Intouchables: যে সিনেমাটি নিয়ে মেতে আছে ফরাসীরা
বিগত কিছুদিন যাবত ফরাসীরা যে সিনেমা নিয়ে মেতে আছে তার নাম Intouchables। যা ফরাসী উচ্চারণে হয় এন্টুসাব(ল) এবং ইংরেজীতে Untouchables। এই সিনেমাটি ফ্রান্সের এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় ব্যবসা সফল সিনেমা। ব্যবসার দিক থেকে প্রথম স্থানে রয়েছে ২০১০ সালে মুক্তি পাওয়া Bienvenue chez les Ch'tis ( ইংরেজি নাম: Welcome to the Sticks)। এই সিনেমাটি ২৩ সপ্তাহ ব্যবসা করে অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙ্গেছিল। এন্টুসাব(ল) মাত্র ৯ সপ্তাহ পার করে দ্বিতীয় ব্যবসা সফল সিনেমা হয়ে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে কিছুদিনের ভেতর সব রের্কড ভেঙ্গে ফেলবে। এটাই হবে ফ্রান্সের সর্বকালের সেরা ব্যবসা সফল সিনেমা। ইতোমধ্যে ২৪তম টোকিও আর্ন্তজাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে Tokyo Sakura Grand Prix জিতে নিয়েছে। যতটুকু জানা গেছে এবং দেখা গেছে তাতে- সিনেমা দেখেন এমন কোনো ফরাসী বাদ যায়নি যারা সিনেমাটা দেখেননি! একটি সত্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে নির্মিত কমেডি ধাচের সিনেমাটিতে মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন কালোদের আইকন, অত্যন্ত প্রিয় অভিনেতা Omar Sy এবং আরেক ফরাসী চলচিত্র অভিনেতা François Cluzet। এই দুইজনের চমতকার অভিনয় সবার মন জয় করে নিয়েছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে এবারের অস্কার দৌড়ে Omar Sy এগিয়ে থাকবেন তার Driss চরিত্রে দূর্দান্ত অভিনয় করার জন্য। সিনেমাটি একই সাথে সমালোচক এবং বিনোদন প্রত্যাশী সাধারণ দর্শকের মন জয় করেছে। এন্টুসাব(ল) সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন দুইজন পরিচালক। পরিচালকদ্বয় (Olivier Nakache এবং Éric Toledano) ২০০৪ সালের সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত একটি ডুকুমেন্টারী ফিল্ম থেকে অনুপ্রানিত হয়ে সিনেমাটি বানিয়েছেন।
সিনেমাটির শুরু থেকে শেষ পযর্ন্ত রয়েছে চমক। তাই শুরু বলছি না তবে পটভূমিটা একটু বর্ণনা করি। কারণ সিনেমাটা ফ্রেন্স ভাষায় নির্মিত এবং আমি এখন পর্যন্ত ইংরেজি সাবটাইটেল পাইনি। এই পোস্টটা আরো আগেই দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু সাবটাইটেলের অপেক্ষা করে দেরী হয়ে গেলো।
যাইহউক, Driss (Omar Sy) কালো গরীব পরিবারের ছেলে। বাস করে তার মা এবং অনেকগুলো ভাইবোনের সাথে ভাড়া বাড়ীতে। পড়াশোনা শেষ করে এখন প্যারিসের রাস্তায়/গলির মোড়ে আড্ডা দিয়ে সময় কাটানোই তার নেশা। চাকুরী না পাওয়ার অজুহাতে সরকারের কাছ থেকে বেকার ভাতা খেয়ে ঘুরে বেড়ায় সে। কিন্তু হঠাত একটি চাকুরীর ইন্টারভিউ এর ডাক আসে। (*ফ্রান্স এ সরকারী-বেসরকারী সকল ক্ষেত্রের চাকুরীদ্বাতা হিবেসে কাজ করে Pole emploi -পল এম্পোয়া নামক সরকারী অফিস। সেখানে সবার CV জমা থাকে এবং চাকুরীদ্বাতা ও চাকুরীকর্তার মধ্যে তারাই সমন্বয় করে থাকে) Driss (Omar Sy) খুব বিরক্ত হয়ে নিজের অনিচ্ছায় সেই ইন্টারভিউ দিতে যায়। কারণ বেকার ভাতা পেতে হলে তাকে দেখাতে হবে সে ইন্টারভিউ দিয়েছে এবং রিজেক্ট হয়েছে। তাই Driss (Omar Sy) এর দরকার একটি সাইন করা রিজেক্ট লেটার।
Philippe (François Cluzet) বিত্ত্বশালী কিন্তু গাড়ী দুর্ঘটনার স্বীকার হয়ে বউ হারিয়ে এখন শারীরিক ভাবে প্রতিবন্ধী। মাথা ছাড়া শরীরের কোনো অংশ নাড়াতে পারে না। সে থাকে প্রাসাদসম আলিশান বাড়ীতে। Philippe (François Cluzet) এর সার্বক্ষণিক দেখাশোনার জন্য একজন কেয়ারটেকার নিয়োগ দেয়া হবে। আর সেই ইন্টারভিউ এ ডাক পড়েছে Driss (Omar Sy) এর। সে খুব ক্যাজুয়াল ভঙ্গিতে ইন্টারভিউ দিতে যায় এবং কালোদের স্বভাব সুলভ কাউকে তোয়াক্কা না করে কথাবার্তা বলতে থাকে মনে যা আসে। ইন্টারভিউ থেকে চলে আসার সময় তাকে আগামীকাল Philippe এর বাসা থেকে রিজেক্ট লেটার নেয়ার জন্য বলা হয়। পরদিন ফুরফুরে মনে Driss গিয়ে দেখে কোনো কারণে Philippe (François Cluzet) তাকে পছন্দ করেছে এবং পরীক্ষামূলক ভাবে তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। চাকুরী হওয়াতে সে খুব বিরক্ত মনে Philippe (François Cluzet) এর বাসায় উঠে। শুরু হয় একজন অনভিজ্ঞ তরুণের নতুন চাকুরী। মূলত এখান থেকেই কাহিনীর শুরু। দেখার আগ্রহ কমে যাবে বলে পটভূমি বা কাহিনীর বিস্তারিত বর্ণনা দিলাম না।
এই সিনেমার গল্প শুনলে অথবা দেখতে বসলে বার বার সঞ্জয় লীলা বানসালীর ‘গুজারিশ’ সিনেমার কথা মনে পড়বে। যেখানে একজন প্রতিবন্ধী চরিত্রে হৃত্তিক রোশন অভিনয় করেছেন এবং তাকে পরিচর্চাকারী চরিত্রে অভিনয় করেছেন ঐশ্বরিয়া। কিন্তু এই সিনেমার সাথে এন্টুসাব(ল) সিনেমার কোনো মিল নেই। দুইটা দুই রকমের সিনেমা।
এন্টুসাব(ল) সিনেমার গল্পে কালোদের লাইফ স্টাইল ও প্যারিসের যে খন্ডচিত্র ফুটে উঠেছে তা বেশ চমতকার। নি:সন্দেহে ভাল লাগার মত একটি সিনেমা। ইতোমধ্যে সিনেমাটির রিমেকের জন্য ইংরেজি স্বত্ত্ব বিক্রি হয়ে গেছে। আপনাদের জন্য ফরাসী ভাষার লিংক দিতে হল বলে দু:খিত। আমি অনেক খুজে এর কোনো সাবটাইটেল বা ইংরেজি ভার্সন পাইনি। যারা ফরাসী ভাষার প্রাথমিক জ্ঞান রাখেন তারা অনেকটাই বুঝতে পারবেন। আর যারা জানেন না, তারা সিনেমার পটভূমি থেকে ধারণা নিয়ে দেখতে বসলে অতি সহজেই বুঝে যাবেন।
লিংক সমূহ:
অনলাইনে দেখার জন্যে
ডাউনলোডের জন্য
টরেন্ট নামানোর জন্য
সিনেমার পোস্টার বা প্রচারণায় নিচের পোস্টারটি ব্যবহার করা হয়। কিন্তু আমার কাছে উপরের পোস্টারটি ভাল লাগে যা এই সিনেমার দ্বিতীয় পোস্টার হিসেবে বিবেচিত। তবে আমার পোস্ট যেহেতু তাই আমি দ্বিতীয়টাকেই প্রথম করে দিলাম!
জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা
বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন
আত্মপোলব্ধি......
আত্মপোলব্ধি......
একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন
জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !
হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন
ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।
আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন
ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।
আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন