আমার সিনেমা প্রেম প্রথম পর্ব
Click This Link
আমার সিনেমা প্রেম দ্বিতীয় পর্ব
Click This Link
৮০ দশকের শেষ দিকে যেমন ঢাকায় ভিডিও কালচার ব্যপক হারে শুরু হয়, সেই সঙ্গে এই কালচারকে সহযোগিতা করার জন্য বেশ কিছু ম্যাগাজিন ও প্রকাশিত হয়। যাদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ছিল (আমার মতো আরো সিনেমাখোরদের কাছে) ভিডিও গাইড। জনপ্রিয় হওয়ার কারণ, এর একটা বড় অংশ জুড়ে ছিল বিভিন্ন মুভির নাম ও গল্পে সারাংশ। সেই সঙ্গে মুভির স্টিল তো ছিলই। সেখান থেকে আমি মুভির নাম সংগ্রহ করা শুরু করি। মাসিক এই ম্যাগাজিনটি প্রায় বছর চারেকের মত (অবশ্যই বিরতি দিয়ে) বের হয়েছে। আমার কাছে সবগুলো কপি ছিল। আট বছর আগে যে বাসায় থাকতাম উই পোকার আক্রমণে আমি সেই সংগ্রহটি হারিয়েছি। যা এখনো আমাকে দুঃখ দেয়।
একের পর এক মুভি দেখতে দেখতে এবং সেই মুভি সম্পর্কে ইনফো টুকে রাখার জন্য একসময় খেয়াল করলাম আমি মুভি বিশেষজ্ঞ হয়ে যাচ্ছি। এলাকার বন্ধুরাতো বটেই, ভিডিও লাইব্রেরির বড় ভাইরা পর্যন্ত নানান ইনফোর জন্য আমাকে জিজ্ঞেস করা শুরু করেন। এরপর যখন ফিল্ম ফেয়ার থেকে নিয়মিত মুভি আনা শুরু করি তারাও আমার এই বিশেষ গুণটি সম্পর্কে জেনে ফেললেন এবং আপকামিং মুভি (ইংরেজি) সম্পর্কে আমার কাছ থেকে জানতে চাইতেন।
ও হ্যা, মাঝে মধ্যে বাসা খালি পেলে "ইয়ে"ও (সফট, তখনও হার্ড দেখা শুরু করি নাই। অবশ্য ফুপুর বাসার কথা বলছি। আমার সিনেমা দেখার শুরুই হার্ড দিয়ে) দেখা হচ্ছে সমান তালে। ইয়ে দেখার শুরুটাও বেশ মজার। তখন মাত্র মুভি দেখার শুরু। ভাইয়া (ফুপুর বড় ছেলে) ফিল্ম ফেয়ার থেকে বিশ্বখ্যাত পরিচালকদের মুভি এনে দেখেন। আর তাতে আমরা দুই ভাই খুবই বিরক্ত। কোনো অ্যাকশন নাই, এইটা কোনো মুভি হইলো! তো একদিন দুপুরে আমরা মুভি দেখার প্রস্তুতি নিচ্ছি, এমন সময়ে ভাইয়া ও তার কয়েকজন বন্ধু এসে হাজির তারা মুভি দেখবে। যথারীতি তাদের বসার ঘরটি ছেড়ে দেওয়া হলো। কিন্তু মুভি দেখবো না তা কি হয়! তাই দুই ভাই সিদ্ধান্ত নিলাম, দেওয়ারের ওপর থেকে আমরা ওদের আনা মুভিই দেখবো। দেওয়ালের (পলাশি ব্যারাকে থাকতেন ফুপুরা) রুমগুলোর মাঝে ওয়াল থাকলেও তা সিলিং পর্যন্ত না, বেশ ফাক) ওপর থেকে উকি দিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা। প্রধমেই 'কাম প্লে উইথ মি' (সফট ছিল ওটা)) নামের একটি ব্রিটিশ মুভি চালানো চলো। কিন্তু এম মিনিট চালিয়েই লাফিয়ে বন্থ করে দিল ভাইয়া। কারণ ... পরে অবশ্য আমরা দুই ভাই মলে সেই মুভিটা জোগাড় করেছিলাম এবং দেখেছিলাম (হি হি)।
যাই হোক ১৯৮৯ সালে আমাদের বাসায় ভিসিআর কেনা হয়। ফুপুর বাসার বদলে এবার নিজের বাসা। আমার সিনেমা দেখা বেড়ে গেল আগের চাইতে তিনগুণ। ফিল্ম ফেয়ারের ধানমন্ডি শাখায় আমার একটি ফাও মেম্বারশিপ হয়ে যায়। কিভাবে ফাও? মুভি বিশেষঞ্জ হিসেবে পরিচিত হওয়ায় এলাকার এক বন্ধু প্রায়ই মুভি দেখার সময়ে আমার কাছ থেকে "ইয়ে" ধরনের সিনেমার নাম নিত। সে সেই সব মুভি দেথত তারই স্কুলের বন্ধুর বাসায়। সেই বন্ধু ফিল্ম ফেয়ারের মেম্বার ছিল। যেহেতু তারা খুব কমই মুভি দেথতো, সেই কার্ডটি মাঝে মধ্যে ব্যবহারের সুযোগ পেয়ে যাই আমি। আর সেই ছেলেটি চয় মাসে যা মুভি দেখেছে তা আমি ৭ দিনে দেখে ফেলি। ফলে যথন ছেলেটি বিদেশ চলে যায়, ফিল্ম ফেয়ারের মালিকের নির্দেশে কার্ডটি আমার নামে হয়ে যায়। আমি ফিল্ম ফেয়ারের সেই সব ভাগ্যবান মেম্বারদের একজন যে ক্লাবটি থেকে বাকিতে এবং কখনো কখনো ফাও ফাও মুভিও দেখেছি। এমনকি তাদের নিজেদের অনুষ্ঠানেও দাওয়াত পেতাম। ফিল্ম ফেয়ার সে সময়ে অরিজিনাল ভিএইচএস গুলো আনাতো যেহেতু তাদের একটি বিক্রয় কেন্দ্রও ছিল। অরিজিনাল টেপুগলো রাখার জন্য তাদের একটি গোডাউন ছিল সেখানেও গিয়েছি আমি।