ঘূর্ণিঝড় রোয়ান এর তাণ্ডবে উপকুলে মারা গেছে নারি শিশুসহ ২২ জন । নিখুজ আরও কয়েকশ । সারে ১২লাখ লোককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল নিরাপদ আশ্রয়ে । কতটুকু মানুষ অসহায় হলে ঘরবাড়ীর মায়া ত্যাগ করে মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়, তা স্বচক্ষে না দেখলে
অনুধাবন করা যায়না।
রাক্ষসী সাগর উত্তাল, জলতরঙ্গ তিব্র গতিতে ধেয়ে আসে উপকুলে । আবহাওয়া অধিদপ্তরের সংবাদ শুনে বরাবরের মতই মানসিক ভাবে প্রস্তুত হয় উপকুলবাসী । ছেলে মাকে তাগিদ দেয় মা, তারাতারি ঘর হতে বেরিয়ে এস, আমাদের আবু কোথায় । মা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে , ওরে আমার পুত আবু গিয়েছিল বন্দে গরুর আনতে , এখনো তার দেখা নেই। বড় ভাই লাবু মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ে । সর্বনাশ ঝড় আইতাছে , চল মা তারাতারি চল । হাবু কচি খোকা নয় সে আমাগো আগেই নিরাপদ জায়গায় চইলা আইব । মা রোধন করে তাই যেন হয় বাপ ।মা ও ছেলে আর সবার সাথে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে আসে । ছোট ছেলের জন্য মায়ের মন শংকা জাগে ।
ঝড় যথা সময়ে উপকুলে আঘাত হানে । আবার তা দুর্বল হয়ে আসে । মানুষ টেলিভিশনে ক্ষ্যক্ষতির সংবাদ জানতে ভিড় জমায় । এত জন মারা যায় , এত জন নিখুজ । লাবু আলগা আশ্রয় কেন্দ্রে খবর শুনার জন্য টেলিভিশনের পর্দায় চোখ রাখে ।উপস্থাপিকার কণ্ঠে ভেসে আসে নীল চরের অমুক জায়গায় এক ৭ বছরের শিশু ঝড়ের কবলে পড়ে মারা যায় । লাবুর চোখে ছবিটা ধরা পড়ে । সে আর কেউ নয় তারই ভাই হাবু । সংবাদ শুনে মায়ের বুকটা খা খা করে । রোধন করে । সেই রোধন যেন সাগরের উত্তাল গর্জনের মতই লাগে ।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মে, ২০১৬ রাত ১২:০৩