হয়তো অনেকদিন পর কোন এক স্টেশনে
পড়ন্ত অলস বিকেলে হঠাৎ দেখা হবে আমাদের
মোটা ফ্রেমের চশমাটা সেদিন হতে থাকবে আড়াল
গোঁড়ায় পাক ধরা তোমার একগুচ্ছ এলোচুলে।
তুমিও হয়তো আমার দিকেও প্রখর দৃষ্টি দিয়ে
খুঁজতে থাকবে বিবর্তন কপোলের প্রতিটি ভাঁজে
এভাবে কেটে যাবে বাকরুদ্ধ কিছু সময়
তারপর, চেতন ফিরবে মোদের কোন এক কর্কশ স্বরে!
কেমন আছো? এই সহজ প্রশ্নটাই হয়তো ছুড়ে দেব সেদিন
তুমি অধরযুগল হালকা প্রসারিত করে বলবে 'ভালো'
হয়তো পাল্টা প্রশ্নের উত্তরে আমি বলবো সেটাই
অতঃপর, কংক্রিটের পাটাতনে অপেক্ষায় রবো বসে।
তোমার বর কি করে? ছেলেমেয়ে কয়টা?
এরকম অযাচিত কিছু কথার উপর ভর করেই
আস্তে আস্তে পাড়ি দিতে থাকবে ক্লান্ত ঘড়ির কাটাগুলো
তুমিও পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিতে থাকবে উত্তরের অবকাশে।
হয়তো কিছু অতীত স্মৃতি মানবে না কোনো মানা
কথায় কথায় বেরিয়ে আসবে সেগুলো একটু একটু করে
তারপর কৌশলে সেগুলো ঢাকতে থাকবো দুজনেই!
অভিযোগগুলোই সেসময় শুধু রইবে চাপা পড়ে।
হঠাৎ করেই চলে আসবে অবুঝ ট্রেন
দীর্ঘ্য একটি শ্বাস টেনে বলবে, 'আমাকে যেতে হবে'
তোমার হাত থেকে ব্যাগটা নিয়ে বলবো, 'চলো'
তুমিও আপত্তির দুয়ারে তালা দিয়ে চলতে থাকবে পাশে!
তোমাকে আসন খুঁজে দিয়ে নেমে আসবো তাড়াতাড়ি
ভুলেও নিজেদের কন্টাক্টগুলো কেউ কাউকে দেবো না সেদিন
শুধু নিষ্ঠুর ইঞ্জিনের টানে যখন তুমি দূরে যেতে থাকবে
স্বচ্ছ কাঁচের নীচে দেখবো তোমার চোখগুলো সিক্ত অশ্রুজলে।
অতঃপর, মৃত অভিযোগগুলো জেগে উঠবে মনে
কিন্তু, কেউ কাউকে দুষবো না ভুলেও সেদিন আগের মতো
নিজেদের দোষ দিয়ে নিজেদের হৃদয়ে এঁকে যাবো ক্ষত
শুধু কিছু আফসোস করবে না ক্ষমা দুজনকে।
আর চাইবো না কোনদিন হোক দেখা আবার
চাইবো শুধু চিরকাল থাকো সুখে, যেমনটি আগে চাইতাম!
তোমার দেয়া কিছু স্মৃতিই শুধু কখনো হবে না মোছা
পড়বে তুমি মনে হৃদয়ে জমানো সেই স্মৃতির অঙ্কুরে।