোন নির্ভরতার হাত খুজে পায়নি।সব কিছু ছেড়ে দিয়ে চলে যাওয়া যায় এমন একটা মানুষ কখনও আমার জীবনে ছিল না।
তাই হয়তো আমার ছোট-ছোট দুঃখ গুলোও আমার জীবনে অনেক বড় কষ্ট হয়ে ধরা দিত।
তোর জীবনে কি এমন নির্ভরতার মানুষ আছে,যার কাছে সব কিছু ছেড়ে পরম নিশ্চিন্তে থাকতে পারবি?
তুইও তাহলে আত্বহত্যার কথা ভাবিস!!!
আমিও আত্বহত্যার কথা ভাবি।মাঝে মাঝে মনে হয় নিজেকে শেষ করে দেই।কিন্তু আত্বহত্যা মহা পাপ তাই আর ও পথে যাওয়া হয়না।তবে আত্বহত্যার কথা ভাবাও তো পাপের কাজ।আশা করি আত্বহত্যার কথা মাথায় আসলে নিজের মাথা থেকে এটাকে সব সময় ঝেড়ে ফেলতে চেষ্টা করবি।আত্বহত্যার কথা মাথায় অনেক কারনেই আসতে পারে।পারিবারিক অশান্তি সবচেয়ে বড় একটা কারন।আর খুব কাছের মানুষের কাছ থেকে কষ্ট পেলে তখন বেঁচে থাকার শেষ ইচ্ছেটুকুও আর থাকে না।
কাছের মানুষদের স্বার্থপরতা দেখা মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় একটা কষ্টের বিষয়।আমি মন থেকে চাই তোকে যেন স্বার্থপরতার কোন রুপই দেখতে না হয়।
আর তুই যেন একজন নিস্বার্থ মানুষ হিসেবে পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে পারিস সে দোয়াই করি।
বিয়ের পরে অনেক মানুষই বদলে যায়।তবে সেই বদলানোকে সব অর্থে স্বার্থপরতা বলা যাবে না।যেমন ধর তুই বিয়ের আগে বন্ধুদের যে সময় দিতে পারবি বিয়ের পরে কি তা পারবি?তখন হয়তো তোকে অনেক বন্ধু স্বার্থপর বলবে তাই বলে তুই তো আর স্বার্থপর হয়ে যাবি না।
তবে যে প্রকৃত ভাল মানুষ তাকে মানুষ একদিন না একদিন নিশ্চয় ভাল মানুষ বলবে।আর মানুষের সব সময় সামর্থ দিয়ে বিবেচনা করাটাও ভুল।তার প্রচেষ্টাটাকেও দেখতে হবে।আর মুখে বেশি কথা না বলে সময়ের সাথে সব কিছু কর্মের মাধ্যমে দেখানোটাই আমি সবচেয়ে ভাল মনে করি।
নিজেকে চারপাশ থেকে গুটিয়ে নিচ্ছি এটা হয়তো কিছুটা ঠিক।তবে ওই যে তোকে আবার বললাম না,আমি আমার দায়িত্ব কর্তব্য সম্মন্ধে বেশ সজাগ।
আমিও সবার সাথে মিলে মিশে থাকতেই বেশি পছন্দ করি।কাউকে তিন দিন খোজ নিলে সে যদি আমার একদিন খোজ না নেয় তবে তখন আমি তার কাছ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেই।বিষয়টা কিছুটা এরকমের।
তুই নিজেকে চারপাশ থেকে গুটিয়ে নিচ্ছিস কেন?
কথা এখন কম বলাই ভাল।মানুষের সাথে প্রয়োজনের অতিরিক্ত না মেশাও ভাল।
কোথায় কি পড়েছিস জানি না তবে আমার মতে, বন্ধুত্ব যত পুরানো হয় ততই তা গাড়ো হয়।
তবে বন্ধুত্বের অনেক রুপই দেখেছি।তাই বন্ধু শব্দটিকে আমি হয়তো আর আগের মত মূল্যায়ন করি না।
এই যে তোকে লিখছি,আমি যখন থাকব না পৃথিবীতে তখন কিন্তু এই লেখা গুলো থেকে যাবে।তুই পুরানো লেখা গুলো পড়বি আর আমার কথা ভাববি।
আমি আপাতত তোর সাথে এই লেখালেখির মাধ্যমেই যুক্ত থাকতে চাই।ফোনে কথা হয়তো বলব দরকারে।
তুই খেয়াল করে দেখেছিস আমি স্মার্ট ফোন ব্যবহার করি না।ফোনের উপরে আমার প্রচন্ড এ্যালার্জি আছে।
টুকটাক ফটোগ্রাফিতে শখ আছে তাই হয়তো একটা ভাল স্মার্টফোন পরে কিনতে পারি।তা না হলে ক্যামেরা কিনব।
চাকরি না করলে আমি ফোন ব্যবহার করতাম না।অফিসের প্রয়োজনেই আমার ফোনটা ব্যবহার করতে হয়।
যে আমি এক সময় রাত জেগে ফোনে ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলতাম তার ফোনের উপর বিতৃষ্ণা একদিনে তৈরী হয় নি তা খুবই ভাল বুঝতে পারছিস।
থাক সে সব কথা।ভাল থাকিস।ভালবাসা নিস।
তোর খোকন কাকু।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:১৪