somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ক্রিস্টোফার কলম্বাসের বর্ণনা থেকে শুরু করে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে রহস্যময় জলপরীর (mermaid) প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই বিষয়ে আপনার মতামত কী

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

9 জানুয়ারী ১৪৯৩ খ্রিস্টাব্দে পৃথিবীর সবচেয়ে মহান অনুসন্ধানকারীর মধ্য একজন খ্রিস্টোফার কলম্বাস, তার ডাইরিতে Mermaid-র কথা উল্লেখ করেন, যা পুরো পৃথিবীকে হয়রান করে দিয়েছে।

কলম্বাস তার ডাইরিতে ভ্রমণের সমস্ত কাহিনী লিখতেন, কিন্তু তার মতে ৯ জানুয়ারী ১৪৯৩ খ্রিস্টাব্দে (ডোমিনিকান রিপাবলিক থেকে ফেরার সময়) সাগরের মধ্য ৩ মার্মিডকে সাঁতার কাটতে দেখেছেন। তার বর্ণনা অনুসারে ৩ জীব জলের উপর ধীরে ধীরে সাঁতার কাটছে , তাদের নিচের শরীর মাছের লেজের মতো আর উপরে এক মানষের মতো। কিন্তু তিনি এটাও বলেছেন যেমনটা ইতিহাস মার্মিডকে বর্ণনা (সুন্দরী মস্যকন্যা) করেছে এটা ঠিক তার বিপরীত, একদম দানবের মতো দেখতে। শরীর অনেক ভয়ানক। কলম্বাস এক মহান অনুসন্ধানকারী ছিলেন যিনি আমেরিকার মতন এক মহাদ্বীপের খোঁজ করেছেন। যার জন্য তার এই ডাইরির বর্ণনাকে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভাবে নেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞানীরা ধারণা করেছেন কলোম্বাস হয়তো কিছু জীবকে দেখেছেন কিন্তু ওটা মার্মিড ছিল না, হয়তো জলের ভিতর বসবাসকারী ম্যামলস মন্টিস হতে পারে। মন্টিসের চোখ মানুষের মতো দেখতে, লেজ ঠিক মার্মিড-র মতো দেখতে জীবের মতো। যদি এই সামুদ্রিক জীবকে যদি দূর থেকে দেখা যায় তবে একে মার্মিড ভাবার ভুল হতে পারে।

বিভিন্ন কথা-উপকথা অনুসারে মার্মিড এক সামুদ্রিক জীব, যার উপরের শরীর এক মেয়ের আর নিচের শরীর এক মাছের। মার্মিডকে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগর, দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগর ও ইন্ডিয়ান মহাসাগরে পাওয়ার দাবি করা হয়। বেশিরভাগ উপকথায় মার্মিডকে সুন্দর্যের প্রতীক বলা হয়েছে। আবার কিছু উপকথা একে দানবের মধ্য এক ভাবা হয়, যার মুখ দেখতে খুব বিতশ্রী ও ভয়ানক। বলা ওই মার্মিড জলের মধ্য পাথরের উপর বসে থাকে, আর নিজে নিজেকে জলের মধ্য দেখে, নিজেই নিজের প্রশংসা করতে থাকে। কিছু উপকথায় পুরুষ মার্মিডও উল্লেখ করা হয়েছে, জেক মারমান বলা হয় কিন্তু একে মার্মিদের মতো খুব সুন্দর বলা হয়নি বরং খুব ভয়ানক অসুন্দর দানব রূপে বর্ণনা করা হয়েছে।

শুধু কলম্বাস একমাত্র ব্যাক্তি নন যিনি মার্মিডকে দেখার দাবি করেছেন। কলম্বাসের আগে ১৪৩০ খ্রিস্টাব্দে নেদারল্যান্ডের এডামে এক ভয়ঙ্কর সমুদ্রি তুফান সবকিছু এলোমেলো করে দিয়েছিলো। যার ফলে পুরো শহরকেই জলস্বাসের ধাক্কা সহ্য করতে হয়েছে। সেখানে কিছু ছেলে দাবি করেছিল, তারা মার্মিদের মতো একটি জীবকে সমুদ্রের তীরে মৃত অবস্থায় দেখেছে। যার শরীর পাথরের সাথে ধাক্কা খেয়ে খেয়ে সম্পর্ণ খারাব হয়েছে।

বর্তমান পৃথিবীতে অনেকেই মার্মিদের অস্তিত্ব আছে বলে দাবি করেন, তাদের মতে মার্মিড দেখতে হয়তো এমনটা নয় যেমনটা ইতিহাস বর্ণনা করে। হতে পারে তাদের শরীরের উপরের অংশ মানুষ নয় কিন্তু মানুষের মতো দেখতে। কিছু মানুষ এরকম থিওরিও দেয় যে, সমুদ্রে বসবাসকারী ডলফিন এবং হুইলস মানুষের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি বন্ধুত্ত্বপূর্ণ, কারণ সমুদ্দেরের মধ্য এই জীব নিশ্চই মার্মিডকে দেখে থাকবে যার কারণে সে মানুষকেও মার্মিড ভেবে ভুল করে।

বর্তমান সময় মার্মিডকে ঘিরে অনেক কথাই উঠে এসেছে। ইন্টারনেটে জনপ্রিয়তা অর্জন করার জন্য মানুষ অনেক মার্মিড সমন্দিও ফটো পোস্ট করে। তবে এর ৯০% ফটোই মিথ্যা প্রচার করে বাকি যে সত্য খবর পাওয়া যায় তা সত্যি ভয়নক কিছু


২০০৯ খ্রিস্টাব্দে ইসরাইলের এক শহর কেলিয়েড এ এক মার্মিডকে দেখার দাবি করা হয়। আর এমন দাবি করার সংখ্যা প্রায় হাজারের উপরে হবে। এমনকি অন্য দেশের নাগরিক যারা ঘুরতে এসেছে তারাও মার্মিডকে দেখার দাবি করেছে। ইসরাইলের মানুষের বর্ণনা অনুসারে এই মার্মিডকে শুধু সূর্যস্তোর পর সন্ধ্যায় দেখা যায়। মার্মিড দেখার ঘটনা এতটাই বেড়ে গিয়েছিলো যে ইসরাইলের সরকার ঘোষণা করলো যে মার্মিদের একটি ফটো তুলতে পারবে তাকে ৭৪ লাখ টাকা দেওয়া হবে। কিন্তু আজ পর্যুন্ত কেউ এই টাকা জিততে পারেনি।

২০১২ খ্রিস্টাব্দে জিম্বাবুয়ের কোকি শহরে এক বাঁধ বানানো শ্রমিকরা, বাঁধ বানানোর অর্ধেক কাজ করে আর কাজ করতে রাজি হয়নি। আধিকারিকদের অনেক চেষ্টার ফলেও তারা কাজে ফিরতে চায়নি। শ্রমিকরা বলে ওই নদীতে মার্মিড বসবাস করে, যারা বাঁধের কাজ বন্ধ করার জন্য শ্রমিকদের মারতেও পারে। বেশিরভাগ শ্রমিকই মার্মিডকে দেখেছে বলে দাবি করেছে। বাঁধের কাজ পুরা করার জন্য আলাদা শহর থেকে শ্রমিক নিয়ে আসা হলো কিন্তু তারাও ১ সপ্তাহ কাজ করার পর কাজ ছেড়ে দিলো। তারাও রাতের সময় ওই নদীতে এক মার্মিড এর মতো জীবকে দেখার দাবি করেছে। পরিবর্তিতে বিদেশ থেকে শ্রমিক দিয়ে কাজটা পুরা করেছে। তবে কাজটা শুধু দিনের বেলায় হয়েছে। বাঁধের কাজ সম্পর্ণ হয়েছে কিন্তু মার্মিদের আতঙ্ক আগের চেয়ে বেশি হয়েছে। অনেক মানুষ নদীর ধারে মার্মিদের হামলা করার দাবি করেছে। ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে নদীর ধার থেকে দুটি ছেলের নিখুজ হয়ে যাবার ঘটনাও সামনে আসে।

ইন্দোনেশিয়ার কায় দ্বীপে জাপানের সেনাবাহিনীদের সঙ্গেও এমন ঘটনা ঘটেছে। তাদের বর্ণনা অনুসারে দ্বীপের সাথে বালির চড়ে তারা এক মার্মিদের মৃত দেহ পেয়েছে। ওখানকার স্থানীয় লোক এই জীবটিকে দেখে বলে একে তারা ওরাংকিয়াং নাম জানে। ওরাংকিয়াং এর প্রচুর কাহানি ওই অঞ্চলের স্থানীয় লোকের মুখে মুখে আছে।


যদি বৈজ্ঞানিকভাবে দেখা হয়, বাস্তবেই কি মার্মিদের মতন জীব এই পৃথিবীতে আছে ? মহাসাগরের তলদেশে মানুষের মতন শরীর কখনোই জলের চাপ সহ্য করতে পারবে না। হয়তো তারা দেখতে সম্পর্ণ আলাদা যেমনটা বর্ণনা করা হয় তার চেয়ে সম্পর্ণ ভিন্ন যাকে কখনো খোঁজার চেষ্টাই করা হয়নি। মনে রাখবেন সাগরের মাত্র ৫% আমরা জানি, এখনো সাগরের অনেক জীব সম্পর্কেই আমরা জানিনা।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪২
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি জাতির কান্না......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২২ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১১:৫২

একটি জাতির কান্না......

স্বাধীন সিকিম রাষ্ট্রের ভারত ভুক্তির নেপথ্য!
১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান ব্রিটিশদের কাছে থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। ওই সময় উপমহাদেশে ৫৬৫ টি "Princely States" বা "সতন্ত্র দেশিয় রাজ্য" ছিল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

এসব কিসের ইঙ্গিত?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২২ শে অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১:২৯


ক্ষমতাচ্যুত হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহার দাবিতে হঠাৎ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ছাত্রলীগ নেতাদের বিক্ষোভ মিছিল! সোমবার (২১ অক্টোবর) সকালে গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

‘নির্দেশ আছে তোকে ক্রস ফায়ারে মেরে ফেলার’ - হুমায়ুন কবির

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২২ শে অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ২:১৪

(মানব জমিনে হুমায়ুন কবির ভাইয়ের গুম নির্যাতনের কথা পড়ে মনোকষ্ট নিয়ে বসে আছি। আপনার জন্য দোয়া করি, আপনাদের আত্মত্যাগেই এই জাতি স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছে, এখন কাজ হচ্ছে তাদের বিচার করা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকুরী থেকে বরখাস্ত করার জন্য কোটার দরকার আছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ২২ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৬



**** চাকুরী সৃষ্টি করতে জানে না বাংগালী জাতি, কিন্তু চাকুরী থেকে তাড়াতে জানে; কিছু কিছু ব্লগার মানুষকে তাদের কাজের যায়গা থেকে বিতাড়িত করার জন্য ব্লগে চীৎকার করছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ফিরে যেতে ইচ্ছে করে কৈশোরে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৫


এখানে কী আছে বলো তো, এখানে কী আছে আর
কেন যে সময়ের পিঠে হলাম সওয়ার;
সময় আমায় নিয়ে এ কোথায় এলো
স্বপ্ন সব হয়ে গেল এলোমেলো।

সেই প্রাথমিকের গন্ডি, পা রাখি ইচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×