somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আপনি কি কানাডা'র নতুন অভিবাসী হয়ে আসছেন? তাহলে এ লেখাটি আপনারই জন্যে - পর্ব ৬

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজকে সকালে ঘুম থেকে উঠেই মনটা ভালো হয়ে গেল। জানালার পর্দা সরিয়ে দেখি ঝকঝকে রৌদ্রোজ্জ্বল দিন। ভাবলাম, আজ হয়তোবা বিরক্তিকর কনকনে ঠান্ডা আবহাওয়ার হাত থেকে বাঁচা গেল। কিন্তু না! মোবাইল ফোনের অ্যাপে আবহাওয়ার খবর নিতে গিয়েই বুঝলাম, বাইরের তাপমাত্রা 'উইণ্ডচিল্ড'সহ -১৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। অতএব, ভারী জামা কাপড় পড়েই বের হতে হলো।

আজকের এ লেখাটি আমি সাজিয়েছি প্রশ্নোত্তর পর্ব (Frequently Asked Questions - FAQ) দিয়ে। কানাডার নতুন ইমিগ্র্যান্টদের নিয়ে আমার লেখা বিগত পাঁচটি পর্ব প্রকাশের পর থেকে এ পর্যন্ত অনেকে ইমেইলে আমাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেছেন।
পর্ব ১ , পর্ব ২ , পর্ব ৩ , পর্ব ৪ , পর্ব ৫
সেই সব প্রশ্নের সম্ভাব্য উত্তরগুলো নিয়েই আজকের এই আয়োজন। প্রসঙ্গত: জানিয়ে রাখছি, প্রশ্নসমূহের উত্তরগুলো একান্তই আমার ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে মতামত মাত্র। কানাডার নতুন ইমিগ্র্যান্ট বিষয়ক কারও যদি কোন প্রশ্ন থাকে, তাহলে ব্লগের এই প্ল্যাটফরমে সেটি ব্যাক্ত করার অনুরোধ রইলো। আমি সাধ্যমতো চেষ্টা করবো সঠিক উত্তরটি দেবার। আর এই পর্বটি নিয়মিত আপডেট করার ইচ্ছে রয়েছে। চলুন তাহলে প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরু করা যাক:

প্রশ্ন: ১ - বাংলাদেশে আমার স্বামী ভেটেরেনারী চিকিৎসক। কানাডাতে veterinary doctor এর চাহিদা কেমন?

উত্তর: এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া খুবই কঠিন বিষয়। কারণ, কানাডার ১০ টি প্রভিন্স-এ ভেটেরেনারী চিকিৎসকের চাহিদা কেমন, সেটি পরিসংখ্যান ব্যতীত এই মুহূর্তে বলাটা কঠিন। ঠিক একই রকম প্রশ্ন আরও অনেকে করেছেন। যেমন, কেউ বলেছেন, তিনি মেকানিকাল/ইলেক্ট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ার, অনেক বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন। তার ক্ষেত্রে চাকুরীর সুযোগ কেমন ইত্যাদি।

কানাডায় প্রফেশনাল জব পেতে হলে আমার অভিজ্ঞতার আলোকে নিচের বিষয়গুলো জরুরী:
১. কানাডার কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত ডিগ্রী
২. কানাডার কোন প্রতিষ্ঠানে কাজ করার অভিজ্ঞতা
৩. পরিচিত মানুষ থাকা ইত্যাদি

বাংলাদেশ থেকে প্রাপ্ত ডিগ্রী/ অভিজ্ঞতা নিয়ে আসার পর সহসাই নিজের ফিল্ডে ভালো প্রফেশনাল জব পাওয়াটা একটু কঠিন বিষয়। আমার পরিচিত কিছু ব্যক্তি আছেন যারা বাংলাদেশে থেকে ইমিগ্রেশন নিয়ে টরন্টো আসার পর এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ে ১/২ বছরের কোন শর্ট কোর্স/ সার্টিফিকেট/ ডিপ্লোমা/ মাস্টার্স করছেন, যে কোর্সটি পরবর্তীতে তাদেরকে প্রফেশনাল জব পাবার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।

একারণেই অনেক পরিবারকে দেখেছি বাংলাদেশের ভালো জব থেকে ছুটি নিয়ে কয়েকমাস কানাডাতে থেকে এখানকার প্রফেশনাল জব মার্কেটের হতাশাজনক পরস্থিতি উপলব্ধি করে আবার বাংলাদেশে ফিরে গিয়েছেন। যত কম বয়সে কানাডায় আসা যায়, ততই ক্যারিয়ারের জন্যে ভালো।

প্রশ্ন: ২ - বাংলাদেশী মেডিকেল ডাক্তারদের জন্যে কানাডায় ডাক্তার হিসেবে প্র্যাকটিস করার সুযোগ রয়েছে কি?

উত্তর: বাংলাদেশী ডাক্তারী সার্টিফিকেট দিয়ে এখানে প্র্যাকটিস করার কোনই সুযোগ নেই। এখানকার ডাক্তারী লাইসেন্স পেতে হলে কানাডার মেডিকেল লাইসেন্সিং পরীক্ষাগুলো পাশ করতে হবে। তারপরেও 'রেসিডেন্সি'র সুযোগ এখানে 'সোনার হরিণে'র মতোই। একারণেই অনেক ডাক্তারদেরকে দেখেছি তারা পাবলিক হেল্থ ফিল্ড/ ক্লিনিক্যাল রিসার্চ/ আলট্রাসাউণ্ড/ অপটিমেস্ট্রি/ ইকোকার্ডিওগ্রাফি ইত্যাদি কোন সাবজেক্টে ব্যাচেলর/ মাস্টার্স করছেন। কেউ কেউ আবার 'নার্সিং' পড়াশুনা এবং পেশা বেছে নিয়েছেন। বাংলাদেশী মেডিকেল ডাক্তারদের জন্যে কানাডা আসলেই খুব কঠিন একটি জায়গা।

প্রশ্ন: ৩ - কানাডায় আমার সারা জীবন থাকার ইছা নেই ,সুতরাং ১০/১৫ বছর পর যখন দেশে ফিরে আসব তখন কি খালি হাতে ফিরে আসতে হবে ? নাকি ভাল সঞ্চয়ই নিয়ে ফিরতে পারব ?

উত্তর: সঞ্চয় বিষয়টি সম্পূর্ণই আপনার ব্যক্তি ইচ্ছার উপর নির্ভর করছে। আমার পরার্মশ হলো, যদি কানাডার ইমিগ্র্যান্ট হিসেবে আপনি এখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করতেই আসেন, তাহলে অন্তত: কানাডিয়ান পাসপোর্ট হবার আগ পর্যন্ত এখানেই থাকবেন, এমন চিন্তা-ভাবনা মনে থাকাটাই ভালো। কারণ গবর্ণমেন্ট অব কানাডা এর বর্তমান তথ্য অনুযায়ী এখানে একটি নির্দিষ্ট সময় (প্রথম ৪ বছরে কমপক্ষে ৩ বছর) ইমিগ্র্যান্ট হিসেবে থাকার পর আপনার 'পাসপোর্ট অ্যাপ্লিকেশনের' সময় আসবে। আপনি যদি এই প্রথম ৪ বছরে ঘন ঘন কানাডার বাইরে (বাংলাদেশে বা অন্য কোন দেশে) যান, তাহলে পাসপোর্ট হাতে পেতেও আপনার অনেক দেরী হবে। প্রসঙ্গত: জানিয়ে রাখছি, আপনার সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সযত্নে রাখুন, কারণ 'সিটিজেনশীপ অ্যাপ্লিকেশনে'র জন্য সেগুলোর প্রয়োজনীয়তা দেখা দিতে পারে।

প্রশ্ন: ৪ - কানাডাতে গেলে আনুমানিক কত মাস পর দেশে বাবা মাকে টাকা পাঠাতে পারব ? কত টাকা পাঠাতে পারবো?
উত্তর: কানাডাতে আসার পর 'সেটেল' হতে কয়েক মাস সময় লেগে যায়। ফ্যামিলিসহ আসলে শুরুর দিকে বেশ কিছু খরচ রয়েছে। তারপর সপ্তাহে ৬-৭ দিন ১০-১২ ঘন্টা করে 'কাজ' করলে মাসে আপনি ৩০০০ ডলার বা তার বেশি আয় করতে পারেন। প্রতি মাসে আনুমানিক ১৮০০-২০০০ ডলার আপনার ও পরিবারের খরচ হলে বাকি টাকা দেশে পাঠাতে পারেন। সহজ বাংলায় যত বেশি কাজ করবেন, তত বেশি টাকা আপনি আয় করবেন। এখানে 'কাজ' বলতে আমি 'প্রফেশনাল জব' না বুঝিয়ে রেস্টুরেন্ট/গ্যাস স্টেশন ইত্যাদি জব বুঝিয়েছি। আর প্রফেশনাল জব পেলেতো ভালো ভাবেই দিন কাটার কথা।



প্রশ্ন: ৫ - কানাডায় অড্ জব (রেস্টুরেন্ট/গ্যাস স্টেশন ইত্যাদি) পাওয়াটা কি কঠিন?
উত্তর: একেবারে সহজ বিষয়ও না। আপনার যদি পরিচিত মানুষ থাকে, তাহলে এ জাতীয় কাজ পাওয়াটা সহজ বিষয়। যদিও রেস্টুরেন্টে কাজ করাটা অনেক নতুন ইমিগ্র্যান্টের জন্যেই একেবারেই নতুন বিষয়।কারণ বাংলাদেশে আমরা সাধারণত হোটেল/ রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়েছি, কখনো কাজ করতে যাইনি। কাজেই এই রেস্টুরেন্ট/ গ্যাস স্টেশন ইত্যাদি জব পাবার ক্ষেত্রে কাজের ধরণটা জানা এবং পরিচিত থাকাটা জরুরী বিষয়। একদম আনকোরা নতুন মানুষদের কাজ পাওয়াটা একটু কঠিন। আর কাজ পাবার আগে/ পরে ট্রেনিং নেয়াটাতো অত্যাবশ্যক এবং স্পিকিং ইংলিশ জানা থাকাটা খুব জরুরী।



প্রশ্ন: ৬ - কানাডায় কলেজ/ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করতে গেলে খরচে কুলাবে কি?
উত্তর: কলেজ/ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করতে হলে 'স্টুডেন্ট লোন' পাওয়া যায়। সুতরাং পড়াশুনার খরচ নিয়ে চিন্তার তেমন কিছু নেই। পর্ব ৫ -এ স্টুডেন্ট লোন বিষয়ক বিষদ আলোচনা করা হয়েছে।

প্রশ্ন: ৭ - বছরের মাঝামাঝি কানাডাতে আসলে কোন কলেজ/ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া সম্ভব কি?
উত্তর: বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাধারণত কোন বছর 'ফল' সেমিস্টারে (সেপ্টেম্বর-এর প্রথম সপ্তাহে ক্লাস শুরু) ভর্তির জন্যে ওই একই বছরের জানুয়ারি/ ফেব্রুয়ারি মাসে ভর্তির শেষ সময় নির্ধারণ করা থাকে। কাজেই কোন বছর জানুয়ারি/ ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে ভর্তির আবেদন না করলে সেই বছর 'ফল' সেমিস্টারে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবেননা। যদিও কলেজ/ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির বিষয়গুলো নির্ভর করে:
১. কোন কলেজ/ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবেন
২. কোন সাবজেক্টে ভর্তি হবেন
৩. কোন সেমিস্টারে ভর্তি হবেন
৪. সার্টিফিকেট/ ব্যাচেলর/ মাস্টার্স/ পি.এইচ.ডি -তে ভর্তি হবেন ইত্যাদি

কাজেই, কলেজ/ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে ওই কলেজ/ বিশ্ববিদ্যালয়ের 'অ্যাডমিশন অফিস' অথবা নির্ধারিত ডিপার্টমেন্টে যোগাযোগ করে তথ্য সংগ্রহ করার পরামর্শ রইলো।

প্রশ্ন: ৮ - কানাডার ইমিগ্রেশন পাবার পর আমি যদি টরন্টো না এসে ম্যানিটোবা বা সাসকাচুয়ানে যাই তাহলে সমস্যা হবে কি?
উত্তর: সমস্যা হবেনা যদি ম্যানিটোবা অথবা সাসকাচুয়ান অথবা অন্য কোন প্রভিন্সে আপনার পরিচিত থাকে যারা আপনাকে শুরুতে থাকার জায়গা এবং কাজ খুঁজে দিতে সহায়তা করবে। শুরুতে টরন্টো আসাটা ভালো কারণ:
১. এখানে বাংলাদেশীদের বড় একটি কমিউনিটি রয়েছে
২. কানাডার অন্যান্য জায়গার তুলনায় কাজের সুযোগ বেশি
৩. কানাডার অন্যান্য জায়গার তুলনায় ঠাণ্ডা তুলনামূলকভাবে কম



প্রশ্ন: ৯ - কানাডার আবহাওয়া কেমন?
উত্তর: টরন্টোর আবহাওয়া এক কথায় বিচিত্র। আমার অভিজ্ঞতা বলে, মে মাসের শেষ থেকে টরন্টোতে ঠাণ্ডা কমা শুরু করে (তাপমাত্রা ১৮-২০ ডিগ্রী সে.)। জুন-জুলাই-আগস্ট-সেপ্টেম্বর বেশ ভালোই গরম থাকে। মাঝে মাঝে তাপমাত্রা ৩২-৩৫ ডিগ্রী সে. ওঠে। অক্টোবরের শেষ থেকে হালকা ঠাণ্ডা শুরু হয়ে যায়। নভেম্বর থেকে মার্চ ভয়ানক ঠাণ্ডা (তাপমাত্রা অধিকাংশ সময় মাইনাসে থাকে, কখনও কখনও মাইনাস ২০-২৫ বা তারও বেশি নেমে যায়)। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে টরন্টোতে স্নো শুরু হয়ে যায়। প্রতিদিন স্নো হবে এমনটা নয়। তবে যখন হয়, তখন রাস্তায় চলাচলটা আসলেই কষ্টকর।

তাপমাত্রা খুবই বিচিত্র বলার কারণ, সকালে হয়তো দেখলেন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রী সে., বিকালেই হয়তোবা সেটা মাইনাস ১০ ডিগ্রী সে.। আবার ডিসেম্বর/ জানুয়ারী মাসে সকালে রোদ দেখে খুশী হবার কিছু নেই। কারণ বাইরের তাপমাত্রা হয়তোবা তখন -১৫ ডিগ্রী সে.। ফেব্রুয়ারিকে কানাডার Coldest month বলা হয়ে থাকে। প্রতিদিন নিয়মিত আবহাওয়া 'চেক' করে চলাচল করাটা এখানে খুব জরুরী একটা বিষয়। আবহাওয়ার খবরাখবর জানতে accuweather.com আমার প্রিয় ওয়েবসাইট। অ্যানড্রয়েড অ্যাপস্টোর থেকে এটি ফোন বা ট্যাবে ডাউনলোড করে নিতে পারেন।

প্রশ্ন: ১০ - টরন্টোতে প্রথম আসলে থাকার/ বাসা ভাড়ার ব্যবস্থা কি?
উত্তর: কানাডিয়ান সরকার আপনাকে ইমিগ্র্যান্ট ভিসা দিয়ে কানাডায় প্রবেশ এবং থাকার অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু কানাডায় ঢোকার পর বাস্তবতা হলো, থাকার জায়গার ব্যবস্থা করা, কাজ যোগাড় করা ইত্যাদি আপনাকেই করতে হবে। কাজেই এখানে আসার আগে নিজ দায়িত্বে টরন্টোতে অবস্থানরত পূর্ব পরিচিত মানুষজনের/ আত্মীয়দের সাথে যোগাযোগ করে অন্ত:ত প্রথম কয়েকদিন/ মাস থাকার ব্যবস্থা করে নিবেন।

প্রশ্ন: ১১ - কানাডায় ইমিগ্র্যান্টদের জন্যে চিকিৎসা সুবিধা কি ধরনের?
উত্তর:
১. ওন্টারিও প্রভিন্সের অন্তর্গত টরন্টো-তে আসার প্রথম তিন মাস 'ফ্রি' চিকিৎসা সুবিধা নেই। তিন মাস পর হেলথ কার্ড হয়ে গেলে Ontario Health Insurance Plan (O.H.I.P.) এর বাবদ চিকিৎসা ফ্রি। হেলথ্ ইন্সুরেন্স অ্যাপ্লিকেশনের জন্য আপনার পাসপোর্ট এবং টরন্টোতে যে আপনার নামে বাসা ভাড়া নিবেন সেই বাসার Lease document অথবা টরন্টোর কোন ব্যাঙ্কের চেকিং অ্যাকাউন্টের একমাসের স্টেটমেন্ট নিয়ে সার্ভিস ওন্টারিও তে যোগাযোগ করুন। বাসার Lease document -এ যদি আপনার Spouse -এর নাম 'Applicant' হিসেবে থাকে তাহলে সার্ভিস ওন্টারিও সেই কাগজ গ্রহণ করবে, Tenant হিসেবে থাকলে গ্রহণ করবেনা। পাসপোর্ট এবং বাসার Lease document -এর কপি সার্ভিস ওন্টারিও গ্রহণ করলে সেক্ষেত্রে ব্যাঙ্কের চেকিং অ্যাকাউন্টের একমাসের স্টেটমেন্ট -এর প্রয়োজনীয়তা নেই। প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য, সার্ভিস ওন্টারিওতে হেলথ্ ইন্সুরেন্স-এর জন্য আপনি যখনই অ্যাপ্লাই করুন না কেন, টরন্টোতে আপনার ল্যাণ্ডিং তারিখের থেকে ঠিক ৩ মাস পর আপনার হেলথ্ ইন্সুরেন্স কার্যকর হবে। অর্থাৎ, আপনি যদি ফেব্রুয়ারি ১, ২০১৫ তে টরন্টো ল্যাণ্ড করে থাকেন, তাহলে মে ১, ২০১৫ তারিখ থেকে আপনি হেলথ বেনিফিট পাবেন।
২. মেডিকেল ইন্সুরেন্স না থাকলে ওষুধ কিনে খেতে হবে। অর্থাৎ, চিকিৎসা ফ্রি হলেও ওষুধ ফ্রি নয়।
৩. চোখ এবং দাঁতের চিকিৎসা 'ইন্স্যুরেন্স' না থাকলে ফ্রি নয়।
৪. Ontario Health Insurance Plan (O.H.I.P.) এর ভেতর অ্যাম্বুলেন্স চার্জ অন্তর্ভুক্ত নয়। অর্থাৎ, অসুস্থ হয়ে পড়লে ৯১১ কল করলে অ্যাম্বুলেন্স চলে আসবে এবং তাৎক্ষণিক সার্ভিস দিবে। পরবর্তীতে রোগীর বাসায় অ্যাম্বুলেন্স বাবদ ৪৫ ডলারের বিল চলে আসবে।
৫. আমার পরিচিত এক ব্যক্তির Ontario Health Insurance Plan (O.H.I.P.) বা অন্য কোন হেলথ ইন্সুরেন্স ছিলনা এবং তিনি পেটের অসুখ (Gastrointestinal Disease - diarrhoea, vomiting) জনিত কারণে টরন্টো ডাউনটাউনের 'সেন্ট মাইকেল' হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। উক্ত হাসপাতালে তাকে আনুমানিক ৫ ঘন্টা ভর্তি রাখা হয়েছিল এবং পরবর্তীতে টরন্টোতে উক্ত ব্যাক্তির আত্মীয়ের বাসায় হাসপাতাল কর্তৃক ৮৫০ ডলারের বিল পাঠানো হয়েছে যে বিলটি সেই আত্মীয়কে পরবর্তীতে পরিশোধ করতে হয়েছিল। এই ঘটনা থেকে শিক্ষণীয় বিষয় হলো:
- টরন্টোতে যাদের হেলথ্ ইন্সুরেন্স নেই, তাদেরকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হলে পকেটের বিশাল অংকের টাকার বিনিময়ে চিকিৎসা নিতে হবে
- হেলথ্ ইন্সুরেন্স না থাকলে ছোটখাট অসুস্থ হলে কোনভাবেই হাসপাতালে যাওয়া যাবেনা। অবশ্য যাদের সামর্থ্য আছে, তাদের কথা ভিন্ন।

প্রশ্ন: ১২ - কম খরচের মধ্যে কোন এয়ারলাইন্সে টরন্টো আসাটা ভালো হবে?
উত্তর:
১. যারা নিয়মিত টরন্টো থেকে ঢাকা যাতায়াত করছেন, তাদের থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী এমিরেটস অথবা টার্কিস এয়ারলাইন্স কম খরচের মধ্যে ভালো সার্ভিস দিচ্ছে। ইতিহাদ-ও চেষ্টা করে দেখতে পারেন।
২. নতুন ইমিগ্র্যান্ট হিসেবে কানাডা আসার সময় কম খরচে এয়ারলাইন্সের টিকিটের জন্যে International Organization for Migration - এর ঢাকা অফিসে যোগাযোগ করুন।

প্রশ্ন ১৩: বাংলাদেশ থেকে কি কোন খাবার আনা যাবে? আনলেও কি ধরণের খাবার আনা যাবে অথবা যাবেনা?
উত্তর: টরন্টোতে বাংলাদেশী গ্রোসারী স্টোরগুলোতে বাংলাদেশের প্রায় সব ধরণের প্রোডাক্ট পাওয়া যায়। সুতরাং বোঝা বহন করে বাংলাদেশী খাবার আনার প্রয়োজনীয়তা নেই। চাল, ফলমূল, শাকসব্জী, দুধ/ দুগ্ধজাত দ্রব্যাদি ইত্যাদি প্রোডাক্টসহ আরও অনেক ধরনের প্রোডাক্ট কানাডায় আনা নিষেধ। কানাডার সরকারী ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে বিষদ বিবরণ পাবেন।

প্রশ্ন ১৪: কি কি বাংলাদেশী ওষুধ সাথে করে নিয়ে আসবো?
উত্তর:
নাপা/ প্যারাসিটামল গ্রুপ
ডাইক্লোফেনাক
ওরাডিন/ ডেসলোরাটিডিন
হিস্টাসিন
মাসল রিলাকজন্যান্ট
কিটোরোল্যাক গ্রুপ
ওমিপ্রাজল/ পেন্টোপ্রাজল গ্রুপ
রেনিটিডিন
সেফ-৩
অ্যাজিথ্রোমাইসিন
সিপ্রোফ্লক্সাসিন
অ্যান্টি-ডায়রিয়াল
এনটি-এমেটিক
মেট্রোনিডাজল/ ফ্ল্যাজিল/ অ্যামোডিস
অ্যামোক্সিসিলিন
কোট্রাইমক্সাজল
লেভোফ্লক্সাসিন
ডায়াজেপাম
অ্যাসপিরিন
আইবুপ্রোফেন
অ্যালবেনডাজল
স্যাভলন অ্যান্টিবায়োটিক ক্রিম
খাবার স্যালাইন
সালবিউটামল
পভিসেপ/ পভিডন আয়োডিন
আগুনে পোড়ার ওষুধ - বার্ণল, (টরন্টো থেকে খুব ভালো আগুনে পোড়া ওষুধ পেলাম - 'mentholatum ';)
ভেন্টোলিন ইনহেলার
বাচ্চাদের ন্যাজাল ড্রপ এবং জ্বর-কাশির সিরাপ
বড়দের জন্য কাশির সিরাপ
ডি-কোল্ড
কাশি/ এলার্জির জন্য 'মন্টিলুকাস্ট' ট্যাবলেট/ পাউডার (ট্যবলেট মোনাস, একমি ফার্মাসিউক্যালস)
ব্লাডপ্রেশার মাপার মেশিন
থার্মোমিটার
বাংলাদেশ থেকে ওষুধ নিয়ে আসলে সাথে করে কোন বাংলাদেশি রেজিস্ট্রার্ড ডাক্তার -এর ব্যবস্থাপত্র (প্রেসক্রিপশন) সাথে থাকলে ভালো হয়।

প্রশ্ন: ১৫ - কানাডায় আমি যদি কাজ না করি তাহলে কানাডার সরকার থেকে সাহায্য/ ভাতা পাওয়া যাবে কি?
উত্তর: হ্যাঁ যাবে। আপনি যদি কানাডার সরকারকে প্রমাণ করতে পারেন যে, আপনার ভরণপোষণের জন্যে যে অর্থের প্রয়োজন, তা আপনার নেই এবং আপনার কোন কাজ নেই, তাহলে কানাডিয়ান সরকারের কাছে আপনি 'স্যোশাল সাপোর্টে'র জন্যে আবেদন করতে পারেন। সেক্ষেত্রে সরকার আপনাকে মাসিক একটা ভাতা প্রদান করার সম্ভাবনা রয়েছে। শুনেছি টরন্টোতে এমন বেশ অনেক কর্মক্ষম মানুষ আছে, যারা রেস্টুরেন্ট জব/ ট্যাক্সি চালিয়ে 'ক্যাশ'- এ প্রতিমাসে মোটা অংকের টাকা উপার্জন করছে, আবার সরকারের কাছ থেকে 'স্যোসাল সাপোর্টে'র টাকাও নিচ্ছে। এ ধরণের সস্তা এবং নির্লজ্জ ভিক্ষাবৃত্তিতে বাংলাদেশীরাও পিছিয়ে নেই কিন্তু!

প্রশ্ন ১৬: নতুন ইমিগ্র্যান্ট হিসেবে কানাডায় আসলে আমেরিকান ভিজিটর ভিসা পাওয়া সম্ভব কিনা?
উত্তর: পাবার সম্ভাবনা বেশি। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে হলে আমেরিকার ভিজিটর ভিসা অ্যাপ্লিকেশনের আদ্যোপান্ত ব্লগে ক্লিক করুন।

প্রশ্ন ১৭: রেস্টুরেন্ট/ গ্যাসস্টেশন/ সিকিউরিটি জবে ঘন্টা প্রতি কত টাকা আয় করা সম্ভব?
উত্তর: বিগত ১ জুন, ২০১৪ থেকে কানাডায় নূন্যতম মজুরী ঘন্টা প্রতি ১১ ডলার। টরন্টোতে অড জবে সাধারণত ঘন্টায় ১১-১২ ডলার করেই দেয়। সিকিউরিটি জবে শুরুতে ঘন্টায় ১২ ডলার করে পাওয়া যায়।

প্রশ্ন ১৮: ক্যাশে কাজের সাথে ট্যাক্স/ সিন কার্ডে কাজের পার্থক্য কি?
উত্তর: ক্যাশে কাজ করে যে আয় হবে, সেটা কানাডিয়ান সরকার জানবেনা। আর না জানলে সেই উপার্জিত অর্থের জন্যে কোন ট্যাক্স সরকারকে দিতে হবেনা।

ট্যাক্স/ সিন কার্ডে বা সিন নম্বরে কাজ করলে:
১. আপনার উপার্জিত অর্থের ১৫% সরকার কেটে রেখে দিবে। আপনি যদি স্বল্প আয়ের মানুষ হন (বাৎসরিক আয় ৩০ হাজার ডলারের কম), তাহলে বছর শেষে ট্যাক্স ফাইল করার পর সেই কেটে রাখা অর্থের কিছু অংশ আপনি সরকার থেকে ফেরত পাবেন।
২. কর্মক্ষেত্রে কোন প্রকার দুর্ঘটনা ঘটলে আপনি দুর্ঘটনাজনিত ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক কাভারেজ পাবেন, যেটা ক্যাশে কাজ করলে পাবেননা।
৩. ভবিষ্যতে কাউকে স্পন্সর করে কানাডাতে আনতে হলে ট্যাক্সে কাজ করার গুরুত্ব অনেক।
৪. আপনার চাকুরীদাতা আপনাকে তার প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুবাদে কানাডিয়ান আইন অনুযায়ী প্রযোজ্য সকল সুযোগ-সুবিধা দিতে বাধ্য।
৫. আপনার চাকুরীদাতা আপনাকে নিয়মিত সঠিক বেতন-ভাতা প্রদান করতে বাধ্য। ক্যাশে কাজে অনেক চাকুরীদাতা টাকা দেয়না। অড জবে ক্যাশে কাজ করলে শুনেছি জায়গা ভেদে ৬ থেকে ৯ ডলার করে ঘন্টায় পাওয়া যায়।
৬. ট্যাক্স/ সিন কার্ডে বা সিন নম্বরে নূন্যতম ৯০০ ঘন্টা কাজ করার পর কোন কারণে আপনি চাকুরী ছেড়ে দিলে সরকারের কাছে আপনি 'এমপ্লয়মেন্ট বেনিফিট ' দাবী করতে পারেন, যেখানে আপনি কাজ না করেও সরকার থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ মাসিক ভাতা পাবেন।

কানাডায় বৈধভাবে কাজ করতে হলে সিন কার্ড/ সিন নম্বর থাকাটা খুব জরুরী।

প্রশ্ন ১৯: টরন্টোতে কোন ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট করাটা ভালো?
উত্তর: যে ব্যাঙ্কে আপনি টাকা রাখা/ মাসিক টাকা খরচ ব্যতীত অ্যাকাউন্ট রাখতে পারবেন। শুরুতে আমি RBC এবং CIBC -তে অ্যাকাউন্ট করেছিলাম। কিন্তু CIBC -এর সার্ভিসের ব্যাপারে আমি খুবই হতাশ। এখন আমি সবাইকে অন্যান্য ব্যাঙ্কগুলোতে (RBC, TD, Scotia, BMO) অ্যাকাউন্ট খোলার পরামর্শ দেই। কিন্তু কখনই CIBC -তে অ্যাকাউন্ট খোলার পক্ষপাতি নই আমি।

প্রশ্ন ২০: কানাডা থেকে বাংলাদেশে কম খরচে কিভাবে কথা বলা যায়?
উত্তর:
১. Viber
২. বাংলা ট্র্যাকার
৩. allvoi
৪. phonepower
অন্যান্য যেসব অ্যাপল/ অ্যানড্রয়েড মোবাইল ফোন অথবা ট্যাবলেট অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন: Hangouts, Skype, ooVoo, Line, Tango, Whatsapp, yahoo messenger, Wechat, Magicjack, Nettalk

প্রশ্ন ২১: নতুন ইমিগ্র্যান্ট হিসেবে টরন্টো আসলে কোন এলাকায় থাকবো?
উত্তর: ড্যানফোর্থ বাংলাদেশি পাড়ায় থাকলে বাংলাদেশী ফ্লেভারটা পাবেন। স্কারবরো সিটির অনেক এলাকাজুড়েই বাংলাদেশীরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন। বাসা ঠিক করার ব্যাপারে নিচের বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ:
১. মাসিক ভাড়া (হাইড্রো বিলসহ)
২. টি.টি.সি সাবওয়ে/ বাস সার্ভিস বাসার কাছে কিনা
৩. কর্মস্থল বাসা থেকে কাছে কিনা
৪. বাসা/ অ্যাপার্টমেন্টের ম্যানেজমেন্ট ভালো কিনা
৫. বাসা/ অ্যাপার্টমেন্টের হিটিং সিস্টেম কাজ করে কিনা
৬. বাচ্চার স্কুল কাছে কিনা

প্রশ্ন ২২: নতুন ইমিগ্র্যান্ট হিসেবে টরন্টো আসলে ইমিগ্রেশনে কত টাকা ডিক্লেয়ার করবো?
উত্তর: বাংলাদেশ থেকে টরন্টো আসার পর যে ক্যাশ ডলার নিয়ে আসবেন, সেটাই ডিক্লেয়ার করবেন। সত্যি কথার বিকল্প নাই।

প্রশ্ন ২৩: ফেব্রুয়ারিতে টরন্টো যাচ্ছি, এত ঠাণ্ডায় আমার ৪ বছরের ছোট বাচ্চাটা অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা আছে কি?
উত্তর: যদি সঠিক গরম কাপড় ব্যবহার করেন, তাহলে বাচ্চা অসুস্থ হবার সম্ভাবনা কম। বাংলাদেশের মতো কানাডার পরিবেশ দূষিত নয়। সুতরাং জীবাণু সহজে আক্রমণ করেনা।

প্রশ্ন ২৪: টরন্টো নামার পর জরুরী ভিত্তিতে কোন কাজগুলো করতে হবে?
উত্তর:
১. সার্ভিস কানাডা (Service Canada) – SIN number -এর জন্য অ্যাপ্লাই করুন
২. TTC monthly pass অথবা টোকেন কিনুন
৩. Public Transport - TTC Subway, Bus and Street Car সম্পর্কে ধারণা লাভ করুন
৪. কেনাকাটা:
• Home appliances (Mattress, Kitchen stuffs etc.)
• Winter garments (Winter Jacket, overcoat, winter boot etc.)
• Walmart (Home equipment and others)
• Laptop/ Phone/ Printer/ TV (futureshop.ca/ bestbuy.ca/ tigerdirect.ca/ staples.ca)
• Grocery (Nofrills/ Freshco/ Bangladeshi Grocery stores, Halal meat store)
৫. Getting idea about Laundry system and Mail Box in your apartment building
৬. ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট করুন
৭. Social Visit to your Rental Office for the introduction
৮. বাচ্চার স্কুলের খোঁজ নিন
৯. ফোন কানেকশন নিন (Mobilicity/ Chat-r/ Public Mobile/ Wind/ ভার্জিন)
১০. ইন্টারনেট কানেকশন নিন (Teksavvy/ CIK/ Acanac)
১১. সার্ভিস ওন্টারিও-তে গিয়ে হেলথ্ কার্ডের জন্যে অ্যাপ্লাই করুন
১২. প্রফেশনাল অথবা অড্ জব খোঁজা শুরু করুন
১৩. ট্রেনিং বিষয়ক কোর্সগুলো করে নিন (যেমন, সিকিউরিটি ট্রেনিং)
১৪. উচ্চশিক্ষা নেবার ইচ্ছে থাকলে ওয়েবসাইট অথবা স্বশরীরে বিশ্ববিদ্যালয় অথবা কলেজগুলোতে খোঁজ নিন
১৫. পারমানেন্ট রেসিডেন্ট কার্ড হাতে পাবার পর গবর্ণমেন্ট হাউজিং-এর জন্য অ্যাপ্লাই করুন
১৬. Driver’s License এর জন্য লেসনগুলো নিন এবং সময়মতো পরীক্ষা দিয়ে ফেলুন
১৭. বাচ্চা থাকলে চাইল্ড সাপোর্টের জন্যে অনলাইন অথবা পেপার বেজড অ্যাপ্লাই করুন। চাইল্ড বেনিফিটের কাগজাদি আপনাকে ইমিগ্রেশনের সময় পিয়ারসন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে দিয়ে দেবে। চাইল্ড বেনিফিট অ্যাপ্লিকেশনের সময় বাচ্চার মায়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর প্রয়োজন।


প্রশ্ন ২৫: RBC ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট করার সময় কি কি বিষয় খেয়াল করতে হবে?
উত্তর:
১. নিউকামার প্যাকেজ
২. চেকিং অ্যাকাউন্ট - কোন মাসিক ফি ব্যতীত ৬ মাস ফ্রি
২.১ ফ্রি ডেবিট কার্ড
৩. ফ্রি ভিসা ক্রেডিট কার্ড (গোল্ড) - কোন মাসিক/ বাৎসরিক ফি ব্যতীত
৪. ফ্রি চেক বই
৫. এক বছরের জন্য ফ্রি লকার
৬. ফ্রি ভয়েড চেক
৭. বাসার কাছাকাছি ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলুন
৮. ফ্যামিলি থাকলে জয়েন্ট চেকিং অ্যাকাউন্ট করতে পারেন অথবা পৃথক চেকিং অ্যাকাউন্ট-ও করতে পারেন। উভয় ক্ষেত্রেই স্বামী এবং স্ত্রী দু'জনই ফ্রি ডেবিট কার্ড এবং ফ্রি ভিসা ক্রেডিট কার্ড পাবেন। প্রতি ফ্যামিলির জন্য একটি করে লকার বরাদ্দ।
আপডেট: RBC Royal Bank এর Danforth & Dawes ব্রাঞ্চ (ঠিকানা: 2780 Danforth Ave, Toronto) -এ সম্প্রতি কথা বলে জানা গেল কোন নতুন ইমিগ্র্যান্ট 'নিউ ইমিগ্র্যান্ট প্যাকেজের আওতায়' যদি বর্তমানে কোন বছরের শুরুতে RBC তে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলেন, তাহলে ওই বছরের জন্যে তাকে লকারটি ফ্রি দেওয়া হবে। কিন্তু যদি বছরের একেবারে শুরুতে না হয়ে কয়েকমাস পর অ্যাকাউন্ট খোলেন, তাহলে সেই বছরের বাকী সময়ের জন্যে তাকে ব্যাংকের লকারটির জন্যে নির্ধারিত ফি দিয়ে লকারটি নিতে হবে। এবং ওই প্রথম বছরটি পার হবার পর পরবর্তী বছরটি তিনি লকারটি ফ্রি-তে পাবেন। কিন্তু কেউ যদি বছরের মাঝামাঝি অ্যাকাউন্টটি খোলার পর ব্যাংকের নির্ধারিত ফি জমা না দিয়ে লকার না নেন, তাহলে তিনি পরবর্তী বছরটিতে ফ্রি লকার পাবেননা। যেমন, ২০১৫ সালের মে মাসে একজন নিউ ইমিগ্র্যান্ট RBC তে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলেন। তাকে লকার নিতে হলে ২০১৫ সালের জন্যে ৩০ ডলার দিতে হবে এবং ২০১৬ সালের জন্যে তার লকারটি ফ্রি হবে। যদি তিনি ৩০ ডলার দিয়ে লকারটি এখন না নেন, তাহলে ২০১৬ তে তিনি লকারটি আর ফ্রি -তে পাবেননা।

৯. ছয়মাস পর মাসিক/বার্ষিক ফি পরিহার করার জন্য RBC ব্যাঙ্কের ট্যাক্স ফ্রি সেভিংস অ্যাকাউন্ট করে নিন।
১০. ছয়মাস পর বাচ্চার 'RRSP for child education' করে নিলেও কোন মাসিক/বার্ষিক ফি দিতে হবেনা।
১১. স্টুডেন্ট হলে আপনার চেকিং অ্যাকাউন্টটি স্টুডেন্ট অ্যাকাউন্টে পরিবর্তন করে কোন মাসিক চার্জ ছাড়াই ফ্রি 'আনলিমিটেড ট্রানজ্যাকশনের' সুবিধা নিন।
১২. 'অনলাইন ব্যাঙ্কিং' সুবিধা থাকলে বাসায় বসেই ইন্টারনেটে বিল পে করতে পারবেন।

প্রশ্ন ২৬: বাংলাদেশে আমি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করিনি। টরন্টোতে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের নিয়ম বলবেন কি?
উত্তর:
১. ক্রেডিট কার্ড আপনার বাসার ঠিকানায় আসার পর ক্রেডিট কার্ডে উল্লেখিত নম্বরে ফোন করে কার্ডটি অ্যাক্টিভেট করুন এবং কার্ডের পেছনে নির্ধারিত স্থানে আপনার সাক্ষর দিন
২. বড় দোকান (ওয়ালমার্ট/ ফিউচারশপ/ বেস্ট বাই/ মেট্রো/ টিম হর্টনস্ ইত্যাদি) বা শপিং মলে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করুন। কিন্তু কখনোই এমন কোন স্থানে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করবেননা যেখানে আপনার কার্ডটির তথ্য চুরি হয়ে যেতে পারে (যেমন চাইনিজ/ বাংলাদেশী/ ইন্ডিয়ান গ্রোসারী স্টোর/ খাবার দোকান ইত্যাদি)
৩. অনলাইনে কেনাকাটার সময় 'রিলায়েবল ওয়েবসাইট' ছাড়া অন্য কোথাও ক্রেডিট কার্ডের তথ্য না দেওয়াই ভালো
৪. ক্রেডিট কার্ড দিয়ে কেনাকাটার সময় আপনার ৪ ডিজিটের পিন নম্বর এবং ৩ ডিজিটের পিন কোড সুরক্ষিত রাখুন
৫. ক্রেডিট কার্ড হারিয়ে গেলে/ চুরি গেলে/ আপনি যদি মনে করেন যে, আপনার কার্ডের তথ্যগুলো অন্য কেউ জেনে গিয়েছে তাহলে কালবিলম্ব না করে কার্ডের পেছনের ফোন নম্বরে ফোন করে সেটা কর্তৃপক্ষকে জানান। এই নম্বরটি ২৪/৭ খোলা।
৬. ক্রেডিট কার্ডের লিমিট শুরুতে ১০০০ ডলার থাকলে কার্ড দিয়ে একবারে ৭০০-৭৫০ ডলারের বেশি কেনাকাটা না করাই ভালো। ৭৫০ ডলার কেনাকাটা হয়ে গেলে এই টাকাটা পরিশোধ করে তারপর আবার কার্ড দিয়ে কেনাকাটা করুন।
৭. নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ক্রেডিটের টাকা পরিশোধ করে দিন। টাকা পরিশোধ না করলে একটি নির্দিষ্ট সময় পর সে তথ্যটি কালেকশন এজেন্সিতে যাবে এবং পরবর্তীতে ক্রেডিটব্যুরোতে রিপোর্ট হবে এবং জটিলতা সৃষ্টি হয়ে আপনার ভবিষ্যত সম্পূর্ণ অন্ধকারে পরিণত হবে। সুতরাং ভালো ক্রেডিট হিস্ট্রি তৈরির জন্য শুরু থেকেই সচেষ্ট থাকুন যা আপনার নর্থ অ্যামেরিকার জন্য ভালো ভবিষ্যত গড়ে দেবে।
৮. কিভাবে অনলাইনে ক্রেডিট কোম্পানীর টাকা পরিশোধ করবেন, সেটি অভিজ্ঞ কারো দ্বারা জেনে নিন। ব্যাংক থেকেও এ ব্যাপারে সাহায্য পাবেন।
৯. এক সাথে অনেকগুলো ক্রেডিট কোম্পানীর কার্ড না নিয়ে শুরুতে ১ বা ২ টা Visa/ Mastercard ব্যবহার করে ভালো ক্রেডিট হিস্ট্রি তৈরি করাটা বুদ্ধিমানের কাজ। অনেক বড় দোকান আপনাকে ফ্রি ক্রেডিট কার্ড অফার করতে পারে (যেমন Sears), কিন্তু আপনার প্রয়োজন বুঝে ক্রেডিট কার্ড নিন।
১০. বছরে একবার equifax এর মাধ্যমে আপনার ক্রেডিট হিস্ট্রি চেক করিয়ে নিতে পারেন।
১১. ক্রেডিটকার্ড নেবার পর কোম্পানী থেকে মাসিক 'ফি' এর বিনিময়ে 'ক্রেডিটকার্ড প্রোটেকশন' অফার করে। এ বিষয়ে তাদের অনেক যুক্তি থাকলেও আমার কাছে 'ক্রেডিটকার্ড প্রোটেকশন' ব্যাপারটি কোন গুরুত্ব বহন করেনা।
১২. কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাসের চিন্তা মাথায় থাকলে কোনভাবেই ক্রেডিটকার্ড এবং ড্রাইভার্স লাইসেন্স ক্ষতিগ্রস্থ হয় - এমন কোন কাজ করা যাবেনা। সাধ্যের বাইরে ক্রেডিট কার্ড দিয়ে কোন জিনিস কেনা কি উচিত যে ডলারগুলো আপনি ক্রেডিট কোম্পানীকে সময়মতো ফেরত দিতে পারবেননা?
১৩. খুব জরুরী প্রয়োজন ছাড়া ক্রেডিটকার্ড দিয়ে ক্যাশ ডলার তোলাটা (Cash Advance) মনে হয়না খুব একটা বুদ্ধিমানের কাজ।

প্রশ্ন ২৭: বাংলাদেশ থেকে টরন্টো আসার সময় কোন ফোন সাথে করে নিয়ে আসবো কি?
উত্তর: জি.এস.এম সিস্টেমের আনলক্ড অ্যানড্রয়েড/ আই ফোন সাথে করে নিয়ে আসুন। যদিও ফোন কানেকশন নেবার সময় ফোন কোম্পানীগুলোর নিজস্ব মডেল/ ফ্রিকোয়েন্সির সাথে আপনার আনা ফোনটি 'কমপ্যাটিবল' হলে তবেই আপনি বাংলাদেশ থেকে নিয়ে আসা ফোনটি ব্যবহার করতে পারবেন। সাধারণভাবে বলতে গেলে উইণ্ড, পাবলিক মোবাইল, মোবলিসিটি ইত্যাদি মোবাইল কোম্পানীর নিজস্ব কিছু মডেলের ফোনে উক্ত কোম্পানীসমূহের কানেকশন ব্যবহার করা যায়।

প্রশ্ন ২৮: টরন্টো আসার পরপরই কি আমার বাচ্চারা চাইল্ড বেনিফিট পেতে পারবে?
উত্তর: হ্যাঁ, পারবে। আপনার দায়িত্ব হলো চাইল্ড বেনিফিট পাবার জন্য নির্ধারিত ফরমে অ্যাপ্লাই করে দেওয়া অথবা অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন করা। এই ফরম আপনাকে ইমিগ্রেশন থেকেই দিয়ে দেওয়া হবে। অ্যাপ্লিকেশন করার পর প্রতি মাসে আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চাইল্ড বেনিফিটের টাকা নিয়মিত 'অটোমেটিক' চলে আসবে। চাইল্ড বেনিফিটের টাকা নির্ভর করবে:
ক. আপনার এবং/বা আপনার স্ত্রীর বার্ষিক ট্যাক্সেবল ইনকামের ওপর। সহজ কথায় আপনাদের দুইজনের বার্ষিক ট্যাক্সেবল ইনকাম ৩০ হাজার ডলারের নিচে হলে সর্ব্বোচ্চ চাইল্ড বেনিফিট পেতে পারেন (৪৫০-৫০০ ডলার/মাস প্রতি বাচ্চা)
খ. টরন্টোতে ব্যাঙ্কে রাখা টাকার পরিমাণ বেশি হলে চাইল্ড বেনিফিটের টাকা কমে যাবে।

প্রশ্ন ২৯: টরন্টো আসার পরপর বাংলাদেশি অধ্যুষিত ড্যানফোর্থ এলাকার ড্রাইভার্স লাইসেন্স-এর G1 লিখিত পরীক্ষার জন্য কাছাকাছি পরীক্ষা কেন্দ্র কোনটি?
উত্তর: ভিক্টোরিয়া পার্ক সাবওয়ে স্টেশন থেকে ২৪ নম্বর বাস ধরে লরেন্স এবং ভিক্টোরিয়া পার্ক ইন্টারসেকশনে নামুন (লরেন্স স্টপেজ)। কাছাকাছি কোন 'নো-ফ্রিল্স' আছে কিনা খেয়াল করুন। ওখানেই শপিং মল কমপ্লেক্সের ভেতরে পরীক্ষা কেন্দ্র আছে। ঠিকানা: 1448 Lawrence Ave East, Unit 15, North York ON, M4A 2S8

প্রশ্ন ৩০: এয়ারপোর্ট পিকআপ বিষয়ে একটু বলবেন কি?
উত্তর: এয়ারপোর্ট পিকআপ খুবই জরুরী একটি বিষয় বিশেষত: যখন আপনি ফ্যামিলি নিয়ে আসবেন। কাস্টমস, ইমিগ্রেশন শেষ করার পর লাগেজ বেল্টে থেকে লাগেজ কালেক্ট করার পর বিশাল বিশাল লাগেজ নিয়ে আপনি হয়তো হিমশিম খাবেন। লাগেজ বেল্টের ওখানেই ডলারের বিনিময়ে ট্রলি ভাড়া পাওয়া যায়। সেগুলো ভাড়া নিতে পারেন, তাতে খরচ কম পড়বে। আর যদি এয়ারপোর্টের ভেতরের পোর্টার (কুলি) ভাড়া করেন, তাহলে ভালো করে দরদাম করে নিন। নতুন মানুষ দেখলে এরা অনেক বেশি দাম হাঁকায় এবং বেশি 'টিপস' দাবী করে। সাধারণত লাগেজ অনেক বেশি থাকলে ২০ ডলারের বেশি কোন ভাবেই দিবেননা।

এয়ারপোর্টে আপনাদেরকে নিতে আসার জন্যে অগ্রিম পরিচিতজনের মাধ্যমে বড় কমপক্ষে ৯ সিটের ভ্যান ভাড়া করে রাখুন। আপনারা যখন লাগেজ নিয়ে গ্রীন চ্যানেল দিয়ে বের হবেন, সেই জায়গাটা টার্মিনাল-১, ইন্টারন্যাশনাল অ্যারিভাল। এয়ারপোর্ট থেকেও ট্যাক্সি ভাড়া করা য়ায়, সেক্ষেত্রে ভাড়া একটু বেশি পড়তে পারে। এয়ারপোর্ট পিকআপ ভ্যানগুলো টরন্টোর ভেতরে সাধারণত ৪৫-৫০ ডলার চার্জ করে থাকে (টিপস ব্যতীত)।



টি.টি.সি -এর ১৯২ এক্সপ্রেস বাসেও আপনি এয়ারপোর্ট থেকে টরন্টোর যেকোন স্থানে সবচাইতে কম খরচে চলাচল করতে পারবেন।

প্রশ্ন ৩১: টরন্টো আসার আগে গরম জামা কাপড় ঢাকা থেকে সস্তায় কোথা থেকে কিনতে পারি?
উত্তর: ঢাকা কলেজের উল্টা দিকের বদরুদ্দোজা মার্কেট, নূরজাহান মার্কেট অথবা বঙ্গবাজার থেকে গরম জ্যাকেট (হুডি সহ), সোয়েটার, লেদারের গরম হাতমোজা, পায়ের গরম মোজা, মাঙ্কি ক্যাপ, কানটুপি ইত্যাদি কিনে আনুন।



আরেকটি জিনিসের ব্যাপারে আমার স্পেশাল রিকমেণ্ডেশন থাকবে: 'থারমাল' (গেঞ্জি এবং প্যাণ্ট) যা প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় আপনাকে আরামে রাখবে। ঢাকা কলেজের উল্টা দিকের বদরুদ্দোজা মার্কেটের 'আলিফ' দোকানে অথবা, নূরজাহান মার্কেটের 'রায়হান' ফ্যাশন থেকে 'অ্যাক্টিভ' ব্র্যাণ্ডের থারমাল ব্যবহার করে আমি আরামেই আছি।

প্রশ্ন ৩২: আমার বয়স ৪০ বছরের কিছু বেশি। ঢাকায় এখন আমি সরকারী ভালো একটি চাকুরী করছি। সম্প্রতি সপরিবারে কানাডার ইমিগ্রেশন হয়ে যাবার পর আমি পরিবারসহ টরন্টো আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। টরন্টোতে আমি কি ভালো কোন ডেস্ক জব পেতে পারি?
উত্তর: আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি টরন্টো আসার পর নিউ ইমিগ্র্যান্টদের চোখে-মুখে নতুন পরিবেশে এক ধরণের 'ভালো লাগা' কাজ করে। কানাডার সুন্দর বাড়ি-ঘর, রাস্তা-ঘাট, মানুষ-জন - যা-ই তারা দেখেন, সেটাই অসম্ভব ভালো লাগে, একটা 'এক্সাইটমেন্ট' কাজ করে। আর বাংলাদেশে থেকে নিয়ে আসা মোটা অঙ্কের টাকা যতদিন হাতে থাকে, এই ভালো লাগার রেশটা ততদিন পর্যন্তই কাজ করে। বাংলাদেশের কষ্টার্জিত টাকা কানাডার ব্যয়বহুল শহুরে জীবনে শেষ হতে খুব বেশি সময় কিন্তু লাগেনা!

কাজেই টরন্টো এসে 'কাজ খোঁজা'র বিষয়টা নতুন ইমিগ্র্যান্টদের অনেকের কাছে শুরুতে খুবই গৌণ একটি বিষয় থাকে। শুরুতে তাদেরকে কাজের কথা বললে বরং তারা কিছুটা বিরক্তি ভাব-ই প্রকাশ করেন। ভাবটা অনেকটা এরকম যে, বাংলাদেশে অনেক কষ্ট করে এসেছি, এবার একটু 'রিল্যাক্স' করে নেই। আর কানাডার মতো উন্নত একটা দেশে 'কাজ' পাওয়াতো কোন ব্যাপার-ই না।

এভাবেই গায়ে বাতাস লাগিয়ে অনেকেরই কয়েক মাস কেটে যায়, হাতের টাকা দ্রুত ফুরিয়ে আসে। তারপর যখন সেভিংস-এর টাকায় টান পড়ে, সে সময় তারা বুঝতে পারে, কাজ না করলে এখানে খুবই মানবেতর জীবন যাপন করতে হবে। আর বাংলাদেশের মতো টরন্টোতে আত্মীয়স্বজনও নেই যারা আর্থিকভাবে সাহায্যে সক্ষম।

নতুন ইমিগ্র্যান্টদের অনেকের মাঝেই ধারণা থাকে, তারা অনেক কষ্ট করে দীর্ঘ্য সময় অতিবাহিত করে কানাডার 'দুর্লভ' ইমিগ্রেশন ভিসা পেয়েছেন এবং তারা বাংলাদেশে খুব ভালো কোন প্রতিষ্ঠানে যেহেতু কর্মরত ছিলেন, কানাডাতেও তারা এসেই অনেক ভালো জব পেয়ে যাবেন। ভাবটা এরকম, কানাডার সরকার বা অন্য কোন প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশী হাইলি কোয়ালিফাইড ইমিগ্র্যান্টদের জন্যে 'কাজ' নিয়ে বসে আছেন। তাই আমার পরিচিত সম্প্রতি এক বাংলাদেশী ইমিগ্র্যান্ট ভাইকে বলতে শুনেছি, "বাংলাদেশে আমি বড় ইঞ্জিনিয়ার ছিলাম, সরকারী চাকুরী করতাম। কানাডাতে 'অড' জব করবো আমি? বড় প্রতিষ্ঠান ছাড়া আমি চাকুরী-ই করবোনা"।

কাজেই ডেস্ক জব পাবার বিষয়টা শুরুতে আসলেই হয়তো বেশ কঠিন একটি বিষয়। কিন্তু টেকনিক্যাল বিষয়ে (যেমন, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার) আপনার ডিগ্রী বা অভিজ্ঞতা থাকলে হয়তোবা সেটা শুরুতেই সম্ভব। কাজেই ডেস্ক জবের আশায় বসে না থেকে শুরুতেই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যে কোন একটি কাজে ঢুকে 'ইনকামের চাকা' ঘোরানোটাই বুদ্ধিমানের কাজ। সাথে সাথে কানাডায় ভবিষ্যত পড়াশুনা এবং প্রোফেশনাল জব খুঁজতে থাকাটাও জরুরী।

প্রশ্ন ৩৩: টরন্টোতে নতুন ইমিগ্র্যান্টদের বিভিন্ন পরামর্শদানকারী সরকারী সোশ্যাল সার্ভিস অফিসের ঠিকানা দিবেনকি?

উত্তর:
নিচের দুইটি লিঙ্ক খুবই উপকারী:

১. সেটেলমেন্ট ডট অরগ
২. 211toronto

উক্ত লিঙ্কগুলোতে গিয়ে আপনার বাসার কাছাকাছি অফিস খুঁজে বের করে তাদের সাথে যোগাযোগ করুন। উক্ত অফিসের কর্মকর্তারাই আপনার সকল প্রশ্নের উত্তর দিবেন এবং তথ্যপ্রদান করে সবধরনের সহায়তা করবেন।

সরাসরি WoodGreen অফিসেও চলে যেতে পারেন; ঠিকানা: Castle Frank Subway Station - এ নেমে হাঁটা পথ (1491 বিল্ডিং)।

প্রশ্ন ৩৪: টরন্টোতে সিকিউরিটি জবের ট্রেনিং নেওয়ার জন্য কোথায় যোগাযোগ করলে ভালো হয়?
উত্তর:
১. Garda তে যোগাযোগ করুন। ফোন: 647 4978744 Extension 3000
২. ওন্টারিও সিকিউরিটি ট্রেনিং - ৬ দিনের ট্রেনিং, প্রতি সোমবার নতুন ব্যাচ শুরু হয়। ট্রেনিং ফি এবং বিস্তারিত শিডিউল জানার জন্য ওয়েবসাইটে দেখুন। ট্রেনিং শেষে লাইসেন্স পাবার জন্য পরীক্ষা দিতে হয় এবং পরীক্ষা বাবদ ফি ৮০ ডলার। লাইসেন্স ২ বছরের জন্য ভ্যালিড থাকে। দুই বছর পর ৮০ ডলার দিয়ে লাইসেন্স রিনিউ করতে হবে।

প্রশ্ন ৩৫: টরন্টোতে ফার্নিচারের দোকান ভাল কোথায় পাওয়া যাবে?
উত্তর:
১. আইকিয়া
২. ব্রিক
৩. সিয়ার্স
৪. কেনেডি সাবওয়ে স্টেশনে নেমে ৪৩ নম্বর বাস ধরে লরেন্স এবং কেনেডি ইন্টারসেকশনে চলে আসুন। এখানে অনেকগুলো ভালো মানের ফার্নিচারের দোকান পাবেন।

পর্ব ৭
পর্ব ৮

আমার ফেসবুক আইডি

ইমেইল: [email protected]
ফেসবুক গ্রুপ: Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৯:৩৮
১৭টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবি কখনো কখনো কিছু ইঙ্গিত দেয়!

লিখেছেন ডার্ক ম্যান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৭



গতকাল ভারতীয় সেনাপ্রধানের সাথে বাংলাদেশ সেনাপ্রধান এর ভার্চুয়ালি কথা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের অফিসায়াল এক্স পোস্টে এই ছবি পোস্ট করে জানিয়েছে।

ভারতীয় সেনাপ্রধানের পিছনে একটা ছবি ছিল ১৯৭১ সালের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রথম আলু

লিখেছেন স্নিগ্দ্ধ মুগ্দ্ধতা, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



লতিফপুরের মতি পাগল
সকালবেলা উঠে
পৌঁছে গেল বাঁশবাগানে
বদনা নিয়ে ছুটে



ঘাঁড় গুঁজে সে আড় চোখেতে
নিচ্ছিল কাজ সেরে
পাশের বাড়ির লালু বলদ
হঠাৎ এলো তেড়ে




লাল বদনা দেখে লালুর
মেজাজ গেল চড়ে।
আসলো ছুটে যেমন পুলিশ
জঙ্গী দমন করে!





মতির... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করা জরুরী?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০২



বিশ্ব ইসলামের নিয়মে চলছে না।
এমনকি আমাদের দেশও ইসলামের নিয়মে চলছে না। দেশ চলিছে সংবিধান অনুযায়ী। ধর্মের নিয়ম কানুন মেনে চললে পুরো দেশ পিছিয়ে যাবে। ধর্ম যেই সময় (সামন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×