প্রেম অবিনশ্বর, প্রেম ঐশ্বরিক, প্রেম অমর, প্রেম এক স্বর্গীয় সুধা বটে। তবে প্রেম করার আগেই দুটো কথা বলে নিতে চাই, নারী বড় স্বৈরাচারী, প্রেম করা ভালো কিন্তু না করা আরো ভালো।
আপনি কাউকে ভালোবাসেন ভালো কথা কিন্তু জোর করে তার ভালোবাসা পাবেন এমন কোনো কথা কিন্তু নাই, কিন্তু তার ভালোবাসা যাতে পেতে পারেন তাই পোস্ট। এই পোস্ট পড়ার আগে আপনাদের আরো দুইটা পোস্ট আমি প্রেফার করছি, ঐ দুটো পোস্ট পড়লে এই পোষ্টের কন্টেন্ট বুঝতে অনেক সুবিধা হবে আপনাদের।
[১] কোনো মানুষ-ই ব্যক্তিত্বহীন নয়...
[২] পুরুষের ব্যক্তিত্বের কিলার ইন্সটিঙ্কট
আমাদের চারপাশে বিভিন্ন রকম মেয়েই আছে আর তাই বিভিন্নরকম থিউরী। এইগুলা আমার কালেক্ট করতে অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে, কিছু কিছু বান্ধবী তো কিল ঘুষিও দিয়েছে, কিছু বড় ভাই রেগে আগুন, যদিও শেষ পর্যন্ত উহারা সবাই আমার এই মহৎ উদ্দেশ্য অনুধাবনপূর্বক আমাকে তাহাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। তাদের প্রতি রইলো অজস্র কৃতজ্ঞতা। ইচপেশালী আমার তিন বিশ্ব প্রেমিক দুস্তো রাহাত, জনি আর আরাফাত। ভীতু এবং লাজুকদের জন্যে এই পোস্ট নয়।
ক্লাসমেট কন্যাঃ
[১] যদি বন্ধু হয় তাহলে ভালোভাবে মিশুন, তার সব কিছু মনোযোগ দিয়ে সবসময় শুনবেন, তাকে অনেক গুরুত্ব দিবেন। ক্লাসে একটা স্ট্রং ব্যক্তিত্ব নিয়ে চলবেন। চুপচাপ থাকবেন, হালকা রসিকতা একদম করা যাবে না। ধীরে ধীরে বান্ধবীর লাইফের গুরুত্বপূর্ণ একটা পার্ট হয়ে যান যাতে করে এক বেলাও আপনাকে ছাড়া তার না চলে। কোনও এক বিকেলে তাকে নিয়ে চলে যান নদীর পাড়ে তারপর চুপ করে বলে দিন সাহস নিয়ে আপনি তাকে ভালোবাসেন।
[২] যদি বন্ধু না হয়ে শত্রু হয়ই, তাহলে তার সামনে আপনাকে একটু ভিন্নভাবে উপস্থাপন করুন, এই ক্ষেত্রে আপনি একটু লুসো টাইপ হতে পারেন, ঐ মেয়ে ব্যতীত অন্যদের টপ প্রায়োরিটি দিবেন। ভালোভাবে মনোযোগ দিয়ে পড়াশুনা করুন, নিজেকে ডানপিঠে হিসেবে উপস্থাপন করুন। সৎ থাকুন, সে ধীরে ধীরে আপনার প্রতি আকৃষ্ট হবে। হ্যা সে যদি ইতিমধ্যে অন্য ছেলের সাথে মিশতে শুরু করে তবে সেই ছেলেরে আচ্ছামত পচান সব জায়গায়, এমনভাবে যাতে প্রমান হয় সে ছেলে একটা হাফ লেডিস। কিচ্ছু করার নাই ভায়া, যুদ্ধ আর প্রেমে সব জায়েজ। অতঃপর এমনভাবে চলুন যেন সেই মেয়েকে পাত্তাই দিচ্ছেন না। সে নিজেই আপনার প্রতি দুর্বল হয়ে যাবে আর হলে তো টের পাবেন। অপেক্ষা করেন প্রেম আপনা আপনি চলে আসবে।
পাশের বাসার কন্যাঃ
[১] এই ধরনের কেস আসলে খুব টাফ, আশেপাশের প্রতিবেশীরা ভয়াবহ নজর রাখে আর তাই মেয়ের সাথে কমিউনিকেশন গ্যাপ একটা ফ্যাক্ট হয়ে যায়। মনে হয় যেন কাছে কিন্তু আসলে অনেক দূর। সো যা যা করবেন, মেয়েকে দেখলে তার দিকে তাকাবেন, পাত্তা না দেয়ার ভান করবেন না। সুন্দর করে একটু হাসি হাসি মুখ করে তাকান এবং আস্তে করে মাথা দোলান আই মিন তাকে সন্মান জানালেন, নিজে থেকে ভুলেও কথা বলতে যাবেন না কখনো। নিজের বাসার সামনে আড্ডা দিবেন না ভুলেও। তবে চাইলে বাসার সামনের রাস্তায় ক্রিকেট খেলতে পারেন, তার বাসার জানালার কাচ ইচ্ছে মত ভাঙতে পারেন আর অবশ্যই উপযাচক হয়ে বারবার বলির পাঠা হয়ে সেই বাসায় সরি বলার দরকার নাই, তবে মেয়ে যদি আপনাকে ঝাড়ি দেয় তাহলে তাকে সরি বলুন আর মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকান।
[২] বাসার আশেপাশের বাচ্চাদের সাথে ভালো একটা সম্পর্ক গড়ে তুলুন, তাদের প্রিয় বড় ভাই যেন আপনি, সবাই যেন হয় আপনাকে ছাড়া অন্ধ, এই অন্ধ ভক্তি তার কানে যেতে সময় লাগার কথা না। মুরুব্বীদের প্রতি সন্মান দেয়া অব্যহত রাখুন, রাস্তা দিয়ে হাটার সময় নিচে তাকিয়ে অবশ্যই, এলাকার অন্য কোনও মেয়েরে পাত্তা দেয়া এলাউড না। অতঃপর কিছু দিন যেতে দিন, তার সাথে হালকা কথা বার্তা দিয়ে শুরু করুন, তার ভাবনা গুলো ধরার চেষ্টা করুন, তাকে হেল্প করুন এবং ফিল করুন। বন্ধুত্বপূর্ণ একটা সম্পর্ক গড়ে তুলুন, কৌশলে জিজ্ঞেস করেন তার অন্য পছন্দ আছে কিনা। না থাকলে কয়েকদিন সময় নিয়ে এবার নিজে থেকে কৌশলে জানিয়ে দিন তাকে আপনার ভালো লাগে, কিন্তু অফার করবেন না। তারপর আর আসলে অফারের দরকারই নাই, যা হবার একা একাই হবে।
[৩] পাশের ফ্ল্যাটের হলে পিকনিকের আয়োজন করতে পারেন বিল্ডিঙের সব সদস্য নিয়ে। তবে এইটা করতে গিয়ে সাবধান, সবার নজরে পড়ে যাবেন না যেন, জাস্ট হাসিখুশি থাকুন ফিস্ট এঞ্জয় করুন। আর গিটার বাজাতে পারলে তো কথাই নাই, আসরের মধ্যমনি আপনি।
একই এলাকার কন্যাঃ উপরের মেথড কাটছাট করে ইউজ করেন। তবে এক্ষেত্রে পরিচিত বড় আপুদের সাহায্য নিতে পারেন। তারা ভালো আইডিয়া দিয়ে উপকার করতে পারবে আর সেই সাথে তাহাদের কিছু এক্সট্রা হেল্প আপনাকে করতে হতে পারে।
একই ইউনির কন্যাঃ
[১] এই ক্ষেত্রে আপনি ভালো না পচা স্টুডেন্ট কিছুই আসে যায় না, আপনাকে হতে হবে ইচপেশালী ইস্মারট। কথায় এবং কাজে চটপটে, তবে আর যাই হোক লুসো হওয়া চলবে না। ক্যাম্পাসে আড্ডা বাড়িয়ে দিন, বিভিন্ন ইভেন্টে বেশি বেশি দায়িত্ব নিতে শিখুন, আস্তে আস্তে লিডিং দিতে শিখুন, গিটার কিনে ফেলুন একটা, শিখে নিন। সবার কাছ থেকে সন্মান আদায় করুন সফট এবং উপকারী আচরন দিয়ে।
[২] সুস্পস্ট ভাবেই ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে দিন আপনি ঐ মেয়েকে পছন্দ করেন, অন্য কেউ তখন পছন্দ করলেও আপনার অবস্থানের কথা চিন্তা করে অফ যাবে। তবে যাই করুন মেয়েকে সরাসরি হুট করে কিছুই বলার দরকার নাই। কোনও এক বসন্ত দিনে নিজে থেকেই চিন্তা করে ইউনিক আইডিয়া বের করে তাকে সেই মত প্রপোজ করুন। মাথায় রাখবেন এমনভাবে প্রোপজ করবেন যাতে কোনও মেয়েকে রিফিউজ করতে হলে অনেক নিষ্ঠুর হতে হয়। মেয়েরা মায়ের জাত, এতো নিষ্ঠুর হবে না। আর যদি হয়ই তাহলে কোনও বাজে রিএক্ট করবেন না, বাসায় এসে হাত পা কাটবেন না। কয়েকদিন ক্যাম্পাসে না গিয়ে নিজের সাথে একা সময় কাটান। ১০ দিন পর যান। নিজের স্বাভাবিক লাইফ লিড করুন আগের মতো। আর ঐ মেয়েকে নেক্সট টাইম আর পাত্তা দিবেন না। খবরদার।
ভার্চুয়াল কন্যাঃ
[১] প্রথমত এধরনের প্রেম আমি প্রেফার করি না, এই গুলা টিকে না তেমন, কারন বাস্তবে মেয়েরা এক রকম আর ভার্চুয়াল অন্যরকম। এইখানে একটা মেয়ের পিছনে অনেক ছেলে ঘুরে তাই নিজেদের অনেক কিছুই ভাবতে শুরু করে এরা। যদিও এদের পিছনে শুধু ভয়াবহ লুইচ ছেলেরাই ঘুর ঘুর করে অথবা যেসব ছেলে কিছু এন্টারটেইন খুজে তারাও। তাই এদের সিরিয়াসলি যদি পছন্দই করেন তাহলে তার পোস্ট গুলতে লাইক করেন, অন্যরা যেসব মন্তব্য করবে সেই টাইপ মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকুন, এমনভাবে মন্তব্য করুন হয় সে হাসবে এবং আপনাকে রিপ্লাই দিতে বাধ্য হবে, যাই করুন নিজের পারসোনালিটি বজায় রেখে। তারপর ইনবক্স হয়ে মোবাইল ফোন এবং সামনাসামনি মিট করুন যদি মনে হয়ে আপনাদের যায় একজনের সাথে অন্যের তাহলে বাস্তবতা মেনে হয় প্রপোজ করুন অনথ্যায় বাদ দিন এসব।
[২] ব্লগার আপুঃ ইয়েপ এই আপুরা কিন্তু ভয়াবহ ভালো, শুধু ভার্চুয়াল লাইফ না, সঙ্গী হিসেবে বিবাহিত জীবনেও আপনি সুখি হবেন বলেই মনে করি, এরা আপনার লাইফে পেইনের কারন হবে না। বেশিরভাগ ব্লগার আপুই বাস্তববাদী এবং মুক্তমনা। তারপরেও এদের পোস্ট গুলো কিন্তু একটু কেমন জানি। যাই হোক যাকে পছন্দ করেন তার পোষ্টে গুরুত্ব দিন, গঠনমূলক সমালোচনা অব্যাহত রাখুন, এমনকি সে যদি লুতুপুতু মার্কা পোস্ট করে তাহলেও এমনভাবে মন্তব্য করুন যাতে সে কষ্ট না পায় কিন্তু সে আরো ভালো পোস্ট দিতে উৎসাহী হয়। উৎসাহ অব্যহত রাখুন। আর হ্যা অতি অবশ্যই ব্লগে নিজের আলাদা একটা অবস্থান গড়ে তুলুন। এমন পোস্ট দিবেন যেগুলোতে সে আগ্রহী। তারপর আর কি কোনও বড় আপুর হেল্প নিন ব্লগের। যাতে তার সাথে আলাদাভাবে আপনি যোগাযোগ করতে পারেন সেই জন্যে। এইখেত্রে মেইল আইডিই ফার্স্ট স্টেজ। হ্যাপি ব্লগিং । এইখানে একটা সতর্কতা প্রযোজ্য ব্লগে অনেক ছেলে ব্লগার বিভিন্ন মেয়ে ব্লগারদের ব্লগে গিয়ে মজা করে, তারা কিন্তু করে নিখাদ এন্টারটেইনের জন্যে। তাদের আলাদা কোনও ইন্টারেস্ট নাই বলেই জানি আমি।
মেয়ে যদি হয় উদাসীঃ
[১] আপনিও যদি উদাসী হন তাহলেই সারছে, আপনাকে হতে হবে ফানি। তার সাথে আচ্ছামত মিথ্যে বলুন, রাগিয়ে দিন। অনেক জোক্স বলুন, হাসিয়ে দিন। তাকে উদাসি হতে দেয়া চলবে না। তার মনের দখল নিন যেভাবেই পারেন।
সে যদি হয় রগচটাঃ
[১] চুপচাপ হন, তাকে ভয় পেতে শিখুন, ধোলাই খাওয়ার প্রিপারেশন নিয়ে রাখুন মাঝে মাঝে। তবে মাঝে মাঝে খুচিয়ে দিয়ে সেধে সেধে এই ধোলাইটা খেতেই হবে আপনাকে। যদিও শান্ত ইমেজ বজায় রেখে চলবেন। সন্মান করুন অনেক, কিন্তু সেটা আপনাকেও আদায় করতে হবে, এসব মেয়ের কাছ থেকে সন্মান আদায় করার মতো দুরুহ কাজ আর নাই।
আর প্রোপজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা জিনিস। অনেকেই এই কাজটা করতে পারেন না তাই সব যায়। প্রপোজ করুন ইউনিক ভাবে, আগে বুঝুন সেও আপনার প্রতি আকৃষ্ট কিনা। যদি না হয় তাহলে অপেক্ষা করুন। হুট করে কোনও কাজ কোনোদিন ভালো হয় নাই। যাই করুন বিবেচনাবোধ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে হয়তো এর থেকেও অনেক ভালো বুদ্ধি বের করতে পারবেন আপনি।
সতর্কতাঃ
[১] আমি সহকর্মীর সাথে রিলেশন প্রেফার করি না, এতে অফিসে কাজের পরিবেশ নস্ট হয়।
[২] কেউ কেউ পছন্দের মেয়ের সাথে রিলেশন করতে ব্যর্থ হলে অনেক উল্টা পাল্টা কাজ করেন, হ্যা হতাশ হওয়া ভালো কিন্তু এমন কিছুই করা উচিত নয় যা নিজের জন্যে ক্ষতিকর। একটা মেয়ের মধ্যে যা আছে অন্য একটা মেয়ের মধ্যেও সেইম জিনিস আছে। হয়তো আপনি আরো ভালো কাউকেও পেতে পারেন।
[৩] আরেকজনের জিএফ ভাগিয়ে আনাটা স্রেফ জঘন্য একটা নোংরামী ছাড়া কিছুই না, যতই ভালো লাগুক এই কাজ করবেন না, সে যদি আসেও ভাগিয়ে দিন, মনে রাখবেন সে একবার বিশ্বাসঘাতক হয় সে সারা জীবন তাই থাকে।
[৪] পরকীয়া নিয়ে কিছু লিখে শুধু শুধু পোস্ট নষ্ট করবো না, বিকৃত রুচির মানুষ এরা কোনও সন্দেহ নাই।
[৫] পোষ্টের কন্টেন্ট সবটাই ফান করার জন্যে, বাস্তব জীবনে প্রয়োগ নিজ দায়িত্তে করবেন, গুরুগম্ভীর আলুচুনা নট এলাউড।
[৬] এই পোস্ট কোনও ভীতু আর লাজুক ছেলের জন্যে নয়। ভয় এবং লজ্জা নারীর সম্পদ ছেলেদের অপমান।
হ্যাপি মোমেন্ট গাইজ।
উৎসর্গঃ চাঁপাডাঙার চান্দু, শের শায়েরী, সবুজ মেঘ, মৃত্যুঞ্জয় এবং আমার বোন মেঘ কে। ভালোবাসা তোমাদের জন্য।
বিশেষ কৃতজ্ঞতাঃ ডক্টর এক্স, লতিফা লতা, আরাফাত, জনি, রাহাত এবং আরো অনেকেই। তবে অনেক আইডিয়াই দিতে পারি নাই। বোরিং লাগতেসে এখন। অর্থহীন লাগতেসে এখন এই পোস্ট আমার কাছেই।