শুভ্র যে ফিনিক্স উঠে দাড়াতে চেয়েছিলো,
সে নতুন করেই জন্ম নিক, হয়ে উঠুক ঈগলের মতো।
কি হবে তাকে যদি এখনি বলো আকাশের বুকে হারিয়ে যেতে?
যদি সে সত্যি সত্যি হারিয়ে যায়? তখন কি হবে? সে তো গ্রীক পুরানের অমর ইউরেনাস নয় যে খন্ড বিখন্ড হয়েও জন্ম দেবে প্রেমের দেবী আফ্রোদিতিকে, কিংবা ফেনিল হয়ে ফুসে উঠবে, ভাসিয়ে নিয়ে যাবে সব কিছু প্রচন্ড উচ্ছ্বাস দিয়ে।
নাহয় প্রতিদিন একটু একটু করে ছেড়ে দিতে দাও ঘুড়ির সুতো, নাটাইটাও নিয়ে নিও না, দিয়ে যেও অন্তত যতদিন ফিনিক্স চিনে নিতে না পারে মাটির গায়ে নেমে আসার পথ। রাতেরা অমর হতেই পারে, দিনেরা অমর হয় না, যদি প্রদীপ নিভিয়ে দাও কিংবা সুর্যটা যদি হেলিয়াসের মনের ইচ্ছে মতো চলতে শুরু করে পথ ভুলে? তখন তো আর ল্যাম্পপোস্টের আলো দিয়ে দেবদারুরা চলতে পারবে না কিংবা সমতলের গোলাপেরাও ফুটবে না আর। কি হবে বলো তো তখন? প্রেম কি আর আসবে বলো এই জগতে? প্রেমিকেরা তখন তন্ন তন্ন করে খুজতে শুরু করবে আলো, সেখানে শুধু অন্ধত্ব থাকবে, প্রেমিকার দিকে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে দেখার মতো না থাকবে আলো না থাকবে নয়ন। ফিনিক্স মরে যায় না, বেচেই থাকে তবে যখন ছাইটুকু হয়ে যায় তখনি তাকে বলো না উড়ে বেড়াতে মেঘের ভাজে ভাজে, মেঘেরাও বজ্রপাতে ছুড়ে দেয় অভিশাপ। ফিনিক্স অভিশপ্ত নয়। ফিনিক্স সব সময়ের মতোই পবিত্র একটা টেলিপোর্টার, যাকে ছুয়ে হারিয়ে দেয়া যায় অতীত বর্তমান ভবিষ্যৎ, শুধু বলবো পর্বত হও কিংবা বয়ে চলা ঝরনা ধারা। ফিরতে দাও সেই চেনা সুর ঠিক দেখবে ভাঙ্গা মন্দির থেকে ভেসে আসবে কোনো এক পথ হারা রাখালের বাশির সুর।
_____________________________________________
কিছু কিছু মানুষ এতো সুন্দর হয়ে যে সুর্য নিজেও অভিমানী আচরন করে, আর কিছু কিছু চরন আছে ভাষাকে হারিয়ে দিয়ে হয়ে উঠে অলংকার।
তুমি সেই মানুষ নও, তুমি সেই চরন নও, তবুও তোমার উপরেই পতিত হয়েছিলো একদা জ্যোৎস্নার সবটুকু আলো।
আর তুমি হয়ে উঠেছিলে কারো চোখে অপরুপা,
অপঃ রুপ।
তুমি কি দেখতে পাও? নাকি অন্ধ তুমি?
যে আকাশের পানে হারিয়ে যেতে ছুটেছো সে আকাশের মাঝেই তুমি বন্দী, শুধু ভেবে দেখো পুরো পৃথিবীটাই আকাশে ঝুলে আছে আর তুমি দেখতে পাও নাই সেটা।
তুমি বুঝি দেবী হতে চেয়েছিলে, পুজারী খুঁজেছিলে,
কিন্তু তুমি কি বোকা দেখো সাধককে দেখতেই পাওনি, যে তোমাকে সাধনা করেছে বিগত সহস্র বছর।
হে নারী, প্রেমিক তোমাকে পুর্নতা দেয় নি কখনোই তোমার পুর্নতা শুধুই নিঃস্বার্থ প্লেটোনিক একজন কবির হাতেই হতে পারে।
তুমি কিংবা তুমি কবে যে বুঝবে ক্ষনা জন্মা এই পৃথিবীতে এক বেলা ভোগ্য হওয়ার তুলনায় এক জীবন বিলিয়ে দেয়াতেই ভর করে আছে পৃথিবীর আদিমতম একমাত্র সুখ।
_____________________________________________
ইচ্ছে করে তোমার চোখে ছোট্ট করে একটা আকাশ একে দেই,
যাতে সেই ছোট্ট আকাশের গন্ডিতেই ঘুরে মরো তুমি অনাদিকাল
কিন্তু আমার যে আকাশ নেই সেখানে আছে শুধু নীলচে শুন্যতা,
কোথাও রঙ হারিয়ে তা সাদা, ধূসর আবার কালোও হয়ে গ্যাছে।
ইচ্ছে করে তোমার ভেজা এলো চুলে একটা ফুল গাছ গেথে দেই
যাতে রোজ সেখানে ফোটে জবা আর তুমি মুগ্ধ হতে থাকো,
কিন্তু আমার যে টব নেই, সেখানে আছে শুধু স্যাতস্যাতে মাটি,
বুঝতেই পারি না কোনটা এঁটেল কোনটা দোআঁশ কিংবা বেলে।
ইচ্ছে করে বুকের মাঝে একটা এক রুমের কাঠের ঘর বানিয়ে দেই
যাতে করে সেই ঘরেই চলে তোমার আমার খুনসুটি একজীবন,
কিন্তু আমার যে হাতুড়ি বাটাল নেই, আছে শুধু বিশাল জঙ্গল,
সেই জঙ্গলে এলোমেলো বেড়ে উঠা গাছ আছে শুধু কতগুলো।
ইচ্ছে করে তোমার কানে একটা গান শোনানো মশা ঢুকিয়ে দেই,
যাতে করে তুমি শুধু সারা জীবন শুনে যাও একটাই মাত্র সুর,
কিন্তু আমার যে গীত নেই, আছে সুর ভাঙ্গা কতগুলো ভাঙ্গা কাব্য,
সেই কাব্যের প্রতিটি লাইনেই আছে শুধু বিষাদ কোমল ভালোবাসার গল্প।