আমার এখন পচিশ,
তোমার কুড়ি হল?
রাতটি জেগে বসেই আছি,
কখন ফুটবে বল?
আমার এখন সকাল সকাল,
তোমার কটা বাজে?
সাজতে আরো কতো দেরী,
দেখবো কনের সাজে?
আমার এখন ঝিম ধরানো ঘুম,
তোমার কি স্বপ্ন দেখা শুরু?
ভুলতে গিয়ে গুলিয়ে যাচ্ছে,
তোমার ধনুক বাকা ভুরু।
আমার এখন ভাল্লাগেনা,
তোমার কেমন কেমন মন?
হাতটি কবে ছুয়ে দিবে,
তোমার আজন্ম স্বপন।
আমার এখন একা একা,
তোমার পায়েল ধ্বনি?
খড়ের ঘরে একটা রাজ্য,
তোমার সুখ বুনি।
আমার এখন জীবন-মরন,
তোমার কি ছটফট?
হীরে দিয়ে গড়া নাকফুল,
তোমার স্বপ্ন গড়ার মঠ।
আমার এখন অসুখ লাগে,
তোমার কি বৃহস্পতি?
কোন নামে ডাকবে তখন,
তোমার যখন পতি?
______________________________________________
আমার এখন দিন কাটে না,
রাত কাটে না,
ব্যস্ত থাকি ভাবনাবিহীন কান্নাবিহীন,
মাঝ রাতে চাঁদ দেখি না।
আমার এখন ঘুম ভাঙ্গে না,
ঘোর লাগে না,
হারিয়ে যাই নীল আকাশে সুর আবেশে,
হিম বাতাসে হাত বাড়াই না।
আমার এখন পথ থাকে না,
অপেক্ষা জাগে না,
ইচ্ছে মত ঝিমিয়ে চলি নিরিবিলি,
দূর দিগন্তে নীড় দেখি না।
আমার এখন মন লাগে না,
স্বপ্ন দেখি না,
মিছেমিছি জীবনের গল্প করি মিথ্যেচারী,
জলোচ্ছ্বাসের শেষ খুজি না।
_____________________________________________________
আমার এখন কষ্টবেলা,
নষ্ট মেলার শ্রমিক,
তুমি তখন অষ্টাদশী,
তোমার শত প্রেমিক।
আমার এখন দুইটিই পা,
খুড়িয়ে মাড়িয়ে চড়ি,
তুমি তখন মন যমুনা,
তোমার সুখে গড়াগড়ি।
আমার এখন অন্ন বেহাত,
দুটো পয়সার লড়াই,
তুমি তখন ফুল শতদল,
তোমার অনেক বড়াই।
আমার এখন জীবন ছন্নছাড়া,
শত শত সিড়ি,
তুমি তখন হেসে কাটাও,
তোমার মনটা ঘুড়ি।
একদিন
আমার হবে স্নিগ্ধ সকাল,
ব্যস্তবিহীন চলা,
তুমি তখন ঘর সংসার,
হারিয়ে যাবে আপন কথামালা।
আমার হবে মিস্টি অফিস,
খানিক খুনসুটি,
তুমি তখন বাচ্চা কাচ্চা,
সঙ্গী শুধু রান্না ঘর ঘটি।
আমার হবে ক্লান্ত দুপুর,
দামী রেস্টুরেন্ট,
তুমি তখন টেকো বরে,
খুজবে কারো সেন্ট।
আমার হবে পার্টি ডিনার,
গ্লাস ভর্তি শান,
তুমি তখন ছলছলে চোখ,
অনেক অভিমান।
তারপরেও
আমার তবু একা একা,
শত গানের ভীড়ে,
তুমিও তখন একাই শুধু,
তোমার সুখের নীড়ে।
আমার তবু বাদল এলে,
কান্না ভেজা চোখ,
তুমিও তখন লুকিয়ে যাবে,
তোমার শত শোক।
আমার তবু নির্জনতায়,
একটু নিজের ফেরা,
তুমিও তো শেকল বাঁধা,
নিয়ম দিয়ে ঘেরা।
আমার তবু উথাল পাতাল,
কেমন কেমন করে,
তুমিও তো বুক ভাসাবে,
নিত্য নতুন মরে।
_______________________________________________
মিথ্যে কথা, সত্যি কথার,
গল্প বলি শোনো,
অনেক দিন আগে বনে,
বাস করতো দানো।
দানোর অনেক তীর ছিলো হাঁ,
ধনুক ছিলো এক,
ছিলা ছিলো সরল শক্ত,
বিদ্ধ হত প্রত্যেক।
দানোর মনে সুখ ছিলো খুব,
অভাব ছিলো ঘুম,
রাতটি জেগে থাকতো বসে,
চোখটি আদ্র কুসুম।
দানো কোনো ভয় পেত না,
কত্তোবড় দেহ,
কেউ তারে দেয় নি বলে,
নাইযে তোমার কেহ।
দানো একদিন বুঝে গেলো,
ভ্রম অনুভূতি,
রাজকন্যা পেলে যদি,
কাটে ভীমরতি।
দানো এবার খুজতে গেলো,
সাত তেপান্তর যদি,
রাজকন্যা নিয়েই ফিরবে,
নামটি দেবে নদী।
দানো অনেক খুজে পেতে,
পেয়ে রাজবাড়ি,
ভাবে, আজ অমাবষ্যাতেই,
করতে হবে চুরি।
দানোর সাথে জাদুর কাঠি,
সোনা রুপায় গড়া,
রাজকন্যা শুয়ে আছে,
অঝোর নিদ্রা ঝরা।
দানোর খোঁজে আসবে এবার,
অচিন রাজার কুমার,
সে কি আর জানতো কথন,
দানোও যে বেশুমার।
দানোর সাথে লড়াই হল,
ছুটলো মেঘরাশি,
ছুট লাগালো এদিক সেদিক,
বনের নিবাসী।
দানো এবার জিতেই যাবে,
কুমার পেলো ভয়,
মিছেমিছি এবার বুঝি,
জীবন হবে ক্ষয়।
দানোর ভয়ে ছুট লাগালো,
অচিন রাজার ছেলে,
ঠিক তখুনি রাজকন্যার,
চোখটি গেলো খুলে।
দানো তখন দাঁড়িয়ে আছে,
লড়াই থামিয়ে,
রাজকন্যার তনু দেহ
শুভ্র ফুল দিয়ে।
দানোর এমন হতবুদ্ধি,
বুকে আঘাত পেলো,
আহাজারি করলো কন্যা,
কি যে হারালো।
দানোর পাশে বসে বসে,
রাজকন্যার শত বলিদান,
জমদূতেও লজ্জা পেয়ে,
জীবন করলো দান।
দানো তখন আরো পেলো,
দুষ্টু বুড়ির শাপমুক্তি,
রাজকন্যা অবাক হলো,
রাজপুত্র সেও কি?
দানো এবার করুন করে,
করলো অনুনয়,
রাজকন্যা থাকো পাশে,
জগৎ হবে জয়।
বিঃদ্রঃ বাংলা ব্লগস্ফিয়ারে চার বছরে আমি অনেক পেয়েছি, ভাই, বন্ধু, ভালোবাসা, শত্রু, সমালোচনা, হুমকি, অজস্র গালিগালাজ, মাঝে একবার ব্লক খেয়েছি মডুদের হাতে। অসংখ্য স্মৃতি দিয়ে ঘেরা। কিন্তু কিছুই দিতে পারিনি। আজকে অনেক ভেবে চিন্তা দেখলাম কবিতা ছাড়া আর কিইবা আছে আমার দেয়ার মতো? তাই কবিতাই দিলাম। যারা নতুন এসেছেন ব্লগে তারা তরুন, তারা উচ্ছল, তারা শক্তি, তাদের জন্যে আদর আর ভালোবাসা রইলো। যারা পুরনো, আমারো অনেক আগের তাদের জন্যে অজস্র সন্মান রইলো, আর যারা আমার সাথে এসেছিস তাদের জন্যে বিড়ি চায়ের শুভেচ্ছা। আর হ্যা মাই ডিয়ার মডুগন আপনাদের জন্যে আপাতত কিছু নাই, সব নিউট্রাল। ঝাপসা।
হ্যাপি ব্লগিং।