রুমমেট বড় ভাই চাকুরির প্রথম বেতন পেয়েছেন। আব্দার করলাম কিছু খাওয়ানোর। তিনিও সাড়া দিলেন দ্রুত। বললেন, চলো, সন্ধ্যায় নীলক্ষেত যাই। সামনে পরীক্ষা। আমি তবুও রাজি হলাম।
নীলক্ষেত মোড়ে যখন দাঁড়িয়েছি, তখন সেখানে প্রচণ্ড জ্যাম। ভার্সিটি গেট থেকে নিউমার্কেটের দিকে যে রাস্তাটা চলে গেছে সেখানে রিক্সাগুলো সিগনালে আটকা পড়ে আছে। এসব রিক্সারই একটায় বসে দু'জন তরুণ-তরুণী। ইউনিভার্সিটি লেভেলের হবে নিশ্চয়ই। ছেলেটে দেখতে ততোটা সুন্দর না হলেও মেয়েটাকে বেশ সুন্দরীই বলতে হবে। সাজগোজ নেই। তারপরও বেশ লাগছিল।
কিন্তু, একি? মেয়েটার মুখ থেকে ধোঁয়া বেরুচ্ছে যে! চোখ কচলে আবার তাকাই তার দিকে। কুয়াশায় ওমনটা দেখলাম কিনা ভাবছি। নাহ! কুয়াশা নয়। মেয়েটার হাতে সিগারেট। ছেলেটার হাতেও।
ফুটপাথ এবং পাশের রিক্সাগুলো থেকে অনেকেই দেখছে মেয়েটাকে। সবাইকে দেখিয়ে দেখিয়েই যের মেয়েটা সিগারেট টানছে। এতে ছেলেটা কিছুটা সঙ্কোচ বোধ করলেও মেয়েটার মাঝে তার ছিটেফোঁটাও নেই।
খুব অবাক হলাম। পাশ্চাত্যে মেয়েরাও ধূমপান করে শুনেছি। বাংলাদেশে কখনো এমনটি চোখে পড়ে নি।
হোটেলে যখন খেতে বসেছি বড় ভাইসহ, তখন প্রসঙ্গটা তুললাম আবার। আমাদের পাশে বসা আরেক ভদ্রলোক। মেয়েদের সিগ্রেট টানায় আমাকে অবাক হতে দেখে তিনি জানালেন, মেয়েটা অবশ্যই কোনো প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির। এটা নাকি সিম্পল ব্যাপার তাদের জন্যে। এরচে আরো অনেক বড় কিছুতেই তারা অভ্যস্ত। ভদ্রলোক আরো অনেক তথ্য দিলেন। বিদায়ের আগে তার পরিচয় জেনে নিলাম। একটা সাপ্তাহিকে কাজ করেন।
রুমে ফেরার সময় ভাবছি, একটা ছেলে সিগ্রেট টেনে তার নিজের ক্ষতি করে। কিন্তু যে মেয়েটা সিগ্রেট বা অন্যকোনো নেশায় জড়িয়ে পড়েছে সে কি ভাবছে না যে, নিজের সাথে সাথে সে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেও ধ্বংস করার পথে এগুচ্ছে?
অভার স্মার্ট হবার যে প্রেরণা একজন মেয়েকে এভাবে প্রকাশ্যে সিগ্রেট টানতে উদ্বুদ্ধ করে, তা কি করে ইতিবাচক হতে পারে? অথচ এই ওভার স্মার্ট হতেই তরুণপ্রজন্মের বন্ধুরা পাল্লা দিচ্ছে আজকাল!
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত ১১:১১