সেই কোমল হাতে মোটাসোটা খসখসে আঙুলটা ধরে এখন আর হাঁটা হয় না
পাই না কাঁধে পরম আদরে রাখা সেই হাতের স্পর্শ
বড্ড অভিমান হয় নিজের সাথে নিজের, হলাম কেন বুড়ো !
বাবা, তুমি না হয় থাকতে সেই আগের মত চারপাশ জুড়ে
আমি খেলা করতাম তোমার চোখের আঙিনায় ।
আমি সাগরের অতলে কখনো যায় নি, তবে ছিলাম বাবার দু'হাতের ছায়ায়
কখনো যত্নে, কখনো আদরে কিংবা কখনো আদুরে শাসনে !
এ কোন গহীন সমুদ্রতুল্য ছায়া ছিলো না, ছিলো তার থেকেও বেশি
মনে বিষণ্ণতা ভর করলে বাবার সেই হাসিমুখটুকু পড়ে মনে
আমিও হেসে দেই, শিখে গেছি শত বিষণ্ণতায়ও কীভাবে হাসতে হয় ।
ছোট্টবেলায় হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে বাবা নিতেন তুলে আমায় আপন বক্ষে
বাবার হৃদপিণ্ড ধক..ধক করতো, আমি পেতাম টের আমার কোমল হৃদপিণ্ডে
এমন অকৃত্তিম ভালবাসার আদান-প্রদানে স্বস্থির রাজ্যে ঘুম নামতো চক্ষু ভেঙ্গে
আমি অজস্র রঙিন স্বপ্নে থাকতাম বিভোর বাবার হৃদয়ের আষ্টেপৃষ্টে
অজস্র সুখে ঘুরতাম লাগামহীন কিন্তু পেতাম না খুঁজে বাবার হৃদয়ের সীমানা !
আমি আজ অনেক দূরে, মনে হয় হারিয়ে ফেলেছেন যেন বাবা আমাকে
বাবা খোঁজে আমার হৃদপিণ্ড, আমি খুঁজি বাবার- একটু স্বস্থির ওম পাওয়ার জন্য
মুঠিয়ে যাওয়া বাবা এখনো যেন চায় সন্তানকে আগলে রাখতে দু'চোখের সীমানায়
রাত গভীর থেকে গভীর হয়, আমি অনুভব করি সেই ছোট্টবেলার বাবার শরীরের উষ্ণতা
সেই নাক ডাকা, আমার ছোট্ট মাথার পশ্চাতে লেগে থাকা বাবার সেই হাতটুকু
জানি বাবাও এখনো সেভাবেই মনে অজান্তে নিজেকে মেলে রাখেন
কিন্তু সেখানে আমি নেই, এখানে নেই বাবা ।
বাবা তুমি আছো এই হৃদয়ের গভীরে, খুব যতনে
কাছে না পেয়েও সুখে দুখে তোমাকেই দেখি সেই ছোট্টবেলার চোখ দিয়ে
তোমাকে অনুভব করি সেই ছোট্টবেলার কোমল হৃদপিণ্ড দিয়ে
তুমি জড়িয়ে আছো আমার আষ্টেপিষ্টে, তোমাতেই আমার সৃষ্টি
তুমি আছো আমার দৃষ্টি জুড়ায়ে, যেখানে ভালবাসার পরিমাপ মিলেছে অর্থহীন হয়ে ।
ছবি কৃতজ্ঞতা- নেট ।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুন, ২০১৭ রাত ১০:১৭