বৈশাখ যখন দরজার কপাট কাঁপিয়ে ভারী গলায় বলে উঠে, তুমি ঝড়!
হৃদয়ে বাজে তখন ফ্যাকাসে আকাশের বজ্রপাত ধ্বনি
বৃষ্টিস্নাত রাত্রির আম ঝরা ঝুম ঝুম সুর....
ভরদুপুরে কাঁঠালি রৌদ্রের আঁটিফাটা ঘ্রাণ
বেপরোয়া বালকদের নুয়ে পড়া গাছ বেয়ে পুকুরে লাফ ঝাঁপ ।
অতন্দ্র নাবিকের চোখে সমুদ্র উপেক্ষা করার দুঃখ
দখিনা আনাড়ি হাওয়ায় উড়ে যায়-
পড়ন্ত বিকেলের শুকোতে দেয়া গ্রাম্য রমনীর রঙিন শাড়ি...
হৃদয়ের হাঁটে চলে বিগত দেনা পাওনা
হালখাতায় মিষ্টিমুখর দর কষাকষি
অতীত ভবিষ্যতের বর্তমান হালচাল!
প্রকৃত প্রেমিকরা তপ্ত বহিঃশিখায়ও প্রেম খুঁজে বেড়ায়....
আমি বলছি না বৈশাখ, তুমি ততোদিক অভিমানী
কর সব চুরমার, জরাজীর্ণ ঘর কম্পমান
তুমি দু'বেলা খাওয়া মুখের অভিসম্পাত নিয়ে যাও উড়ে....
তারপরও তোমাকে অভিনন্দন,
লাল গালিচায় তোমার জন্য আগমনী ফুলঝুরি
তুমি বাংলার জীবনের প্রথম চুম্বন
প্রথম প্রেম ফিরে পাওয়ার গুঞ্জরণ
কপোত কপোতির আকাঙ্ক্ষিত চোখে লেগে থাকা-
অধৈর্য্য ভালোবাসার প্রথম আহ্বান
সবুজ ধানের দেহে যৌবন ধরা আগুন
কৃষানের চোখের স্বর্ণদেবী তুমি !
সন্ধ্যার আঁধারে যেন আকাশ প্রেম গড়ে সমুদ্রের সাথে
উত্তাপ বাড়ে, জনজীবনের শরীরে দৈনন্দিন হাঁসফাঁস
বৈশাখ, আমি বলছি না তুমি বড্ড আলগোছে
আমি বলছি না, তোমাকে বোঝা বড় দায়
আমি বলছি না, তুমি সদ্য যুবতী হওয়া কোন নারীর মত...
এই আলো, এই আঁধার-
তুমি খেলো বিভ্রান্ত কবির হৃদয়ের সাথে
সে যখন রৌদ লিখে, তুমি তখন তামাটে
সে যখন লিখে নিস্তব্ধতা, তুমি তখন চুরমার
সে যখন লিখে মমতাময়ী সমুদ্র, তুমি তখন জলোচ্ছ্বাস!
তবুও বাংলা তোমার সাথে খেলে
পরাজিত হয় বিজয়ের বেশে তোমাকে পেয়ে
ঘরে ঘরে কিশোর কিশোরীর রঙিন হট্টোগল
তুমি এসে পড়েছো, তুমি এসে পড়েছো !
ধ্বনিতে রবরব উচ্ছ্বাস
তরুনীর ফুলঝরা শাড়ির পাড় ধরে তুমি উড়ে বেড়াও...
যুবক আত্মহারা, সে লেখে প্রেম তার কব্জিতে !
মিষ্টি মন্ডায় সদ্য দাঁত গজানো শিশু হেসে উঠে মায়ের কোলে
সবার মুখশ্রীতে অন্তরে মুখরিত হয় আদিম সুরে
এসেছে বৈশাখ,
ওহে বাঙালি, শোনরে পাগলের দল
আবারো এসে পড়েছে বৈশাখ
আগুনঝরা রূপে, নতুন দশার দিশা নিয়ে....
ছবি বন্ধু- গুগল ইমেইজ ।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মে, ২০১৮ রাত ১০:২৬