৫৪) চিঠি
তুমি কেমন আছো?
জানতে চাওয়া প্রশ্নটার একটা সহজ উত্তর
দিতে পারো তুমি।
অথচ তুমি সেই উত্তরের ধারে কাছে নেই!
তোমাকে প্রশ্ন করার ছিলো অনেক।
আবহাওয়া কেমন,
প্রিয় মানুষরা কেমন আছে,
সুন্দর কোন ছবি দেখেছো,
ভালো কোন বই পড়া হলো কি,
কিংবা নতুন কোন রেসিপি
চাইনীজ বা থাই এর।
পরশু নাকি আকাশে তিনটা তারা
বাড়ী বদলালো।
একটাও কি চোখে পড়েনি তোমার?
তোমার ফুল গাছের কোনটাতে কুড়ি এলো
আজকাল শচীন শুনছো নাকি সুবীর সেন।
নাকি আনুশকার সেতার?
যার সুর শুনলে রক্তের মধ্যে রিনরিন করে।
শুনেছি ডালভাত আর সিম ভাজিতেই আছো।
মাঝে মাঝে আমিষ তো চাই।
নাহলে যদি গাছ হয়ে যাও।
মানুষ হবার একশোর বেশী গুনাবলী তোমাতে
তবু তুমি সারাদিন মানুষ হবার
অভিলাষ প্রকাশ করো।
আমার কিন্তু তোমাকে ইউক্যালিপটাস ভাবতেই ভালো লাগে।
জানোতো ইউক্যালিপটাসের পাতায় দারুন
গন্ধময়তা আছে।
বসন্তের বাতাসে পাতাগুলো ঝিরঝির করলে মনেহয়
ওর স্রষ্টার বন্দনা করছে।
তমি কি বলেছিলে যারা সুর ভালোবাসে
তারা যখন পথে নামে হাটবার জন্য
অজস্রবার পা থেমে যায় এগুতে পারেনা?
পাখীর কিচমিচ
পাতার খচমচ
ছেড়া কাগজের উড়ে উড়ে ঘুরে ঘুরে চলা
সুন্দরী মেয়েদের হাইহিলের টুকটাক শব্দ
স্কুল বাস থেকে নামা শিশুদের হাসি কোলাহল
নদীর বয়ে যাওয়া পানির শব্দ
এমন আরো কত কি সব কিছুতেই সুর ঘুরে বেড়ায়।
তুমি কেমন আছো জানলে আজ তোমার জন্য
লিখতে পারি ত্রিশ পাতার চিঠি কাব্য।
অথচ!
তোমাকে দেখা হয় নাই বলে আক্ষেপ নাই।
তোমাকে ছুঁতে পারিনা বলে কষ্ট নাই।
তোমার জন্য নিত্যদিন সুচিত্রা সেনের মত
প্রেয়সী হতে পারি নাই বলে দুঃখ নাই।
তোমার জন্য প্রিয় কিছু অনুভব জমা রেখেছি
বিলাতে পারবো না বলে বেদনাও নাই।
আমার মন খুব ভালো থাকে তোমাকে ভাবলে।
তুমি যেখানে যেখানে যা কিছু করো।
পিছে ফেলে রাখা চোখ দেখে ফেলে।
তোমার বসবাস আমার ভাবনার বসতবাড়ীতে।
সেই যেখান থেকে হৃদয়ে ইউক্যালিপটাস
এবং একা হতে শেখা।
পুনশ্চ: যদি বলে যাও কেমন আছো।
তোমার জন্য যুগ যুগান্তরের তপস্বিনী হতে পারি।